hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাশ্‌ফুশ্‌ শুবহাত (সংশয় নিরসন)

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্‌হাব রহ.

১৭
ষোড়শ অধ্যায়: অন্তরে, কথায় ও কর্মে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতা; যদি না শর্‌য়ী ওযর থাকে
আমি এবার ইনশাআল্লাহু তা‘আলা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনা করে আমার বক্তব্যের উপসংহার টানব। পূর্ব আলোচনাসমূহে এ বিষয়ের উপর আলোকপাত হয়েছে বটে কিন্তু তার বিশেষ গুরুত্বের দিকে লক্ষ্য রেখে এবং তৎসম্পর্কে অধিক ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হওয়ার ফলে আমি উক্ত বিষয়ে এখানে পৃথকভাবে কিছু আলোচনার প্রয়াস পাব।

এ বিষয়ে কোনই দ্বিমত নেই যে, তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি হতে হবে অন্তর দ্বারা, জিহ্বা দ্বারা এবং কর্মে তার বাস্তবায়ন দ্বারা। এর থেকে যদি কোনো ব্যক্তির কিছুমাত্র বিচ্যুতি ঘটে, তবে সে মুসলিম বলে বিবেচিত হবে না।

যদি কোনো ব্যক্তি তাওহীদ কী— তা হৃদয়ঙ্গম করে কিন্তু তার উপর ‘আমল না করে, তবে সে হবে হঠকারী কাফের, তার তুলনা হবে ফির‘আউন, ইবলীস প্রভৃতির সঙ্গে। এখানেই অধিক সংখ্যক লোক বিভ্রান্তির শিকারে পরিণত হয়। তারা বলে থাকে, এটা সত্য, আমরা এটা বুঝেছি এবং তার সত্যতার সাক্ষ্যও দিচ্ছি। কিন্তু আমরা তা কার্যে পরিণত করতে সক্ষম নই। আর আমাদের দেশবাসীদের নিকট তা সিদ্ধ নয়- কিন্তু যারা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণকারী (তারা ছাড়া)। এই সব ওযুহাত এবং অন্যান্য ওযর আপত্তি তারা পেশ করে থাকে।

আর এই হতভাগারা বুঝে না যে, অধিকাংশ কাফের নেতা সত্য জানত কিন্তু জেনেও তা প্রত্যাখ্যান করত শুধু কতিপয় ‘ওযর আপত্তির জন্য। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন :

﴿ٱشۡتَرَوۡاْ بِ‍َٔايَٰتِ ٱللَّهِ ثَمَنٗا قَلِيلٗا﴾ [ التوبة : ٩ ]

“আল্লাহর আয়াতগুলিকে তারা বিক্রয় করে ফেলেছে নগণ্য মূলের বিনিময়ে।” (আত-তাওবা : ৯০)। অনুরূপ অন্যান্য আয়াতে বলা হয়েছে :

﴿ يَعۡرِفُونَهُۥ كَمَا يَعۡرِفُونَ أَبۡنَآءَهُمۡۖ ﴾ [ البقرة : ١٤٦ ]

“তারা তাঁকে (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বা হককে) ঠিক সেই ভাবেই চিনে যেমন তারা চিনে তাদের পুত্রদিগকে।” (বাকারা : ১৪৬)

আর কেউ যদি তাওহীদ না বুঝে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে তার উপর আমল করে, অথবা সে যদি অন্তরে বিশ্বাস না রেখে আমল করে তবে তো সে মুনাফিক; সে নিরেট কাফের থেকেও মন্দ। স্বয়ং আল্লাহ মুনাফিকদের পরিণতি সম্বন্ধে বলেছেন:

﴿ إِنَّ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ فِي ٱلدَّرۡكِ ٱلۡأَسۡفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ ﴾ [ النساء : ١٤٥ ]

‘নিশ্চয় মুনাফিকগণ অবস্থান করবে জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে।’ (সূরা আন নিসা: ১৪৫)

বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর, অতীব দীর্ঘ ও ব্যাপক, তোমার নিকটে এটা প্রকাশ হবে যখন জনসাধারণের আলোচনার উপর গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে দেখবে, তখন তুমি দেখবে সত্যকে জেনে বুঝেও তারা তার উপরে আমল করে না এই আশঙ্কায় যে, তাদের পার্থিব ক্ষতি হবে অথবা কারও সম্মানের হানি হবে কিংবা সম্পর্কের ক্ষতি হবে।

তুমি আরও দেখতে পাবে যে, কতক লোক প্রকাশ্যভাবে কোন কাজ করছে কিন্তু তাদের অন্তরে তা নেই। তাকে তার অন্তরের প্রত্যয় সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে দেখবে যে, সে তাওহীদ কি তা বুঝে না।

অবস্থার এই প্রেক্ষিতে মাত্র দু’টি আয়াতের তাৎপর্য হৃদয়ঙ্গম করা তোমার কর্তব্য হয়ে দাঁড়াবে। প্রথমটি হচ্ছে :

﴿ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ﴾ [ التوبة : ٦٦ ]

“এখন তোমরা আর কৈফিয়ত পেশ করো না, ঈমান আনয়নের পরও তো তোমরা কুফরী কাজে লিপ্ত রয়েছ।” (সূরা তাওবা : ৬৬)

যখন এটা সাব্যস্ত হয়েছে যে, কতিপয় সাহাবী যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে রোমানদের বিরুদ্ধে (তাবুকের) যুদ্ধে গমন করেছিল তারা ঠাট্টাচ্ছলে কোনো একটি কথা বলার ফলে কাফের হয়ে গিয়েছিল; তখন তোমার কাছে সুস্পষ্ট হবে যে, হাসি ঠাট্টার সঙ্গে কোনো কথা বলার চেয়ে অধিক গুরুতর সেই ব্যক্তির অবস্থা, যে কুফরী কথা বলে অথবা কুফরী ‘আমল করে ধনদৌলতের ক্ষতির আশঙ্কায় কিংবা সম্মানহানি অথবা সম্পর্কের ক্ষতির ভয়ে।

দ্বিতীয় আয়াতটি হচ্ছ :

﴿ مَن كَفَرَ بِٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ إِيمَٰنِهِۦٓ إِلَّا مَنۡ أُكۡرِهَ وَقَلۡبُهُۥ مُطۡمَئِنُّۢ بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَٰكِن مَّن شَرَحَ بِٱلۡكُفۡرِ صَدۡرٗا فَعَلَيۡهِمۡ غَضَبٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيمٞ ١٠٦ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ ٱسۡتَحَبُّواْ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا عَلَى ٱلۡأٓخِرَةِ ﴾ [ النحل : ١٠٦، ١٠٧ ]

“কেউ তার ঈমান স্থাপনের পর আল্লাহর সাথে কুফরী করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর ক্রোধ এবং তার জন্য আছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয় যাকে সত্য প্রত্যাখ্যানে বাধ্য করা হয় কিন্তু তার চিত্ত বিশ্বাসে অবিচলিত। এটা এই জন্য যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখেরাতের উপর প্রাধান্য দেয়।” (সূরা নাহ্‌ল : ১০৬-১০৭)

আল্লাহ এদের কারোরই ‘ওযর আপত্তি কবুল করেন নি; তবে কবূল করেছেন শুধু তাদের ‘ওযর যাদের অন্তর ঈমানের উপরে স্থির ও প্রশান্ত রয়েছে, কিন্তু তাদেরকে জবরদস্তি করে বাধ্য করা হয়েছে। এরা ব্যতীত উপরোল্লিখিত ব্যক্তিরা তাদের ঈমানের পর কুফরী করেছে। চাই তারা ভয়েই তা করে থাকুক অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষায় তা হোক কিংবা গোত্র অথবা ধন-দৌলতের প্রতি আকর্ষণের জন্যই হোক অথবা হাসি-ঠাট্টার ছলেই কুফরী কালাম উচ্চারণ করুক অথবা এ ছাড়া অন্য যে কোনো উদ্দেশ্য হাসেলের জন্য তা করে থাকুক— শুধু বাধ্য হওয়া ব্যতীত। সুতরাং বর্ণিত আয়াতটি এই অর্থই বুঝিয়ে থাকে দু’টি দৃষ্টিকোণ থেকে—

প্রথমত: আল্লাহর বাণীতে বলা হয়েছে : ﴿إِلَّا مَنۡ أُكۡرِهَ﴾ “কিন্তু যদি তাকে বাধ্য করা হয়ে থাকে”, আল্লাহ বাধ্যকৃত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোন ব্যতিক্রমের সুযোগ রাখেন নি। একথা সুবিদিত যে, মানুষকে একমাত্র কথা অথবা কাজেই বাধ্য করা যায়। কিন্তু অন্তরের প্রত্যয়ে কাউকে বাধ্য করা চলে না।

দ্বিতীয় : আল্লাহর এই বাণী :

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ ٱسۡتَحَبُّواْ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا عَلَى ٱلۡأٓخِرَةِ﴾ [ النحل : ١٠٧ ]

“এটি এই জন্য যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখেরাতের উপর প্রাধান্য দেয়।” (নাহ্‌ল: ১০৭)

এ আয়াতটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই কুফরী ও তার শাস্তি তাদের বিশ্বাস, মূর্খতা, দ্বীনের প্রতি বিদ্বেষ বা কুফরীর প্রতি অনুরাগের কারণে নয়, বরং এর কারণ হচ্ছে দুনিয়া থেকে কিছু অংশ হাসিল করা, যে জন্য সে দুনিয়াকে দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়েছে।

পাক-পবিত্র ও মহান আল্লাহই এ সম্পর্কে অধিক অবহিত রয়েছেন। আর আল্লাহ তা‘আলা সালাত পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবার ও সহচরবর্গের উপর, আর তাঁদের সকলের উপর শান্তি অবতীর্ণ করুন। (আমীন!)

—সমাপ্ত—

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন