মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আবু আইউব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমাকে এমন আমল বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (লোকেরা) বলল, তার কী হয়েছে, তার কী হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তার কোনো একটি প্রয়োজন নিয়ে সে কথা বলছে তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কোনো কিছু শরীক করবে না, সালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে”।
হাদীসে উল্লিখিত «أَرَبٌ» শব্দ পড়ার তিনটি বর্ণনা রয়েছে। প্রথমত: «أَرِبَ» এটি عَلِمَ এর ওজনে। অর্থ, তার বিরুদ্ধে দো‘আ করা, সে বিপদে পতিত হয়েছে। এটি এমন কথা যা বাস্তবে সংঘটিত হওয়ার ইচ্চা করা হয় না। মূলত এটি আশ্চর্যের সময় উল্লেখ করা হয়। দ্বিতীয়ত: «أَرَبٌ» এটি جَمَلٌ এর ওজনে। অর্থাৎ তার প্রয়োজন আছে। এখানে ما অক্ষরটি অতিরিক্ত, যা কম বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ সামান্য প্রয়োজন রয়েছে। «أرِبٌ» শব্দটি كَتِفٌ এর ওজনে। পূর্ণ বুদ্ধিমান। অর্থাৎ সে বুদ্ধিমান। এখানে মুবতাদাকে হযফ করা হয়েছে। অর্থাৎ সে বুদ্ধিমান। অতঃপর জিজ্ঞাসা করা হলো, ما له؟ অর্থাৎ তার কি অবস্থা? আন-নিহায়া, ১/৩৫।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, এক বেদুইন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, আমাকে এমন আমলের পথনির্দেশ করুন যা আমল করলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না, (পাঁচ ওয়াক্ত) ফরয সালাত আদায় করবে, ফরয যাকাত আদায় করবে ও রমযানের সাওম পালন করবে। সাহাবী বললেন, আমার প্রাণ যার হাতে তাঁর কসম, আমি বেশি করবো না। তিনি যখন ফিরে গেলেন তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেউ যদি জান্নাতী লোক দেখতে আগ্রহী হয় সে যেন তার দিকে তাকিয়ে দেখে”।
আবু জামরা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে বসতাম, তিনি আমাকে তার আসনে বসাতেন। একবার তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে থেকে যাও, আমি তোমাকে আমার সম্পদ থেকে কিছু অংশ দেবো। আমি দু’মাস তার সঙ্গে অবস্থান করলাম। তারপর একদিন তিনি বললেন, আব্দুল কায়েসের একটি প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন গোত্রের? অথবা কোন প্রতিনিধিদলের? তারা বলল, রাবী‘আ গোত্রের। তিনি বললেন, মারহাবা সে গোত্র বা সে প্রতিনিধি দলের প্রতি, যারা অপদস্থ ও লজ্জিত না হয়েই এসেছে। তারা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! নিষিদ্ধ মাসসমূহ ছাড়া অন্য কোনো সময় আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। কারণ আমাদের এবং আপনার মাঝখানে মুদার গোত্রীয় কাফিরদের বাস। তাই আমাদের কিছু স্পষ্ট হুকুম দিন, যাতে আমরা যাদের পিছনে রেখে এসেছি তাদের জানিয়ে দিতে পারি এবং যাতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। তারা পানীয় সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করল। তখন তিনি তাদের চারটি জিনিসের নির্দেশ এবং চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তাদেরকে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আদেশ দিয়ে বললেন, এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কীভাবে হয় তা কি তোমরা জানো? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, তা হলো এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল এবং সালাত কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের সাওম পালন করা আর তোমরা গণীমতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। তিনি তাদেরকে চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তা হলো, সবুজ কলসি, শুকনো লাউয়ের খোল, খেজুর গাছের গুঁড়ি থেকে তৈরীকৃত পাত্র এবং আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র। বর্ণনাকারী বলেন, বর্ণনাকারী وَالمُزَفَّتِ এর স্থলে কখনও المُقَيَّرِ উল্লেখ করেছেন (উভয় শব্দের অর্থ একই)। তিনি আরো বলেন, তোমরা এগুলো ভালো করে আয়ত্ত করে নাও এবং অন্যদেরকেও এগুলো জানিয়ে দিও”।
হাদীসে উল্লিখিত المُقَيَّرِ শব্দের অর্থ আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র। وَالمُزَفَّتِ এর স্থলে কখনও المُقَيَّرِ উল্লেখ করেছেন (উভয় শব্দের অর্থ একই)। আবার কেউ কেউ বলেছেন, الزفت হলো একপ্রকার আলকাতরা। এখানে এ চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করার কারণ হলো এ চারটি জিনিসের মাদক থেকে নিষেধ করা। এ চারটি পানপাত্রকে খাস করার কারণ হলো এতে তাড়াতাড়ি মাদক তৈরি হয়; ফলে এগুলোকে হারাম করা হয়েছে।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, আব্দুল কায়েস গোত্রের কয়েকজন লোক রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমরা রাবী‘আ গোত্রের লোক। আপনার ও আমাদের মধ্যবতী যাতায়াত পথে মুদার গোত্রের কাফিররা অবস্থান করায় ‘শাহরুল হারাম’ (নিষিদ্ধ মাস) ছাড়া আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। অতএব, আপনি আমাদের এমন কাজের আদেশ দিন, আমাদের যারা আসে নি তাদের জানাতে পারি এবং যা পালন করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের চারটি বিষয় পালনের এবং চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। পালনীয় চারটি বিষয় হলো, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না, সালাত কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রমযানের সাওম পালন করবে এবং গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নিষেধ করছি, দুব্বা (শুকনো লাউয়ের খোল), হানতাম (সবুজ কলসি), মুযাফফাত (আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র) ও নাকীর (খেজুর গাছের গুঁড়ি থেকে তৈরীকৃত পাত্র) এর ব্যবহার। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আপনি নাকীর সস্পর্কে কতটুকু জানেন? তিনি বললেন, এ হলো খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরি পাত্র। এতে কুতাই‘আ নামক খেজুর দিয়ে তাতে পানি ঢেলে, জোশ স্তব্ধ হওয়া পর্যন্ত রেখে তা পান করে থাকো। ফলে তোমাদের কেউ বা তাদের কেউ (নেশাগ্রস্ত হয়ে) আপন চাচাত ভাইকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে বসো। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, উপস্থিত লোকদের মধ্যে এভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বলেন, লজ্জায় আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আঘাতটি গোপন করছিলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিসে পান করব? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রশি দ্বারা মুখবন্ধ চামড়ার পাত্রে। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমাদের দেশে ইদুরের উপদ্রব বেশি। সেখানে চামড়ার পাত্র অক্ষত রাখা যায় না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল কায়েস গোত্রের আশাজ্জ সম্পর্কে বললেন, তোমার মধ্যে দুটি বিশেষ গুণ রয়েছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন, সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতা”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮।
হাদীসে উল্লিখিত ِأشَجّ عَبْد الْقَيْسِ হলেন, মুনযির ইবন ‘আয়েয। ইমাম তিরমিযী রহ. বলেছেন, তিনি মুনযির ইবন ‘আয়েয ইবন মুনযির ইবন হারিস আল-‘আসারী –আইন ও সোয়াদ বর্ণে ফাতহা যোগে- তিনি একজন সাহাবী, বসরায় অবস্থানকারী ছিলেন এবং সেখানেই মারা যান।
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নু‘মান ইবন কাওকাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে হাযির হলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে অবহিত করুন, যদি আমি ফরয সালাত আদায় করি, হারামকে হারাম বলে জানি, হালালকে হালাল জ্ঞান করি, তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ”।
অপর বর্ণনায় তিনি বলেন, “যদি আমি ফরয সালাত আদায় করি, রমযানের সাওম পালন করি, হালালকে হালাল জানি এবং হারামকে হারাম জানি; যদি এর অতিরিক্ত কিছু না করি, তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বললেন, হ্যাঁ। সে ব্যক্তি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এর চেয়ে কিছুমাত্র বাড়াব না”।
মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। একদিন চলার সময় আমি তাঁর নিকটবর্তী হয়ে গেলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি আমল সম্পর্কে অবহিত করুন যা আমাকে জান্নাতে দাখিল করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দিবে। তিনি বললেন, তুমি তো বিরাট একটা বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে। তবে আল্লাহ তা‘আলা যার জন্য তা সহজ করে দেন তার জন্য বিষয়টি অবশ্যই সহজ। আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরীক করবে না, সালাত কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমযানের সাওম পালন করবে এবং বাইতুল্লাহর হজ করবে। এরপর তিনি বললেন, সব কল্যাণের দ্বারসমূহ সম্পর্কে কি আমি তোমাকে দিক-নির্দেশনা দিবো? সাওম হলো ঢালস্বরূপ, পানি যেমন আগুন নিভিয়ে দেয় তেমনি সদকাও গুনাহমূহকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়, আরও রয়েছে রাতের মধ্যভাগের সালাত। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন:
তারা (মুমিনরা) গভীর রাতে শয্যা ত্যাগ করে তাদের রবকে ডাকে আশায় ও আশংকায় এবং আমরা তাদের যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন সুখকর কী লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ১৬-১৭] তারপর বললেন, তোমাকে এই সব কিছুর মাথা, বুনিয়াদ এবং সর্বোচ্চ শীর্ষদেশ স্বরূপ আমল সম্পর্কে অবহিত করবো কি? এরপর বললেন, অবশ্যই, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বললেন, সব কিছুর মাথা হলো ইসলাম, বুনিয়াদ হলো সালাত আর সর্বোচ্চ শীর্ষ হলো জিহাদ। এরপর বললেন, এ সব কিছুর মূল পুঁজি সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো কি? আমি বললাম, অবশ্যই, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি তাঁর জিহ্বা ধরে বললেন, এটিকে সংযত রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমরা যে কথাবার্তা বলি সে কারণেও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, তোমাদের মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, হে মু‘আয! লোকদের অধঃমুখে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য এই জবানের কামাই ছাড়া আর কি কিছু আছে নাকি?”
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতোক্ষণ না ঈমান আনো আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতোক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বলে দেবো না যা করলে তোমাদের পরস্পর ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে”।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যখন আপনাকে দেখি তখন আমার অন্তর আনন্দিত হয়, চক্ষু শীতল হয়। সুতরাং আপনি আমাকে সবকিছু সম্পর্কে সংবাদ দিন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সবকিছু পানি হতে সৃষ্টি হয়েছে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমাকে এমন আমল সম্পর্কে বলুন যা আমল করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করবো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পরস্পরে সালাম দিবে, লোককে খাদ্য খাওয়াবে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং মানুষ যখন ঘুমন্ত থাকে তখন সালাতে দাঁড়াবে, তাহলে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।
আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় এলেন তখন লোকেরা দ্রুত তাঁর দিকে ছুটে গেল। বলাবলি হতে লাগল যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসেছেন। লোকদের মধ্যে আমিও তাঁকে দেখতে গেলাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা যখন আমার সামনে প্রতিভাত হলো আমি চিনে ফেললাম যে, এ চেহারা কোনো মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়। তিনি প্রথম যে কথা উচ্চারণ করলেন তা হলো, হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রসার ঘটাবে, লোকদের খাদ্য দিবে এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকবে (শেষ রাতে) তখন (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করবে, তাহলে তোমরা শান্তি ও নিরাপদে জান্নাতে দাখিল হতে পারবে”।
হানী ইবন ইয়াযীদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন তিনি তাঁর জাতির সাথে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনতে পেলেন যে লোকেরা তাকে (হানীকে) আবুল হাকাম বলে ডাকছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, আল্লাহ তা‘আলা বিচারক ও আদেশ দাতা; কিন্তু লোক তোমাকে আবুল হাকাম বলে কেনো? তিনি বললেন, আমার গোত্রের লোক যখন কোনো ব্যাপারে কলহ করে, তখন তারা আমার নিকট বিচারপ্রার্থী হয় আর আমি যে রায় দেই, তারা তা মেনে নেয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরচেয়ে ভালো কাজ আর কী হতে পারে? আচ্ছা তোমার কয়টি সন্তান? তিনি বললেন, আমার ছেলে-শুরাইহ, আব্দুল্লাহ এবং মুসলিম। তিনি বললেন, এদের মধ্যে বড় কে? হানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, শুরাইহ। তিনি বললেন, তবে তুমি আবু শুরাইহ। পরে তিনি তার জন্য এবং তার ছেলেদের জন্য দো‘আ করলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু লোকের কাছে শুনলেন, তারা তাদের একজনকে ডাকছিল ‘আব্দুল হাজার’ বলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? তিনি বললেন, আব্দুল হাজার। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং তোমার নাম ‘আব্দুল্লাহ’। শুরাইহ বলেন, হানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন দেশে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কিছু আমলের কথা বলুন যা আমল করলে আমার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায় (জান্নাতে যেতে পারি)। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সুন্দর কথা বলবে ও মানুষকে খাদ্য খাওয়াবে”।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।