মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানুষ স্বাধীন সত্তা হিসাবেই জন্মগ্রহণ করে। সে স্বাধীনভাবেই হাসে-কাঁদে ও চলাফেরা করে। যার যা স্বভাব ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টি করেন, সে সেই স্বভাব ও বুদ্ধিমত্তা নিয়েই চলে। কিন্তু যখন সে বড় হয় এবং তার কথা ও কর্ম সমাজে প্রভাব ফেলে, তখন স্বভাবতই তার সবকিছুতে একটা নিয়ন্ত্রণ পরিলক্ষিত হয়। সে আর মুক্ত বিহঙ্গের মত চলতে পারে না। কিন্তু এই নিয়ন্ত্রণ তাকে মার্জিত করে ও সমাজে তাকে সম্মানিত করে। এই নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হ’লেই সে হয় স্বেচ্ছাচারী এবং সমাজে হয় অসম্মানিত। ফলে শৈশবের স্বেচ্ছাচারিতা গ্রহণযোগ্য ও উপভোগ্য হ’লেও পরিণত বয়সে তা হয় অগ্রহণযোগ্য। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য। স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বাধীনতার পার্থক্য এখানেই।
মানুষের এই স্বাধীনতা তার চিন্তা ও চেতনায়, কথায় ও কর্মে, পরিবারে ও সমাজে এবং পৃথিবীর সর্বত্র। যুগে যুগে মানুষের উক্ত স্বাধীন চেতনা যখনই বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, তখনই সে ফুঁসে উঠেছে। এটা যখন ব্যাপক রূপ নিয়েছে, তখনই রাষ্ট্র বিভক্ত হয়েছে। উপমহাদেশ সহ পৃথিবীতে যেখানেই মুক্তি সংগ্রাম হয়েছে, সব জায়গায় চেতনা ছিল একটাই- যুলুম থেকে বাঁচা এবং নিজেদের জান-মাল ও ইযযতের স্বাধীনতা রক্ষা করা। স্বাধীনতার মূল দর্শন এখানেই। এই দর্শন কি বাস্তবতার মুখ দেখেছে? যাদের চেষ্টায় ও যাদের রক্তে এদেশ দু’বার স্বাধীন হয়েছে, তাদের সে স্বপ্ন কি পূরণ হয়েছে? নাকি নৈরাশ্যের অন্ধকারে হারিয়ে গেছে।
মানব জাতির এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে শেষনবী (ছাঃ) এসেছিলেন মক্কায়। সকলকে তিনি দাওয়াত দিলেন আল্লাহর দাসত্বের প্রতি। দাওয়াত দিলেন অহি-র বিধানের প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্যের। দেখা দিল প্রতিক্রিয়া। অপবাদ ও নির্যাতন শুরু হয়ে গেল তাঁর ও তাঁর সাথীদের উপর। নির্যাতিত ছাহাবী খাববাব ইবনুল আরিত একদিন এসে কা‘বা চত্বরে শায়িত চিন্তান্বিত রাসূলকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাদের জন্য দো‘আ করবেন না? তখন রাগান্বিত রাসূল উঠে বসে বললেন, তোমাদের পূর্বেকার লোকদের গর্তের মধ্যে ফেলে মাথা থেকে পুরা দেহ করাতে চিরে দু’ভাগ করে ফেলা হয়েছে। তবুও তাদেরকে তাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। কাউকে লোহার চিরুনী দিয়ে আঁচড়িয়ে দেহের হাড্ডি থেকে গোশত ও শিরা ছাড়িয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। তবুও তারা তাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়নি। মনে রেখ আল্লাহর এই শাসন অবশ্যই পূর্ণতা লাভ করবে এবং এমন (নিরাপদ) অবস্থা আসবে যে, একজন আরোহী (ইয়ামনের রাজধানী) ছান‘আ থেকে হাযারা মাউত পর্যন্ত একাকী ভ্রমণ করবে। কিন্তু কাউকে ভয় করবে না কেবল আল্লাহকে ব্যতীত এবং তার মেষপালের উপর নেকড়ের হামলার ভয় ব্যতীত’ (বুখারী, মিশকাত, হা/৫৮৫৮)। এই কথা যখন রাসূল (ছাঃ) বলছেন, তখন তিনি ছিলেন মক্কায় শত্রুবেষ্টিত। তিনি ও তাঁর সাথীরা সেখানে ছিলেন সর্বদা নির্যাতিত। অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকল। সকলে একে একে মক্কা ছেড়ে হাবশা ও ইয়াছরিবে হিজরত করল। অবশেষে রাসূল (ছাঃ)ও হিজরত করলেন ইয়াছরিবে। এক্ষণে ইয়াছরিব হ’ল ‘মদীনা’। মক্কার চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেকটা শান্তি এখানে। কিন্তু না। কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হ’ল ইহুদী ও মুনাফিকদের অপতৎপরতা। আবার অস্ত্রের ঝনঝনানি। পুনরায় অশান্তি ও সেই সাথে অন্নকষ্ট। একদিন জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, হে রাসূল! কতদিন আমাদেরকে এই ভীতি ও অন্নকষ্টে কাটাতে হবে! জওয়াবে রাসূল (ছাঃ) সেখানে উপবিষ্ট আদী ইবনু হাতেমকে উদ্দেশ্য করে বললেন, যদি তোমার হায়াত দীর্ঘ হয়, তবে তুমি দেখবে যে, অবস্থা এমন শান্তিময় হবে, যখন (ইরাকের) ‘হীরা’ নগরী থেকে একজন পর্দানশীন গৃহবধু একাকী নিঃসঙ্গ অবস্থায় মক্কায় যাবে ও বায়তুল্লাহর তাওয়াফ শেষে পুনরায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় নিরাপদে ফিরে আসবে। অথচ সে আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় পাবে না। যদি তোমার হায়াত দীর্ঘ হয়, তবে তুমি দেখবে যে, কিসরার ধনভান্ডার বিজিত হবে। যদি তোমার হায়াত দীর্ঘ হয়, তবে তুমি দেখবে যে, মানুষ ঘর থেকে মুঠো ভর্তি স্বর্ণ ও রৌপ্য নিয়ে বের হবে, কিন্তু নেওয়ার মত কোন প্রার্থী খুঁজে পাবে না। রাবী ‘আদী বিন হাতেম (রাঃ) বলেন, পর্দানশীন কুলবধুকে আমি একাকী ‘হীরা’ থেকে মক্কায় ভ্রমণ করতে দেখেছি, কিসরার ধনভান্ডার বিজয়ে আমি নিজে অংশ নিয়েছি। এক্ষণে যদি তোমাদের হায়াত দীর্ঘ হয়, তবে তোমরা অবশ্যই সেটা দেখবে, যা আবুল কাসেম (মুহাম্মাদ (ছাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, তোমরা মুঠোভর্তি স্বর্ণ-রৌপ্য নিয়ে বের হবে, অথচ প্রার্থী খুঁজে পাবে না’ (অর্থাৎ দারিদ্র্য থাকবে না)। (বুখারী, মিশকাত, হা/৫৮৫৭)।
বেশী দিন লাগেনি। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর মাত্র এক যুগের মধ্যেই ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এত বেশী অর্থ জমা হয়েছিল যে, তিনি ইসলামী খেলাফতের সর্বত্র গরীবদের তালিকা করে তাদের কাছে রাষ্ট্রীয় ভাতা পৌঁছাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, যদি আমি বেঁচে থাকি, তবে বায়তুলমালে কোন অর্থ আমি সঞ্চিত রাখব না। সবাইকে এমনকি ছান‘আর পাহাড়ে অবস্থানকারী মেষপালককেও আমি তার ঘরে রাষ্ট্রীয় ভাতা পৌঁছে দেব’ (কিতাবুল খারাজ ইত্যাদি)। ওমর (রাঃ) জুম‘আর খুৎবা দিতে মিম্বরে বসেছেন। জনৈক মুছল্লী বললেন, বায়তুল মাল থেকে সবার ভাগে যে কাপড় বণ্টিত হয়েছে, আপনার গায়ের জামা তার চেয়ে বড় দেখছি, কারণ বলুন! ওমর তার বড় ছেলের দিকে তাকালেন। ছেলে দাঁড়িয়ে বলল, আমার পায়জামার ভাগেরটা আববাকে দিয়েছি, যাতে ওনার গায়ের জামাটা দীর্ঘ হয়’। অতঃপর তিনি খুৎবায় দাঁড়ালেন (ইবনুল জাওযী, সীরাতে ওমর ইত্যাদি)। এটাই হ’ল ইসলামী খেলাফতের অধীন জনগণের বাক স্বাধীনতা ও সরকারের জবাবদিহিতার নমুনা।
অথচ আধুনিক যুগের শাসনে আমরা কি দেখছি? দলীয় সরকার বা দলনেতারা যাকেই বিরোধী ভাবছেন, তাকেই বঞ্চিত করছেন তার ন্যায্য অধিকার থেকে। ওএসডি ও পানিশমেন্ট ট্রান্সফারের ভয়ে আতংকিত সবাই। ২৫ ফেব্রুয়ারী ’০৯ পিলখানার মর্মান্তিক ট্রাজেডীর পর ১লা মার্চ সেনাকুঞ্জে ক্ষুব্ধ সেনা সদস্যগণ মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীকে তাদের ক্ষোভ ও দুঃখ-বেদনার কথা প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন একজন মহিলা ক্যাপ্টেন সহ যে সাতজন সেনা কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন, তাদেরকে পরে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এটা কেমনতরো বাক স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতার নমুনা হ’ল? মানুষ কখন কার রোষানলে পড়বে, আর জবাই হ’য়ে বা গুলি খেয়ে পড়ে মরে থাকবে কিংবা কখন কার ইঙ্গিতে রাতের অন্ধকারে এসে তুলে নিয়ে গিয়ে খতম, গুম অথবা পঙ্গু করবে অথবা মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠাবে, তার কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। এখন রাস্তাঘাটে তো বটেই, নিজ বাড়ীতেও নারীর ইযযতের গ্যারান্টি নেই। অন্নকষ্টে জর্জরিত মা নিজ হাতে নিজ সন্তানকে মেরে ফেলছে ও নিজে আত্মহত্যা করছে। কেউবা সন্তান বিক্রি করছে। চাঁদাবাজের ভয়ে মানুষ আজ তটস্থ। ফলে ‘স্বাধীনতা দিবস’ এখন আর কারো অন্তরে আবেগ সৃষ্টি করে না। যা কেবল টি-ভি পর্দায় দেখা যায়, মনের পর্দায় নয়। তবুও স্বাধীনতার চেতনা আছে, থাকবে। আল্লাহ প্রদত্ত স্বাধীনতার দর্শন থাকবে চির অম্লান, চির জাগরুক। আমরা আমাদের জান-মাল ও ইযযতের নিরাপত্তা চাই। সকল প্রকার যুলুম থেকে মুক্তি চাই। মযলূম মানবতার পক্ষে বিশ্বপালক আল্লাহর নিকটে স্বাধীনতার এ মাসে এটাই আমাদের একমাত্র প্রার্থনা।
[1]. আত-তাহরীক ১৩তম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা মার্চ ২০১০।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/760/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।