HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর দিকে আহ্বান ও দাঈর গুণাবলি

লেখকঃ শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায রহ.

দ্বিতীয় বিষয়: দা‘ওয়াতের পন্থা ও পদ্ধতি
দা‘ওয়াতের পন্থা ও পদ্ধতি সম্পর্কে, তার প্রকৃতি ও ধরন সর্ম্পকে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ্‌র হাদীসেও এ বিষয়টি এসেছে প্রকৃষ্টভাবে।

আল্লাহ তা‘আলা খুব স্পষ্টকরে বলেছেন:

﴿ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُۚ﴾ [ النحل : ١٢٥ ]

‘তুমি তোমার রবের পথে আহ্বান কর হিকমত ও সদুপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সুন্দরতম পন্থায়’ [সূরা নাহল, ১২৫।]

দা‘ওয়াত পদ্ধতি কি হবে এবং একজন দা‘ওয়াতী কর্মীকে কি কি গুণ অর্জন করতে হবে যা সে দা‘ওয়াতি ময়দানে প্রয়োগ করবে উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। সে দা‘ওয়াত শুরু করবে হিকমত ও পরিবেশ-পরিস্থিতির বিবেচনায় বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে। এখানে হিকমত বলতে বুঝানো হয়েছে সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণসমূহ যা স্বচ্ছ ও সন্তোষজনক পন্থায় হক্ব প্রতিষ্ঠিত করবে এবং অসার ও বাতুলতাকে খণ্ডন করবে।

কতিপয় মুফাসি্সরের মতে, ‘তুমি তোমার রবের পথে হিকমতের মাধ্যমে দা‘ওয়াত দিবে’ একথার অর্থ কুরআনের মাধ্যমে, কারণ কুরআনই হচ্ছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের হিকমত, এর মধ্যে হক্ব ও সত্য সম্পর্কে খুবই স্বচ্ছতার সাথে পূর্ণাঙ্গরূপে বলা হয়েছে।

আবার কেউ কেউ ব্যাখ্যা করেছেন, কুরআন-হাদীস বর্ণিত দলিল প্রমাণাদির সাহায্যে।

যাই হোক হিকমত একটি তাৎপর্যময় অতি উচ্চ অর্থবোধক শব্দ যার মর্ম হচ্ছে, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সুস্পষ্ট প্রমাণ ও সত্যস্পষ্টকারী দলিলের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে আহ্বান করা। এবং এটি সমার্থবোধক একটি শব্দ, নবুওয়ত, দ্বীনের বুঝ, বোধ-বিবেক, পরহেযগারী প্রভৃতি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ইমাম শাওকানীর বক্তব্য মতে মৌলিকত্বের বিবেচনায় হিকমতের অর্থ হচ্ছে, যে বিষয় মূর্খতা প্রসূত কার্যাদি থেকে বিরত রাখে সেটিই হিকমত। অর্থাৎ যেসব বক্তব্য, লেখনি কিংবা উক্তি আপনাকে নির্বুদ্ধিতা ও বাতুলতা থেকে রক্ষা করবে সেটিই হিকমত।

এমনি ভাবে প্রত্যেক স্পষ্ট কথা যা প্রকৃত অর্থেই শুদ্ধ সেটিই হিকমত। এসব বিবেচনায় কুরআনের আয়াত সর্বোত্তম হিকমত, এর পর সহীহ হাদীস এবং আল্লাহ উভয়টিকেই তাঁর মহান কিতাবে হিকমত বলে নামকরণও করেছেন। যেমন পবিত্র কুরআনে এসেছে,

﴿وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ﴾ [ البقرة : ١٢٩ ]

‘এবং তাদেরকে শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত’। [সূরা আল-বাক্বারাহ্: ১২৯]

আয়াতে বর্ণিত হিকমত অর্থ সুন্নত। অন্য আয়াতে এসেছে,

﴿ يُؤۡتِي ٱلۡحِكۡمَةَ مَن يَشَآءُۚ وَمَن يُؤۡتَ ٱلۡحِكۡمَةَ فَقَدۡ أُوتِيَ خَيۡرٗا كَثِيرٗا﴾ [ البقرة : ٢٦٩ ]

“তিনি যাকে ইচ্ছে হেকমত দান করেন। আর যাকে হেকমত প্রদান করা হয় তাকে তো প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়”। [সূরা আল-বাকারাহ: ২৬৯]

অতএব সারকথা হল, সুস্পষ্ট শর‘য়ী দলিলাদিকে হিকমত বলা হয় এবং যেসব পরিস্কার ও স্পষ্ট কথা হক্ব বুঝতে ও গ্রহণ করতে সহায়তা করে তাও হিকমত। এ বিবেচনায় ঘোড়ার মুখে স্থাপিত লাগামকে ‘হাকাম’ বলা হয়। কারণ ঘোড়ার মালিক ‘হাকামা, (লাগাম) টেনে ধরলে ঘোড়া থামতে বাধ্য হয়ে যায়। ঐ হাকামাই তাকে চলা অব্যাহত রাখতে বাধা দেয়। একইভাবে ‘হিকমত’ ও এমনই কথা যা শ্রবণকারীকে বাতিলের পথে চলতে বাধা প্রদান করে, হক্ব ও সত্যের প্রতি প্রভাবিত করে তা গ্রহণ করতে প্রেরণা যোগায় এবং আল্লাহ নির্ধারিত সীমায় অবস্থান নিতে সাহায্য করে।

তাই দা‘ঈ ইলাল্লাহর দায়িত্ব হচ্ছে, আল্লাহর দিকে আহ্বানের এ গুরু দায়িত্ব পালনকালে হিকমতের পথ অবলম্বন করা এবং দা‘ওয়াত কর্ম হিকমত দিয়েই শুরু করা, এর প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া। যদি দা‘ওয়াত প্রদত্ত ব্যক্তির মাঝে কোনো সংকীর্ণতা বা আপত্তি থাকে তাহলে উত্তম উপদেশের স্মরণাপন্ন হওয়া, উৎসাহব্যঞ্জক পবিত্র আয়াত ও হাদীসের উপদেশ দ্বারা দা‘ওয়াত পেশ করা। যদি কাঙ্খিত ব্যক্তি সন্দিহান হয়, তাহলে উত্তম পন্থায় বিতর্কের রাস্তা গ্রহণ করা এবং কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছার নিমিত্তে ধৈর্য ধারণ করা, তাড়াহুড়ো বা বল প্রয়োগ কিংবা রূঢ় আচরণের চিন্তা পরিহার করা। বরং সন্দেহ নিরসনের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে অব্যাহতভাবে এবং দলিলাদি উপস্থাপন করবে উত্তম পদ্ধতিতে।

হে আল্লাহর পথের দা‘ঈ! এভাবে আপনাকে হতে হবে সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল। কঠোরতা অবলম্বন করা যাবে না। কারণ এ পদ্ধতিই হচ্ছে, হক্বের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া, হক্ব গ্রহণ করা এবং হক্বের দা‘ওয়াত দ্বারা পেশকৃত ব্যক্তিকে প্রভাবিত করার বেশি উপযোগী। (হে দা‘ঈ) আপনাকে আরও হতে হবে বিতর্ক-আলোচনায় ধৈর্যশীল। আল্লাহ তা‘আলা মূসা ও হারুন আলাইহিমাস সালামকে ফির‘আউনের কাছে দা‘ওয়াত দানের জন্য প্রেরণকালে তার সাথে নরম ভাষায় কথা বলার নির্দেশ দিলেন, অথচ সে ছিল সবচে বড় সীমালঙ্ঘনকারী। আল্লাহ বলেন:

﴿ فَقُولَا لَهُۥ قَوۡلٗا لَّيِّنٗا لَّعَلَّهُۥ يَتَذَكَّرُ أَوۡ يَخۡشَىٰ ٤٤ ﴾ [ طه : ٤٤ ]

‘তোমরা তার সাথে নম্র কথা বলবে, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে, অথবা ভয় করবে। [সূরা ত্বাহা, ৪৪।]

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে বললেন:

﴿ فَبِمَا رَحۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَۖ ﴾ [ ال عمران : ١٥٩ ]

‘অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে আপনি তাদের জন্য নরম হয়েছিলে। আর যদি আপনি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত’। [সূরা আলে ইমরান:১৫৯]

বুঝা গেল দা‘ওয়াতের প্রজ্ঞাপূর্ণ পদ্ধতি এবং সঠিক পন্থা হলো, দা‘ঈকে প্রজ্ঞাপূর্ণ, দূরদর্শী হয়ে দা‘ওয়াত দানে প্রবৃত্ত হতে হবে। তাড়াহুড়ো ও বল প্রয়োগের মানসিকতা ত্যাগ করে হিকমতের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া। আর তা হচ্ছে, কুরআন ও হাদীসের প্রভাবপূর্ণ উপদেশ বাণীর মাধ্যমে দা‘ওয়াত পেশ করা। দা‘ওয়াত দানের ক্ষেত্রে দা‘ঈ আরও যে পদ্ধতি অবলম্বন করবে তা হচ্ছে, উত্তম নসীহত বা উপদেশ প্রদান, আর বিতর্ক করার প্রয়োজন দেখা দিলে সেখানেও উত্তম আদর্শের স্বাক্ষর রাখা। এগুলোই হচ্ছে দা‘ওয়াত দানের পদ্ধতি দা‘ওয়াত দানের ক্ষেত্রে যার প্রতি খেয়াল রাখা আবশ্যক। কুরআন, হাদীস ও শরয়ী বিষয়ে অজ্ঞতা নিয়ে দা‘ওয়াত প্রদান ক্ষতিকারক ও অনোপকারী। -এবিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ একটু পরে দা‘ঈর আখলাক শীর্ষক অনুচ্ছেদে দেয়া হবে- কারণ দলিল প্রমাণ বিষয়ে অজ্ঞ থেকে দা‘ওয়াত প্রদান বিনা ইলমে আল্লাহর উপর কথা বলার নামান্তর। এমনিভাবে কর্কশ ভাষায়, বল প্রয়োগের মাধ্যমে দা‘ওয়াত প্রদানের ক্ষতিও অপরিসীম।

এ প্রসঙ্গে সূরা আন নাহলে আল্লাহর নির্দেশিত পন্থা অবলম্বন করা অতি জরুরি। আর তা হচ্ছে, আল্লাহর বাণী,

﴿ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ﴾ [ النحل : ١٢٥ ]

‘তুমি তোমার রবের দিকে আহ্বান কর হিকমতের মাধ্যমে’। [সূরা আন-নাহল:১২৫]

তবে যদি দা‘ওয়াত পেশকৃত ব্যক্তি থেকে নির্যাতন, একগুঁয়েমি প্রকাশ পায় তাহলে তার উপর কঠোরতা করাতে বাধা নেই। যেমন আল্লাহ বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ جَٰهِدِ ٱلۡكُفَّارَ وَٱلۡمُنَٰفِقِينَ وَٱغۡلُظۡ عَلَيۡهِمۡۚ﴾ [ التحريم : ٩ ]

‘হে নবী কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হন। [সূরা আত-তাহরীম: ৯।]

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,

﴿ ۞وَلَا تُجَٰدِلُوٓاْ أَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ إِلَّا بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ إِلَّا ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنۡهُمۡۖ﴾ [ العنكبوت : ٤٦ ]

“আর আহলে কিতাবদের সাথে উত্তম পদ্ধতি ব্যতীত বাক-বিতণ্ডা করবেন না, তবে তাদের মধ্যে যারা অন্যায় আচরণ করে সেটা ভিন্ন” [সূরা আল-আনকাবূত: ৪৬।]।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন