মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ভূমন্ডল ও নভোমন্ডল ও এর মধ্যস্থিত সবকিছু মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর একক পরিকল্পনায় সৃষ্ট ও একক ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত, এ বিশ্বাসই হ’ল তাওহীদ দর্শন। বিশ্বচরাচরের উদ্ভাবন ও পরিচালনায় আল্লাহর কোন শরীক ও সহযোগী নেই। তিনি অদৃশ্যে থেকে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সবকিছুকে অনস্তিত্ব হ’তে অস্তিত্বে এনেছেন। প্রত্যেকের স্বতন্ত্র স্বভাবধর্ম ও পরিচালনার বিধান দিয়েছেন। সে মোতাবেক চলছে সকল সৃষ্টি আপনাপন গতিপথে ও বিধিবদ্ধ নিয়মে। যার কোন ব্যত্যয় নেই, ব্যতিক্রম নেই। নভোমন্ডলের তারকারাজি চলছে জ্যোতি বিলিয়ে স্ব স্ব কক্ষপথে। বায়ু প্রবাহ চলছে মৃদুমন্দ বাতাস ছড়িয়ে। মেঘমালা ছুটে চলেছে নির্ধারিত স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টি বর্ষণ করে। নদী-সাগর চলছে অদৃশ্য জোয়ার-ভাটার টানে সুসংবদ্ধ শৃংখলার মধ্যে। মিষ্ট পানি ও তীব্র লোনায় তিক্ত সমুদ্রের দু’টি স্রোতধারা চলছে পাশাপাশি। অথচ কেউ কারু মধ্যে মিশে যাচ্ছে না। দুপুরের ঝকঝকে রোদ হারিয়ে যাচ্ছে বিকালের পড়ন্ত বেলায়। অতঃপর মুখ লুকাচ্ছে সাঁঝের আঁধারে। তারপর হারিয়ে যাচ্ছে গভীর রাতের নিকষ কালো চাদরে। আবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠছে প্রভাত সমীরণের সস্নেহ পরশে। অতঃপর আলস্য ঝেড়ে বেরিয়ে পড়ছে সকালের কাঁচা রোদের বিস্তীর্ণ সৈকতে। ঘুমন্ত ভূমন্ডল মুখর হয়ে উঠছে কর্মচাঞ্চল্যে। সবই চলছে অদৃশ্য বিধায়কের সুনিপুণ বিধান মতে। যদি বিধায়ক একাধিক হ’ত এবং বিধানের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকত, তাহ’লে সৃষ্টিজগতের সকল শৃংখলা বিনষ্ট হ’ত। চিকিৎসা বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, সৌরবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান কোনকিছুরই অস্তিত্ব থাকত না। একই রোগ লক্ষণে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন রোগীর একই ঔষধে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে। একই সৌর বিধান পুরা সৌরলোকে কার্যকর থাকায় সেখান থেকে কল্যাণ আহরণ সহজ হচ্ছে। একই জীব বিজ্ঞানে সকল জীব বৈচিত্র্যের সন্ধান মিলছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা ও বিধান দাতা পৃথক হ’লে এই ব্যবস্থাপনা লন্ডভন্ড হয়ে যেত। ‘যদি আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে বহু মা‘বূদ থাকত, তাহ’লে উভয়টিই ধ্বংস হয়ে যেত’ (আম্বিয়া ২১/২২)।
অন্যান্য সৃষ্টির সঙ্গে মানুষের পার্থক্য এই যে, তাকে জ্ঞান দান করা হয়েছে তার প্রভু ও প্রতিপালককে চেনার জন্য এবং তার নিজের ভাল-মন্দ বুঝার জন্য। কিন্তু মানুষের এই জ্ঞান পূর্ণাঙ্গ নয়, যে তার ভবিষ্যৎ মঙ্গলামঙ্গলের যথার্থ নির্দেশনা দিতে পারে। সেকারণ মহান আল্লাহ দয়া পরবশ হয়ে নবী ও রাসূলগণের মাধ্যমে যুগে যুগে তাঁর বিধানসমূহ নাযিল করেছেন। সবশেষে আদেশ-নিষেধ, ইতিহাস-উপদেশ ও বিজ্ঞান সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শরী‘আত প্রেরণ করেছেন এবং শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে এককভাবে মানব জাতির জন্য ‘উসওয়ায়ে হাসানাহ’ বা সর্বোত্তম আদর্শ (আহযাব ৩৩/২১) হিসাবে পেশ করেছেন। তাঁর মাধ্যমে প্রেরিত ইসলামী বিধানই মানবজাতির জন্য একমাত্র অনুসরণীয় ও পালনীয় বিধান। ‘ইসলামের বাইরে কোন দ্বীন আল্লাহ কবুল করবেন না’ (আলে ইমরান ৩/৮৫)। আল্লাহ এক, তাঁর শেষনবী এক, তাঁর প্রেরিত বিধান এক। এই এক-এর বাইরে কোন দুই নেই। আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই এক-এর কাছে, যিনি অদৃশ্যে আছেন আমাদের দৃষ্টির অন্তরালে। দুনিয়াবী চক্ষুকে দুনিয়াতে যাকে দেখার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। যেমন ক্ষমতা দেওয়া হয়নি দেহের অভ্যন্তরে লুক্কায়িত আত্মাকে দেখার। অথচ রূহের বাস্তবতাকে অস্বীকার করলে নিজের অস্তিত্বই আর অবশিষ্ট থাকে না।
প্রাণীজগতের সর্বত্র একই জৈববিধান কার্যকর থাকায় সর্বত্র যেমন ঐক্য ও শৃংখলা বিরাজ করছে, মানুষের সমাজ জীবনের সর্বত্র তেমনি একক এলাহী বিধান চালু থাকলে সর্বত্র একই ঐক্য ও শৃংখলা বিরাজ করবে। অন্য সৃষ্টির জন্য স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। কিন্তু মানুষের জ্ঞানকে পরীক্ষা করার জন্য তাকে চিন্তা ও কর্মের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সে আল্লাহর প্রেরিত সামাজিক বিধানের আনুগত্য করবে, না তার প্রবৃত্তির পূজা করবে? যদি সে প্রবৃত্তির পূজা ছেড়ে আল্লাহর বিধানের আনুগত্য করে, তবে সেটাই হবে ‘তাওহীদে ইবাদত’। এই তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্যই জিন ও ইনসানকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন (যারিয়াত ৫১/৫৬)। এ তাওহীদ প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় বাধা হ’ল শয়তান। যে প্রবৃত্তিরূপে এবং সঙ্গী-সাথী ও নেতা রূপে সর্বদা মানুষকে এপথ থেকে ফিরিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জান্নাত পিয়াসী মুমিন সর্বদা এপথে দৃঢ় থাকে। কোন লোভ ও প্রতারণা তাকে আল্লাহর দাসত্ব থেকে এক চুল নড়াতে পারে না। দুনিয়াবী সব ক্ষতি সে হাসিমুখে বরণ করে নেয় কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহ প্রেরিত সত্যকেই সে সত্য বলে আঁকড়ে ধরে। কোন ভয় ও যুক্তিবাদ কিংবা পরিস্থিতির দোহাই তাকে পথচ্যুত করতে পারে না। জান্নাতে ফিরে যাওয়ার উদগ্র বাসনায় সে হয় অসম সাহসী মুজাহিদ। তাইতো দেখা যায় তৎকালীন দুনিয়ার দুর্ধর্ষ শাসক ফেরাঊনের হুমকিতে ভীত হয়নি সদ্য ঈমান আনা জাদুকরগণ। ভীত হয়নি আছহাবুল উখদূদের সত্তর হাযার ঈমানদার নর-নারী। ভীত হয়নি খাববাব, খোবায়েব, বেলাল ও ইয়াসির পরিবার। আজও ভীত হবে না প্রকৃত মুমিন নর-নারী। শয়তানকে পরাভূত করার জন্য মাত্র একটি দর্শনই তাদের মধ্যে কাজ করে। আর তা হ’ল ‘তাওহীদ দর্শন’। আল্লাহর একত্বের দর্শন। তাঁর বিধানের প্রতি অটুট আনুগত্যের দর্শন। পরকালীন মুক্তি ও চিরস্থায়ী শান্তির দর্শন।
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ দর্শনের বিপরীত হ’ল নাস্তিক্যবাদী দর্শন। তাদের ধারণা মতে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই। সবকিছু আপনা থেকেই চলছে। হঠকারী অন্তর ব্যতীত এদের কাছে কোন যুক্তি নেই। যদি বলা হয়, লেখা আছে লেখক নেই, কথা আছে কথক নেই, এটা কি সম্ভব? তেমনিভাবে সৃষ্টি আছে, অথচ সৃষ্টিকর্তা নেই, সেটা কিভাবে সম্ভব? যদি বলা হয়, মুর্গী আগে জন্মেছে না ডিম? পিতামাতা আগে জন্মেছে না সন্তান? এর কোন জবাব নেই। কেবলি আছে একটা অবিশ্বাসী ও হঠকারী অন্তর।
তাওহীদের বিপরীত আরও তিনটি দর্শন রয়েছে, যা তাওহীদের মুখোশ পরে তাওহীদের ধ্বংস কাজে নিয়োজিত। ১. অসীলা দর্শন ২. অদ্বৈত দর্শন ৩. ধর্মনিরপেক্ষ দর্শন।
প্রথমটির দাবী মতে কোন মৃত নেককার ব্যক্তির অসীলা ব্যতীত আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করা সম্ভব নয়। এজন্য তারা মৃত ব্যক্তির মূর্তি বা কবরে পূজা দেয় ও সেখানে গিয়ে প্রার্থনা করে। মক্কার মুশরিকরা এটা করত (যুমার ৩৯/৩)। দ্বিতীয়টির দাবী মতে সৃষ্টি সবকিছু স্রষ্টার অংশ। স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য নেই। যত কল্লা তত আল্লাহ। এরা রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কেও আল্লাহর নূর ভাবে। এরা মুরীদের আত্মা পীরের আত্মায় মিলিত হয়ে পরমাত্মায় লীন হয়ে যায় বলে বিশ্বাস করে এবং তাকে ফানা ফিল্লাহ, বাক্বা বিল্লাহ ইত্যাদি নামে অভিহিত করে। পূর্বেরটির ন্যায় এটিও স্রেফ শয়তানী খোশ-খেয়াল ব্যতীত কিছুই নয়।
তৃতীয়টির দাবী মতে কেবল ধর্মীয় কিছু অনুষ্ঠানে তারা আল্লাহর বিধান মানবে। কিন্তু এর বাইরে মানব জীবনের বিস্তীর্ণ ক্ষেত্রে তারা আল্লাহর বিধান মানবে না। বরং নিজেদের মনগড়া বিধান মেনে চলবে। এটিও পূর্বের দু’টি দর্শনের ন্যায় স্রেফ তাগূতী দর্শন মাত্র।
বস্ত্ততঃ আল্লাহকে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হিসাবে মেনে নেয়া, সর্বাবস্থায় সরাসরি তাঁর নিকটে প্রার্থনা করা এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর প্রেরিত বিধান সমূহ মেনে চলাই হ’ল তাওহীদ দর্শনের মূল কথা। আর এটা মানা ও না মানার মধ্যেই রয়েছে বান্দার পরীক্ষা। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন-আমীন!
[1]. আত-তাহরীক ১৪তম বর্ষ ১ম সংখ্যা অক্টোবর ২০১০।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/760/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।