HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানব সম্পদ উন্নয়নে ইসলাম

লেখকঃ ড. হুসাইন আহমাদ

মানব সম্পদ উন্নয়নে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন-

﴿وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ﴾ [ البقرة : 28 ]

নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমনি আছে তাদের উপর পুরুষদের। [আল্ কুরআনঃ সুরা বাকারা ২: ২২৮।]

নারী মাতৃজাতি বলেই সন্তানদের সকল দুঃখ সমস্যা সম্পর্কে নারীগণ বেশী সচেতন। [মোঃ শামছুল কবীর খানঃ বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য, প্রকাশনা শাখা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরী কমিশন আগাঁরগাও, ঢাকা ১২০৭ খৃ. ২০০০ পৃ. ৭৫।] সন্তান প্রতিপালনে নারীর ভূমিকাই মুখ্য বিধায় নারী অধিকার অন্যসব থেকে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত। কিন্তু সমাজের প্রাচীন ধ্যান ধারনার কারণে এবং পুরুষ শাসিত সমাজে অনেক ক্ষেত্রে নারী অধিকার উপেক্ষিত হয়। নিম্লে মহিলাদের অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

সম্পদে মালিকানা লাভের অধিকার নারীর চিরন্তণ অধিকার। সে চাইলে বৈধ যে কোন মালের মালিক হতে পারে। যেমন এরশাদ হচ্ছে:

﴿لِّلرِّجَالِ نَصِيبٞ مِّمَّا ٱكۡتَسَبُواْۖ وَلِلنِّسَآءِ نَصِيبٞ مِّمَّا ٱكۡتَسَبۡنَۚ ٣٢﴾ [ النساء : 32 ]

”পুরুষ যা অর্জন করবে তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ। [আল্ কুরআনঃ সুরা নেসা ৪: ৩২]

শিক্ষার অধিকার এ ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয়েরই সমান অধিকার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমত ইসলামী আকীদা, আবশ্যিক ইবাদত সংক্রান্ত জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন। রাসুল (সাঃ) বলেন [সহীহ ইবনে মাজাহ পৃ. ২০।]

» طلب العلم فريضة على كل مسلم «

ইলেম শিক্ষা করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয।

সম্পদ ব্যয় করার অধিকার : বৈধ সকল ক্ষেত্রে পুরুষের ন্যায় তার সম্পদ ব্যয় করার অধিকার চিরন্তন।

পাত্র নির্বাচনের অধিকার: ইসলাম নারীকে তার জীবনসঙ্গী নির্বাচনের অধিকার দিয়েছে রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেছে:

« لا تنكح الأيم حتى تستامر ولا تنكح البكر حتى تستأذن- قالوا يارسول الله وكيف إذنها- قال أن تسكت»

বিধবা বিবাহ করবে না যতক্ষন তার অভিমত না নেওয়া হয়, কুমারী বিবাহ করবে না যতক্ষন তার থেকে অনুমতি না নেওয়া হয়। তারা বললেন হে রাসুল (সাঃ) তার অনুমতি কিভাবে বুঝা যাবে? রাসুল বললেন যে তার চুপ থাকা। [সহীহ বুখারীঃ পৃ.১৭৭]

ধর্মীয় বিধান পালনের অধিকারঃ ধর্মীয় দিগন্তে নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে। ইবাদতের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আল্লাহর ইবাদত করে তারা যে কোন স্তরে উন্নীত হতে পারে। দ্বীনের দাওয়াত ও ধর্মীয় অন্যান্য ক্রিয়াকর্মে তাদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তবে শারীরিক অসুবিধার ক্ষেত্রে অব্যবহৃত দেয়া হয়েছে। নফলের ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতির কথা বলা হয়েছে। আল-কোরআনে বলা হয়েছেঃ

﴿وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ يَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَيُطِيعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ أُوْلَٰٓئِكَ سَيَرۡحَمُهُمُ ٱللَّهُۗٞ ٧١﴾ [ التوبة : 71]

”মুমিন নর নারী একে অপরের বন্ধু। তারা সৎকাজে নির্দেশ দেয়, অসৎকার্য নিষেধ করে। সালাত কয়েম করে, যাকাত দেয়, আল্লাহ্ এবং রাসুলের আনুগত্য করে তাদের প্রতি আল্লাহ্ দয়া পরবশ হবেন। [আল্ কুরআনঃ সুরা তওবা ৯: ৭১] হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।”

«لا تصوم المرأة وزوجها شاهد يوم من غيررمضان إلا باذنه»

কোন মহিলা যদি তার স্বামীর নিকট থাকে তবে তার অনুমতি ছাড়া সে রোজা রাখতে পারবেনা। (রমজানের রোজা ব্যতীত) [সহীহ ইবনে মাযাহঃ পৃ.১২৭]

পছন্দের অধিকারঃ সে যদি ভাল মেয়েদের ভালবাসে বা পছন্দ করে তবে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে যেতে ও হাদীয়া দিতে পারবে। তাদের সাথে চিঠি পত্র আদান প্রদান ও খোজ খবর নিতে পারবে। তেমনি তারা অপছন্দ করবে খারাপ মেয়েদের তাদের সাথে রাগ করবে আল্লাহ্ উদ্দেশ্যে সম্পর্কচেছদ করবে। [মুহাম্মদ মুজীবুর রহমানঃ মুসলিম রমনী, আল্ আরামাইন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশ, খৃ. ১৯৯৮ পৃ. ৯৪]

ওসিয়ত করবার অধিকারঃ যা তার মৃত্যুর পূর্বে অথবা পরে কার্যকর হবে, এতে বাধাদানের অধিকার কারো নেই। কারন আখেরাতের ছওয়াব সকলেই প্রয়োজন। এজন্য আল্লাহক পাক বলেন

﴿ وَمَا تُقَدِّمُواْ لِأَنفُسِكُم مِّنۡ خَيۡرٖ تَجِدُوهُ عِندَ ٱللَّهِ هُوَ خَيۡرٗا وَأَعۡظَمَ أَجۡرٗاۚ﴾ [ المزمل : 20 ]

এবং তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য যে সমস্ত নেক কার্য করবে তাকে উপস্থিত পাবে আল্লাহ পাকের সকাশে আরও উত্তম ও মহান হিসেবে। [আল্ কুরআনঃ সুরা মুযযাম্মিল ৭৩: ২০।]

সাজগোজ করার অধিকারঃ নারী চাইলে তার স্বামীর জন্য সাজগোজ করবে এক্ষেত্রে গহনা, সুন্দর জামা, লিপিষ্টিক পাউডার ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে তবে এমন পোষাক পরবে না যা উলঙ্গের মত দেখা যায় ও কাফেরদের মত পোষাক পরবে না। এ ব্যপারে কোরআনের নির্দেশ হলো [আল্ কুরআনঃ সুরা আহযাব ৩৩: ৩৩।]

﴿وَقَرۡنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰۖ ﴾ [ الأحزاب : 33]

আর তেমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না

পানাহারের অধিকারঃ নারীগণ হালাল সর্বপ্রকার খাবার পুরুষের মতই গ্রহন করার অধিকার রাখে। এ ক্ষেত্র কোন প্রকার পার্থক্য নেই আল্লাহ্ বলেন

﴿وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ وَلَا تُسۡرِفُوٓاْۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ ٣١﴾ [ الأعراف : 31 ]

আহার করিবে ও পান করিবে। কিন্তু অপচয় করিবেনা। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। [আল্ কুরআনঃ সুরা আরাফ ৭:৩১]

জিহাদে অংশগ্রহনের অধিকারঃ দেশ ও ধর্ম রক্ষায় ইসলাম নারী পুরুষকে সমভাবে দায়িত্ব দিয়েছে। জেহাদে অংশ গ্রহন শুধু পুরষ বা শুধু নারীর উপর ফরজ নয়। আল্লাহর বানী:

﴿ٱنفِرُواْ خِفَافٗا وَثِقَالٗا وَجَٰهِدُواْ بِأَمۡوَٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۚ٤١﴾ [ التوبة : 41]

অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক অথবা ভারি অবস্থায় হোক (রণসম্ভরে বেশী হোক কম হোক) সংগ্রাম কর আল্লাহ্র পথে তোমাদের সম্পদও জীবন দিয়ে। [আল্ কুরআনঃ সুরা তাওবা ৯: ৪১]

সামাজিক ক্রিয়াকর্মে অংশগ্রহনের অধিকারঃ ইসলাম নারীকে ধর্মীয় ও সামাজিক ক্রিয়াকর্মে অংশগ্রহনের পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। ঐতিহাসিক তথ্যাবলীতে দেখা যায় যে, ইসলামের স্বর্ণযুগে যখন সমাজ জীবনে ইসলামের সত্যিকার শিক্ষা বাস্তবাযিত হয়েছিল সে সময় মহিলারা বহিরাংগনে শিক্ষা গ্রহন, শিক্ষা দান, ব্যবসা বানিজ্য, পুরুষের সাথে পরামর্শ ও যুদ্ধে অংশ্রগ্রহনেও তাঁদের জন্য কোন সীমাবদ্ধতা ছিল না। এছাড়া মা হিসেবে পিতা অপেক্ষা সন্তানের অধিকতর ভালবাসা পাবার চিরন্তন অধিকার নারীর রয়েছে। [শামছুল আলম ও আনিসুর রহমানঃ ইসলামী ঐতিহ্য পরিবার পরিকল্পনা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আই, ই, এম ইউনিট ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল এর যৌথ প্রকাশনা, খৃ. ১৯৯৫ পৃ. ৭৫।]

বিশেষ করে একজন মহিলা যখন গর্ভবতী হন তখন প্রথমতঃ তার নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের দরকার হয়। দ্বিতীয়ত তার গর্ভাস্থিত ভ্রুনের ঠিকমত গঠন ও বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত খাদ্যের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ দুজনের খাবার একত্রে খেতে হয়।

অন্যদিকে একথা খুবই স্বাভাবিক একজন পুষ্টিহীন মা অপুষ্ঠ শিশুরই জন্ম দেবেন। এজন্য মায়ের পুষ্টির ব্যাপারে অতিরিক্ত যত্ন নেয়া প্রয়োজন। গর্ভের শিশু সঠিক গঠন ও বৃদ্ধির জন্য সুষম বাড়তি খাবার দিতে হবে। এ বাড়তি খাবার মায়ের স্বাভাবিক খাদ্য হতে ২০০-৩০০ ক্যালোরী বেশী শক্তি যোগাবার উপযোগী হবে। নীচে একজন সাধারন কর্মক্ষম স্বাভাবিক মহিলা ও গর্ভবতী মহিলা কতখানি খাদ্য গ্রহন করা উচিত তার একটা তালিকা দেয়া হল।

খাদ্য দ্রব্যের নাম

স্বাভাবিক মহিলা

গর্ভবতী মহিলা

চাল/ডাল

৩৫০ গ্রাম

৩৭৫ গ্রাম

ডাল

৪০ ’’

৬০’’

মাছ/গোশত/ডিম

৬০ ’’

৬০’’

আলু/মিষ্টিআলু

৬০ ’’

৬২’’

যেকোন শাক

১৫০ ’’

১৮০’’

যে কোন সব্জী

৯০ ’’

৯০’’

চিনি/গুড়

---------

৩০’’

ফল

১টা ৫৫ ’’

১টা/ ৫৫’’

তৈল/ঘি

৪০ ’’

৫০’’

খাদ্য শক্তি

২১০০ কিঃ ক্যাঃ

২৩৬০ কিঃ ক্যাঃ প্রায় [অধ্যাপক মাওলানা মোঃ তমিজ উদ্দিন, আবু উবাইদ মোঃ মহসিন মাওলানা কাজী আবু হুরায়রাঃ পরিবার কল্যাণ, ইমাম প্রশিক্ষন একাডেমী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ খৃ. ১৯৯৪ পৃ. ৮৭।]

সুতরাং এ কথা দ্বিধাহীন চিত্তে বলা যায় একটি কর্মক্ষম, দক্ষ ও সুস্থ মানব সম্পদ হিসেবে নারীকে গড়ে তুলতে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গর্ভবতী মহিলার পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন