hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাশ্‌ফুশ্‌ শুবহাত (সংশয় নিরসন)

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্‌হাব রহ.

১৩
দ্বাদশ অধ্যায়: ‘যে ব্যক্তি দ্বীনের কতিপয় ফরয ওযাজেব অর্থাৎ অবশ্যকরণীয় কর্তব্য পালন করে, সে তাওহীদ বিরোধী কোন কাজ করে ফেললেও কাফের হয়ে যায় না।’ যারা এই ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে, তাদের ভ্রান্তির নিরসন এবং তার বিস্তারিত প্রমাণপঞ্জি।
উপরের আলোচনায় একথা সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, যাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিহাদ করেছেন তারা এদের (আজকের দিনে শির্কী কাজে লিপ্ত নামধারী মুসলিমদের) চাইতে ঢের বেশী বুদ্ধিমান ছিল এবং তাদের শির্ক অপেক্ষাকৃত লঘু ছিল।

অতঃপর একথাও তুমি জেনে রাখো যে, এরা আমাদের বক্তব্যের ব্যাপারে একটি সংশয় উপস্থাপন করে, যা তাদের অন্যতম বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ। অতএব এই ভ্রান্তির অপনোদন ও সন্দেহের অবসানকল্পে নিম্নের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোন।

তারা বলে থাকে: যাদের প্রতি সাক্ষাতভাবে কুরআন নাযিল হয়েছিল (অর্থাৎ মক্কার কাফির মুশরিকগণ) তারা ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মা‘বুদ নেই’ একথার সাক্ষ্য প্রদান করে নি, তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মিথ্যা বলেছিল, তারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করেছিল, তারা কুরআনকে মিথ্যা বলেছিল এবং বলেছিল এটা একটা জাদু-মন্ত্র। কিন্তু আমরা তো সাক্ষ্য দিয়ে থাকি যে, আল্লাহ ছাড়া নেই কোনো মা‘বুদ এবং (এ সাক্ষ্যও দেই যে,) নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর রাসূল, আমরা কুরআনকে সত্য বলে জানি ও মানি আর পুনরুত্থান এর উপর বিশ্বাস রাখি, আমরা নামায পড়ি এবং রোযাও রাখি, তবু আমাদেরকে এদের (উক্ত বিষয়ে অবিশ্বাসী কাফেরদের) মত মনে কর কেন?

এর জওয়াব হচ্ছে এই যে, এ বিষয়ে সমগ্র ‘আলেম সমাজ তথা শরী‘আতের বিদ্বান মণ্ডলী একমত যে, একজন লোক যদি কোনো কোনো ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্য বলে মানে, আর কোনো কোনো বিষয়ে তাঁকে মিথ্যা বলে ভাবে, তবে সে নির্ঘাত কাফের, সে ইসলামে প্রবিষ্টই’ হতে পারে না; এই একই কথা প্রযোজ্য হবে তার উপরেও যে ব্যক্তি কুরআনের কিছু অংশ বিশ্বাস করল, আর কতক অংশকে অস্বীকার করল, যেমন কেউ তাওহীদকে স্বীকার করল কিন্তু নামায যে ফরয তা মেনে নিল না। অথবা তাওহীদও স্বীকার করল, নামাযও পড়ল কিন্তু যাকাত যে ফরয তা মানল না; অথবা এগুলো সবই স্বীকার করল কিন্তু রোযাকে অস্বীকার করে বসল কিংবা ঐগুলো সবই স্বীকার করল কিন্তু একমাত্র হজ্বকে অস্বীকার করল, এরা সবাই হবে কাফের।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যামানায় কতক লোক হজ্বকে মেনে নিতে চায় নি বলে [শাইখের এ বাক্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ আয়াত নাযিল হওয়ার একটি প্রেক্ষাপট এটি। কিন্তু এ কথার সমর্থনে দলীল পাওয়া যায় নি। (ইবন উসাইমীন, শারহু কাশফিশ শুবুহাত, পৃ. ৯১)।] তাদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ আয়াত নাযিল করলেন,

﴿ وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٩٧ ﴾ [ ال عمران : ٩٧ ]

“(পথের কষ্ট সহ্য করতে এবং) রাহা খরচ বহনে সক্ষম যে ব্যক্তি সে (শ্রেণির) সমস্ত মানুষের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে এই গৃহের (কা‘বাতুল্লাহর) হজ্ব করা অবশ্য কর্তব্য, আর যে ব্যক্তি তা অমান্য করল (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ হচ্ছেন সমুদয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী” [আলে ইমরান: ৯৭]

কোনো ব্যক্তি যদি এগুলো সমস্তই (অর্থাৎ তাওহীদ, নামায, যাকাত, রামাযানের সিয়াম, হজ্ব) মেনে নেয়, কিন্তু পুনরুত্থানের কথা অস্বীকার করে, সে সর্বসম্মতিক্রমে কাফের হয়ে যাবে। তার রক্ত এবং তার ধন-দৌলত সব হালাল হবে (অর্থাৎ তাকে হত্যা করা এবং তার ধন-মাল গ্রহণ করা আইন-সিদ্ধ হবে) যেমন আল্লাহ বলেছেন :

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُواْ بَيۡنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيَقُولُونَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضٖ وَنَكۡفُرُ بِبَعۡضٖ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُواْ بَيۡنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا ١٥٠ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ حَقّٗاۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابٗا مُّهِينٗا ١٥١ ﴾ [ النساء : ١٥٠، ١٥١ ]

“নিশ্চয় যারা আমান্য করে আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলদেরকে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের (আনুগত্যের) মধ্যে প্রভেদ করতে চায়, আর বলে কতককে আমরা বিশ্বাস করি অপর কতককে অমান্য করি এবং তারা ঈমানের ও কুফরের মাঝামাঝি একটা পথ আবিষ্কার করে নিতে চায়— এই যে লোক সত্যই তারা হচ্ছে কাফের, বস্তুত কাফেরদের জন্য আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি এক লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” (আন নিসা: ১৫০-১৫১)

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা যেহেতু তাঁর কালামে পাকে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন যে, যে ব্যক্তি দ্বীনের কিছু অংশকে মানবে আর কিছু অংশকে অস্বীকার করবে, সে সত্যিকারের কাফের এবং তার প্রাপ্য হবে সেই বস্তু (শাস্তি) যা উপরে উল্লিখিত হয়েছে, সেহেতু এ সম্পর্কিত ভ্রান্তিরও অপনোদন ঘটেছে [সুতরাং কিছু কিছু বস্তুর ঈমান থাকার পরও কুফরী কিংবা শির্ক করার কারণে তারা ঈমান থেকে বের হয়ে যাবে। [সম্পাদক]]।

আর এ বিষয়টি জনৈক ‘আহ্‌সা’-বাসী আমার নিকট প্রেরিত তার পত্রে উল্লেখ করেছেন।

আর তাকে এ-কথাও বলা যাবে, তুমি যখন স্বীকার করছ যে, যে ব্যক্তি সমস্ত ব্যাপারে আল্লাহর রাসূলকে সত্য জানবে আর কেবল নামাযের ফরয হওয়াকে অস্বীকার করবে, সে সর্বসম্মতিক্রমে কাফের হবে, আর তার জান-মাল হালাল হবে; অনুরূপভাবে সব বিষয় মেনে নিয়ে যদি পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে তবুও সে কাফের হয়ে যাবে।

তদ্রূপ সে কাফের হয়ে যাবে যদি ঐ সমস্ত বস্তুর উপর ঈমান আনে, আর কেবলমাত্র রামযানের রোযাকে অস্বীকার করে। এতে কোনো মাযহাবেরই দ্বিমত নেই। আর কুরআনও এ কথাই বলেছে, যেমন আমরা ইতিপূর্বে বলেছি।

আর এটা জানা কথা যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সব ফরয কাজ নিয়ে এসেছিলেন তার মধ্যে তাওহীদ হচ্ছে সর্বাপেক্ষা বড় এবং তা নামায, রোযা ও হজ্ব হতেও শ্রেষ্ঠতর। তাহলে যখন মানুষ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনীত ফরয, ওয়াজিবসমূহের সবগুলোকে মেনে নিয়ে ঐগুলোর একটি মাত্র অস্বীকার করে কাফের হয়ে যায় তখন কি করে সে কাফের না হয়ে পারে যদি সমস্ত রাসূলদের দ্বীনের মূলবস্তু তাওহীদকেই সে অস্বীকার করে বসে? সুবহানাল্লাহ ! কি বিস্ময়কর এই মুর্খতা !

তাকে এ কথাও বলা যায় যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণ বানু হানীফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, অথচ তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তারা সাক্ষ্য প্রদান করেছিল যে, আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ্‌ নেই, আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। এ ছাড়া তারা আযানও দিত এবং নামাযও পড়ত।

সে যদি বলে যে, তারা তো মুসায়লামা (কায্‌যাব)-কে একজন নবী বলে মেনেছিল। তবে তার উত্তরে বলবে : ঐটিই তো আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। কেননা যদি কেউ কোনো ব্যক্তিকে নবীর মর্যাদায় উন্নীত করার কারণে কাফের হয়ে যায় এবং তার জান মাল হালাল হয়ে যায়, এই অবস্থায় তার দু’টি সাক্ষ্য (প্রথম সাক্ষ্য: আল্লাহ ছাড়া নেই অপর কোনো সত্য ইলাহ, দ্বিতীয় সাক্ষ্য: মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল) তার কোনই উপকার সাধন করবে না। নামাযও তার কোনো উপকার করতে সক্ষম হবে না। অবস্থা যখন এই, তখন সেই ব্যক্তির পরিণাম কি হবে যে, শামসান, ইউসুফ [নিকট অতীতে (গ্রন্থকারের সময়কালে) নাজদে এদের উদ্দেশ্যে পূজা করা হত।] বা কোনো সাহাবী বা নবীকে মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ্‌র সুউচ্চ মর্যাদায় সমাসীন করে? পাকপবিত্র তিনি, তাঁর শান-শওকত কত উচ্চ !

﴿ كَذَٰلِكَ يَطۡبَعُ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ٥٩ ﴾ [ الروم : ٥٩ ]

“আল্লাহ এ ভাবেই যাদের জ্ঞান নেই, তাদের হৃদয়ে মোহর মেরে দেন।” (সূরা রূম : ৫১)

প্রতিপক্ষকে এটাও বলা যাবে, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যাদেরকে আগুনে জ্বালিয়ে মেরেছিলেন তারা সকলেই ইসলামের দাবীদার ছিল এবং ‘আলীর অনুগামী ছিল, অধিকন্তু তারা সাহাবীগণের নিকটে শিক্ষা লাভ করেছিল। কিন্তু তারা আলীর সম্বন্ধে ঐ রূপ বিশ্বাস রাখত যেমন ইউসুফ, শামসান এবং তাদের মত আরও অনেকের সম্বন্ধে (এখন) বিশ্বাস পোষণ করা হয়। (প্রশ্ন হচ্ছে) তাহলে কি করে সাহাবীগণ তাদেরকে (ঐ ভাবে) হত্যা করার ব্যাপারে এবং তাদের কুফরীর উপর একমত হলেন? তা হলে তোমরা কি ধারণা করে নিচ্ছ যে, সাহাবীগণ মুসলিমকে কাফের রূপে আখ্যায়িত করেছেন? নাকি তোমরা ধারণা করছ যে, ‘তাজ’ এবং তার অনুরূপ অন্যান্যের উপর বিশ্বাস রাখা ক্ষতিকর নয়, কেবল ‘আলীর প্রতি ভ্রান্ত বিশ্বাস রাখাই কুফরী?

আর এ কথাও বলা যেতে পারে যে, বানু আব্বাসের শাসনকালে যে বানু ওবায়দ আল-কাদ্দাহ মরক্কো প্রভৃতি দেশে ও মিসরে রাজত্ব করেছিল, তারা সকলেই ‘লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ” কলেমার সাক্ষ্য দিত— ইসলামকেই তাদের ধর্ম বলে দাবী করত। জুম‘আহ্ ও জামা‘আতে নামাযও আদায় করত। কিন্তু যখন তারা আমাদের আলোচ্য বিষয়ের চাইতেও লঘু কোনো কোনো বিষয়ে শরী‘আতের বিধি ব্যবস্থার বিরুদ্ধাচরণের কথা প্রকাশ করল, তখন তাদেরকে কাফের আখ্যায়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উপর ‘আালেম সমাজ একমত হলেন। আর তাদের দেশকে দারুল হরব বা যুদ্ধের দেশ বলে ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে মুসলিমগণ যুদ্ধ করলেন। আর মুসলিমদের শহরগুলোর মধ্যে যেগুলো তাদের হস্তগত হয়েছিল তা পুনরুদ্ধার করে নিলেন।

তাকে আরও বলা যেতে পারে যে, পূর্ব যুগের লোকদের মধ্যে যাদের কাফের বলা হতো তাদের যদি এজন্যই তা বলা হত যে, তারা আল্লাহর সঙ্গে শির্ক করার পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও কুরআনকে মিথ্যা জানা এবং পুনরুত্থান প্রভৃতিকে অস্বীকার করা প্রভৃতি (কুফরী কাজ) একত্রে করেছিল— তাহলে “বাবু হুকমিল মুরতাদ” বা “মুরতাদের [মুরতাদ্দ হচ্ছে সেই মুসলিম, যে ইসলাম গ্রহণের পর কূফরীতে ফিরে যায। [অনুবাদক]] হুকুম” নামীয় অধ্যায় কী অর্থ বহন করবে, যা সব মাযহাবের আলেমগণ বর্ণনা করেছেন?

সে অধ্যায়ে তারা মুরতাদ্দের বিভিন্ন প্রকরণের উল্লেখ করেছেন, আর প্রত্যেক প্রকারের মুরতাদকে কাফের বলে নির্দেশিত করে তাদের জান এবং মাল হালাল বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন। এমনকি তারা অনেকের নিকট কতিপয় সাধারণ বিষয় যেমন অন্তর হতে নয়, মুখ দিয়ে একটা অবঞ্ছিত কথা বলে ফেলল অথবা ঠাট্টা-মশকরার ছলে বা খেল-তামাশায় কোন অবাঞ্ছিত কথা উচ্চারণ করে ফেলল— এমন অপরাধীদেরও মুরতাদ্দ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তাদের এ কথাও বলা যেতে পারে, যে কথা তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ বলেছেন,

﴿ يَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ مَا قَالُواْ وَلَقَدۡ قَالُواْ كَلِمَةَ ٱلۡكُفۡرِ وَكَفَرُواْ بَعۡدَ إِسۡلَٰمِهِمۡ ﴾ [ التوبة : ٧٤ ]

অর্থাৎ— “তারা আল্লাহর নামে হলফ করে বলছে যে, তারা কিছুই বলে নি; অথচ কুফরী কথাই তারা নিশ্চয় বলেছে, ফলে ইসলামকে স্বীকার করার পর তারা কাফের হয়ে গিয়েছে।” (সূরা তাওবা :৭৪)

তুমি কি শোন নি, মাত্র একটি কথার জন্য আল্লাহ এক দল লোককে কাফের বলছেন, অথচ তারা ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমসাময়িককালের লোক এবং তাঁর সঙ্গে জেহাদ করেছে, নামায পড়েছে, যাকাত দিয়েছে, হজ্ব পালন করেছে এবং তাওহীদের উপর বিশ্বাস রেখেছে?

অনুরূপভাবে ঐ সব লোক, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন,

﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ﴾ [ التوبة : ٦٥، ٦٦ ]

“তুমি বল, তোমরা কি ঠাট্টা তামাশা করছিলে আল্লাহ ও তাঁর আয়াতগুলোর এবং তাঁর রাসূলের সম্বন্ধে? এখন আর কৈফিয়ত পেশ করো না। তোমরা নিজেদের ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গেছ।” (তাওবা: ৬৫-৬৬)

এ-সব লোকদের সম্বন্ধে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, তারা ঈমান আনার পর কাফের হয়েছে। অথচ তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে তাবুকের যুদ্ধে যোগদান করেছিল, তারা তো মাত্র একটি কথাই বলেছিল এবং সেটাও হাসি-ঠাট্টার ছলে। অতএব তুমি এ সংশয় সম্পর্কে চিন্তা করে দেখ, যাতে তারা বলে, তোমরা মুসলিমদের মধ্যে এমন লোককে কাফের বলছ যারা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ তথা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দিচ্ছে, তারা নামায পড়ছে, রোযা রাখছে। তারপর তাদের এ সংশয়ের জওয়াবও গভীরভাবে চিন্তা করে দেখ। কেননা, এই পুস্তকের বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে এটাই অধিক উপকারজনক।

এই বিষয়ের আর একটা প্রমাণ হচ্ছে কুরআনে বর্ণিত সেই কাহিনী, যা আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের সম্পর্কে বলেছেন। তাদের ইসলাম, তাদের জ্ঞান এবং সত্যাগ্রহ সত্বেও তারা মূসা ‘আলাইহি সালাম-কে বলেছিল :

﴿ٱجۡعَل لَّنَآ إِلَٰهٗا كَمَا لَهُمۡ ءَالِهَةٞۚ ﴾ [ الاعراف : ١٣٨ ]

আমাদের জন্যও একটা ইলাহ বানিয়ে দাও, যেমন তাদের রয়েছে অনেক ইলাহ। (সূরা আ‘রাফ : ১৩৮)

অনুরূপভাবে সাহাবীগণের মধ্যে কেউ বলেছিলেন :

» اجْعَلْ لَنَا ذَاتَ أَنْوَاطٍ «

“আমাদের জন্য লটকানোর জায়গা প্রতিষ্ঠা করে দিন।” তখন নবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলফ করে বললেন, এটা তো বনী ইসরাইলদের মত কথা, যা তারা মূসা ‘আলাইহিস সালাম-কে বলেছিল: আমাদের জন্যও একটা ইলাহ্‌ বানিয়ে দাও [তিরমিযী, হাদীস নং ২১৮০।]।”

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন