HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
দরূদ
লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِه مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِه وَصَحْبِه اَجْمَعِيْنَ
সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের উপর।
সম্মানিত পাঠক, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এতে রয়েছে অল্প পরিশ্রমে অধিক সওয়াব অর্জন করা, নিজের নেকীর পাল্লাকে ভারি করে নেয়া এবং কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুপারিশ লাভ করার মতো ফযীলত ও তাৎপর্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে মুসলিমদের কাছে এই ইবাদাতটি খুবই অবহেলিত। যদিও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ছায়াতলে এই ইবাদাতটি নামমাত্র পালন হয়ে থাকে, তবুও এটিকে কেন্দ্র করে সমাজে বিভিন্ন ধরনের ভ্রান্তির প্রচলন রয়েছে। যেমন-
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শিখানো দরূদ ব্যতীত নিজেদের বানানো শব্দাবলি দ্বারা দরূদ পাঠ করা, বিভিন্ন শিরক ও বিদআতী ইবাদাতে দরূদ পাঠ করা, দরূদ পাঠ করার সময় নানা ধরনের অঙ্গ-ভঙ্গী প্রদর্শন করা ইত্যাদি।
বইটিতে দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে সহীহ সুনণাহ দ্বারা প্রমাণিত মাসনূন দরূদসমূহ এবং দরূদের ব্যাপারে মানুষের নানা ধরনের বিভ্রান্তি, বিভিন্ন যয়ীফ ও জাল হাদীসে উল্লেখিত দরূদসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, বইটি পাঠ করে দরূদ সম্পর্কে মানুষের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং বিশুদ্ধভাবে দরূদ পাঠ করে আল্লাহর কাছ থেকে যথাযথ প্রতিদান লাভ করতে সক্ষম হবে- ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন
মা‘আস্সালাম
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের উপর।
সম্মানিত পাঠক, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এতে রয়েছে অল্প পরিশ্রমে অধিক সওয়াব অর্জন করা, নিজের নেকীর পাল্লাকে ভারি করে নেয়া এবং কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুপারিশ লাভ করার মতো ফযীলত ও তাৎপর্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে মুসলিমদের কাছে এই ইবাদাতটি খুবই অবহেলিত। যদিও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ছায়াতলে এই ইবাদাতটি নামমাত্র পালন হয়ে থাকে, তবুও এটিকে কেন্দ্র করে সমাজে বিভিন্ন ধরনের ভ্রান্তির প্রচলন রয়েছে। যেমন-
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শিখানো দরূদ ব্যতীত নিজেদের বানানো শব্দাবলি দ্বারা দরূদ পাঠ করা, বিভিন্ন শিরক ও বিদআতী ইবাদাতে দরূদ পাঠ করা, দরূদ পাঠ করার সময় নানা ধরনের অঙ্গ-ভঙ্গী প্রদর্শন করা ইত্যাদি।
বইটিতে দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে সহীহ সুনণাহ দ্বারা প্রমাণিত মাসনূন দরূদসমূহ এবং দরূদের ব্যাপারে মানুষের নানা ধরনের বিভ্রান্তি, বিভিন্ন যয়ীফ ও জাল হাদীসে উল্লেখিত দরূদসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, বইটি পাঠ করে দরূদ সম্পর্কে মানুষের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং বিশুদ্ধভাবে দরূদ পাঠ করে আল্লাহর কাছ থেকে যথাযথ প্রতিদান লাভ করতে সক্ষম হবে- ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন
মা‘আস্সালাম
শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
‘দরূদ’ শব্দটি ফার্সি ভাষার। আরবি ভাষায় এটিকে ‘সালাত’ বলা হয়। আর ‘সালাত’ শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে, যেমন-
১. সালাত শব্দটি আল্লাহর ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- রহমত।
২. সালাত শব্দটি ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- দু‘আ।
৩. সালাত শব্দটি মুমিনদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- প্রার্থনা।
৪. সালাত শব্দটি পশু-পাখির ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- তাসবীহ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اِنَّ اللهَ وَمَلَآئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا ﴾
নিশ্চয় আল্লাহ রহমত প্রেরণ করেন নবীর প্রতি এবং তাঁর ফেরেশতারাও নবীর জন্য রহমত প্রার্থনা করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর প্রতি দরূদ পাঠ করো এবং তার প্রতি অধিক পরিমাণে সালাম প্রেরণ করো। (সূরা আহযাব- ৫৬)
অত্র আয়াতে সালাত শব্দটিকে আল্লাহ, ফেরেশতা ও মুমিনদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। আয়াতের মর্মার্থ হচ্ছে,
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীর উপর রহমত বর্ষণ করেন। আর ফেরেশতা এবং মুমিনগণ নবী ﷺ এর জন্য রহমত ও মাগফেরাতের দু‘আ করেন।
১. সালাত শব্দটি আল্লাহর ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- রহমত।
২. সালাত শব্দটি ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- দু‘আ।
৩. সালাত শব্দটি মুমিনদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- প্রার্থনা।
৪. সালাত শব্দটি পশু-পাখির ক্ষেত্রে ব্যবহার হলে এর অর্থ হবে- তাসবীহ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿اِنَّ اللهَ وَمَلَآئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا ﴾
নিশ্চয় আল্লাহ রহমত প্রেরণ করেন নবীর প্রতি এবং তাঁর ফেরেশতারাও নবীর জন্য রহমত প্রার্থনা করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর প্রতি দরূদ পাঠ করো এবং তার প্রতি অধিক পরিমাণে সালাম প্রেরণ করো। (সূরা আহযাব- ৫৬)
অত্র আয়াতে সালাত শব্দটিকে আল্লাহ, ফেরেশতা ও মুমিনদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। আয়াতের মর্মার্থ হচ্ছে,
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীর উপর রহমত বর্ষণ করেন। আর ফেরেশতা এবং মুমিনগণ নবী ﷺ এর জন্য রহমত ও মাগফেরাতের দু‘আ করেন।
১. দরূদ পড়লে গুনাহ ক্ষমা হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায় :
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيْئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করবেন, আর তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। (নাসাঈ, হা/১২৯৭)
২. দরূদ পড়লে কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নৈকট্য লাভ হবে :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَوْلَى النَّاسِ بِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে বেশি নিকটতম হবে সেই ব্যক্তি, যে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ে। (তিরমিযী, হা/৪৮৪)
৩. আযানে পর দরূদ ও দু‘আ পড়লে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সুপারিশ পাওয়া যাবে :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّهٗ سَمِعَ النَّبِىَّ - - يَقُوْلُ : ..... فَمَنْ سَأَلَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ -কে বলতে শুনেছেন, তোমরা আযানের পর আমার উপর দরূদ পড়বে এবং আমার জন্য উসীলা (জান্নাতে উচ্চ মর্যাদার) দু‘আ করবে। যে ব্যক্তি তা করবে কিয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশ করা আমার উপর কর্তব্য হয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৫)
৪. দরূদ পড়লে দুঃখ-কষ্ট ও বিষন্নতা দূর হয় :
عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ : إِنِّى قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ أَكْثَرُ الصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِيْ فَقَالَ مَا شِئْتَ قَالَ قُلْتُ اَلرُّبُعُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ اَلنِّصْفُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثِيْنَ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِيْ كُلُّهَا قَالَ إِذًا تَكْفِىْ هَمُّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ
উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করি। আমি কত সময় দরূদ পড়ব? তিনি বললেন, যত তোমার মন চায়। আমি বললাম, দিনের এক চতুর্থাংশ? তিনি বললেন, যত মন চায়; তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, যত মন চায়; তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, আমি আপনার জন্য পুরো সময়েই দরূদ পড়ব। তিনি বললেন, তাহলে তোমার দুশ্চিন্তা দূর হবে এবং তোমার পাপ ক্ষমা করা হবে।
(তিরমিযী, হা/২৪৫৭)
৫. দরূদ পাঠকারীর উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করবেন :
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ فَاتَّبَعْتُهٗ حَتّٰى دَخَلَ نَخْلًا فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُوْدَ حَتّٰى خِفْتُ أَوْ خَشِيْتُ أَنْ يَّكُوْنَ اللهُ قَدْ تَوَفَّاهُ أَوْ قَبَضَهٗ قَالَ فَجِئْتُ أَنْظُرُ فَرَفَعَ رَأْسَهٗ فَقَالَ مَا لَكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمٰنِ قَالَ فَذَكَرْتُ ذٰلِكَ لَهٗ فَقَالَ إِنَّ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ لِيْ أَلَا أُبَشِّرُكَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ لَكَ مَنْ صَلّٰى عَلَيْكَ صَلَّيْتُ عَلَيْهِ وَمَنْ سَلَّمَ عَلَيْكَ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ
আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ বের হয়ে এক খেজুর বাগানে প্রবেশ করলেন। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ সিজদা করলেন। এমনকি আমাদের ভয় হল যে, তাঁর মৃত্যু হয়ে গেল নাকি। ফলে আমি তাঁকে দেখতে আসলাম। তখন তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন, তোমার কী হল? আমি তাঁকে আমার ভয়ের কথা জানালাম। তারপর তিনি বললেন, জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, আমি কি আপনাকে এই সুসংবাদ দেব না যে, আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আপনার উপর দরূপ পাঠ করবে, আমি তার উপর রহমত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি আপনার প্রতি সালাম প্রেরণ করবে আমি তার উপর শান্তি নাযিল করব’’। (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৬২)
৬. সকাল-বিকাল দশবার করে দরূদ পড়া রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সুপারিশ অর্জনের বড় মাধ্যম :
عَنْ أَبِىْ الدَّرْداءِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلَ اللهِ : مَنْ صَلَّى عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا ، وَحِيْنَ يُمْسِيْ عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার দরূদ পড়বে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে। (জামেউস সগীর, হা/৮৮১১; জামেউল আহাদীস, হা/২২৭৬৪; মাযমাউয যাওয়াইদ, হা/১৭০২২)
৭. দরূদ পড়লে দু‘আ কবুল হয় :
দু‘আ করার আগে ও পরে দরূদ পাঠ করলে দু‘আ কবুল হয়। হাদীসে রয়েছে-
عَنْ عَبْدِاللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ كُنْتُ أَصَلِّيْ وَالنَّبِيُّ وَأَبُوْ بَكْرٍِ وَعَمَرُ مَعَهٗ فَلَمَّا جَلَسَتُ بَدَأْتُ بِالثِّنَاءِ عَلَى اللهِ ثُمَّ الصَّلَاةِ عَلَى النَّبِيِّ ثُمَّ دَعْوَتُ لِنَفْسِيْ فَقَالَ النَّبِيِّ سَلْ تَعْطَهٗ سَلْ تَعْطَهٗ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালাত আদায় করছিলাম। তখন নবী ﷺ সেখানে ছিলেন, আর আবু বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ)ও তাঁর সাথে ছিলেন। যখন আমি বসলাম তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করলাম তারপর নবী ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করলাম। অতঃপর নিজের জন্য দু‘আ করলাম। তখন নবী ﷺ বললেন, তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো, তোমাকে অবশ্যই দেয়া হবে। তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো, তোমাকে অবশ্যই দেয়া হবে। (তিরমিযী, হা/৫৯৩)
৮. একবার দরূদ পাঠকারীর প্রতি আল্লাহ তা‘আলা দশবার রহমত নাযিল করেন :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ : مَنْ صَلَّى عَلَىَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৪০৮)
৯. একবার দরূদ পাঠকারীর উপর দশটি শান্তি বর্ষিত হয় :
عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ جَاءَ ذَاتَ يَوْمٍ وَالسُّرُوْرُ يُرٰى فِيْ وَجْهِه فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا لَنَرٰى السُّرُوْرَ فِيْ وَجْهِكَ فَقَالَ إِنَّهٗ أَتَانِيْ مَلَكٌ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَمَا يُرْضِيْكَ أَنَّ رَبَّكَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ إِنَّهٗ لَا يُصَلِّيْ عَلَيْكَ أَحَدٌ مِّنْ أُمَّتِكَ إِلَّا صَلَّيْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا وَلَا يُسَلِّمُ عَلَيْكَ أَحَدٌ مِنْ أُمَّتِكَ إِلَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا قَالَ بَلٰى
আবু তালহা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী ﷺ আগমন করলেন। তখন তাঁর চেহারা আনন্দে উজ্জ্বল ছিল। আমরা বললাম, আমরা আপনার চেহারায় আনন্দের নিদর্শন দেখছি। তখন তিনি বললেন, আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে এ কথার সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, আপনি কি এতে সন্তুষ্ট নন যে, যে ব্যক্তি আপনার উপর একবার দরূদ পড়বে আমি তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি আপনার প্রতি একবার সালাম প্রেরণ করবে আমি তার উপর দশটি শান্তি বর্ষণ করব। (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৪১০)
১০. একবার দরূদ পাঠ করলে আমলনামায় দশটি পুণ্য লেখা হয় :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - -: مَنْ صَلّٰى عَلَىَّ مَرَّةً وَاحِدَةً، كَتَبَ اللهُ، عَزَّ وَجَلَّ، [ لَهٗ ] بِهَا عَشَرَ حَسَنَاتٍ .
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়ে আললাহ তা‘আলা তার জন্য দশটি সওয়াব লিখে দেন। (সহীহ ইবনে হিববান, হা/৯০৫)
১১. যে দরূদ পড়ে ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দু‘আ করতে থাকেন :
عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيْعَةَ قَال : مَا مِنْ عَبْدٍ يُصَلِّيْ عَلَيَّ إِلَّا صَلَّتْ عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ مَادَامَ يُصَلِّيْ عَلَيَّ فَلْيُقِلَّ الْعَبْدُ مِنْ ذٰلِكَ أَوْ لِيُكْثِرْ
আমের ইবনে রাবী‘আহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যখন আমার উপর দরূদ পাঠ করে, তখন সে যতক্ষণ পড়তে থাকবে ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দু‘আ করতে থাকে। অতএব দরূদ কম পড়া বা বেশি পড়া তার ঐচ্ছিক ব্যাপার। (ফাতহুল কাবীর, জামেউস সগীর- হা/৮০৭৩)
১২. সালাম প্রেরণ করলে রাসূলুল্লাহ ﷺ সালামদাতার উত্তর দান করেন :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَىَّ إِلَّا رَدَّ اللهُ عَلَىَّ رُوْحِىْ حَتّٰى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি আমাকে সালাম করে তখন আল্লাহ তা‘আলা আমার রূহ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের উত্তর দেই।
(আবু দাউদ, হা/২০৪৩)
১৩. দরূদ পড়লে রাসূলের ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় :
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পড়া দ্বারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় ও তাঁর নৈকট্য লাভের কারণ হয়ে থাকে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -- : أَكْثِرُوْا عَلَىَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِى كُلِّ يَوْمِ جُمُعَةٍ فَإِنَّ صَلَاةَ أُمَّتِىْ تُعْرَضُ عَلَىَّ فِى كُلِّ يَوْمِ جُمُعَةٍ ، فَمَنْ كَانَ أَكْثَرَهُمْ عَلَىَّ صَلَاةً كَانَ أَقْرَبَهُمْ مِنِّىْ مَنْزِلَةً
আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা প্রতি জুমায় আমার উপর বেশি করে দরূদ পড়ো। কারণ, আমার উম্মতের দরূদ পাঠ প্রতি জুমায় আমার নিকট পেশ করা হয়, যে ব্যক্তি বেশি দরূদ পাঠকারী হয়ে থাকে, সে মর্যাদার দিক দিয়ে আমার বেশি নিকটে হয়ে থাকে। (বায়হাকী, হা/৬২০৮)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَوَّلَى النَّاسُ بِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً
ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে বেশি নিকটতম হবে সেই ব্যক্তি, যে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ে। (তিরমিযী, হা/৪৮৪)
যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করেন তারাই রাসূলের অনুকরণ করেন এবং তাদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি ভালোবাসা থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُورٌ رَحِيْمٌ﴾
বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান- ৩১)
عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيْئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করবেন, আর তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। (নাসাঈ, হা/১২৯৭)
২. দরূদ পড়লে কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নৈকট্য লাভ হবে :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَوْلَى النَّاسِ بِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে বেশি নিকটতম হবে সেই ব্যক্তি, যে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ে। (তিরমিযী, হা/৪৮৪)
৩. আযানে পর দরূদ ও দু‘আ পড়লে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সুপারিশ পাওয়া যাবে :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّهٗ سَمِعَ النَّبِىَّ - - يَقُوْلُ : ..... فَمَنْ سَأَلَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ -কে বলতে শুনেছেন, তোমরা আযানের পর আমার উপর দরূদ পড়বে এবং আমার জন্য উসীলা (জান্নাতে উচ্চ মর্যাদার) দু‘আ করবে। যে ব্যক্তি তা করবে কিয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশ করা আমার উপর কর্তব্য হয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৫)
৪. দরূদ পড়লে দুঃখ-কষ্ট ও বিষন্নতা দূর হয় :
عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ : إِنِّى قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ أَكْثَرُ الصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِيْ فَقَالَ مَا شِئْتَ قَالَ قُلْتُ اَلرُّبُعُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ اَلنِّصْفُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثِيْنَ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِيْ كُلُّهَا قَالَ إِذًا تَكْفِىْ هَمُّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ
উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করি। আমি কত সময় দরূদ পড়ব? তিনি বললেন, যত তোমার মন চায়। আমি বললাম, দিনের এক চতুর্থাংশ? তিনি বললেন, যত মন চায়; তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, যত মন চায়; তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, আমি আপনার জন্য পুরো সময়েই দরূদ পড়ব। তিনি বললেন, তাহলে তোমার দুশ্চিন্তা দূর হবে এবং তোমার পাপ ক্ষমা করা হবে।
(তিরমিযী, হা/২৪৫৭)
৫. দরূদ পাঠকারীর উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করবেন :
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ فَاتَّبَعْتُهٗ حَتّٰى دَخَلَ نَخْلًا فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُوْدَ حَتّٰى خِفْتُ أَوْ خَشِيْتُ أَنْ يَّكُوْنَ اللهُ قَدْ تَوَفَّاهُ أَوْ قَبَضَهٗ قَالَ فَجِئْتُ أَنْظُرُ فَرَفَعَ رَأْسَهٗ فَقَالَ مَا لَكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمٰنِ قَالَ فَذَكَرْتُ ذٰلِكَ لَهٗ فَقَالَ إِنَّ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ لِيْ أَلَا أُبَشِّرُكَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ لَكَ مَنْ صَلّٰى عَلَيْكَ صَلَّيْتُ عَلَيْهِ وَمَنْ سَلَّمَ عَلَيْكَ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ
আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ বের হয়ে এক খেজুর বাগানে প্রবেশ করলেন। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ সিজদা করলেন। এমনকি আমাদের ভয় হল যে, তাঁর মৃত্যু হয়ে গেল নাকি। ফলে আমি তাঁকে দেখতে আসলাম। তখন তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন, তোমার কী হল? আমি তাঁকে আমার ভয়ের কথা জানালাম। তারপর তিনি বললেন, জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, আমি কি আপনাকে এই সুসংবাদ দেব না যে, আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আপনার উপর দরূপ পাঠ করবে, আমি তার উপর রহমত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি আপনার প্রতি সালাম প্রেরণ করবে আমি তার উপর শান্তি নাযিল করব’’। (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৬২)
৬. সকাল-বিকাল দশবার করে দরূদ পড়া রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সুপারিশ অর্জনের বড় মাধ্যম :
عَنْ أَبِىْ الدَّرْداءِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلَ اللهِ : مَنْ صَلَّى عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا ، وَحِيْنَ يُمْسِيْ عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার দরূদ পড়বে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে। (জামেউস সগীর, হা/৮৮১১; জামেউল আহাদীস, হা/২২৭৬৪; মাযমাউয যাওয়াইদ, হা/১৭০২২)
৭. দরূদ পড়লে দু‘আ কবুল হয় :
দু‘আ করার আগে ও পরে দরূদ পাঠ করলে দু‘আ কবুল হয়। হাদীসে রয়েছে-
عَنْ عَبْدِاللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ كُنْتُ أَصَلِّيْ وَالنَّبِيُّ وَأَبُوْ بَكْرٍِ وَعَمَرُ مَعَهٗ فَلَمَّا جَلَسَتُ بَدَأْتُ بِالثِّنَاءِ عَلَى اللهِ ثُمَّ الصَّلَاةِ عَلَى النَّبِيِّ ثُمَّ دَعْوَتُ لِنَفْسِيْ فَقَالَ النَّبِيِّ سَلْ تَعْطَهٗ سَلْ تَعْطَهٗ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালাত আদায় করছিলাম। তখন নবী ﷺ সেখানে ছিলেন, আর আবু বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ)ও তাঁর সাথে ছিলেন। যখন আমি বসলাম তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করলাম তারপর নবী ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করলাম। অতঃপর নিজের জন্য দু‘আ করলাম। তখন নবী ﷺ বললেন, তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো, তোমাকে অবশ্যই দেয়া হবে। তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো, তোমাকে অবশ্যই দেয়া হবে। (তিরমিযী, হা/৫৯৩)
৮. একবার দরূদ পাঠকারীর প্রতি আল্লাহ তা‘আলা দশবার রহমত নাযিল করেন :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ : مَنْ صَلَّى عَلَىَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৪০৮)
৯. একবার দরূদ পাঠকারীর উপর দশটি শান্তি বর্ষিত হয় :
عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ جَاءَ ذَاتَ يَوْمٍ وَالسُّرُوْرُ يُرٰى فِيْ وَجْهِه فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا لَنَرٰى السُّرُوْرَ فِيْ وَجْهِكَ فَقَالَ إِنَّهٗ أَتَانِيْ مَلَكٌ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَمَا يُرْضِيْكَ أَنَّ رَبَّكَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ إِنَّهٗ لَا يُصَلِّيْ عَلَيْكَ أَحَدٌ مِّنْ أُمَّتِكَ إِلَّا صَلَّيْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا وَلَا يُسَلِّمُ عَلَيْكَ أَحَدٌ مِنْ أُمَّتِكَ إِلَّا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا قَالَ بَلٰى
