HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআনুল কারীম মর্যাদা, শিক্ষা ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা

লেখকঃ ইকবাল হুসাইন মাসুম

প্রথমত: কুরআনের মর্যাদা, ফযিলত ও বৈশিষ্ট্য:
কুরআনুল কারীমের মর্যাদা, ফযিলত, অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পবিত্র কুরআনেই অনেক আয়াত বর্ণিত হয়েছে যেমনি এ প্রসঙ্গে বহু হাদিস রয়েছে। কতক এখানে তুলে ধরা হল:

(১) কুরআন বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তাবারাকা ওয়াতা‘আলার কালাম। তিনি তা স্বীয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর রূহুল আমীন জিবরীল আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَإِنۡ أَحَدٞ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ٱسۡتَجَارَكَ فَأَجِرۡهُ حَتَّىٰ يَسۡمَعَ كَلَٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبۡلِغۡهُ مَأۡمَنَهُۥۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡلَمُونَ ٦ ﴾ [ التوبة : ٦ ]

“মুশরিকদের কেউ যদি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে আপনি তাকে আশ্রয় দিয়ে দিন যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬]

(২) কুরআন মানবতার জন্য দিক-নির্দেশনা ও আলোকবর্তিকা। তাদেরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ও সুস্পষ্ট পথ-পানে পথ-নির্দেশ করে। আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ يَهۡدِي لِلَّتِي هِيَ أَقۡوَمُ ﴾ [ الاسراء : ٩ ]

“নিশ্চয় এ কুরআন এমন পথ-প্রদর্শন করে যা সর্বাধিক সরল ও সঠিক।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৯]

কিয়ামত পর্যন্ত মানবজাতি যত সমস্যার সম্মুখীন হবে তাদের যা যা প্রয়োজন হবে সকল বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে এ কুরআনে, আল্লাহ বলেন:

﴿وَنَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ تِبۡيَٰنٗا لِّكُلِّ شَيۡءٖ وَهُدٗى وَرَحۡمَةٗ وَبُشۡرَىٰ لِلۡمُسۡلِمِينَ ٨٩ ﴾ [ النحل : ٨٩ ]

“এবং আমরা আপনার প্রতি এমন কিতাব নাযিল করেছি যা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা। হিদায়াত রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৮৯]

৩. মহান আল্লাহ তা‘আলা এর নাম দিয়েছেন ফুরকান (পার্থক্যকারী) যা হালাল-হারাম হিদায়াত-গোমরাহি এবং হক ও বাতেলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করে।

৪. কুরআনুল কারীম আমাদের পূর্ববর্তীদের ঘটনাবলী, পরবর্তীদের সংবাদ, মু’মিনদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ এবং কাফেরদের জন্য জাহান্নামের দুঃসংবাদের বর্ণনায় পরিপূর্ণ। বর্ণিত সকল বিষয়ের বর্ণনায় এটি ততোধিক সত্য বক্তব্য প্রদানকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَتَمَّتۡ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدۡقٗا وَعَدۡلٗاۚ﴾ [ الانعام : ١١٥ ]

“আপনার রবের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১১৫]

৫. আল-কুরআন বিশ্ববাসী সকলের জন্য রহমত। সে গাফেল হৃদয়কে জাগ্রত ও সক্রিয় করে অন্তরকে শির্ক-নিফাক এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থ করে তোলে। যেমন এ কথা সূরা ফাতিহা ও সূরা নাস ফালাক ইত্যাদির ক্ষেত্রে সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَآءَتۡكُم مَّوۡعِظَةٞ مِّن رَّبِّكُمۡ وَشِفَآءٞ لِّمَا فِي ٱلصُّدُورِ وَهُدٗى وَرَحۡمَةٞ لِّلۡمُؤۡمِنِينَ ٥٧ ﴾ [ يونس : ٥٧ ]

“হে মানবকুল! তোমাদের কাছে উপদেশ বাণী এসেছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময় হিদায়াত ও রহমত মুমিনদের জন্য।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৭]

তাই দেখা যায়, কুরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে অন্তর প্রশান্ত হয়। দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ ٢٨﴾ [ الرعد : ٢٨ ]

“যারা ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।” [সূরা আর-রা‘আদ, আয়াত: ২৮]

কুরআনুল কারীম খুবই বরকতময়। তার উপকারিতা সু-বিশাল মানবকুল কুরআনের মাধ্যমে দুনিয়া আখেরাত-উভয় জগতের কল্যাণ ও উন্নতি লাভ করতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿فَإِمَّا يَأۡتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدٗى فَمَنِ ٱتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشۡقَىٰ ١٢٣ وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِيٓ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِيرٗا ١٢٥ قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَايَٰتُنَا فَنَسِيتَهَاۖ وَكَذَٰلِكَ ٱلۡيَوۡمَ تُنسَىٰ ١٢٦﴾ [ طه : ١٢٣، ١٢٦ ]

“এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হিদায়াত আসে তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ করে উত্থিত করব। সে বলবে হে আমার পালন-কর্তা! আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমিতো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ এসেছিল। অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনি আজ তোমাকে এখানে ছেড়ে যাওয়া হলো।” [সূরা ত্বাহা, আয়াত: ১২৩-১২৬]

৭. আল-কুরআন এমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কিতাব যা আল্লাহ তা‘আলার সংরক্ষণে সংরক্ষিত। আল্লাহ বলেন:

﴿إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا ٱلذِّكۡرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ٩﴾ [ الحجر : ٩ ]

“নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই তা সংরক্ষণ করব।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯]

৮. কুরআনের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো, যে ব্যক্তি এটি বুঝার ও অনুধাবন করার চেষ্টা করে সে তাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে হৃদয়ে নাড়া দেয়। অন্তরকে মার্জিত ও পরিশীলিত করে। আত্মাকে করে সংশোধিত। মানুষকে নেক আমলের প্রতি উৎসাহী করে তোলে। তার প্রভাব ও আছর শুধু মানবকুল পর্যন্তই সীমিত নয়; বরং একে যদি খুব মজবুত ও শক্ত পাহাড়ে অবতীর্ণ করানো হত তাহলে অবশ্যই সেটি কেঁপে উঠত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿لَوۡ أَنزَلۡنَا هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ عَلَىٰ جَبَلٖ لَّرَأَيۡتَهُۥ خَٰشِعٗا مُّتَصَدِّعٗا مِّنۡ خَشۡيَةِ ٱللَّهِۚ وَتِلۡكَ ٱلۡأَمۡثَٰلُ نَضۡرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ يَتَفَكَّرُونَ ٢١﴾ [ الحشر : ٢١ ]

“যদি আমরা এ কুরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে আপনি দেখতে পেতেন যে পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে, আমরা এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ২১]

৯. কুরআন এ উম্মতের জন্য উপদেশ ও সম্মানের বস্তু। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَإِنَّهُۥ لَذِكۡرٞ لَّكَ وَلِقَوۡمِكَۖ وَسَوۡفَ تُسۡ‍َٔلُونَ ٤٤ ﴾ [ الزخرف : ٤٤ ]

“কুরআন তো আপনার ও আপনার জাতির জন্য উপদেশ সম্মান ও স্মরণের বস্তু। অবশ্যই এ বিষয়ে সত্ত্বর জিজ্ঞাসিত হবেন।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৪৪]

১০. সালাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ‘আমল কুরআনের সূরা ফাতিহা পড়া ব্যতীত সহীহ-শুদ্ধ হয় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«لاصلاة لمن لم يقرأ بفاتحة الكتاب» . ( متفق عليه )

“যে ব্যক্তি সূরা ফাতেহা পড়ে না তার সালাতই হয় না।” (বোখারি ও মুসলিম)

(১১) যারা হিদায়াত প্রত্যাশা করে এবং এর জন্য চেষ্টা করে মহান আল্লাহ তা‘আলা তাদের উদ্দেশ্যে কুরআনের তিলাওয়াত বুঝা, হিফয করা, এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে চিন্তা করে হৃদয়ংগম করা ও তার নির্দেশ অনুযায়ী ‘আমল করা খুব সহজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ ١٧﴾ [ القمر : ١٧ ]

“এবং আমরা কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি বুঝা ও উপদেশ গ্রহণের জন্য। কোনো চিন্তাশীল উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি?” [সূরা আল-ক্বামার, আয়াত: ১৭]

সুতরাং কুরআন আল্লাহ তা‘আলার একটি বিশাল নি‘আমত ও বিশেষ অনুগ্রহ। তাই আমাদের সকলের এ কুরআন পেয়ে আনন্দিত হওয়া এবং সদা আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿قُلۡ بِفَضۡلِ ٱللَّهِ وَبِرَحۡمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلۡيَفۡرَحُواْ هُوَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٥٨﴾ [ يونس : ٥٨ ]

“বলুন আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবাণীতে। সুতরাং এরই প্রতি তাদের আনন্দিত ও সন্তুষ্ট হওয়া উচিত। তারা যা সঞ্চয় করছে তা অপেক্ষা এটিই অতি উত্তম।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৮]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন