মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“যে কেউ সুন্দরভাবে পবিত্রতার্জন করে মসজিদগামী হয় আল্লাহ তা‘আলা তাকে প্রতি কদমের বদৌলতে একটি করে পুণ্য দিবেন ও একটি করে তার মর্যাদা উন্নীত করবেন এবং একটি করে তার গুনাহ মুছে দিবেন”।
২. মসজিদে আসার আগে দুর্গন্ধময় যে কোনো জিনিস খাওয়া বা ব্যবহার করা থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে:
জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে ব্যক্তি পিয়াজ, রসুন ও কুর্রাস (পিয়াজ জাতীয় সমঘ্রাণের এক প্রকার উদ্ভিদ) খেলো সে যেন আমাদের মসজিদের নিকটবর্তী না হয়। কারণ, আদম সন্তান যে জিনিসে কষ্ট পায় তাতে ফিরিশতাগণও কষ্ট পান”।
৩. সাধ্য মতো সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ পরেই মসজিদে আসবে:
“হে আদম সন্তানরা! তোমরা (জামা‘আতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে) যে কোনো মসজিদের নিকটবর্তী হতে চাইলে সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ গ্রহণ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩১]
আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْـجَمَالَ» .
“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকেই ভালোবাসেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯১]
৪. ঘর থেকে বের হওয়ার দো‘আগুলো পড়ে নিবে এবং শুধুমাত্র সালাতের নিয়্যাতেই ঘর থেকে বের হবে:
ঘর থেকে বের হওয়ার দো‘আগুলো নিম্নরূপ:
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন কোনো ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে: بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ যার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার নামে এবং তাঁর ওপর ভরসা করেই ঘর থেকে বের হচ্ছি। কোনো অন্যায় কাজ থেকে বাঁচার শক্তি এবং কোনো পুণ্যময় কাজ করার ক্ষমতা একমাত্র তিনিই দিয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন (উক্ত দো‘আ পড়ে ঘর থেকে বের হওয়া ব্যক্তিকে) বলা হয়: তুমি হিদায়াতপ্রাপ্ত, তোমার জন্য তা একেবারেই যথেষ্ট ওপরন্তু তুমি একান্ত নিরাপদ। তখন শয়তানগুলো তার কাছ থেকে সরে যায়। আর তখন অন্য শয়তান তাকে বলে: এমন ব্যক্তিকে নিয়ে তোমার আর কিই বা করার আছে যে হিদায়াতপ্রাপ্ত, যার জন্য উক্ত দো‘আই যথেষ্ট এবং যে নিরাপদ”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫০৯৫ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪২৬]
উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই আমার ঘর থেকে বেরিয়েছেন তখনই তিনি আকাশের দিকে চোখ উঁচিয়ে বলেছেন: اللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أُزَلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ اَوْ يُجْهَلَ عَلَىَّ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আমি নিশ্চয় আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পথ ভ্রষ্টতা থেকে কিংবা অন্যকে পথ ভ্রষ্ট করানো থেকে, পদস্খলন থেকে কিংবা অন্যকে পদস্খলন করানো থেকে, যুলুম থেকে কিংবা অন্যের ওপর যুলুম করা থেকে এবং মূর্খতা থেকে কিংবা অন্যের সাথে মূর্খতা প্রদর্শন থেকে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫০৯৪ তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪২৭ ইবন মাজাহ্, হাদীস নং ৩৮৮৪]
একদা আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাঁর খালা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী মাইমূনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে রাত্রি যাপন করেছেন। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঘর থেকে সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বের হওয়ার সময় নিম্নোক্ত দো‘আ পড়তে শুনেছেন:
“হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে আলো দিন, আমার জিহবায় আলো দিন, আমার শ্রবণ শক্তিতে আলো দিন, আমার দৃষ্টি শক্তিতে আলো দিন, আমার পেছনে আলো দিন, আমার সামনে আলো দিন, আমার উপরে আলো দিন, আমার নিছে আলো দিন, আমার ডানে আলো দিন, আমার বাঁয়ে আলো দিন, আমার প্রবৃত্তিতে আলো দিন, আমার আলো আরো অনেক বাড়িয়ে দিন, আমার জন্য আলো দিন, আমাকে আলোময় বানিয়ে দিন, আমাকে আলো দিন, আমার স্নায়ুতে আলো দিন, আমার গোস্তে আলো দিন, আমার রক্তে আলো দিন, আমার চুলে আলো দিন, এমনকি আমার শরীরের চামড়ায়ও আলো দিন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬৩।]
৫. মসজিদের দিকে যাওয়ার সময় আঙ্গুলগুলোর একটিকে অপরটিতে ঢুকিয়ে দিবে না এমনকি সালাতেও নয়:
কা‘ব ইবন উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তোমাদের কেউ ভালোভাবে অযু করে জামা‘আতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বেরুলে সে যেন আঙ্গুলগুলোর একটিকে অপরটিতে ঢুকিয়ে না দেয়। কারণ, সে তো তখন যেন সালাতেই রয়েছে”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩৮৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬২।]
৬. ধীরে-সুস্থে মসজিদের দিকে রওয়ানা করবে:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন তোমরা সালাতের ইক্বামত শুনো তখন তোমরা ধীরে-সুস্থে তথা ভদ্রতার সাথে সালাতের দিকে রওয়ানা করো। তোমরা অতি দ্রুত সালাতের দিকে যেও না। অতঃপর তোমরা যতোটুকু সালাত ইমাম সাহেবের সাথে পাও পড়ে নাও। আর বাকিটুকু পুরা করে নাও”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬, ৯০৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬০২।]
“যখন সালাতের ইক্বামত দেওয়া হয় তখন তোমরা সালাতের দিকে দৌড়ে এসো না। বরং ধীরে-সুস্থে হেঁটে এসো। অতঃপর ইমাম সাহেবের সাথে যতোটুকু সালাত পাও পড়ে নাও। আর বাকিটুকু পুরা করে নাও”।
৭. মসজিদে ঢুকার আগে নিজের জুতা-জোড়া ভালোভাবে দেখে নিবে এবং তাতে নাপাক দেখলে মাটি দিয়ে ঘষে নিবে:
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে আসে তখন সে যেন তার জুতা জোড়া ভালোভাবে দেখে নেয়। অতঃপর সে যদি তাতে কোনো নাপাক বা ময়লা দেখতে পায় তা হলে সে যেন তা কোনো কিছু দিয়ে মুছে ফেলে এবং উক্ত জুতা পরেই সালাত পড়ে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫০; ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১০১৭।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠায়। অতঃপর বলে: اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহ্মতের দরোজাগুলো খুলে দিন। আর যখন সে মসজিদ থেকে বের হয় তখন সে যেন বলে: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْاَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট সমূহ কল্যাণ কামনা করি”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫।]
“যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন তিনি বলতেন: بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি এবং আল্লাহর রাসূলের ওপর যথাযোগ্য সালাম বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আপনি আমার সকল গুনাহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার রহ্মতের সকল দরোজা খুলে দিন”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৮।]
আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন:
“তোমরা কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা খাঁটি ঈমানদার হবে। আর কখনো তোমরা খাঁটি ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমাদের মাঝে পরস্পর ভালোবাসা ও সৌহার্দ জন্ম নিবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ শিখিয়ে দেবো না যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসবে। তোমরা নিজেদের মাঝে সালামের বিপুল বিস্তার ঘটাও”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৪।]
“তিনটি জিনিস যার মধ্যে এর সবগুলোই থাকবে সেই হচ্ছে পরিপূর্ণ ঈমানদার। সেগুলো হচ্ছে, নিজের ব্যাপারে ইন্সাফ প্রতিষ্ঠা করা, সবাইকে সালাম দেওয়া এবং নিজের প্রচুর প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও ধন-সম্পদ আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা”। [সহীহ বুখারী/কিতাবুল-ঈমান/বাবু ইফ্শায়িস-সালাম।]
১০. মসজিদে ঢুকার সময়টি কোনো ফরয সালাতের সময় না হয়ে থাকলে অন্ততপক্ষে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত পড়ে নিবে: আর তা কোনো ফরয সালাতের সময় হয়ে থাকলে তদুপরি নিজ ঘরে সে সালাতের নিয়মিত সুন্নাতটুকু না পড়ে থাকলে উক্ত সুন্নাতটুকু মসজিদেই পড়ে নিবে। এতে করে মসজিদে ঢুকে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায়ের দায়িত্বটুকু আদায় হয়ে যাবে। আর সে সালাতের নিয়মিত সুন্নাতটুকু নিজ ঘরে পড়ে থাকলে মসজিদে এসে শুধু দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাতই পড়ে নিবে। এমনকি সে সালাতের আগে কোনো নিয়মিত সুন্নাত না থাকলে কমপক্ষে সে সালাতের আযান ও ইক্বামতের মধ্যকার দু’ রাকাত নফল সালাতই আদায় করে নিবে। এতে করে মসজিদে ঢুকে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায়ের দায়িত্বটুকুও আদায় হয়ে যাবে।
আবু ক্বাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন অন্ততপক্ষে দু’ রাকাত তাহিয়্যাতুল-মাসজিদের সালাত আদায় না করে না বসে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১৪।]
১১. মসজিদে ঢুকে পায়ের জুতা জোড়া পা থেকে খুলে ফেললে তা দু’ পায়ের মাঝখানে কিংবা জুতা রাখার নির্দিষ্ট জায়গায় রাখবে:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন তোমাদের কেউ (মসজিদে) সালাত আদায় করতে এসে নিজ জুতা জোড়া পা থেকে খুলে ফেলে তখন সে যেন তা দিয়ে কাউকে কষ্ট না দেয়। সে যেন জুতা জোড়া নিজ দু’ পায়ের মাঝখানে রাখে অথবা তা পরেই সালাত পড়ে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫৫।]
“যখন তোমাদের কেউ (মসজিদে) সালাত আদায় করতে আসে তখন সে যেন নিজ জুতা জোড়া পা থেকে খুলে নিজের ডানে কিংবা বাঁয়ে না রাখে। কারণ, তা সে ব্যক্তির বাঁ দিক হলেও তা কিন্তু অন্য মুসল্লির ডান দিক। তবে তার বাঁ দিকে কোনো মুসল্লি না থাকলে তা আর অন্য মুসল্লির ডান হচ্ছে না। বরং সে যেন তার জুতা জোড়া নিজ দু’ পায়ের মাঝখানেই রাখে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫৪।]
কারোর পায়ে ফিতা বিশিষ্ট কোনো জুতা কিংবা মোজো পরা থাকলে যা পা থেকে খোলা খানিকটা কষ্টকর তা হলে তা পরেই সালাত পড়া সুন্নাত: তবে মসজিদে ঢুকার পূর্বে নিজ জুতা জোড়া ভালোভাবে দেখে নিবে। তাতে কোনো নাপাক বা ময়লা দেখলে তা অতি সত্বর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবে। যাতে করে মসজিদের কার্পেট, পাটি ইত্যাদি নষ্ট না হয়। অতঃপর তা পরেই সালাত পড়বে।
শাদ্দাদ ইবন আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“আযান ও প্রথম সারিতে সালাত পড়ায় এতো বেশি সাওয়াব রয়েছে তা যদি মানুষ জানতে পারতো অতঃপর তা পাওয়ার জন্য লটারি দেওয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর না থাকতো তা হলে তারা তা পাওয়ার জন্য অবশ্যই লটারি দেওয়ারই আয়োজন করতো”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩৭।]
বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে সালাত পড়তাম তখন আমরা তাঁর ডান দিকে দাঁড়ানো পছন্দ করতাম। তিনি সালাত শেষে আমাদের দিকে ফিরে বসতেন। আমি একদা তাঁর মুখ থেকে শুনতে পেলাম তিনি বলছেন: رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ أَوْ تَجْمَعُ عِبَادَكَ যার অর্থ: হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে কিয়ামতের দিনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। যে দিন আপনি আপনার সকল বান্দাহ্কে পুনরুত্থিত তথা কিয়ামতের মাঠে একত্রিত করবেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭০৯।]
১৩. ক্বিব্লামুখী হয়ে বসে কুর’আন মাজীদ তিলাওয়াত কিংবা যিকির-আয্কার করবে:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“প্রত্যেক জিনিসেরই একটি উত্তম বা শ্রেষ্ঠ দিক রয়েছে। অতএব, বৈঠকের মধ্যে উত্তম বা শ্রেষ্ঠ বৈঠক হচ্ছে ক্বিব্লামুখী বৈঠক”। [ত্বাবারানী/আওসাত, হাদীস নং ২৩৫৪।]
১৪. ইমাম সাহেব আসা পর্যন্ত সালাতের অপেক্ষার নিয়্যাতেই বসে থাকবে। এমন সময় দীর্ঘক্ষণ অযু রাখারই চেষ্টা করবে:
কারণ, জামা‘আতে সালাত আদায়ের জন্য অপেক্ষমান থাকলে ততক্ষণ নফল সালাত আদায়েরই সাওয়াব পাওয়া যায়। এমনকি সালাতের পূর্বে কিংবা পরে সালাতের জায়গায় বসে থাকলে ফিরিশতাগণের দো‘আও পাওয়া যায়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে কোনো ব্যক্তিকে সালাতরত বলে ধরে নেওয়া হয় যতক্ষণ সে সালাতের জায়গায় বসে সালাতেরই অপেক্ষায় থাকে। আর ফিরিশতাগণ তার জন্য এ বলে দো‘আ করেন: হে আল্লাহ! আপনি একে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি একে দয়া করুন। যতক্ষণ না সে উক্ত জায়গা থেকে সরে যায় অথবা অযু ভঙ্গ হয় এমন কিছু ঘটায়। বর্ণনাকারী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি বললামঃ অযু ভঙ্গ হয় এমন কিছু ঘটানো মানে? তিনি বললেন: যেমন, বায়ু ত্যাগ করা”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৪৯।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য আরেকটি বর্ণনায় বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“আর যখন সে মসজিদে প্রবেশ করে তখন তাকে সালাতরত বলেই ধরে নেওয়া হয় যখন একমাত্র সালাতই তাকে সেখানে আটকে রাখলো। এমনকি ফিরিশতাগণ তোমাদের কারোর জন্য যতক্ষণ সে সালাত শেষে সালাতের জায়গায় বসে থাকে এ বলে দো‘আ করেন: হে আল্লাহ! আপনি একে দয়া করুন। হে আল্লাহ! আপনি একে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি এর তাওবা কবুল করুন। যতক্ষণ না সে মানুষ ও ফিরিশতাগণ কষ্ট পায় এবং অযু ভঙ্গ হয় এমন কিছু ঘটায়”।
১৫. কোনো ফরয সালাতের ইক্বামত দেওয়া হলে তখন শুধু উক্ত ফরয সালাতই আদায় করতে হবে। অন্য কোনো সুন্নাত বা নফল সালাত নয়:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যখন কোনো ফরয সালাতের ইক্বামত দেওয়া হয় তখন উক্ত ফরয সালাত ছাড়া অন্য কোনো সালাত পড়া যাবে না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১০।]
আব্দুল্লাহ ইবন সারজিস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত পড়ছিলেন। লোকটি মসজিদে ঢুকেই তার এক পার্শ্বে গিয়ে দু’ রাকাত সালাত আদায় করে অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে জামা‘আতে শরীক হলো। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের সালাম ফিরালেন তখন তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
“হে অমুক! তুমি কোনো সালাতটিকে ফজরের সালাত বলে গণ্য করলে? তোমার একা পড়া দু’ রাকাত না কি আমাদের সাথে পড়া দু’ রাকাত”? [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১২; আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৬৫।]
১৬. মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বাম পা আগে বাড়িয়ে দিবে অথচ ঠিক এরই বিপরীতে মসজিদে ঢুকার সময় ডান পাই আগে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো:
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথাসাধ্য প্রতিটি কাজ ডান দিক থেকে শুরু করাই পছন্দ করতেন। পবিত্রতার্জন, মাথা আঁছড়ানো এমনকি জুতা পরায়ও”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪২৬।]
“সুন্নাত হচ্ছে, যখন তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে তখন ডান পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে প্রবেশ করবে। আর যখন মসজিদ থেকে বের হবে তখন বাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে বের হবে”। [হাকিম, হাদীস নং ৭৯১; বায়হাক্বী, হাদীস নং ৪৪৯৪।]
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নিম্নোক্ত দো‘আটি পাঠ করবে:
“যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন প্রথমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠায়। অতঃপর বলে: اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহ্মতের দরোজাগুলো খুলে দিন। আর যখন সে মসজিদ থেকে বের হয় তখন সে যেন বলে: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْاَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট সমূহ কল্যাণ কামনা করি”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৫; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৯।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন প্রথমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠায় অতঃপর বলে: اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরোজাগুলো খুলে দিন। আর যখন সে মসজিদ থেকে বের হয় তখন সে যেন প্রথমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠায় অতঃপর বলে: اللَّهُمَّ اعْصِمْنِيْ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ যার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করুন”। [ইবন মাজাহ্, হাদীস নং ৭৮০]
“যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন তিনি বলতেন: بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ যার অর্থ: আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি এবং আল্লাহর রাসূলের ওপর যথাযোগ্য সালাম বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আপনি আমার সকল গুনাহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরোজা খুলে দিন”। [ইবন মাজাহ্, হাদীস নং ৭৭৮]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/72/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।