আবু তালহা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী ﷺ আগমন করলেন। তখন তাঁর চেহারা আনন্দে উজ্জ্বল ছিল। আমরা বললাম, আমরা আপনার চেহারায় আনন্দের নিদর্শন দেখছি। তখন তিনি বললেন, আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে এ কথার সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, আপনি কি এতে সন্তুষ্ট নন যে, যে ব্যক্তি আপনার উপর একবার দরূদ পড়বে আমি তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি আপনার প্রতি একবার সালাম প্রেরণ করবে আমি তার উপর দশটি শান্তি বর্ষণ করব। (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৪১০)
১০. একবার দরূদ পাঠ করলে আমলনামায় দশটি পুণ্য লেখা হয় :
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - -: مَنْ صَلّٰى عَلَىَّ مَرَّةً وَاحِدَةً، كَتَبَ اللهُ، عَزَّ وَجَلَّ، [ لَهٗ ] بِهَا عَشَرَ حَسَنَاتٍ .
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়ে আললাহ তা‘আলা তার জন্য দশটি সওয়াব লিখে দেন। (সহীহ ইবনে হিববান, হা/৯০৫)
১১. যে দরূদ পড়ে ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দু‘আ করতে থাকেন :
عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيْعَةَ قَال : مَا مِنْ عَبْدٍ يُصَلِّيْ عَلَيَّ إِلَّا صَلَّتْ عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ مَادَامَ يُصَلِّيْ عَلَيَّ فَلْيُقِلَّ الْعَبْدُ مِنْ ذٰلِكَ أَوْ لِيُكْثِرْ
আমের ইবনে রাবী‘আহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যখন আমার উপর দরূদ পাঠ করে, তখন সে যতক্ষণ পড়তে থাকবে ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দু‘আ করতে থাকে। অতএব দরূদ কম পড়া বা বেশি পড়া তার ঐচ্ছিক ব্যাপার। (ফাতহুল কাবীর, জামেউস সগীর- হা/৮০৭৩)
১২. সালাম প্রেরণ করলে রাসূলুল্লাহ ﷺ সালামদাতার উত্তর দান করেন :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَىَّ إِلَّا رَدَّ اللهُ عَلَىَّ رُوْحِىْ حَتّٰى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি আমাকে সালাম করে তখন আল্লাহ তা‘আলা আমার রূহ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের উত্তর দেই।
(আবু দাউদ, হা/২০৪৩)
১৩. দরূদ পড়লে রাসূলের ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় :
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পড়া দ্বারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় ও তাঁর নৈকট্য লাভের কারণ হয়ে থাকে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -- : أَكْثِرُوْا عَلَىَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِى كُلِّ يَوْمِ جُمُعَةٍ فَإِنَّ صَلَاةَ أُمَّتِىْ تُعْرَضُ عَلَىَّ فِى كُلِّ يَوْمِ جُمُعَةٍ ، فَمَنْ كَانَ أَكْثَرَهُمْ عَلَىَّ صَلَاةً كَانَ أَقْرَبَهُمْ مِنِّىْ مَنْزِلَةً
আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা প্রতি জুমায় আমার উপর বেশি করে দরূদ পড়ো। কারণ, আমার উম্মতের দরূদ পাঠ প্রতি জুমায় আমার নিকট পেশ করা হয়, যে ব্যক্তি বেশি দরূদ পাঠকারী হয়ে থাকে, সে মর্যাদার দিক দিয়ে আমার বেশি নিকটে হয়ে থাকে। (বায়হাকী, হা/৬২০৮)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَوَّلَى النَّاسُ بِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً
ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে বেশি নিকটতম হবে সেই ব্যক্তি, যে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ে। (তিরমিযী, হা/৪৮৪)
যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করেন তারাই রাসূলের অনুকরণ করেন এবং তাদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি ভালোবাসা থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُورٌ رَحِيْمٌ﴾
বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান- ৩১)
১. যে ব্যক্তি দরূদ পড়ে না তার জন্য তিনি বদদু‘আ করেছেন :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ وَرَغِمَ أَنَفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُّغْفَرَ لَهٗ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الكِبَرُ فَلَمْ يَدْخُلَاهُ الْجَنَّةَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি লাঞ্ছিত হোক, যে আমার নাম শুনল কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না। সে ব্যক্তি লাঞ্ছিত হোক, যার কাছে রমযান মাস আসল কিন্তু সে নিজের পাপ ক্ষমা করাতে পারল না। আর সে ব্যক্তিও লাঞ্ছিত হোক, যে পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল, কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না। (তিরমিযী, হা/৩৫৪৫)
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নাম শুনে যে ব্যক্তি দরূদ পড়ে না তার জন্য জিবরীল (আঃ) বদদু‘আ করেছেন। হাদীসে এসেছে,
عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجَرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ اُحْضُرُوْا الْمِنْبَرَ فَحَضَرْنَا فَلَمَّا ارْتَقٰى دَرَجَةً قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّانِيَةَ قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّالِثَةَ قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا نَزَلَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ لَقَدْ سَمِعْنَا مِنْكَ الْيَوْمَ شَيْئًا مَا كُنَّا نَسْمَعُهٗ قَالَ إِنَّ جِبْرِيْلَ عَرَضَ لِيْ فَقَالَ بُعْدًا لِمَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهٗ قُلْتُ اٰمِيْنَ فَلَمَّا رَقِيْتُ الثَّانِيَةَ قَالَ بُعْدًا لِّمَنَ ذُكِرَتَ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ قُلْتُ اٰمِيْنَ فَلَمَّا رَقِيْتُ الثَّالِثَةَ قَالَ بُعْدًا لِّمَنْ أَدْرَكَ أَبَوَاهُ الْكِبَرُ عِنْدَهٗ أَوْ أَحَدَهُمَا فَلَمْ يَدْخُلَاهُ الْجَنَّةُ قُلْتُ اٰمِيْنَ
কা‘ব ইবনে উজরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা মিম্বরের কাছে একত্রিত হও। আমরা উপস্থিত হলাম। যখন তিনি মিম্বরের প্রথম স্তরে উঠলেন তখন বললেন, হে আল্লাহ! কবুল করুন। তারপর যখন দ্বিতীয় স্তরে উঠলেন তখনও বললেন, হে আল্লাহ! কবুল করুন। তারপর তৃতীয় স্তরে উঠে আবারও বললেন, হে আল্লাহ কবুল করুন। খুতবা শেষে যখন মিম্বর থেকে অবতরণ করলেন, তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আজ আমরা আপনার থেকে এমন কিছু শুনলাম যা এর পূর্বে আর কখনও শুনিনি। তখন তিনি বললেন, আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, যে ব্যক্তি রমাযান মাস পেল অথচ তাকে ক্ষমা করা হল না সে বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! কবুল করুন। যখন দ্বিতীয় স্তরে উঠলাম তখন তিনি বললেন, যার কাছে আপনার নাম উল্লেখ করা হল কিন্তু সে আপনার উপর দরূদ পড়ল না, সেও বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! কবুল করুন। যখন তৃতীয় স্তরে উঠলাম তখন তিনি বললেন, যে পিতা-মাতাকে অথবা তাদের কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল অথচ তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না সেও বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ কবুল করুন। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭২৫৬)
২. যে দরূদ পড়ে না সে কৃপণ :
عَنْ أَبِيْ ذَرِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : إِنَّ أَبْخَلَ النَّاسِ مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ
আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি বড় কৃপণ, যার কাছে আমার নাম নেয়া হল, কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না। (জামেউস সগীর, হা/২১৫৬)
عَنْ أَبيْ ذَرٍّ قَالَ خَرَجْتُ ذَاتَ يَوْمٍ فَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَلَا أَخْبِرُكُمْ بِأَبْخَلِ النَّاسِ قَالُوْا بَلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنْ ذُكِرَتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ فَذٰلِكَ أَبْخَلُ النَّاسِ
আবু যর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঘর থেকে বের হয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দরবারে আসলে তিনি আমাকে বলেন, আমি কি তোমাদের সত্যিকার কৃপণ ব্যক্তি সম্পর্কে বলে দেব? সাহাবীরা বললেন, হ্যাঁ- হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, সে-ই সত্যিকার কৃপণ, যার সামনে আমার নাম আলোচনা করা হল; অথচ সে আমার উপর দরূদ পাঠ করল না। (সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৬৮৪)
৩. দরূদ না পড়লে আফসোস করতে হবে :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَا قَعَدَ قَوْمٌ مَقْعَدًا لَا يَذْكُرُوْنَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَيُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِنْ دَخَلُوْا الْجَنَّةَ لِلثَّوَابََََِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করে বলেন, যে মজলিসে লোকেরা আল্লাহর যিকির করে না এবং নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়ে না, সেই মজলিস কিয়ামতের দিন তাদের জন্য অনুতাপের কারণ হবে। যদিও তারা নেক আমলের কারণে জান্নাতে যায়। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৯৬৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৯১)
৪. দরূদ পাঠ না করলে জান্নাতের পথ সহজ হয় না :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -- : مَنْ نَسِىَ الصَّلَاةَ عَلَىَّ خُطِّئَ بِه طَرِيْقُ الْجَنَّةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পড়া ভুলে যাবে সে জান্নাতের রাস্তা ভুলে যাবে। (বায়হাকী, হা/৩৩০১; ইবনে মাজাহ, হা/৯০৮)
৫. দরূদ না পড়া দু‘আ কবুলের অন্তরায় :
عَنْ اَنَسِ قَالَ : قَالَ : رَسُوْلَ اللهِ : كُلُّ دُعَاءٍ مَحْجُوبٌ حَتّٰى يُصَلّٰى عَلَى النَّبِيِّ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা হবে না, ততক্ষণ দু‘আ কবুল করা হয় না।
(জামেউস সগীর, হা/৬৩০৩; সিলসিলাহ সহীহাহ, হা/২০৩৫)
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ وَرَغِمَ أَنَفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُّغْفَرَ لَهٗ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الكِبَرُ فَلَمْ يَدْخُلَاهُ الْجَنَّةَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি লাঞ্ছিত হোক, যে আমার নাম শুনল কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না। সে ব্যক্তি লাঞ্ছিত হোক, যার কাছে রমযান মাস আসল কিন্তু সে নিজের পাপ ক্ষমা করাতে পারল না। আর সে ব্যক্তিও লাঞ্ছিত হোক, যে পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল, কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না। (তিরমিযী, হা/৩৫৪৫)
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নাম শুনে যে ব্যক্তি দরূদ পড়ে না তার জন্য জিবরীল (আঃ) বদদু‘আ করেছেন। হাদীসে এসেছে,
عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجَرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ اُحْضُرُوْا الْمِنْبَرَ فَحَضَرْنَا فَلَمَّا ارْتَقٰى دَرَجَةً قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّانِيَةَ قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا ارْتَقَى الدَّرَجَةَ الثَّالِثَةَ قَالَ اٰمِيْنَ فَلَمَّا نَزَلَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ لَقَدْ سَمِعْنَا مِنْكَ الْيَوْمَ شَيْئًا مَا كُنَّا نَسْمَعُهٗ قَالَ إِنَّ جِبْرِيْلَ عَرَضَ لِيْ فَقَالَ بُعْدًا لِمَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهٗ قُلْتُ اٰمِيْنَ فَلَمَّا رَقِيْتُ الثَّانِيَةَ قَالَ بُعْدًا لِّمَنَ ذُكِرَتَ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ قُلْتُ اٰمِيْنَ فَلَمَّا رَقِيْتُ الثَّالِثَةَ قَالَ بُعْدًا لِّمَنْ أَدْرَكَ أَبَوَاهُ الْكِبَرُ عِنْدَهٗ أَوْ أَحَدَهُمَا فَلَمْ يَدْخُلَاهُ الْجَنَّةُ قُلْتُ اٰمِيْنَ
কা‘ব ইবনে উজরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা মিম্বরের কাছে একত্রিত হও। আমরা উপস্থিত হলাম। যখন তিনি মিম্বরের প্রথম স্তরে উঠলেন তখন বললেন, হে আল্লাহ! কবুল করুন। তারপর যখন দ্বিতীয় স্তরে উঠলেন তখনও বললেন, হে আল্লাহ! কবুল করুন। তারপর তৃতীয় স্তরে উঠে আবারও বললেন, হে আল্লাহ কবুল করুন। খুতবা শেষে যখন মিম্বর থেকে অবতরণ করলেন, তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আজ আমরা আপনার থেকে এমন কিছু শুনলাম যা এর পূর্বে আর কখনও শুনিনি। তখন তিনি বললেন, আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, যে ব্যক্তি রমাযান মাস পেল অথচ তাকে ক্ষমা করা হল না সে বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! কবুল করুন। যখন দ্বিতীয় স্তরে উঠলাম তখন তিনি বললেন, যার কাছে আপনার নাম উল্লেখ করা হল কিন্তু সে আপনার উপর দরূদ পড়ল না, সেও বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! কবুল করুন। যখন তৃতীয় স্তরে উঠলাম তখন তিনি বললেন, যে পিতা-মাতাকে অথবা তাদের কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল অথচ তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না সেও বঞ্চিত হোক। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ কবুল করুন। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭২৫৬)
২. যে দরূদ পড়ে না সে কৃপণ :
عَنْ أَبِيْ ذَرِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : إِنَّ أَبْخَلَ النَّاسِ مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ
আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি বড় কৃপণ, যার কাছে আমার নাম নেয়া হল, কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না। (জামেউস সগীর, হা/২১৫৬)
عَنْ أَبيْ ذَرٍّ قَالَ خَرَجْتُ ذَاتَ يَوْمٍ فَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَلَا أَخْبِرُكُمْ بِأَبْخَلِ النَّاسِ قَالُوْا بَلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنْ ذُكِرَتُ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ فَذٰلِكَ أَبْخَلُ النَّاسِ
আবু যর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঘর থেকে বের হয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দরবারে আসলে তিনি আমাকে বলেন, আমি কি তোমাদের সত্যিকার কৃপণ ব্যক্তি সম্পর্কে বলে দেব? সাহাবীরা বললেন, হ্যাঁ- হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, সে-ই সত্যিকার কৃপণ, যার সামনে আমার নাম আলোচনা করা হল; অথচ সে আমার উপর দরূদ পাঠ করল না। (সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৬৮৪)
৩. দরূদ না পড়লে আফসোস করতে হবে :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَا قَعَدَ قَوْمٌ مَقْعَدًا لَا يَذْكُرُوْنَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَيُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِنْ دَخَلُوْا الْجَنَّةَ لِلثَّوَابََََِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করে বলেন, যে মজলিসে লোকেরা আল্লাহর যিকির করে না এবং নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়ে না, সেই মজলিস কিয়ামতের দিন তাদের জন্য অনুতাপের কারণ হবে। যদিও তারা নেক আমলের কারণে জান্নাতে যায়। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৯৬৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৯১)
৪. দরূদ পাঠ না করলে জান্নাতের পথ সহজ হয় না :
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -- : مَنْ نَسِىَ الصَّلَاةَ عَلَىَّ خُطِّئَ بِه طَرِيْقُ الْجَنَّةِ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পড়া ভুলে যাবে সে জান্নাতের রাস্তা ভুলে যাবে। (বায়হাকী, হা/৩৩০১; ইবনে মাজাহ, হা/৯০৮)
৫. দরূদ না পড়া দু‘আ কবুলের অন্তরায় :
عَنْ اَنَسِ قَالَ : قَالَ : رَسُوْلَ اللهِ : كُلُّ دُعَاءٍ مَحْجُوبٌ حَتّٰى يُصَلّٰى عَلَى النَّبِيِّ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা হবে না, ততক্ষণ দু‘আ কবুল করা হয় না।
(জামেউস সগীর, হা/৬৩০৩; সিলসিলাহ সহীহাহ, হা/২০৩৫)
১. সালাতের শেষাংশে দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ فُضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ صَاحِبِ رَسُوْلِ اللهِ يَقُوْلُ سَمِعَ رَسُوْلُ اللهِ رَجُلًا يَدْعُو فِي الصَّلَاةِ وَلَمْ يَذْكُرِ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَلَمْ يُصَلِّ عَلٰى النَّبِيِّ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عَجَّلَ هٰذَا ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهٗ وَلِغَيْرِه إِذَا صَلّٰى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيْدِ رَبِّه وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথী ফুদ্বালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ এক ব্যক্তিকে সালাতে দু‘আ করতে শুনলেন। লোকটি নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পাঠ করল না। তখন তিনি বললেন, এই লোকটি তাড়াহুড়া করল। তারপর তাকে ডেকে বললেন, যখন তোমাদের কেউ সালাত পড়বে তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করবে তারপর নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়বে। অতঃপর যা ইচ্ছা দু‘আ করবে। (তিরমিযী, হা/৩৪৭৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৮২)
২. জানাযার সালাতে দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ أَبي أُمَامَةَ بْنُ سَهْلٍ ، أَنَّهٗ أَخْبَرَهٗ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ، أَنَّ السُّنَّةَ فِي الصَّلَاةِ عَلَى الْجَنَازَةِ : أَنْ يُكَبِّرَ الْإِمَامُ ثُمَّ يَقْرَأُ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ بَعْدَ التَّكْبِيْرَةِ الأُوْلٰى سِرًّا فِي نَفْسِه ثُمَّ يُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ ، وَيَخْلُصُ الدُّعَاءَ لِلْجَنَازَةِ فِي التَّكْبِيْرَاتِ ، لَا يَقْرَأُ فِي شَيْءٍ مِنْهُنَّ
আবু উমামাহ ইবনে সাহল (রহ.) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ এর একজন সাহাবী তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, জানাযার সালাতে সুন্নাত হল, প্রথমে ইমাম তাকবীর বলবে। প্রথম তাকবীরের পর চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে, তারপর (দ্বিতীয়) তাকবীরের পর দরূদ পাঠ করবে এবং তৃতীয় তাকবীরের পর মৃতের জন্য বিশেষভাবে দু‘আ করবে; কিন্তু কুরআন পাঠ করবে না।
(মুসনাদে শাফেঈ, হা/১৬৭০)
৩. আযান শোনার পর দু‘আ পড়ার পূর্বে দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّهٗ سَمِعَ النَّبِىَّ - - يَقُوْلُ : إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُوْلُوْا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ ثُمَّ صَلُّوْا عَلَىَّ فَإِنَّهٗ مَنْ صَلّٰى عَلَىَّ صَلَاةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوْا اللهَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِى الْجَنَّةِ لَا تَنْبَغِى إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُوْنَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছেন যে, যখন তোমরা মুয়াযযিনের আযান শুনবে তখন তার মত বলো। তারপর আমার উপর দরূদ পড়ো। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। তারপর তোমরা আল্লাহর কাছে আমার জন্য উসীলার দু‘আ করবে। কারণ উসীলা হল জান্নাতে একটি উচ্চতর মর্যাদা, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে শুধু একজনই প্রাপ্ত হবে। আশা করি আমিই হব সেই ব্যক্তি। অতএব যে ব্যক্তি আমার জন্য আল্লাহর কাছে উসীলার দু‘আ করবে সে আমার সুপারিশপ্রাপ্ত হবে।
(সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৫; তিরমিযী, হা/৩৬১৪)
৪. দু‘আ করার সময় আল্লাহর প্রশংসার পর দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ فُضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٌ قَالَ بَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ قَاعِدًا إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ فَصَلٰى فَقَالَ اَللّٰهُمَّ أغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عَجَّلْتَ أَيُّهَا الْمُصَلِّيْ إِذَا صَلَّيْتَ فَقَعَدْتَ فَاحْمَدِ اللهَ بِمَا هُوَ أَهْلَهٗ وَصَلَّ عَلٰي ثُمَّ ادْعُهٗ قَالَ ثُمَّ صَلّٰى رَجُلٌ اٰخِرٌ بَعْدَ ذٰلِكَ فَحَمِدَ اللهَ وَصَلّٰى عَلَى النَّبِيِّ فَقَالَ لَهٗ النَّبِيِّ أَيَّهُا الْمُصَلِّي أَدْعُ تَجِبْ
ফুদ্বালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বসা ছিলেন- এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি আগমন করে সালাত আদায় করল এবং বলল, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো এবং দয়া করো। তখন নবী ﷺ বললেন, হে সালাত আদায়কারী! তুমি তাড়াহুড়া করে ফেলেছো। যখন তুমি সালাত আদায় করতে গিয়ে বসবে তখন আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করবে; তারপর আমার উপর দরূদ পড়বে; তারপর দু‘আ করবে। ফুদ্বালাহ (রাঃ) বলেন, তারপর আর এক লোক সালাত আদায় করল এবং সে আল্লাহর প্রশংসা করল ও নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়ল। তখন নবী ﷺ বললেন, হে সালাত আদায়কারী! তুমি দু‘আ করো তোমার দু‘আ কবুল করা হবে। (তিরমিযী, হা/৩৪৭৬; নাসাঈ, হা/১২৮৪)
৫. রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নাম শুনা, পড়া কিংবা লেখার সময় দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ اَلْبَخِيْلُ الَّذِيْ مَنْ ذُكِرَتْ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ
হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি প্রকৃত কৃপণ, যার কাছে আমার নাম নেয়া হল; কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না।
(তিরমিযী, হা/৩৫৪৬)
৬. মসজিদে প্রবেশের সময় দরূদ পড়া সুন্নাত :
মসজিদে প্রবেশ করা ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নবী ﷺ-এর উপর সালাম প্রেরণ করা সুন্নাত। হাদীসে এসেছে,
ফাতেমা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন দরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন,
رَبِّ اغْفِرْلِيْ ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
রাবিবগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা খোলে দিন।
আর যখন মসজিদ থেকে বের হতেন তখনও দরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন,
رَبِّ اغْفِرْلِيْ ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ
রাবিবগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা ফাদলিকা।
হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা করো এবং আমার জন্য আপনার করুণার দরজা খোলে দিন। (তিরমিযী, হা/৩১৪)
৭. জুমার দিন বেশি বেশি দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ اَلْأَنْصَارِيْ : عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : أَكْثَرُوْا عَلَيَّ الصَّلَاةَ فِيْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَإِنَّهٗ لَيْسَ أَحَدٌ يُصَلِّيْ عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا عُرِضَتْ عَلَيَّ صَلَاتُهٗ
আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ হতে বর্ণনা করে বলেন, তোমরা জুমার দিন আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ো; কারণ যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার উপর দরূদ পড়বে তার দরূদ আমার কাছে উপস্থাপন করা হয়।
(মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৩৫৭৭)
عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ اٰدَمُ وَفِيْهِ قُبِضَ وَفِيْهِ النَّفْخَةُ وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوْا عَلَىَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِيْهِ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوْضَةٌ عَلَىَّ . قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرِمْتَ يَقُوْلُوْنَ بَلِيْتَ . فَقَالَ : إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ
আউস ইবনে আউস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সর্বোত্তম দিনটি হল জুমার দিন। এই দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছে, এই দিনেই শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এই দিনেই লোকেরা বেহুঁশ হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর। কারণ তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আমাদের দরূদ কীভাবে পৌঁছানো হবে? আপনি তো মাটিতে মিশে যাবেন। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা জমিনের উপর নবীদের শরীর হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হা/১০৪৯)
৮. প্রত্যেক সকাল-সন্ধ্যায় দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ أَبِىْ الدَّرْداءِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلَ اللهِ : مَنْ صَلَّى عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا ، وَحِيْنَ يُمْسِيْ عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার করে দরূদ পাঠ করবে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে। (জামেউস সগীর, হা/৮৮১১; জামেউল আহাদীস, হা/২২৭৬৪)
৯. প্রতিটি মজলিসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوْا اللهَ فِيْهِ وَلَمْ يُصَلُّوْا عَلٰى نَبِيِّهِمْ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, কোনো সম্প্রদায় যদি কোনো মজলিসে বসে এবং তাতে আল্লাহকে স্মরণ না করে এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ না পড়ে, তাহলে সেই মজলিস তাদের জন্য অনুতাপের কারণ হবে। অতএব তিনি চাইলে তাদের শাস্তি দিবেন কিংবা তাদের ক্ষমা করে দিবেন।
(তিরমিযী, হা/৩৩৮০)
১০. যেকোন দুঃখ-কষ্টের সময় বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা উচিত :
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلَ اللهِ إِذَا ذَهَبَ ثُلُثًا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أُذْكُرُوْا اللهَ أُذْكُرُوْا اللهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتَّبِعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيْهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيْهِ قَالَ أُبَيْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهَ إِنِّيْ أَكْثَرُ الصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِيْ ؟ فَقَالَ مَا شِئْتَ قَالَ قُلْتُ الرُبُعُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ النِّصْفُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِيْ كُلُّهَا قَالَ إِذَا تَكْفِىْ هَمَّكَ وَيَغْفِرُ لَكَ ذَنْبَكَ
উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘুম থেকে উঠে যেতেন। অতঃপর তিনি বলতেন, হে মানুষেরা! তোমরা আল্লাহর যিকির করো, তোমরা আল্লাহর যিকির করো, রাজেফা (কিয়ামতের কম্পন) তো প্রায় এসেই গেছে তারপরই রাদেফা আসবে। মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে উপস্থিত, মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে উপস্থিত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশি বেশি করে সালাত প্রেরণ করতে চাই। আমি আপনার উপর কতবার সালাত প্রেরণ করব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি যা পার। আমি বললাম, আমার সমূদয় (আমল ও দু‘আর) চার ভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে কি আমি আমার (আমল ও দু‘আর) অর্ধেক আপনার জন্য সালাত প্রেরণে নিয়োজিত করব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে কি তিনভাগের একভাগ আপনার জন্য সালাত পাঠে ব্যয় করব? তিনি বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার সমুদয় দু‘আই আপনার জন্য সালাত প্রেরণে কাটিয়ে দেব। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তাহলে তা তোমার দুশ্চিন্তা দূর করবে এবং তোমার গুনাহসমূহ মুছে দেবে। (তিরমিযী, হা/২৪৫৭)
১১. যখনই দরূদ পড়া হয় তখনই তা নবীর কাছে পৌঁছে যায়; তাই সর্বাবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা উচিত :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ لَا تَتَّخِذُوْا قَبْرِيْ عِيْدًا وَلَا تَجْعَلُوْا بُيُوْتَكُمْ قُبُوْرًا وَحَيْثُمَا كُنْتُمْ فَصَلُّوْا عَلَيَّ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ تَبْلُغُنِيْ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, তোমরা আমার কবরকে ঈদে (মিলন মেলায়) পরিণত করো না। আর তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরে পরিণত কর না। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আমার উপর দরূদ পড়ো। কারণ তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৮০৪; আবু দাউদ, হা/২০৪৪)
عَنْ عَبْدِ اللهِ ابْنْ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ إِنَّ لِلّٰهِ مَلَائِكَةً سَيَّاحِيْنَ فِي الْأَرْضِ يُبَلِّغُوْنِي مِنْ أُمَّتِي السَّلَامَ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহর কতিপয় ফেরেশতা রয়েছেন যারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ায়। তারা আমার উম্মতের পক্ষ থেকে আমার কাছে সালাম পৌঁছিয়ে দেন। (সুনানে নাসাঈ, হা/১২৮১)
عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ قَالَ : قالَ رَسُوْلَ اللهِ : أَكْثِرُوْا الصَّلَاةَ عَلَيَّ ، فَإِنَّ اللهَ وُكِّلَ بِيْ مَلَكًا عِنْدَ قَبْرِيْ ، فَإِذَا صَلَّ عَلَيَّ رَجُلٌ مِنْ أُمَّتِيْ قَالَ لِيْ ذٰلِكَ الْمَلَكُ : يَا مُحَمَّد إِنَّ فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ صَلّٰى عَلَيْكَ السَّاعَةَ
আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করো। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আমার কবরের কাছে একজন মালাক (ফেরেশতা) নিযুক্ত করে রেখেছেন। যখনই আমার উম্মতের মধ্যে কোন ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পাঠ করে, তখন সেই ফেরেশতা আমাকে বলে, হে মুহাম্মাদ! অমুক, অমুক ব্যক্তি এই সময় আপনার উপর দরূদ পাঠ করেছে। (সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৫৩০)
عَنْ فُضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ صَاحِبِ رَسُوْلِ اللهِ يَقُوْلُ سَمِعَ رَسُوْلُ اللهِ رَجُلًا يَدْعُو فِي الصَّلَاةِ وَلَمْ يَذْكُرِ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَلَمْ يُصَلِّ عَلٰى النَّبِيِّ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عَجَّلَ هٰذَا ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهٗ وَلِغَيْرِه إِذَا صَلّٰى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيْدِ رَبِّه وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথী ফুদ্বালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ এক ব্যক্তিকে সালাতে দু‘আ করতে শুনলেন। লোকটি নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পাঠ করল না। তখন তিনি বললেন, এই লোকটি তাড়াহুড়া করল। তারপর তাকে ডেকে বললেন, যখন তোমাদের কেউ সালাত পড়বে তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করবে তারপর নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়বে। অতঃপর যা ইচ্ছা দু‘আ করবে। (তিরমিযী, হা/৩৪৭৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৮২)
২. জানাযার সালাতে দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ أَبي أُمَامَةَ بْنُ سَهْلٍ ، أَنَّهٗ أَخْبَرَهٗ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ، أَنَّ السُّنَّةَ فِي الصَّلَاةِ عَلَى الْجَنَازَةِ : أَنْ يُكَبِّرَ الْإِمَامُ ثُمَّ يَقْرَأُ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ بَعْدَ التَّكْبِيْرَةِ الأُوْلٰى سِرًّا فِي نَفْسِه ثُمَّ يُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ ، وَيَخْلُصُ الدُّعَاءَ لِلْجَنَازَةِ فِي التَّكْبِيْرَاتِ ، لَا يَقْرَأُ فِي شَيْءٍ مِنْهُنَّ
আবু উমামাহ ইবনে সাহল (রহ.) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ এর একজন সাহাবী তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, জানাযার সালাতে সুন্নাত হল, প্রথমে ইমাম তাকবীর বলবে। প্রথম তাকবীরের পর চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে, তারপর (দ্বিতীয়) তাকবীরের পর দরূদ পাঠ করবে এবং তৃতীয় তাকবীরের পর মৃতের জন্য বিশেষভাবে দু‘আ করবে; কিন্তু কুরআন পাঠ করবে না।
(মুসনাদে শাফেঈ, হা/১৬৭০)
৩. আযান শোনার পর দু‘আ পড়ার পূর্বে দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّهٗ سَمِعَ النَّبِىَّ - - يَقُوْلُ : إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُوْلُوْا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ ثُمَّ صَلُّوْا عَلَىَّ فَإِنَّهٗ مَنْ صَلّٰى عَلَىَّ صَلَاةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوْا اللهَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِى الْجَنَّةِ لَا تَنْبَغِى إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُوْنَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِىَ الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছেন যে, যখন তোমরা মুয়াযযিনের আযান শুনবে তখন তার মত বলো। তারপর আমার উপর দরূদ পড়ো। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। তারপর তোমরা আল্লাহর কাছে আমার জন্য উসীলার দু‘আ করবে। কারণ উসীলা হল জান্নাতে একটি উচ্চতর মর্যাদা, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে শুধু একজনই প্রাপ্ত হবে। আশা করি আমিই হব সেই ব্যক্তি। অতএব যে ব্যক্তি আমার জন্য আল্লাহর কাছে উসীলার দু‘আ করবে সে আমার সুপারিশপ্রাপ্ত হবে।
(সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৫; তিরমিযী, হা/৩৬১৪)
৪. দু‘আ করার সময় আল্লাহর প্রশংসার পর দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ فُضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٌ قَالَ بَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ قَاعِدًا إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ فَصَلٰى فَقَالَ اَللّٰهُمَّ أغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عَجَّلْتَ أَيُّهَا الْمُصَلِّيْ إِذَا صَلَّيْتَ فَقَعَدْتَ فَاحْمَدِ اللهَ بِمَا هُوَ أَهْلَهٗ وَصَلَّ عَلٰي ثُمَّ ادْعُهٗ قَالَ ثُمَّ صَلّٰى رَجُلٌ اٰخِرٌ بَعْدَ ذٰلِكَ فَحَمِدَ اللهَ وَصَلّٰى عَلَى النَّبِيِّ فَقَالَ لَهٗ النَّبِيِّ أَيَّهُا الْمُصَلِّي أَدْعُ تَجِبْ
ফুদ্বালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বসা ছিলেন- এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি আগমন করে সালাত আদায় করল এবং বলল, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো এবং দয়া করো। তখন নবী ﷺ বললেন, হে সালাত আদায়কারী! তুমি তাড়াহুড়া করে ফেলেছো। যখন তুমি সালাত আদায় করতে গিয়ে বসবে তখন আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করবে; তারপর আমার উপর দরূদ পড়বে; তারপর দু‘আ করবে। ফুদ্বালাহ (রাঃ) বলেন, তারপর আর এক লোক সালাত আদায় করল এবং সে আল্লাহর প্রশংসা করল ও নবী ﷺ-এর উপর দরূদ পড়ল। তখন নবী ﷺ বললেন, হে সালাত আদায়কারী! তুমি দু‘আ করো তোমার দু‘আ কবুল করা হবে। (তিরমিযী, হা/৩৪৭৬; নাসাঈ, হা/১২৮৪)
৫. রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নাম শুনা, পড়া কিংবা লেখার সময় দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ اَلْبَخِيْلُ الَّذِيْ مَنْ ذُكِرَتْ عِنْدَهٗ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ
হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, সেই ব্যক্তি প্রকৃত কৃপণ, যার কাছে আমার নাম নেয়া হল; কিন্তু সে আমার উপর দরূদ পড়ল না।
(তিরমিযী, হা/৩৫৪৬)
৬. মসজিদে প্রবেশের সময় দরূদ পড়া সুন্নাত :
মসজিদে প্রবেশ করা ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নবী ﷺ-এর উপর সালাম প্রেরণ করা সুন্নাত। হাদীসে এসেছে,
ফাতেমা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন দরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন,
رَبِّ اغْفِرْلِيْ ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
রাবিবগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা খোলে দিন।
আর যখন মসজিদ থেকে বের হতেন তখনও দরূদ ও সালাম পাঠ করতেন এবং বলতেন,
رَبِّ اغْفِرْلِيْ ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ
রাবিবগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা ফাদলিকা।
হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা করো এবং আমার জন্য আপনার করুণার দরজা খোলে দিন। (তিরমিযী, হা/৩১৪)
৭. জুমার দিন বেশি বেশি দরূদ পড়া সুন্নাত :
عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ اَلْأَنْصَارِيْ : عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : أَكْثَرُوْا عَلَيَّ الصَّلَاةَ فِيْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَإِنَّهٗ لَيْسَ أَحَدٌ يُصَلِّيْ عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا عُرِضَتْ عَلَيَّ صَلَاتُهٗ
আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ হতে বর্ণনা করে বলেন, তোমরা জুমার দিন আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়ো; কারণ যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার উপর দরূদ পড়বে তার দরূদ আমার কাছে উপস্থাপন করা হয়।
(মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৩৫৭৭)
عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ اٰدَمُ وَفِيْهِ قُبِضَ وَفِيْهِ النَّفْخَةُ وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوْا عَلَىَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِيْهِ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوْضَةٌ عَلَىَّ . قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرِمْتَ يَقُوْلُوْنَ بَلِيْتَ . فَقَالَ : إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ
আউস ইবনে আউস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সর্বোত্তম দিনটি হল জুমার দিন। এই দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছে, এই দিনেই শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এই দিনেই লোকেরা বেহুঁশ হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর। কারণ তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আমাদের দরূদ কীভাবে পৌঁছানো হবে? আপনি তো মাটিতে মিশে যাবেন। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা জমিনের উপর নবীদের শরীর হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হা/১০৪৯)
৮. প্রত্যেক সকাল-সন্ধ্যায় দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ أَبِىْ الدَّرْداءِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلَ اللهِ : مَنْ صَلَّى عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا ، وَحِيْنَ يُمْسِيْ عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার করে দরূদ পাঠ করবে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে। (জামেউস সগীর, হা/৮৮১১; জামেউল আহাদীস, হা/২২৭৬৪)
৯. প্রতিটি মজলিসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দরূদ পাঠ করা সুন্নাত :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوْا اللهَ فِيْهِ وَلَمْ يُصَلُّوْا عَلٰى نَبِيِّهِمْ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, কোনো সম্প্রদায় যদি কোনো মজলিসে বসে এবং তাতে আল্লাহকে স্মরণ না করে এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ না পড়ে, তাহলে সেই মজলিস তাদের জন্য অনুতাপের কারণ হবে। অতএব তিনি চাইলে তাদের শাস্তি দিবেন কিংবা তাদের ক্ষমা করে দিবেন।
(তিরমিযী, হা/৩৩৮০)
১০. যেকোন দুঃখ-কষ্টের সময় বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা উচিত :
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلَ اللهِ إِذَا ذَهَبَ ثُلُثًا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أُذْكُرُوْا اللهَ أُذْكُرُوْا اللهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتَّبِعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيْهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيْهِ قَالَ أُبَيْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهَ إِنِّيْ أَكْثَرُ الصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِيْ ؟ فَقَالَ مَا شِئْتَ قَالَ قُلْتُ الرُبُعُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ النِّصْفُ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ قَالَ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَّ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِيْ كُلُّهَا قَالَ إِذَا تَكْفِىْ هَمَّكَ وَيَغْفِرُ لَكَ ذَنْبَكَ
উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘুম থেকে উঠে যেতেন। অতঃপর তিনি বলতেন, হে মানুষেরা! তোমরা আল্লাহর যিকির করো, তোমরা আল্লাহর যিকির করো, রাজেফা (কিয়ামতের কম্পন) তো প্রায় এসেই গেছে তারপরই রাদেফা আসবে। মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে উপস্থিত, মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে উপস্থিত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশি বেশি করে সালাত প্রেরণ করতে চাই। আমি আপনার উপর কতবার সালাত প্রেরণ করব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি যা পার। আমি বললাম, আমার সমূদয় (আমল ও দু‘আর) চার ভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে কি আমি আমার (আমল ও দু‘আর) অর্ধেক আপনার জন্য সালাত প্রেরণে নিয়োজিত করব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে কি তিনভাগের একভাগ আপনার জন্য সালাত পাঠে ব্যয় করব? তিনি বললেন, তুমি যা পার; তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার সমুদয় দু‘আই আপনার জন্য সালাত প্রেরণে কাটিয়ে দেব। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তাহলে তা তোমার দুশ্চিন্তা দূর করবে এবং তোমার গুনাহসমূহ মুছে দেবে। (তিরমিযী, হা/২৪৫৭)
১১. যখনই দরূদ পড়া হয় তখনই তা নবীর কাছে পৌঁছে যায়; তাই সর্বাবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা উচিত :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ لَا تَتَّخِذُوْا قَبْرِيْ عِيْدًا وَلَا تَجْعَلُوْا بُيُوْتَكُمْ قُبُوْرًا وَحَيْثُمَا كُنْتُمْ فَصَلُّوْا عَلَيَّ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ تَبْلُغُنِيْ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, তোমরা আমার কবরকে ঈদে (মিলন মেলায়) পরিণত করো না। আর তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরে পরিণত কর না। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আমার উপর দরূদ পড়ো। কারণ তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৮০৪; আবু দাউদ, হা/২০৪৪)
عَنْ عَبْدِ اللهِ ابْنْ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ إِنَّ لِلّٰهِ مَلَائِكَةً سَيَّاحِيْنَ فِي الْأَرْضِ يُبَلِّغُوْنِي مِنْ أُمَّتِي السَّلَامَ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহর কতিপয় ফেরেশতা রয়েছেন যারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ায়। তারা আমার উম্মতের পক্ষ থেকে আমার কাছে সালাম পৌঁছিয়ে দেন। (সুনানে নাসাঈ, হা/১২৮১)
عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ قَالَ : قالَ رَسُوْلَ اللهِ : أَكْثِرُوْا الصَّلَاةَ عَلَيَّ ، فَإِنَّ اللهَ وُكِّلَ بِيْ مَلَكًا عِنْدَ قَبْرِيْ ، فَإِذَا صَلَّ عَلَيَّ رَجُلٌ مِنْ أُمَّتِيْ قَالَ لِيْ ذٰلِكَ الْمَلَكُ : يَا مُحَمَّد إِنَّ فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ صَلّٰى عَلَيْكَ السَّاعَةَ
আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করো। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আমার কবরের কাছে একজন মালাক (ফেরেশতা) নিযুক্ত করে রেখেছেন। যখনই আমার উম্মতের মধ্যে কোন ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পাঠ করে, তখন সেই ফেরেশতা আমাকে বলে, হে মুহাম্মাদ! অমুক, অমুক ব্যক্তি এই সময় আপনার উপর দরূদ পাঠ করেছে। (সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৫৩০)
যেহেতু দরূদ পাঠ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, তাই এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শেখানো পদ্ধতি ও শব্দগুলোর অনুসরণ করাই বাঞ্চনীয়। আমাদের দেশে দরূদের অনেক বই বাজারে পাওয়া যায়- যার অধিকাংশই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত বা স্বীকৃত নয়। এগুলো বানানো ও জাল হাদীসের ভিত্তিতে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। সুতরাং এসব মনগড়া, বানানো ও জাল দরূদ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত দরূদ পড়তে হবে। নিম্নে নবী ﷺ থেকে প্রমাণিত দরূদগুলো দেয়া হল :
১. আবু হুমাইদ সাঈদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কীভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِه وَذُرِّيَّتِه كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِه وَذُرِّيَّتِه كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ .
‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর স্ত্রীগণ ও সন্তানদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন যেভাবে ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে বরকত অবতীর্ণ করুন যেভাবে ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর বরকত অবতীর্ণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। (সহীহ বুখারী, হা/৩৩৬৯, ৬৩৬০)
২. আবদুর রহমান ইবনে আবু লাইলা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কা‘ব ইবনে উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অতঃপর বলেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না, যা আমি নবী ﷺ থেকে শুনেছি? আমি বললাম, হ্যাঁ! তখন তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কীভাবে সালাম করব, তা আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। এখন বলুন, আমরা কীভাবে দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমনিভাবে আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন, যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।
(সহীহ বুখারী, হা/৬৩৫৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮১৫৮)
৩. উকবা ইবনে আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী ﷺ-এর সামনে এসে বসল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনাকে কীভাবে সালাম জানাব তা জানি। তবে আপনার উপর কীভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তা আমাদেরকে বলে দিন। তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যে, যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ اَلنَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ اَلنَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন আন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(সুনানে সুগরা লিল বায়হাকী, হা/৪৪৭)
৪. আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ একদা সা‘দ ইবনে উবাদার মজলিসে আসলেন। তখন বশীর ইবনে সা‘দ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা‘আলা আমাদের আদেশ দিয়েছেন যেন আমরা আপনার উপর দরূদ পড়ি। আমরা কীভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ فِى الْعَالَمِيْنَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীম। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ফিল আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে পৃথিবীতে ইব্রাহীমের পরিবারের উপর বরকত দান করেছেন। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(সহীহ মুসলিম, হা/৪০৫)
৫. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কীভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَاٰلِ إِبْرَاهِيْمَ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া আ-লি ইবরাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার বান্দা এবং রাসূল মুহাম্মদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে রহমত বর্ষণ করেছেন ইব্রাহীমের উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। (সহীহ বুখারী, হা/৬৩৫৮)
৬. কা‘ব ইবনে উজরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কীভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। তবে আপনার উপর কীভাবে দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ। ‘আল্লাহুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেভাবে করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারের উপর বরকত নাযিল করুন, যেভাবে নাযিল করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। (সহীহ মুসলিম, হা/৪০৬)
৭. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কীভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَاٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসূলিকা, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা, ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদের উপর রহমত বর্ষণ কর যেমনভাবে করেছেন ইব্রাহীম এর উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীম এর উপর। (সুনানে নাসাঈ, হা/১২৯৩)
৮. যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) আমি নিজের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট কিছু একটা জিজ্ঞেস করলাম। তখন আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! কীভাবে আমরা আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
আল্লাহুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীমের উপর। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭১৪)
৯. যায়েদ ইবনে খারিজাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নবী ﷺ-কে (দরূদ পাঠ করার ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার উপর দরূদ পড় এবং অনেক বেশি চেষ্টা করে দু‘আ কর। এভাবে বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন। (সুনানে নাসায়ী, হা/১২৯২)
১. আবু হুমাইদ সাঈদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কীভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِه وَذُرِّيَّتِه كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِه وَذُرِّيَّتِه كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ .
‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর স্ত্রীগণ ও সন্তানদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন যেভাবে ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে বরকত অবতীর্ণ করুন যেভাবে ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর বরকত অবতীর্ণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। (সহীহ বুখারী, হা/৩৩৬৯, ৬৩৬০)
২. আবদুর রহমান ইবনে আবু লাইলা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কা‘ব ইবনে উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অতঃপর বলেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না, যা আমি নবী ﷺ থেকে শুনেছি? আমি বললাম, হ্যাঁ! তখন তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কীভাবে সালাম করব, তা আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। এখন বলুন, আমরা কীভাবে দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরা-হীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমনিভাবে আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন, যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর; নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।
(সহীহ বুখারী, হা/৬৩৫৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮১৫৮)
৩. উকবা ইবনে আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী ﷺ-এর সামনে এসে বসল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনাকে কীভাবে সালাম জানাব তা জানি। তবে আপনার উপর কীভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তা আমাদেরকে বলে দিন। তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যে, যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ اَلنَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ اَلنَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন আন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর বরকত নাযিল করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(সুনানে সুগরা লিল বায়হাকী, হা/৪৪৭)
৪. আবু মাসউদ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ একদা সা‘দ ইবনে উবাদার মজলিসে আসলেন। তখন বশীর ইবনে সা‘দ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা‘আলা আমাদের আদেশ দিয়েছেন যেন আমরা আপনার উপর দরূদ পড়ি। আমরা কীভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ فِى الْعَالَمِيْنَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীম। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ফিল আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে পৃথিবীতে ইব্রাহীমের পরিবারের উপর বরকত দান করেছেন। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(সহীহ মুসলিম, হা/৪০৫)
৫. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কীভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَاٰلِ إِبْرَاهِيْمَ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা। ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া আ-লি ইবরাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার বান্দা এবং রাসূল মুহাম্মদের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনিভাবে রহমত বর্ষণ করেছেন ইব্রাহীমের উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। (সহীহ বুখারী, হা/৬৩৫৮)
৬. কা‘ব ইবনে উজরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী ﷺ-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কীভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। তবে আপনার উপর কীভাবে দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اٰلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ। ‘আল্লাহুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন যেভাবে করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারের উপর বরকত নাযিল করুন, যেভাবে নাযিল করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারের উপর; নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত। (সহীহ মুসলিম, হা/৪০৬)
৭. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কীভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَاٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসূলিকা, কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা, ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদের উপর রহমত বর্ষণ কর যেমনভাবে করেছেন ইব্রাহীম এর উপর। আর মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীম এর উপর। (সুনানে নাসাঈ, হা/১২৯৩)
৮. যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) আমি নিজের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট কিছু একটা জিজ্ঞেস করলাম। তখন আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! কীভাবে আমরা আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে-
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
আল্লাহুম্মা বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর বরকত দান করুন যেমনিভাবে বরকত দান করেছেন ইব্রাহীমের উপর। নিশ্চয় আপনি মহান এবং প্রশংসিত।
(মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭১৪)
৯. যায়েদ ইবনে খারিজাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নবী ﷺ-কে (দরূদ পাঠ করার ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার উপর দরূদ পড় এবং অনেক বেশি চেষ্টা করে দু‘আ কর। এভাবে বলবে-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ
‘আল্লাহুম্মা সালিল ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন’।
অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন। (সুনানে নাসায়ী, হা/১২৯২)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমরা নবী ﷺ এর পেছনে সালাত আদায় করতাম তখন বলতাম যে, জিবরাঈল, মিকাইল এবং অমুক, অমুকের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আল্লাহই হলেন ‘সালাম’। অতএব তোমরা যখন সালাত আদায় করবে তখন বলবে-
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلٰوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ -‐ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُولُهٗ
আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বায়্যিবা-ত, আসসালামু ‘আলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লা-হি ওয়াবারাকা-তুহ। আসসালা-মু ‘আলাইনা ওয়া‘আলা ‘ইবাদিল্লা-হিস সা-লিহীন। আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহ।
অর্থা : সকল প্রশংসা, সালাত ও পবিত্র বাক্যসমূহ আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং নেক বান্দাদের উপরও শান্তি অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।
নবী ﷺ বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এরূপ বলবে সে আসমান ও জমিনের সকল নেককার ব্যক্তিকে সালামের মধ্যে শামিল করে নিল। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩১, ১২০২, ৭৩৮১)
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلٰوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ -‐ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُولُهٗ
আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বায়্যিবা-ত, আসসালামু ‘আলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লা-হি ওয়াবারাকা-তুহ। আসসালা-মু ‘আলাইনা ওয়া‘আলা ‘ইবাদিল্লা-হিস সা-লিহীন। আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহ।
অর্থা : সকল প্রশংসা, সালাত ও পবিত্র বাক্যসমূহ আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং নেক বান্দাদের উপরও শান্তি অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।
নবী ﷺ বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এরূপ বলবে সে আসমান ও জমিনের সকল নেককার ব্যক্তিকে সালামের মধ্যে শামিল করে নিল। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩১, ১২০২, ৭৩৮১)
এমনিতেই বর্তমানে দ্বীনে ইসলামে বিদ‘আতের সংযোগ দৈনন্দিন জীবনের নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিশেষভাবে যিকির-আযকার ও দু‘আ অযীফার বেলায় মানুষের মনগড়া এবং সুন্নাহর বিপরিত অনেক বস্তু সংযোগ করে দেয়া হয়েছে। ফলে মাসনূন দু‘আ ও যিকির যেন ভুলে যাওয়া অধ্যায় হয়ে গেছে। অনেক মনগড়া দরূদ ও সালাম সমাজে প্রচলিত রয়েছে। যেমন-
১. দরূদে আকবার :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ سَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ -‐ اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ سَيِّدِ النَّبِيِّيْنَ ....
বাজারে প্রচলিত অযীফার বইয়ে এভাবে অনেক লম্বা দরূদ লেখা হয়েছে। কিন্তু এই দরূদের সুনির্দিষ্ট কোন ফযীলত সেখানে উল্লেখ করা হয়নি এবং তার কোন দলীল উল্লেখ করেননি।
২. দরূদে লাখী :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلَّمَ عَلٰى سَيِّدِنَا وَمَوْلَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اَلِ سَيِّدِ نَا مُحَمَّدٍ بِعَدَدِ رَحْمَةِ اللهِ -
এভাবে অনেক লম্বা দরূদ লেখা হয়েছে। কিন্তু লেখক এটা কোথায় পেয়েছেন, তার কোন দলীল উল্লেখ করেননি।
৩. দরূদে তাজ :
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلٰى سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَاحِبِ التَّاجِ وَالْمِعْرَاجِ وَالْبُرَاقِ وَالْعَلَمِ ....
অযীফার বইয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘এই দরূদ শরীফের ফযীলত অনেক। যাহার বিশদ বর্ণনা এখানে অসম্ভব।’’ কিন্তু তার কোন দলীল উল্লেখ করা হয়নি।
এ ছাড়াও আরো অনেক বানানো দরূদ রয়েছে। যেমন- দরূদে তুনাজ্জীনা, দরূদে হাজারী, দরূদে নারীয়া ইত্যাদি। এ সকল দরূদ একটিও রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে প্রমাণিত নয়।
সুতরাং আমরা মুসলিম ভাই-বোনদেরকে সতর্ক করে বলতে চাই, আপনারা অবশ্যই আল্লাহকে এবং আল্লাহর রাসূলকে ভালোবাসেন। আর আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের ভালোবাসা অর্জনের উপায় হচ্ছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ এর ভিত্তিতে ঈমান ও আমল গড়ে তুলা। যেন অতি মূল্যবান জীবনে ব্যয়কৃত সময়, সম্পদ এবং অন্যান্য যোগ্যতা কিয়ামতের দিন ধ্বংস হয়ে না যায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
وَمَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ
যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে এমন কোনো কাজ করেছে, যার ভিত্তি শরীয়তে নেই, সেই কাজ পরিত্যাজ্য। (সহীহ মুসলিম, হা/৪৫৯০)
অন্য এক হাদীসে তিনি বলেছেন,
كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَ كُلَّ ضَلَالَةٍ فِيْ النَّارِ
প্রত্যেক বিদ‘আত গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহীর ঠিকানা হল জাহান্নাম। (সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৭৮৫)
১. দরূদে আকবার :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ سَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ -‐ اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ سَيِّدِ النَّبِيِّيْنَ ....
বাজারে প্রচলিত অযীফার বইয়ে এভাবে অনেক লম্বা দরূদ লেখা হয়েছে। কিন্তু এই দরূদের সুনির্দিষ্ট কোন ফযীলত সেখানে উল্লেখ করা হয়নি এবং তার কোন দলীল উল্লেখ করেননি।
২. দরূদে লাখী :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلَّمَ عَلٰى سَيِّدِنَا وَمَوْلَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اَلِ سَيِّدِ نَا مُحَمَّدٍ بِعَدَدِ رَحْمَةِ اللهِ -
এভাবে অনেক লম্বা দরূদ লেখা হয়েছে। কিন্তু লেখক এটা কোথায় পেয়েছেন, তার কোন দলীল উল্লেখ করেননি।
৩. দরূদে তাজ :
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلٰى سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَاحِبِ التَّاجِ وَالْمِعْرَاجِ وَالْبُرَاقِ وَالْعَلَمِ ....
অযীফার বইয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘এই দরূদ শরীফের ফযীলত অনেক। যাহার বিশদ বর্ণনা এখানে অসম্ভব।’’ কিন্তু তার কোন দলীল উল্লেখ করা হয়নি।
এ ছাড়াও আরো অনেক বানানো দরূদ রয়েছে। যেমন- দরূদে তুনাজ্জীনা, দরূদে হাজারী, দরূদে নারীয়া ইত্যাদি। এ সকল দরূদ একটিও রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে প্রমাণিত নয়।
সুতরাং আমরা মুসলিম ভাই-বোনদেরকে সতর্ক করে বলতে চাই, আপনারা অবশ্যই আল্লাহকে এবং আল্লাহর রাসূলকে ভালোবাসেন। আর আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের ভালোবাসা অর্জনের উপায় হচ্ছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ এর ভিত্তিতে ঈমান ও আমল গড়ে তুলা। যেন অতি মূল্যবান জীবনে ব্যয়কৃত সময়, সম্পদ এবং অন্যান্য যোগ্যতা কিয়ামতের দিন ধ্বংস হয়ে না যায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
وَمَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ
যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে এমন কোনো কাজ করেছে, যার ভিত্তি শরীয়তে নেই, সেই কাজ পরিত্যাজ্য। (সহীহ মুসলিম, হা/৪৫৯০)
অন্য এক হাদীসে তিনি বলেছেন,
كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَ كُلَّ ضَلَالَةٍ فِيْ النَّارِ
প্রত্যেক বিদ‘আত গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহীর ঠিকানা হল জাহান্নাম। (সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৭৮৫)
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ ও তার আদেশ নিষেধসমূহের বাস্তবায়নের মাধ্যমেই তাঁর মহববত লাভ করা যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
(সূরা আলে ইমরান : ৩১)
এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহকে মহববত করে বলে দাবি করে অথচ সে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আদর্শের অনুসরণ করে না, সে অবশ্যই স্বীয় দাবিতে মিথ্যুক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
أَطِيْعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِيْنَ ‐
তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালোবাসেন না। (সূরা আলে ইমরান : ৩১-৩২)
আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আদর্শের বিরোধিতা করা কুফর। আর যারা কুফরি করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহববত করেন না- যদিও সে এ দাবী করে যে, সে আল্লাহকে মহববত করে এবং তার নৈকট্য লাভ করে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ইত্তেবা/অনুসরণ ছাড়া সে মুমিন হতে পারবে না। এমনকি যদি পূর্ববর্তী যুগের কোন নবী বা রাসূলও এ যুগে আগমন করতেন তাহলে তার জন্যও রাসূলে উপর ঈমান আনা, তার ইত্তেবা করা ও তার আনীত দ্বীনের অনুসরণ করা তার উপর ওয়াজিব হত।
তাই আমাদেরকে যাবতীয় কাজ-কর্মে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দান করুন। আমীন!
﴿قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
(সূরা আলে ইমরান : ৩১)
এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহকে মহববত করে বলে দাবি করে অথচ সে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আদর্শের অনুসরণ করে না, সে অবশ্যই স্বীয় দাবিতে মিথ্যুক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
أَطِيْعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِيْنَ ‐
তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালোবাসেন না। (সূরা আলে ইমরান : ৩১-৩২)
আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আদর্শের বিরোধিতা করা কুফর। আর যারা কুফরি করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহববত করেন না- যদিও সে এ দাবী করে যে, সে আল্লাহকে মহববত করে এবং তার নৈকট্য লাভ করে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ইত্তেবা/অনুসরণ ছাড়া সে মুমিন হতে পারবে না। এমনকি যদি পূর্ববর্তী যুগের কোন নবী বা রাসূলও এ যুগে আগমন করতেন তাহলে তার জন্যও রাসূলে উপর ঈমান আনা, তার ইত্তেবা করা ও তার আনীত দ্বীনের অনুসরণ করা তার উপর ওয়াজিব হত।
তাই আমাদেরকে যাবতীয় কাজ-কর্মে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দান করুন। আমীন!
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন