HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্কের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ

লেখকঃ সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান

নিম্ন লিখিত কারণে শির্ক সবচেয়ে বড় গোনাহ হিসেবে বিবেচিত:
১. এতে ‘ইলাহ’-এর গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যে খালেক তথা সৃষ্টিকর্তার সাথে মাখলুক তথা সৃষ্ট বস্তুর তুলনা করা হয়। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করলো, সে প্রকারান্তরে তাকে আল্লাহর অনুরূপ ও সমকক্ষ বলে স্থির করলো। আল্লাহ বলেন,

﴿إِنَّ ٱلشِّرۡكَ لَظُلۡمٌ عَظِيمٞ ١٣﴾ [ لقمان : ١٣ ]

“নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়।” [সূরা লোকমান, আয়াত: ১৩]

যুলুম বলা হয় কোনো বস্তুকে তার আসল জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখা। সুতরাং যে গায়রুল্লাহর ইবাদত করে, সে মূলতঃ ইবাদতকে তার আসল স্থানে না রেখে ইবাদত পাওয়ার উপযুক্ত নয় এমন কারো উদ্দেশ্যে তা নিবেদন করে। আর এটা হলো সবচেয়ে বড় যুলুম এবং অন্যায়।

২. আল্লাহ তা‘আলা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিয়েছেন, শির্ক করার পর যে ব্যক্তি তা থেকে তাওবা করবে না, তিনি তাকে ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ ﴾ [ النساء : ٤٨ ]

“নিশ্চয় আল্লাহর তাঁর সাথে শরীক করার পাপ ক্ষমা করেন না। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ তিনি ক্ষমা করেন, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

৩. আল্লাহ এও বলেন যে, তিনি মুশরীকদের জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন এবং তারা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে। তিনি বলেন,

﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢﴾ [ المائ‍دة : ٧٢ ]

“নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোনো সাহায্যকারী নেই।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৭২]

৪. শির্ক সকল আমলকে নষ্ট ও নিষ্ফল করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَوۡ أَشۡرَكُواْ لَحَبِطَ عَنۡهُم مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٨٨﴾ [ الانعام : ٨٨ ]

“যদি তারা শির্ক করত, তবে তাদের কাজকর্ম নিষ্ফল হয়ে যেত।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৮৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَلَقَدۡ أُوحِيَ إِلَيۡكَ وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكَ لَئِنۡ أَشۡرَكۡتَ لَيَحۡبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٦٥﴾ [ الزمر : ٦٥ ].

“আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি অহী প্রেরণ করা হয়েছে যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৫]

৫. মুশরিক ব্যক্তির রক্ত (তথা প্রাণ সংহার) ও ধন-সম্পদ কেড়ে নেওয়া উভয়ই হালাল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَٱقۡتُلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِينَ حَيۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡ وَخُذُوهُمۡ وَٱحۡصُرُوهُمۡ وَٱقۡعُدُواْ لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدٖۚ﴾ [ التوبة : ٥ ]

“অতঃপর মুশরিকদেরকে হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদেরকে বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৫]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، فَإِذَا قَالُوا : لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلَّا بِحَقِّهَا »

“আল্লাহ ছাড়া আর কোনো হক মা‘বুদ নেই, একথা বলা পর্যন্ত লোকজনের সাথে লড়ে যাওয়ার জন্য আমাকে আদেশ করা হয়েছে। অতঃপর যখনই তারা এই বাণী উচ্চরণ করল, আমার হাত থেকে তাদের জান-মাল তারা রক্ষা করে নিল। অবশ্য এ বাণীর দাবী অনুযায়ীকৃত দন্ডনীয় অপরাধের সাজা পেতেই হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৮৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১।]

৬. কবীরা গোনাহসমূহের মধ্যে শির্ক সবচেয়ে বড় গোনাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟» ثَلاَثًا، قَالُوا : بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ : «الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ»

“আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবীরা গোনাহের সংবাদ দিব না? তারা বলল- জ্বী, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন: আল্লাহর সাথে শির্ক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৫৪, ৫৯৭২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৭।]

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন যে, সমস্ত জগতের সৃষ্টি এবং এর ওপর কর্তৃত্বের উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহ তা‘আলাকে যেন তার নাম ও গুণাবলিসহ জানা যায় ও শুধু তাঁরই ইবাদত করা হয়। তাঁর সাথে আর কারো শরীক করা না হয়। আর মানুষ যেন নিজেদের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করে। ন্যায় ও ইনসাফ হলো সেই নিক্তি যদ্বারা আসমান ও জমীন প্রতিষ্ঠত। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا رُسُلَنَا بِٱلۡبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلۡنَا مَعَهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلۡقِسۡطِۖ﴾ [ الحديد : ٢٥ ]

“নিশ্চয় আমরা আমার রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি, স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।” [সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ২৫]

এখানে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছিন যে, তিনি তাঁর রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন এবং স্বীয় গ্রন্থসমূহ নাযিল করেছেন, যাতে মানুষ ‘ক্বিসত’ তথা ইনসাফ হচ্ছে তাওহীদ, বরং তাওহীদ হচ্ছে ‘আদল ও ইনসাফের মূল স্তম্ভ। পক্ষান্তরে শির্ক হলো স্পষ্ট যুলুম ও অন্যায়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱلشِّرۡكَ لَظُلۡمٌ عَظِيمٞ ١٣﴾ [ لقمان : ١٣ ]

“নিশ্চয়ই শির্ক একটি বড় যুলুম।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ১৩]

অতএব, শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় যুলুম এবং তাওহীদ হচ্ছে সর্বোত্তম ‘আদল ও ইনসাফ। আর যা বিশ্ব সৃষ্টির এই উদ্দেশ্যের সবচেয়ে বেশি পরিপন্থী, তাই সবচেয়ে বড় কবীরা গোনাহ। এ ব্যাপারে ইবনুল কাইয়েম আরো বলেন, যখন শির্কই হলো এ উদ্দেশ্যের পরিপন্থী, তাই সর্বতোভাবে এটিই সবচেয়ে বড় কবীরা গোনাহ। আল্লাহ প্রত্যেক মুশরিকের ওপর জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন এবং তার জান-মাল ও পরিবার-পরিজনকে তাওহীদপন্থীদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। তদুপরি তাদেরকে দাস হিসেবে গ্রহণ করার ও অনুমতি দিয়েছেন, কেননা তারা আল্লাহর ইবাদত ও দাসত্বের কাজ আদায় করা থেকে বিরত থেকেছে। আল্লাহ মুশরিক ব্যক্তির কোনো কাজ কবুল করতে, আখিরাতে তার ব্যাপারে কোনো সুপারিশ গ্রহণ করতে ও তার কোনো দো‘আ কবুল করতে এবং তার কোনো আশা বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে মুশরিক ব্যক্তি আল্লাহ সম্পর্কে সবচেয়ে অজ্ঞ। কেননা সে সৃষ্টির কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করে। অথচ এ হলো চূড়ান্ত অজ্ঞতা এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের যুলুম। যদিও বস্তবিকভাবে মুশরিক ব্যক্তি তার রব আল্লাহ তা‘আলার ওপর যুলুম করে না, বরং সে নিজের ওপরই যুলুম করে থাকে।

৭. শির্ক হলো এমন ত্রুটি ও দোষ যা থেকে আল্লাহ তা‘আলা নিজেকে পবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করলো, সে আল্লাহর জন্য ওটাই সাব্যস্ত করলো যা থেকে তিনি নিজেকে পবিত্র বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর তাই শির্ক হলো আল্লাহর পরিপূর্ণ নাফরমানী, চূড়ান্ত হঠকারিতা ও তাঁকে কষ্ট দেওয়ারই নামান্তর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন