hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কাশ্‌ফুশ্‌ শুবহাত (সংশয় নিরসন)

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্‌হাব রহ.

সপ্তম অধ্যায়: বাতিলপন্থীদের দাবীসমূহের খন্ডন—
সংক্ষিপ্তাকারে ও বিস্তারিতভাবে

আমাদের সমসাময়িক যুগের মুশরিকগণ আমাদের বিরুদ্ধে যে সব যুক্তিতর্কের অবতারণা করে থাকে আমি তার প্রত্যেকটির জওয়াবে সেই সব কথাই বলব যা আল্লাহ্‌ তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন।

বাতেলপন্থীদের কথার জওয়াব আমরা দুই পদ্ধতিতে প্রদান করব : ১ সংক্ষিপ্তাকারে, ২.তাদের দাবীসমূহ বিশ্লেষণ করে বিশদভাবে।

১. সংক্ষিপ্ত জওয়াব

সংক্ষিপ্ত হলেও এটা হবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত কল্যাণবহ সেই সব ব্যক্তির জন্য যাদের প্রকৃত বোধ শক্তি আছে। আর তা হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী,

﴿ هُوَ ٱلَّذِيٓ أَنزَلَ عَلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ مِنۡهُ ءَايَٰتٞ مُّحۡكَمَٰتٌ هُنَّ أُمُّ ٱلۡكِتَٰبِ وَأُخَرُ مُتَشَٰبِهَٰتٞۖ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمۡ زَيۡغٞ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَٰبَهَ مِنۡهُ ٱبۡتِغَآءَ ٱلۡفِتۡنَةِ وَٱبۡتِغَآءَ تَأۡوِيلِهِۦۖ وَمَا يَعۡلَمُ تَأۡوِيلَهُۥٓ إِلَّا ٱللَّهُۗ وَٱلرَّٰسِخُونَ فِي ٱلۡعِلۡمِ يَقُولُونَ ءَامَنَّا بِهِۦ كُلّٞ مِّنۡ عِندِ رَبِّنَاۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُوْلُواْ ٱلۡأَلۡبَٰبِ ٧ ﴾ [ ال عمران : ٧ ]

“তিনিই তো সেই সত্ত্বা, যিনি আপনার প্রতি নাযিল করেছেন এই কিতাব; যার কতক আয়াত হচ্ছে মুহকাম— স্পষ্ট অর্থবহ, সে গুলি হচ্ছে কেতাবের মুলাধার; আর কতকগুলি হচ্ছে মোতাশাবেহ— অস্পষ্ট অর্থসম্পন্ন, ফলে যাদের অন্তরে আছে বক্রতা তারা অনুসরণ করে থাকে তার মধ্য হ’তে মোতাশাবেহ— অস্পষ্ট অর্থসম্পন্ন আয়াতগুলির, ফিৎনা সৃষ্টির মতলবে এবং (অসঙ্গত) তাৎপর্য্য বের করার উদ্দেশ্যে, অথচ এর প্রকৃত তাৎপর্য কেউই জানে না আল্লাহ্ ব্যতীত।” (সূরা আলে ইমরান :৭)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতেও এটা সাব্যস্ত হয়েছে। তিনি বলেছেন:

«فَإِذَا رَأَيْتِ الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُولَئِكِ الَّذِينَ سَمَّى اللَّهُ فَاحْذَرُوهُمْ»

“যখন তুমি ঐ সমস্ত লোকদের দেখবে যারা দ্ব্যর্থবোধক ও অস্পষ্ট আয়াতগুলির অনুসরণ করছে তখন বুঝে নেবে এরা সেই সব লোক যাদের সম্বন্ধে আল্লাহ বলেছেন, সুতরাং তোমরা ঐসব লোকদের ব্যাপারে হুশিয়ার থাক।” (বুখারী: ৪৫৪৭ ও মুসলিম: ২৬৬৫)

দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যেতে পারে মুশরেকদের মধ্যে কতক লোক বলে থাকে :

﴿ أَلَآ إِنَّ أَوۡلِيَآءَ ٱللَّهِ لَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ٦٢ ﴾ [ يونس : ٦٢ ]

“দেখ ! নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধু তারা, যাদের ভয়-ভীতির কোনই আশঙ্কা নেই এবং কখনো চিন্তাগ্রস্তও হবে না তারা।” (সূরা ইউনুস : ৬২)

তারা আরও বলে: নিশ্চয় সুপারিশের ব্যাপারটি অবশ্যই সত্য। অথবা বলে: আল্লাহর নিকটে নবীদের একটা বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। কিংবা নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এমন কিছু কথায় তারা উল্লেখ করবে, যা থেকে তারা তাদের বাতিল বক্তব্যের পক্ষে দলীল পেশ করতে চাইবে, অথচ তুমি বুঝতেই পারবে না যে, যে কথার তারা অবতারণা করেছে তার অর্থ কি ?

এরূপ ক্ষেত্রে তার জবাব এই ভাবে দিবে :

আল্লাহ তাঁর কেতাবে উল্লেখ করেছেন : “যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে তারা মুহকাম (স্পষ্ট অর্থবোধক) আয়াতগুলো বর্জন করে থাকে, আর মুতাশাবেহ্ (অস্পষ্ট অর্থবোধক) আয়াতের পিছনে ধাবিত হয়।” আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: ‘মুশরিকগণ আল্লাহর রবূবিয়াতের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে, তবু আল্লাহ তাদেরকে কাফেররূপে অভিহিত করেছেন এজন্যই যে, তারা ফেরেশতা, নবী ও ওলীদের সঙ্গে ভ্রান্ত সম্পর্ক স্থাপন করে বলে থাকে :

﴿هَٰٓؤُلَآءِ شُفَعَٰٓؤُنَا عِندَ ٱللَّهِۚ﴾ [ يونس : ١٨ ]

“এরা হচ্ছে আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী।” (সূরা ইউনুস : ১৮ আয়াত)

এটি একটি মুহকাম আয়াত, যার অর্থ পরিষ্কার। এর অর্থ বিকৃত করার সাধ্য কারোরই নেই।

আর হে মুশরিক! তুমি কুরআন অথবা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী থেকে যা আমার নিকট পেশ করলে তার অর্থ আমি বুঝি না, তবে আমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখি যে, আল্লাহর কালামের মধ্যে কোন পরস্পর-বিরোধী কথা নেই, আর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন কথাও আল্লাহর কালামের বিরোধী হতে পারে না।

এই জবাবটি অতি উত্তম ও সর্বতোভাবে সঠিক। কিন্তু আল্লাহ যাকে তাওফীক দেন সে ছাড়া আর কেউ এটি উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। এই জওয়াবটি তুমি তুচ্ছ মনে করো না, দেখ! আল্লাহ স্বয়ং এরশাদ করেন :

﴿ وَمَا يُلَقَّىٰهَآ إِلَّا ٱلَّذِينَ صَبَرُواْ وَمَا يُلَقَّىٰهَآ إِلَّا ذُو حَظٍّ عَظِيمٖ ٣٥ ﴾ [ فصلت : ٣٥ ]

“বস্তুত: যারা ধৈর্য ধারণে অভ্যস্ত তারা ব্যতীত আর কেউই এই মর্যাদার অধিকারী হতে পারে না, অধিকন্তু মহা ভাগ্যবান ব্যক্তিগণ ব্যতীত আর কেউই এটা লাভে সমর্থ হয় না”। (সূরা হা’মীম আস-সাজদা: ৩৫)

২. বিস্তারিত জওয়াব

সত্য দ্বীন থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য আল্লাহর দুশমনগণ নবী রাসূলদের প্রচারিত শিক্ষার বিরুদ্ধে যে সব ওযর আপত্তি ও বক্তব্য পেশ করে থাকে তার মধ্যে একটি এই যে, তারা বলে থাকে:

“আমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করি না বরং আমরা সাক্ষ্য দিয়ে থাকি যে, কেউই সৃষ্টি করতে, রুযী দিতে, উপকার এবং অপকার সাধন করতে পারে না একমাত্র একক এবং লা-শরীক আল্লাহ ছাড়া— আর (আমরা এ সাক্ষ্যও দিয়ে থাকি যে,) স্বয়ং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামও নিজের কোনো কল্যাণ এবং অকল্যাণ সাধন করতে সক্ষম নন। আবদুল কাদের জিলানী ও অন্যান্যরা তো বহু দুরের কথা। কিন্তু একটি কথা এই যে, আমি একজন গুনাহগার ব্যক্তি, আর যারা আল্লাহর নেককার বান্দা তাদের রয়েছে আল্লাহর নিকট বিশেষ মর্যাদা, তাই তাঁদের মধ্যস্থতায় আমি আল্লাহ্‌র নিকট তাঁর করুণা প্রার্থী হয়ে থাকি।

যখন তারা এ ধরনের কথা বলে, তখন তার উত্তর তা দিয়ে প্রদান করবে যা পূর্বে গত হয়েছে, আর তা হচ্ছে এই :

যাদের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ ‘সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধ করেছেন তারাও তুমি যে কথার উল্লেখ করলে তা স্বীকার করত, আর এ কথাও তারা স্বীকার করত যে, প্রতিমাগুলো কোনো কিছুই পরিচালনা করে না। তারা তো কেবল তাদের নিকট মর্যাদা (র দোহাই) ও শাফা‘আতই কামনা করত। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাঁর কিতাবে যা উল্লেখ করেছেন এবং বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন সে সব তাদের পড়ে শুনিয়ে দাও।

এখানে সন্দেহকারী যদি (এই কুটতর্কের অবতারণা করে আর) বলে যে, এই সব আয়াত তো মূর্তিপুজকদের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, তবে তোমরা কি ভাবে সৎ ব্যক্তিদেরকে ঠাকুর বিগ্রহের সমতুল্য করে নিচ্ছ অথবা নবীগণকে কি ভাবে ঠাকুর বিগ্রহের শামিল করছ? তখন তুমি আগে যা চলে গেছে তা দিয়েই এর জবাব দিবে [অর্থাৎ পূর্বেকার মুশরিকরাও আল্লাহর রবুবিয়্যাতের স্বীকৃতি দিত এবং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তারা মুশরিক হয়েছিল, কারণ তারা মাধ্যম গ্রহণ করেছিল। তবে এটা সত্য যে তারা সত্যিকার অর্থে রুবুবিয়্যাতের হক আদায় করত না। কারণ, রুবুবিয়্যাতের হক আদায় করলে ইবাদত একমত্র আল্লাহরই করত। [মুহাম্মাদ ইবন ইবরাহীম আলে আশ-শাইখ, শারহু কাশফিশ শুবহাত, পৃ. ৬২]]।

কেননা, যখন সে স্বীকার করছে যে, (রাসূলের যুগের) কাফেরগণও আল্লাহর সার্বভৌম রবূবিয়তের সাক্ষ্য প্রদান করত; আর তারা যাদেরকে (নযর নিয়ায প্রভৃতি পেশ অথবা পূজা অর্চনা ইত্যাদি দ্বারা) উদ্দেশ্য করত, তারা তো তাদের থেকে কেবল সুপারিশই চাইত। কিন্তু যদি সে তার কাজ ও পূর্ববর্তী কাফের লোকদের কাজের মধ্যে যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে [অর্থাৎ পূর্বেকার মুশরিকরা তো মূর্তিপূজা করত, সে তো আর মূর্তিপূজা করছে না। [মুহাম্মাদ ইবন ইবরাহীম আলে আশ-শাইখ, শারহু কাশফিশ শুবহাত, পৃ. ৬২]] তা দিয়ে পার্থক্য করার চেষ্টা করে, তা হলে তাকে বলে দাও : কাফেরগণের মধ্যে কতক তো প্রতিমা পূজা করত, কিন্তু আবার কতক তো এমন ছিল যারা ঐ সব আওলিয়াদের আহ্বান করত [অর্থাৎ এটা বলে দাও যে, পূর্ববর্তী কাফের, মুশরিকরা যে শুধু মূর্তিপূজা করত, তা কিন্তু নয়, বরং তারা নেককার বান্দা ও নবী-রাসূলদেরও পূজা করত। পরবর্তী বাক্যে এর প্রমাণ পেশ করা হচ্ছে। [সম্পাদক]] যাদের সম্বন্ধে আল্লাহ বলেন:

﴿ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ يَبۡتَغُونَ إِلَىٰ رَبِّهِمُ ٱلۡوَسِيلَةَ أَيُّهُمۡ أَقۡرَبُ﴾ [ الاسراء : ٥٧ ]

“এই মুশরিকরা যাদেরকে আহ্বান করে থাকে, তারা (সে সব সৎ লোকেরা) তো নিজেরাই এজন্য তাঁর (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের অবলম্বন খুঁজে বেড়ায় যে, কোন্‌টি নিকটতর?” (সূরা ইসরা : ৫৭)।

আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈসা ইবন মারইয়াম ও তাঁর মাকে আহ্বান করত। মহান আল্লাহ বলেন :

﴿ مَّا ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَ إِلَّا رَسُولٞ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُ وَأُمُّهُۥ صِدِّيقَةٞۖ كَانَا يَأۡكُلَانِ ٱلطَّعَامَۗ ٱنظُرۡ كَيۡفَ نُبَيِّنُ لَهُمُ ٱلۡأٓيَٰتِ ثُمَّ ٱنظُرۡ أَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ ٧٥ قُلۡ أَتَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا نَفۡعٗاۚ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ ٧٦ ﴾ [ المائ‍دة : ٧٥، ٧٦ ]

“মারইয়ামের পুত্র মসীহ একজন রাসূল ছাড়া তো আর কিছুই নয়, তার পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছেন, আর মসীহের মাতা ছিল একজন সত্যসন্ধ নারী ; তাঁরা উভয়ে (ক্ষুধার সময়) অন্ন ভক্ষণ করতেন, লক্ষ্য কর, কিরূপে আমরা তাদের জন্য প্রমাণগুলিকে বিশদ রূপে বর্ণনা করে দিচ্ছি, অতঃপর আরও দেখ তারা (বিভ্রান্ত হয়ে চলছে) কোন দিকে! জিজ্ঞাসা কর : তোমরা কি আল্লাহকে ছেড়ে এমন কছুর ইবাদত করতে থাকবে যারা তোমাদের অনিষ্ট বা ইষ্টি করার কোনও অধিকার রাখে না ! আর আল্লাহ, একমাত্র তিনিই তো হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” (সূরা মায়েদা : ৭৫-৭৬)

উল্লেখিত হঠকারীদের নিকটে আল্লাহ্‌ তা‘আলার একথাও উল্লেখ কর :

﴿ وَيَوۡمَ يَحۡشُرُهُمۡ جَمِيعٗا ثُمَّ يَقُولُ لِلۡمَلَٰٓئِكَةِ أَهَٰٓؤُلَآءِ إِيَّاكُمۡ كَانُواْ يَعۡبُدُونَ ٤٠ قَالُواْ سُبۡحَٰنَكَ أَنتَ وَلِيُّنَا مِن دُونِهِمۖ بَلۡ كَانُواْ يَعۡبُدُونَ ٱلۡجِنَّۖ أَكۡثَرُهُم بِهِم مُّؤۡمِنُونَ ٤١ ﴾ [ سبا : ٤٠، ٤١ ]

“এবং (স্বরণ করুন সেই দিনের কথা) যে দিন আল্লাহ একত্রে সমবেত করবেন তাদের সকলকে, তারপর ফেরেশতাদিগকে বলবেন : এরা কি বন্দেগী করত তোমাদের? তারা বলবে: পবিত্রতায় সুমহান আপনি! আপনিই তো আমাদের রক্ষক-অভিভাবক, তারা নয়, কখনই না, বরং অবস্থা ছিল এই যে, এরা পূজা করত জিনদের, এদের অধিকাংশই জিনদের প্রতিই ছিল বিশ্বাসী।”(সূরা সাবা : ৪০-৪১)

অনুরূপভাবে (হঠকারীদের কাছে) আল্লাহর সে বাণীও উল্লেখ কর:

﴿ وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالَ سُبۡحَٰنَكَ مَا يَكُونُ لِيٓ أَنۡ أَقُولَ مَا لَيۡسَ لِي بِحَقٍّۚ إِن كُنتُ قُلۡتُهُۥ فَقَدۡ عَلِمۡتَهُۥۚ تَعۡلَمُ مَا فِي نَفۡسِي وَلَآ أَعۡلَمُ مَا فِي نَفۡسِكَۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّٰمُ ٱلۡغُيُوبِ ١١٦ ﴾ [ المائ‍دة : ١١٦ ]

“আর স্মরণ করুন যখন আল্লাহ বলবেন, হে মারইয়ামের পুত্র ঈসা ! আপনি কি লোকদেরকে বলেছিলেন : তোমরা আমাকে ও আমার মাতাকে আল্লাহ ছাড়াও আর দু’টি ইলাহরূপে গ্রহণ কর? ঈসা বলবেন, মহিমময় আপনি ! যা বলার অধিকার আমার নেই আমার পক্ষে তা বলা সম্ভব হতে পারে না, আমি ঐ কথা বলে থাকলে আপনি তা নিশ্চয় অবগত আছেন, আমার অন্তরের বিষয় আপনি বিদিত আছেন কিন্তু আপনার অন্তরের বিষয় আমি অবগত নই, নিশ্চয় আপনি, একমাত্র আপনিই তো হচ্ছন সকল গায়েবী বিষয়ের সম্যক পরিজ্ঞাত।” (সূরা মায়েদাহ : ১১৬)

তারপর তাকে বল : তুমি কি (এখন) বুঝতে পারলে যে, আল্লাহ প্রতিমা-পুজকদের যেমন কাফের বলেছেন, তেমনি যারা নেক লোকদের শরণাপন্ন হয় তাদেরকেও কাফের বলেছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাদের সঙ্গে জেহাদও করেছেন।

তারপর যদি সে বলে : কাফেরগণ (আল্লাহ ছাড়া) তাদের নিকট কামনা করে থাকে আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ মঙ্গল অমঙ্গলের মালিক ও সৃষ্টির পরিচালক, আমি তো তাকে ছাড়া অন্য কারোর নিকট কিছুই কামনা করি না। সৎলোকদের এসব বিষয়ে কিছুই করার নেই, তবে আমি তাদের শরণাপন্ন হই এ জন্য যে, তারা আল্লাহর নিকটে সুপারিশ করবে।

এর জবাব হচ্ছে, এ তো কাফেরদের কথার হুবহু প্রতিধ্বনি মাত্র। তুমি তাকে আল্লাহর এই কালাম শুনিয়ে দাও :

﴿وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ﴾ [ الزمر : ٣ ]

“আর আল্লাহকে ব্যতীত অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে যারা (তারা বলে) আমরা তো ওদের ইবাদত করি না, তবে (তাদের শরণাপন্ন হই) যাতে তারা সুপারিশ করে আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।” (সূরা যুমার: ৩)

তাছাড়া আল্লাহর এ কালামও তাদের শুনিয়ে দাও :

﴿وَيَقُولُونَ هَٰٓؤُلَآءِ شُفَعَٰٓؤُنَا عِندَ ٱللَّهِۚ﴾ [ يونس : ١٨ ]

“তারা (মুশরিকগণ) বলে: এরা হচ্ছে আল্লাহ নিকট আমাদের সুপারিশকারী।” (সূরা ইঊনুস : ১৮)

আর জেনে রাখ, উপরোক্ত তিনটি শংসয় [সন্দেহগুলো সংক্ষিপ্তভাবে: ১. তাওহীদুর রবুবিয়্যাহর স্বীকৃতি দেওয়ার পর শির্ক কীভাবে সম্ভব? ২. শির্ক বলতে তো কেবল মূর্তিপূজাকে বুঝায়। ৩. আগেকার মুশরিকরা তো যাদের পূজা বা ইবাদত করত, তাদের কাছেই কোনো কিছু চাইত, কিন্তু সে তো আর তাদের কাছে কিছু চাচ্ছে না, সে তো শুধু তাদের সুপারিশই কামনা করে। [মুহাম্মাদ ইবন ইবরাহীম আলে আশ-শাইখ, শারহু কাশফিশ শুবহাত, পৃ. ৬৭]] ও সন্দেহই হচ্ছে তাদের (বর্তমান কালের মুশরিকদের) সবচেয়ে বড় সন্দেহ। যখন তুমি জানতে পারলে যে আল্লাহ তা‘আলা এগুলোকে তাঁর কিতাবে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন, আর তুমি তা সম্যকভাবে বুঝতে পারবে তখন এর পরবর্তী অন্যান্য সন্দেহসমূহের উত্তর দেওয়া আরও সহজ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন