HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিম নারীর অবশ্য পালনীয় কতিপয় আমল

লেখকঃ কামাল উদ্দিন মোল্লা

আপনার অবশ্যই পালনীয় কতিপয় কাজ রয়েছে।
হে মুমিনা! জেনে রাখুন, আপনার অবশ্যই পালনীয় কতিপয় কাজ রয়েছে। যা পালনে আপনার জীবনকে সুসংগঠিত করবে এবং এগুলি আপনাকে পূর্ণতা দান করবে। এর উপরই ভিত্তি করে গড়ে উঠবে আপনার জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ। এর দ্বারাই আপনার মধ্যে আসবে ইখলাস, আপনি হবেন সত্যবাদিনী।

নিম্নে সেগুলোর বিবরণ দেওয়া হলো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দো‘আ করি, তিনি যেন আপনাদের সঠিক জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার তাওফীক দান করেন এবং আমল করার তাওফীক দেন। পালনীয় কাজগুলো খুবই সহজ যদি আল্লাহ তা‘আলা আপনার জন্য তা সহজ করে দেন। তাই এ কাজগুলো পালন করার জন্য আল্লাহর তাওফীক কামনা করুন।

১. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সর্বদা সঠিক সময়ে আদায় করতে চেষ্টা করুন। রুকু, কিয়াম, সাজদাহ, বৈঠক সঠিকভাবে আদায় করবেন। প্রতিটি অঙ্গের মধ্যে খুশু আনতে চেষ্টা করবেন। সালাতে দাঁড়িয়ে চোখকে সিজদার স্থানে রাখবেন। সালাতের পর যে সমস্ত যিকির রয়েছে তা পাঠ করুন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তিনবার اسْتَغْفِرُاللهً (আসতাগফিরুল্লাহ) পাঠ করা। তারপর বলুন:

«اَللَّهُمَّ أنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْإكْرَامِ» .

“হে আল্লাহ তুমি শান্তি দাতা, তোমার থেকেই শান্তি। হে মহাপরাক্রম ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়।”

তার পর তিনবার নিচের দো‘আটি পাঠ করুন।

«اَللَّهُمَّ أعِنِّيْ عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ» .

“হে আল্লাহ! তোমার যিকির, শোকর ও সুন্দর পদ্ধতিতে ইবাদতের ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করো।”

এরপর বলুন:

«لآ إلَهَ إلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَئيٍ قَدِيْرٌ» .

“আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক্ব ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তাঁরই রাজত্ব আর প্রশংসা তাঁরই।”

এরপর পাঠ করুন:

«اَللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِماَ أعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لَماَ مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الُجَدِّ مِنْكَ الُجَدُّ» .

“হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও, তা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আর কেউ কোনো জিনিস দিতে পারে না যদি তুমি না চাও। প্রতিপত্তির অধিকারীর প্রতিপত্তিও তোমার (পাকড়াও) থেকে বাঁচতে কিছুই করতে পারে না।”

তারপর পাঠ করুন:

«لآإلَهَ إلَّا الله وَلَا نَعْبُدُ إلَّا إيَّاه لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاء الُحَسَنُ الُجَمِيْلُ وُهُوَعَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ» .

“আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো হক্ব মা‘বুদ নেই, আমরা একমাত্র তারই ইবাদত করি। সমস্ত নি‘আমতের ও প্রতিদানের মালিক তিনিই। তারই জন্য উত্তম ও সুন্দর প্রশংসাসমূহ এবং তিনি সমস্ত বস্তুর ওপর ক্ষমতাবান।”

তারপর ৩৩ বার সুবহান্নাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করুন।

সর্বশেষ পাঠ করুন:

«لآإلَهَ إلَّا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيئٍ قَدِيْرٌ» .

“আল্লাহ এক, তাঁর কোনো শরীক নাই। রাজত্ব একমাত্র তাঁরই এবং সকল প্রশংসা। তিনি সমস্ত বস্তুর ওপর ক্ষমতাবান।”

সর্বদা সুন্নাতে মুআক্কাদাহসমূহ আদায় করুন। ফজরের পূর্বে ২ রাকাত, জোহরের পূর্বে ৪ রাকাত এবং পরে ২ রাকাত, মাগরিবের পরে ২ রাকাত এবং এশার পর ২ রাকাত সুন্নত এবং বিতর।

২. যদি বিবাহিত হন, তাহলে স্বামীর অনুগত থাকবেন এবং অবিবাহিত হলে মাতা-পিতার অনুগত থাকবেন। এর মধ্যে রয়েছে: তাদের কথা শ্রবণ করা এবং তাদের হুকুম প্রতিপালন করা এবং তাদের সাথে সুন্দরভাবে এবং নীচু স্বরে আদবের সাথে কথা বলা, তাদের সাথে অনর্থক ঝগড়া-ফাসাদ কিংবা রাগারাগি না করা। যদি কোনো ভুল হয়, তাহলে তাদের নিকট ক্ষমা চাওয়া এবং ওযর পেশ করা। সর্বদা তাদের সাথে হাসি-খুশী দেখা সাক্ষাত ও কথা-বার্তা বলা।

৩. আপনি যদি সন্তানের মা হন, তাহলে সন্তানের উত্তমরূপে প্রতিপালন করবেন। এর মধ্যে রয়েছে তাদের উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত করা, তাদের চরিত্র গঠন ও সংশোধন করা। তাদেরকে ধীরে ধীরে উত্তম কথা ও কাজে অভ্যস্ত করে তোলা। যেমন, প্রতিজ্ঞা পালন, সত্য কথা বলা, আজেবাজে কথা ও কাজ হতে বিরত থাকা। সাথে সাথে তাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সচেষ্ট থাকবেন এবং তাদের পোশাক পরিচ্ছদ পরিস্কার রাখবেন।

৪. আপনার ওপর দায়িত্ব হচ্ছে, বাড়িকে সুন্দরভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। জিনিসপত্রসমূহ সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা, খাদ্য দ্রব্য ইত্যাদি তৈরী করা। ছেড়া পোশাক রিপু করা, বসার জায়গাসমূহ ধৌত ও পাক-পবিত্র রাখা। আর অন্যান্য কাজগুলি করবেন ধীরস্থিরভাবে, কোনো রকম চেচামেচি কিংবা তাড়াহুড়ো করবেন না, যাতে অন্যের শান্তিতে কোনো বিঘ্ন অথবা কারো কোনো দুঃখ-কষ্টের কারণ না হয়ে দাড়ান।

৫. মাতা-পিতার হক্ক আদায় করা এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার করা। এগুলো খুব গুরুত্ববহ ওয়াজিব। কারণ, এদের সন্বন্ধে আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন তার পবিত্র কিতাবে হুকুম করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসেও বর্ণনা করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا﴾ [ الانعام : ١٥١ ]

“এবং তোমরা মাতা পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫১]

﴿أَنِ ٱشۡكُرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيۡكَ إِلَيَّ ٱلۡمَصِيرُ ﴾ [ لقمان : ١٤ ]

“সুতরাং তুমি আমার প্রতি এবং তোমার মাতা পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।” [সুরা লুকমান, আয়াত: ১৪]

﴿وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ﴾ [ النساء : ١ ]

“এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আরও তাকওয়া অবলম্বন কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১]

সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

«الشِّرْكُ باللهِ وَعُقُوْقُ الْوَالدَيْنِ» .

‌“আল্লাহর সাথে শির্ক করা এবং মাতা পিতার অবাধ্য হওয়া।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন:

«لا يَدْخُلُ الْجنَّةَ قَاطِعُ رَحْمٍ» .

“আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”

মাতা পিতার সাথে ভালো ব্যবহারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ভালো কাজে তাদের কথা মান্য করা, তাদেরকে কোনো কষ্ট না দেওয়া, তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করা।

আত্মীয়তার সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে, তাদের খোঁজ খবর নেওয়া, তাদের বাড়িতে যাওয়া, তাদের সাহায্য করা, তাদের আনন্দ উৎসবে যোগদান করা আর দুঃখ-কষ্টে সমবেদনা জানান, কথা ও কাজে তাদের কোনো রকম কষ্ট না দেওয়া।

৬. আপনি নিজের লজ্জা সম্ভ্রমের হিফাযত করবেন, কণ্ঠস্বরকে সংযত করবেন, চোখের দৃষ্টি হিফাযত করবেন। বিশেষ প্রয়োজন দেখা না দিলে ঘর হতে বের হবেন না। দরজা, বারান্দা কিংবা জানালার সম্মুখে দাড়াবেন না। ব্যালকনি কিংবা ছাদে ঘুরাফিরা না করা। আপনার যে সকল গায়ের মাহরাম আত্মীয় রয়েছে, তাদেরকে আপনার সাথে দেখা-সাক্ষাতের কিংবা পর্দা লংঘনের জন্য অনুমতি দেবেন না। তাদের সাথে একাকী অবস্থান করবেন না। তাদের সাথে হাতে হাত মিলাবেন না। কারণ, তারা গায়েরে মাহরাম আত্মীয় স্বজন। আর আপনার বাড়িতে যদি কোনো মেহমান থাকে, সে যেন আপনার কণ্ঠস্বর শুনতে না পায়।

মহিলাদের মধ্যে যারা দাইউস লজ্জাহীনা তাদের কণ্ঠস্বরই মেহমানরা শুনতে পায়, যদিও সে তার নিজের কক্ষে কথা বলে। অর্থাৎ লজ্জাহীন নারীরাই জোরে কথা বলে। কারণ, মহিলাদের মধ্যে সর্বোত্তম গুণ হচ্ছে, “তারা পুরুষদের দেখবে না আর পুরুষরাও তাদের দেখতে পাবে না।”

৭. প্রতিবেশিনী মেয়েদের খোজ খবর নেওয়া এবং তাদের প্রতি দরদ ও সহানুভূতি দেখানো। তাদেরকে কোনো রকম কষ্ট না দেওয়া। যদি তাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদের সাহায্য সহায়তা করা। তাদেরকে হাদিয়া দেওয়া, যদিও তা হাড্ডিযুক্ত এক টুকরা গোশত হয়।

কারণ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা যেন তার প্রতিবেশিনীকে কুদৃষ্টিতে না দেখে আর প্রয়োজনে এক টুকরা হাড্ডিযুক্ত গোশত দিয়ে হলেও তাকে যেন সাহায্য করে। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

প্রতিবেশীদের প্রতি কতিপয় আধিকার আল্লাহ ওয়াজিব করে দিয়েছেন।

﴿وَٱلۡجَارِ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ﴾ [ النساء : ٣٦ ]

“এবং তোমরা সদ্ব্যবহার কর নিকট আত্মীয় প্রতিবেশী, এবং অনাত্মীয় প্রতিবেশীর সাথে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে বলেছেন:

«مَازَالَ جِبْريِلُ يُوْصِيْنِيْ بِالْجَارِ حَتى ظَنَنْتُ أنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ» .

“আমাকে জিব্রীল আলাইহিস সালাম প্রতিবেশীর অধিকার সম্পর্কে এতো বেশি উপদেশ দিতেন যে, মনে হতো তিনি যেন তাদেরকেই ওয়ারিশ বানাবেন।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

হে মুমিনা! আলোচিত বিষয়টি আপনার জন্য মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। কাজেই এগুলো পালনে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করুন এবং পালন করার জন্য সচেষ্ট হউন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন