HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআনুল কারীম মর্যাদা, শিক্ষা ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা

লেখকঃ ইকবাল হুসাইন মাসুম

কুরআনুল কারীমের মূল্যায়নের দিকসমূহ: (১) তিলাওয়াত করা তিলাওয়াতের ফযিলত:
(১) কুরআনুল কারীমের যথাযথ তিলাওয়াত ও অধ্যয়ন আল্লাহর সাথে একটি লাভজনক ব্যবসা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتۡلُونَ كِتَٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ سِرّٗا وَعَلَانِيَةٗ يَرۡجُونَ تِجَٰرَةٗ لَّن تَبُورَ ٢٩ لِيُوَفِّيَهُمۡ أُجُورَهُمۡ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ غَفُورٞ شَكُورٞ ٣٠ ﴾ [ فاطر : ٢٩، ٣٠ ]

“যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে সালাত কায়েম করে এবং আমরা যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা করে যাতে কখনও লোকসান হবে না। পরিণামে তাদেরকে আল্লাহ তাদের সওয়াব পুরোপুরি দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশি। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল গুণগ্রাহী।” [সূরা আল-ফাতির, আয়াত: ২৯-৩০]

(২) কুরআন তিলাওয়াতকারী প্রত্যেক অক্ষরের পরিবর্তে একটি করে সাওয়াব লাভ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«من قرأ حرفا من كتاب الله فله حسنة، والحسنة بعشر أمثالها، لا أقول : ( الم ) حرف، ولكن ألف حرف، ولام حرف، وميم حرف» . ( رواه الترمذي )

“যে ব্যক্তি কুরআন মাজীদ থেকে একটি অক্ষর তিলাওয়াত করবে তাকে একটি সাওয়াব দেওয়া হবে। উক্ত এক সাওয়াব হবে দশ সাওয়াবের সমতুল্য। আমি একথা বলি না যে الم একটি অক্ষর বরং الف একটি অক্ষর لام একটি অক্ষর ميم একটি অক্ষর।( الم তিলাওয়াত করলে ন্যূনতম ত্রিশটি সাওয়াব প্রাপ্ত হবে)। (তিরমিযী)

(৩) কুরআন তিলাওয়াতকারী ভিতর বাহির উভয় দিক থেকে উত্তম-উৎকৃষ্ট। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مثل المؤمن الذي يقرأ القرآن مثل الأترجة : ريحها طيب، وطعمها طيب، ومثل المؤمن الذي لا يقرأ القرآن كمثل التمرة : لا ريح لها وطعمها حلو، ومثل المنافق الذي يقرأ القرآن كمثل الريحانة : ريحها طيب وطعمها مر، ومثل المنافق الذي لا يقرأ القرآن كمثل الحنظلة : ليس لها ريح، وطعمها مر» . ( متفق عليه )

“যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে সে জামীর সদৃশ যার সুগন্ধি বড় চমৎকার এবং স্বাদও সুমিষ্ট। আর যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে না সে খেজুর সমতুল্য। যার গন্ধ নেই কিন্তু স্বাদ বড় মিষ্ট। আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে সে রাইহান ফলের মত যার সুগন্ধি চমৎকার কিন্তু স্বাদ বড়ই তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে না সে হানযালা বা কেদাঁ ফলের সমতুল্য যার কোনো ঘ্রাণ নেই এবং স্বাদও তিক্ত।” (বুখারী ও মুসলিম)

৪. কুরআন পাঠে সাকীনা (বিশেষ রহমত) অবতীর্ণ হয়। সাহাবী বারা ইবন ‘আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেছেন,

«كان رجل يقرأ سورة الكهف وعنده فرس مربوط بشطنين ( بحبلين ) فتغشته سحابة، فجعلت تدنو، وجعل فرسه ينفر منها، فلما أصبح أتى النبي صلى الله عليه وسلم فذكر ذلك له، فقال : ( تلك السكينة تنـزلت للقرآن )». ( متفق عليه )

“জনৈক সাহাবী সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করছিলেন। তার নিকট রশি দিয়ে বাঁধা একটি ঘোড়া ছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই একটি মেঘ তাকে ঢেকে নিল এবং ক্রমেই সেটি কাছে আসছিল আর ঘোড়া ছোটাছুটি করছিল। সকাল হলে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে পূর্ণ ঘটনা খুলে বললেন। শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সেটি সাকীনা (এক প্রকার বিশেষ রহমত যা দ্বারা অন্তরের প্রশান্তি লাভ হয়) কুরআনুল কারীমের তিলাওয়াতের কারণে অবতীর্ণ হয়েছে।” (বুখারী, মুসলিম)

(৫) কুরআনের একটি আয়াত (পাঠ করা বা শিক্ষা দেওয়া) উটের মালিক হওয়া অপেক্ষা উত্তম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أفلا يغدو أحدكم إلى المسجد فيعلم أو يقرأ آيتين من كتاب الله عز وجل خير له من ناقتين، وثلاث خير له من ثلاث، وأربع خير له من أربع، ومن أعدادهن من الإبل )». ( رواه مسلم )

“তোমাদের কেউ কেন সকালে মসজিদে গিয়ে আল্লাহর কুরআন হতে দুটি আয়াত শিখে না বা পড়ে না? তাহলে সেটি তার জন্য দুটি উট লাভ করার চেয়ে উত্তম হতো। তিনটি আয়াত তিনটি উট অপেক্ষা উত্তম। চারটি আয়াত চার উট অপেক্ষা উত্তম হতো। অনুরূপ আয়াতের সংখ্যা অনুপাতে উটের সংখ্যা অপেক্ষা উত্তম হতো।” (মুসলিম)

৬. কুরআনুল কারীম নিয়মিত তিলাওয়াতকারী ও তদনুযায়ী আমলকারীর পক্ষে কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেন,

«إقرؤوا القرآن، فإنه يأتي يوم القيامة شفيعا لأصحابه» . ( رواه مسلم )

“তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর; কেননা কুরআন কিয়ামতের দিবসে তিলাওয়াত ও আমলকারীর জন্য সুপারিশকারী হিসেবে আবির্ভূত হবে।” (মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন

» يؤتى يوم القيمة بالقرآن وأهله الذين كانوا يعملون به في الدنيا، تقدمه سورة البقرة وآل عمران تحاجان عن صاحبهما» . ( رواه مسلم )

“কেয়ামতের দিন কুরআন এবং পৃথিবীতে কুরআনের মর্মানুযায়ী আমলকারীদেরকে এমতাবস্থায় উপস্থিত করা হবে সূরা বাকারাহ ও সূরা আলে ইমরান আগে আগে চলবে এবং এদের তিলাওয়াত ও আমলকারীদের জন্য সুপারিশ করতে থাকবে।” (মুসলিম)

৭. কুরআনের পাঠক ও আমলকারী দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«خيركم من تعلم القرآن وعلمه» . ( رواه البخاري )

“যে কুরআন শিখে ও অন্যকে শিক্ষা দেয় সে তোমাদের শ্রেষ্ঠতর।” (বোখারী)

কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি সাহাবীদের আগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয়। তিলাওয়াতের মর্যাদা জানার পর তাদের কেউ কেউ সব সময়ের জন্য সারারাত না ঘুমিয়ে কুরআন তিলাওয়াতে কাটিয়ে দেওয়ার সংকল্প করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত সংকল্প সম্পর্কে জেনে এরূপ না করার পরামর্শ দিয়ে বললেন বরং প্রতি সাত দিনে একবার করে খতম করতে পার। তাইতো দেখা যায় তাদের অধিকাংশই প্রতি সাত দিনে একবার করে খতম করতেন।

তিলাওয়াতের প্রতি তাদের এরূপ যত্নশীল হওয়া সত্ত্বেও যদি কখনো কেউ অন্য কাজে ব্যস্ততা হেতু বা ঘুমের কারণে রাতে পড়তে না পারতেন তাহলে পরদিন সে অংশটুকু অবশ্যই পড়ে নিতেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

» من نام عن حزبه أو عن شيء منه ، فقرأه فيما بين صلاة الفجر وصلاة الظهر كتب له كأنما قرأه من الليل» . ( رواه مسلم )

“যে ব্যক্তি স্বীয় নির্ধারিত অংশ বা তার অংশ বিশেষ রাতে না পড়েই ঘুমিয়ে যায় অতঃপর পরদিন ফজর ও জোহরের মধ্যবর্তী সময়ে পড়ে নেয়। তাহলে রাতে পড়া হয়েছে ধরেই আল্লাহর নিকট ধর্তব্য হবে।” (মুসলিম)

আবার তাদের কেউ কেউ প্রতি দিনে একবার করে খতম করতেন। রমযান মাস আসলে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি তাদের চেষ্টা ও পরিশ্রম আরো বেড়ে যেতো। রমযানে সালাতের মধ্যে এবং অন্য সময় তিলাওয়াতের জন্য তারা কঠোর পরিশ্রম করতেন।

ইমাম বুখারী রহ. বলতেন:

إذا دخل رمضان فإنما هو تلاوة القرآن وإطعام الطعام .

“যখন রমযান আসবে তখন সেটি হবে একমাত্র কুরআন তিলাওয়াত ও অপরকে খাওয়ানোর মাস।”

ইমাম মালেক রহ. রমযান আসলে হাদিসের অধ্যয়ন ইলম শিক্ষার আসরসহ যাবতীয় কাজ ছেড়ে দিয়ে (রাতদিন শুধু) মাসহাফ থেকে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি বেশি মনোযোগী হতেন। এর অর্থ এই নয় যে, শুধু চিন্তা ও গবেষণার দিক ও তিলাওয়াতের হক প্রদানকে জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু তিলাওয়াতের প্রতিই গুরুত্ব দেওয়া হবে; বরং অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায় বা অক্ষর অস্পষ্ট থাকে এমন করে খুব দ্রুত বেগে তিলাওয়াত করার অনুমতি নেই। কালামুল্লাহ তিলাওয়াতের অনেক আদব আছে তিলাওয়াতকালে সেগুলোর প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন