hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাশ্‌ফুশ্‌ শুবহাত (সংশয় নিরসন)

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্‌হাব রহ.

১৫
চতুর্দশ অধ্যায়: ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কলেমা মুখে উচ্চারণই যথেষ্ট নয়
[যারা মনে করে যে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ মুখে বলাই তাওহীদের জন্য যথেষ্ট, বাস্তবে তার বিপরিত কিছু করলেও ক্ষতি নেই, তাদের উক্তি ও যুক্তির খণ্ডন]

মুশরিকদের মনে আর একটা সংশয় বদ্ধমূল হয়ে আছে, তা হল এই যে, তারা বলে থাকে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ কলেমা পাঠ করা সত্ত্বেও উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু যাকে হত্যা করেছিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই হত্যাকাণ্ডটাকে সমর্থন করেন নি। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হাদীসটিও তারা পেশ করে থাকে যেখানে তিনি বলেছেন, “আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা বলে (মুখে উচ্চারণ করে) “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” তদ্রূপ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর উচ্চারণকারীদের হত্যা না করা সম্বন্ধে আরও অনেক হাদীস তারা তাদের মতের সমর্থনে পেশ করে থাকে।

এই মূর্খদের এসব প্রমাণ পেশ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, যারা মুখে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ উচ্চারণ করবে, তারা যা ইচ্ছা তাই করুক, তাদেরকে কাফের বলা যাবে না, হত্যাও করা যাবে না। এ-সব জাহেল মুশরিকদের বলে দিতে হবে যে, একথা সর্বজনবিদিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং তাদেরকে কয়েদ করেছেন যদিও তারা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলত।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণ বানু হানীফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন যদিও তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, ‘আল্লাহ ছাড়া নেই কোনো ইলাহ এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল; তারা নামাযও পড়তো এবং ইসলামেরও দাবী করত। ঐ একই অবস্থা তাদের সম্বন্ধেও প্রযোজ্য যাদেরকে ‘আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া ঐ সব (বর্তমান কালে যারা শির্ক করে সে-সব) জাহেলরা স্বীকার করে যে, যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে তারা কাফের হয়ে যায় এবং হত্যারও যোগ্য হয়ে যায়— তারা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা সত্বেও। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি ইসলামের রুকনসমূহের যে কোনো একটিকে অস্বীকার করে, সেও কাফের হয়ে যায় এবং সে হত্যার যোগ্য হয় যদিও সে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে”। তা হলে ইসলামের একটি শাখা অঙ্গ অস্বীকার করার কারণে যদি তার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর উচ্চারণ তার কোনো উপকারে না আসে, তবে রাসূলগণের দ্বীনের মূল ভিত্তি যে তাওহীদ এবং যা হচ্ছে ইসলামের মূখ্য বস্তু, যে ব্যক্তি সেই তাওহীদকেই অস্বীকার করল তাকে ঐ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর উচ্চারণ কেমন করে বাঁচাতে সক্ষম হবে? কিন্তু আল্লাহর মুশমনরা হাদীসসমূহের তাৎপর্য বুঝে না।

ওসামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসের তাৎপর্য হচ্ছে এই যে, তিনি একজন ইসলামের দাবীদারকে হত্যা করেছিলেন এই ধারণায় যে, সে তার জান ও মালের ভয়েই ইসলামের দাবী জানিয়েছিল।

কোনো মানুষ যখন ইসলামের দাবী করবে তার থেকে ইসলাম বিরোধী কোনো কাজ প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে। এ সম্বন্ধে কুরআনের ঘোষণা এই যে,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَتَبَيَّنُواْ ﴾ [ النساء : ٩٤ ]

“হে মুমিন সমাজ ! যখন তোমরা আল্লাহর রাহে বহির্গত হও, তখন (কাউকেও হত্যা করার পূর্বে) সব বিষয় তদন্ত করে দেখবে।” (সূরা নিসা : ৯৪) অর্থাৎ তার সম্বন্ধে তথ্যাদি নিয়ে দৃঢ়ভাবে সুনিশ্চিত হবে।

এই আয়াত পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, এরূপ ব্যাপারে হত্যা থেকে বিরত থেকে তদন্তের পর স্থির নিশ্চিত হওয়া অবশ্য কর্তব্য। তদন্তের পর যদি তার ইসলাম বিরোধী হওয়া সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় তবে তাকে হত্যা করা হবে। যেমন আল্লাহ বলেছেন, (ফাতাবাইয়ানু) অর্থাৎ ‘তদন্ত করে দেখ’। তদন্ত করার পর দোষী সাব্যস্ত হলে হত্যা করতে হবে। যদি এই অবস্থাতে হত্যা না করা হয় তা হলে : ‘ফাতাবাইয়ানু’ অর্থাৎ স্থির নিশ্চিত হওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

এভাবে অনুরূপ হাদীসগুলোর অর্থও বুঝে নিতে হবে। ঐগুলোর অর্থ হবে যা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি। অর্থাৎ যে ব্যক্তির মধ্যে তাওহীদ ও ইসলাম প্রকাশ্যভাবে পাওয়া যাবে তাকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকতে হবে— যে পর্যন্ত বিপরীত কোন কিছু প্রকাশিত না হবে।

এ কথার দলীল হচ্ছে এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি কৈফিয়তের ভাষায় ওসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে বলেছিলেন, “তুমি তাকে হত্যা করেছ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পরও?” এবং তিনি আরও বলেছিলেন, “আমি লোকদেরকে হত্যা করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা বলবে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” সেই রাসূলই কিন্তু খারেজীদের সম্বন্ধে বলেছেন, “যেখানেই তোমরা তাদের পাবে, হত্যা করবে, আমি যদি তাদের পেয়ে যাই তবে তাদেরকে হত্যা করব ‘আদ জাতির মত সার্বিক হত্যা।” [(বুখারী ও মুসলিম) অনুবাদক।] যদিও তারা (খারেজীরা) ছিল লোকদের মধ্যে অধিক ইবাদতগুযার, অধিক মাত্রায় ‘ল-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং সুবহানাল্লাহ্‌’ উচ্চারণকালী।

তাছাড়া খারেজীরা এমন বিনয়-নম্রতার সঙ্গে নামায আদায় করত যে, সাহাবীগণ পর্যন্ত নিজেদের নামাযকে তাদের নামাজের তুলনায় তুচ্ছ মনে করতেন। তারা কিন্তু “ইল্‌ম শিক্ষা করেছিল সাহাবাগণের নিকট হতেই। কিন্তু কোনই উপকারে আসল না তাদের “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলা, তাদের অধিক পরিমাণ ইবাদত করা এবং তাদের ইসলামের দাবী করা, যখন তাদের থেকে শরীয়তের বিরোধী বিষয় প্রকাশিত হয়ে গেল।

ঐ একই পর্যায়ের বিষয় হচ্ছে ইয়াহূদীদের হত্যা এবং বানু হানীফার বিরুদ্ধে সাহাবীদের যুদ্ধ ও হত্যাকান্ড। ঐ একই কারণে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বানী মুস্তালিক গোত্রের বিরুদ্ধে জিহাদ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যখন একজন লোক এসে খবর দিল যে, তারা যাকাত দিবে না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ আয়াত নাযিল করলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن جَآءَكُمۡ فَاسِقُۢ بِنَبَإٖ فَتَبَيَّنُوٓاْ﴾ [ الحجرات : ٦ ]

“হে মুমিন সমাজ! যখন কোনো ফাসেক ব্যক্তি কোনো গুরুতর সংবাদ নিয়ে তোমাদের নিকট আগমন করে, তখন তোমরা তার সত্যতা পরীক্ষা করে দেখো।” (সূরা হুজুরাত : ৬) বস্তুত: উপরোক্ত সংবাদদাতা তাদের সম্বন্ধে মিথ্যা সংবাদ দিয়েছিল।

এইরূপে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে সমস্ত হাদীসকে তারা দলীল-প্রমাণরূপে পেশ করে থাকে তার প্রত্যেকটির তাৎপর্য্য তা-ই যা আমরা উল্লেখ করেছি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন