মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“যে ব্যক্তি মুয়ায্যিনের আযান শুনেও মসজিদে না গিয়ে ঘরে সালাত পড়লো অথচ তার নিকট মসজিদে উপস্থিত না হওয়ার শরঈ কোনো ওযর নেই তাহলে তার আদায়কৃত সালাত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ওযর বলতে কি ধরণের ওযর বুঝাতে চাচ্ছেন? তিনি বললেনঃ ভয় অথবা রোগ”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৫১; বায়হাকী, হাদীস নং ৫৪৩১।]
উক্ত হাদীসটিতে কবুল ও ওযরের ব্যাখ্যা চাওয়া ছাড়া তার বাকী অংশটুকু শুদ্ধ। তবে উক্ত ব্যাপার দু’টো ওযর তো বটেই।
২. অতি বৃষ্টি কিংবা কাদায় পা পিছলে যাওয়ার ভয় হলে:
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি একদা নিজ মুআয্যিনকে বলেন:
“যখন তুমি আযানের শব্দ “আশ্হাদু আন্না মু’হাম্মাদার-রাসূলুল্লাহ” (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল) বলবে তখন এর পরপরই “হাইয়া আলাস সালাহ” (সালাতের দিকে আসো) শব্দটি বলবে না। বরং বলবে: “সাল্লূ ফি বুয়ূতিকুম” (তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত পড়ে নাও)। যখন তিনি বুঝতে পারলেন সাধারণ লোকজন তাঁর এ কথা মেনে নিতে পারছে না তখন তিনি বললেন: এ কাজটি শুধু আমিই করছি না বরং তা একদা করেছেন আমার চেয়েও অতি মহান ব্যক্তিত্ব তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬১৬, ৬৬৮, ৯০১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯৯।]
৩. ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন ঠাণ্ডা রাতে দমকা বায়ু প্রবাহিত হলে:
আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা একদা দমকা বায়ুময় ঠান্ডা রাত্রিতে আযান দেওয়ার পর বললেন: “আলা স্বাল্লূ ফির-রিহাল” অর্থাৎ হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে ঘরে সালাত পড়ো। অতঃপর বললেন: আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টিময় ঠাণ্ডা রাত্রিতে মুআয্যিনকে নিম্নোক্ত কথাটি বলার আদেশ করতেন:
«أَلَا صَلُّوا فِيْ الرِّحَالِ» .
“হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে ঘরে সালাত পড়ো”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৬৬।]
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে থাকাবস্থায় ঠান্ডা কিংবা বৃষ্টিময় রাত্রিতে মুআয্যিনকে আযান দেওয়ার পর এ কথা বলার আদেশ করতেন “আলা স্বাল্লূ ফির-রি’হাল” অর্থাৎ হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে ঘরে সালাত পড়ো”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩২।]
সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা একদা দমকা বায়ু ও বৃষ্টিময় ঠাণ্ডা রাত্রিতে আযান দেওয়ার পর বললেন: “আলা স্বাল্লূ ফি-রিহালিকুম” “আলা স্বাল্লূ ফির-রিহাল” অর্থাৎ হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে ঘরে সালাত পড়ো। হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে ঘরে সালাত পড়ো। অতঃপর বললেন: আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে থাকাবস্থায় বৃষ্টিময় ঠাণ্ডা রাত্রিতে মুআয্যিনকে নিম্নোক্ত কথাটি বলার আদেশ করতেন:
أَلَا صَلُّوا فِيْ رِحَالِكُمْ» .
“হে মানুষজন! তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত পড়ো”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯৭]
জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফরে গেলে তখন সেখানে বৃষ্টি বর্ষিত হয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
«لِيُصَلِّ مَنْ شَاءَ مِنْكُمْ فِي رَحْلِهِ» .
“তোমাদের কেউ ইচ্ছে করলে সে নিজ ঘরে সালাত আদায় করতে পারে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯৮]
“তোমাদের কেউ খানা খেতে থাকলে সে যেন তা ছেড়ে দ্রুত উঠে না যায় যতক্ষণ না সে তা থেকে নিজ প্রয়োজন পুরো করে। যদিও ইতিমধ্যে সালাতের ইক্বামত হয়ে যায়”।’আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“খাবার উপস্থিত ও তা খাওয়ার প্রতি প্রচুর আগ্রহ অনুভূত হলে তখন আর সে বেলার সালাত জামা‘আতে পড়তে হবে না। তেমনিভাবে মল-মূত্র ত্যাগের প্রচুর বেগ অনুভূত হলেও সে বেলার সালাত আর জামা‘আতে পড়তে হবে না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬০]
৬. কোনো নিকটতম ব্যক্তির মৃত্যু ও তার শেষ সাক্ষাৎ না পাওয়ার আশঙ্কা হলে:
আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি একদা জানতে পারলেন যে, সা’ঈদ্ ইবন যায়েদ ইবন আমর ইবন নাউফাল মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন। তখন ছিলো জুমু‘আর দিন। তবুও তিনি সূর্য আকাশে অনেক দূর উঠে যাওয়ার পরও তাঁর সাক্ষাতের জন্য রওয়ানা হোন। তখন ছিলো জুমু‘আর সালাতের নিকটবর্তী সময়। অতএব তিনি আর সে দিনকার জুমু‘আর সালাত আদায় করতে পারেন নি। [বুখারী, হাদীস নং ৩৯৯০]
আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“কোনো ব্যক্তির শরী‘আতের সত্যিকার বুঝ হচ্ছে এই যে, সে সর্বপ্রথম নিজ প্রয়োজনটুকু সেরে নিবে। অতঃপর সে সকল প্রয়োজনীয় কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে অবসর হয়ে শুধুমাত্র সালাতেই মনোযোগ দিবে”। [সহীহ বুখারী: আযান অধ্যায়, পরিচ্ছদ: যখন খাবার উপস্থিত হয় এবং সালাতের ইক্বামত দেওয়া হয়।]
উক্ত আলোচনা থেকে জানা গেলো যে, সর্বমোট আটটি কারণে জামা‘আতের সালাত ছাড়া যায়। যা সংক্ষেপে নিম্নরূপ:
কোনো এমন রোগ যা মানুষকে দ্রুত দুর্বল ও অতি ব্যস্ত করে দেয়, জীবন, সম্পদ ও ইজ্জতের ভয়, অতি বৃষ্টি, পাঁক-কাদা, ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন ঠান্ডা রাতের দমকা বায়ু, খাবার উপস্থিত ও তা খাওয়ার প্রতি প্রচুর আগ্রহ, মল-মূত্র ত্যাগের প্রচুর বেগ ও কোনো নিকটতম ব্যক্তির মৃত্যু ও তার শেষ সাক্ষাৎ না পাওয়ার আশঙ্কা।
৭. সালাতের নিকটবর্তী সময়ে পিঁয়াজ বা রসুন জাতীয় দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু খেলে:
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিঁয়াজ ও কুর্রাস (দুর্গন্ধযুক্ত এক জাতীয় উদ্ভিদ) খেতে নিষেধ করেছেন। জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: একদা আমরা প্রয়োজনের তাগিদে তা খেলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন: কেউ এ জাতীয় দুর্গন্ধযুক্ত উদ্ভিদ খেলে সে যেন আমাদের মসজিদের নিকটবর্তীও না হয়। কারণ, ফিরিশতাগণ সে জিনিসেই কষ্ট পান যে জিনিসে কষ্ট পায় মানুষ”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬৪।]
তবে প্রয়োজনে এগুলোকে ভালোভাবে সিদ্ধ করে কিংবা পাকিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু একদা জুমু‘আর খুৎবায় এক পর্যায়ে বলেন:
“হে মানব সকল! তোমরা এমন দু’টি উদ্ভিদ খাচ্ছো যা আমি নিকৃষ্ট বলেই মনে করি। তা হলো: পিয়াজ ও রসুন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমন কাজও করতে দেখেছি যে, তিনি মসজিদে কারো থেকে এগুলোর দুর্গন্ধ পেলে তাকে বাকী’ কবরস্থানের দিকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। সুতরাং কেউ এগুলো খেলে সে যেন তা ভালোভাবে পাকিয়ে খায়”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৪২৬।]
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।