মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
গ. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রিসালাত সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক বক্তব্য
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/249/5
ইসলাম আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম। এর বাহক হলেন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি তাঁর জীবনের সমুদয় সময় ও ক্ষণকে দীনের প্রচার ও প্রসারের নিমিত্তে অতিবাহিত করেছেন। দীন প্রচারের সুমহান দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তাঁকে প্রেরণ করেছেন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে:
রক্ষরদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদেরকে তাঁর আয়াতসমূহ পড়ে শুনান, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। অথচ ইতোপূর্বে তারা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত ছিল।’’ [সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ২]
সুতরাং আয়াতসমূহের তিলাওয়াত, আত্মার পরিশুদ্ধি, কিতাবুল্লাহ তথা কুরআনের শিক্ষাদান বিধি-বিধানের ব্যাখ্যা, উন্নত নৈতিকতা ও চরিত্রের উৎকর্ষ সাধনের গুরুদায়িত্ব তাঁর ওপর অর্পিত হয়েছিল। তাঁর আগমনের প্রাক্কালে আরবের লোকেরা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাধ্যমে তাদেরকে ধ্বংস থেকে মুক্তি দিয়েছেন। কেননা তাঁর রীতি বা সুন্নাত হলো, কোনো যালিম সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার পূর্বে তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করা, যিনি তাদেরকে সত্য ও সঠিক পথের দিকে আহ্বান করবেন। এ মর্মে সূরা আল-কাসাসে এসেছে:
“ধ্বংস করেন না, যে পর্যন্ত তার কেন্দ্রস্থলে রাসূল প্রেরণ না করেন। যিনি তাদের কাছে আয়াতসমূহ পাঠ করেন এবং আমি জনপদসমূহকে তখনই ধ্বংস করি যখন তার বাসিন্দারা যুলুম করে।’’ [সুরা আল-কাসাস, আয়াত: ৫৯]
অতএব, আল্লাহ প্রদত্ত ওহীর জ্ঞান মানুষের মাঝে প্রচার করার মাধ্যমে ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্প্রদায়কে মুক্তির অমীয় সুধা পানের জন্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আভির্ভূত হয়েছিলেন।
তিনি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মানবজাতিকে আল্লাহর ভীতিপ্রদর্শন ও জান্নাতের সুসংবাদ দিতেন, যাতে মানুষেরা অকল্যাণকর ও যাবতীয় অবৈধ পন্থা অবলম্বন থেকে দূরে থাকে। [মহান আল্লাহ বলেন ﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ شَٰهِدٗا وَمُبَشِّرٗا وَنَذِيرٗا ٤٥ وَدَاعِيًا إِلَى ٱللَّهِ بِإِذۡنِهِۦ وَسِرَاجٗا مُّنِيرٗا ٤٦﴾ [ الاحزاب : ٤٥، ٤٦ ] ‘‘হে নবী! আমরা আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে সুসংবাদতা ও ভীতিপ্রদর্শন রূপে এবং আল্লাহর নির্দেশ তার প্রতি আহবানকরী উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।’’ [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪৫-৪৬]] মূলতঃ এ সুসংবাদ ও ভীতিপ্রদর্শক রূপেই আল্লাহ তা’আলা যুগে যুগে নবী-রাসূলদের এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, যেন মানব জাতি কিয়ামতের দিন এ আপত্তি করতে না পারে যে, হে আল্লাহ! কিসে তোমার সন্তুষ্টি এবং কিসে অসন্তুষ্টি তা আমরা অবগত ছিলাম না। যদি আমরা জানতাম তা হলে সে অনুসারে জীবন পরিচালনা করতাম। এ ধরণের কোনো দলীল বা প্রমাণ যেন মানুষ উপস্থাপন করতে না পারে সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই আল্লাহ নবী-রাসূলগণের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেন,
‘‘আমি সুসংবাদ দাতা ও সাবধানকারী রাসূল প্রেরণ করেছি, যাতে রাসূল আগমনের পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ না থাকে। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’’ [সূরা আন-নিসা, আয়াত, ১৬৫]
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা বিশ্বের জন্য ভীতিপ্রদর্শক-রূপে প্রেরিত হয়েছেন, যেন আহলে কিতাবরা (ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টান) অভিযোগ উত্থাপন করতে না পারে যে, আমাদের কাছে কোনো সুসংবাদ দাতা ও ভীতিপ্রদর্শক আসে নি। [আল্লাহর ﴿يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ قَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمۡ عَلَىٰ فَتۡرَةٖ مِّنَ ٱلرُّسُلِ أَن تَقُولُواْ مَا جَآءَنَا مِنۢ بَشِيرٖ وَلَا نَذِيرٖۖ فَقَدۡ جَآءَكُم بَشِيرٞ وَنَذِيرٞۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ١٩﴾ [ المائدة : ١٩ ] ‘‘হে আহলে কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন করেছেন, যিনি রাসূলগণের বিরতির পর তোমাদের কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা একথা বলতে না পার যে, আমাদের কাছে কোন সুসংবদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শক আগমন করে নি। অতএব, তোমাদের কাছে সুসংবাদ দাতা ভীতিপ্রদর্শক এসে গেছে আর তিনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান।’’ [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ১৯]] এ মর্মে সূরা ত্বা-হায় এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন,
‘‘যদি আমরা এদেরকে ইতোপূর্বে কোনো শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করতাম, তবে এরা বলত: হে আমাদের রব! আপনি আমাদের কাছে একজন রাসূল প্রেরণ করলেন না কেন? তাহলে তো আমরা অপমানিত ও হেয় হওয়ার পূর্বেই আপনার নিদর্শনসমূহ মেনে চলতাম।’’ [সূরা ত্বা-হা, আয়াত: ১৩৪] তাঁর আগমনের পূর্বে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কোনো ভীতি প্রদর্শক আগমন করেনি। ফলে মানুষের সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করার অনুভূতি পর্যন্ত লোপ পেয়ে যায়। এ জন্যে মহান আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেন সর্বশেষ ভীতিপ্রদর্শক ও সুসংবাদ দাতা রূপে। আর এটি ছিল বান্দার প্রতি মা‘বুদের রহমত বা করুণা স্বরূপ। [এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এসেছে, ﴿وَلَوۡلَآ أَن تُصِيبَهُم مُّصِيبَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيهِمۡ فَيَقُولُواْ رَبَّنَا لَوۡلَآ أَرۡسَلۡتَ إِلَيۡنَا رَسُولٗا فَنَتَّبِعَ ءَايَٰتِكَ وَنَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٤٧﴾ [ القصص : ٤٧ ] [সূরা আল-কাসাস, আয়াত: ৪৭]]
নবুয়ত লাভের প্রারম্ভে তিনি এ মর্মে আদিষ্ট হয়েছেন এবং সর্বপ্রথম নিজ পরিবার ও নিকটতম আত্মীয়স্বজনকে আল্লাহর আযাবের ভয় প্রদর্শন করেন। তাঁর উপর নাযিলকৃত আসমানী কিতাব মহাগ্রন্থ আল-কুরআনেও বিষয়টি এমনভাবে ধ্বনিত হয়েছে, যা প্রমাণ করছে যে, কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্যও তাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং নিজেই এ কথার স্বীকৃতি দিয়েছেন এভাবে,
‘‘আমার প্রতি এ কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কুরআন পৌঁছেছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি।’’ [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৯]
এ পৃথিবীতে মানুষের চলার পথ দু’টি। একটি হলো সরল সঠিক পথ বা সিরাতুল মুস্তাকীম। অপরটি গোমরাহীর পথ। এ দু’পথের যে কোনো পথে মানুষ পরিচালিত হতে পারে। এজন্যে পরকালেও জান্নাত এবং জাহান্নাম এ দু’ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে। পবিত্র কুরআন গোটা জাতিকে মুমিন এবং কাফির দু’শ্রেণিতে বিভক্ত করেছে। মুমিনগণ কিসের ভিত্তিতে জীবন চালাবেন এবং কোনোটি তাদের জীবন নির্বাহের পথ, সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই তাঁর আগমনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে ‘‘সিরাতুল মুস্তাকীম’’-এর পথ দেখানো। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন,
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।