hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী আন্দোলনে বিজয়ের স্বরূপ

লেখকঃ ডঃ নাছের বিন সোলায়মান আল-ওমর

১০
আমাদের করণীয়
সাহায্য ও বিজয়ের তাৎপর্য বুঝার সাথে সাথে আমাদের উপর আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব ও কর্তব্যও বুঝতে হবে। এই দায়িত্ব পালনের পরিমাণ অনুযায়ীই সাহায্য নিশ্চিত হবে। এখন আমাদের দায়িত্ব কি মানুষকে সৎপথে অধিষ্ঠিত করা, নাকি তাদের নিকট ঈমান ও সঠিক পথের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া? আমাদের দায়িত্ব কি মানুষকে ঈমান আনতে বাধ্য করা, নাকি তাদের নিকট ঈমানের রাস্তা তুলে ধরা?

নিশ্চয়ই নবী-রাসূলগণের দায়িত্ব সংক্ষেপে একটি কথায় তুলে ধরা যায়। তাহ’ল ‘প্রচার’। বরং তাঁদের দায়িত্ব এই একটি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমরা কতিপয় আয়াত থেকে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারি। আল্লাহ বলেন,

فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاَغُ الْمُبِيْنُ -

‘রাসূলগণের উপর সুস্পষ্ট প্রচার ব্যতীত আর কোন দায়িত্ব নেই’ (নাহল ১৬/৩৫)।

وَمَا عَلَى الرَّسُوْلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ -

‘সুস্পষ্ট প্রচার ব্যতীত রাসূলের উপর আর কোন দায়িত্ব নেই’ (নূর ২৪/৫৪)।

فَإِنْ أَعْرَضُوْا فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظاً إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا الْبَلَاغُ -

‘যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহ’লে আমি তো আপনাকে তাদের রক্ষক হিসাবে প্রেরণ করিনি। আপনার দায়িত্ব তো কেবল প্রচার’ (শূরা ৪২/৪৮)।

فَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَإِنَّمَا عَلَى رَسُوْلِنَا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ -

‘যদি তোমরা পিছন ফিরে যাও তাহ’লে (জেনে রাখ) আমার রাসূলের দায়িত্ব তো কেবলই সুস্পষ্ট প্রচার’(তাগা-বুন ৬৪/১২)।

فَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُواْ أَنَّمَا عَلَى رَسُوْلِنَا الْبَلاَغُ الْمُبِيْنُ -

‘যদি তোমরা পৃষ্ঠদেশে প্রত্যাবর্তন কর, তাহ’লে জেনে রাখ আমার রাসূলের দায়িত্ব তো কেবলই খোলাখুলি প্রচার’ (মায়েদাহ ৫/৯২)।

يَا أَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ وَإِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ -

‘হে রাসূল! আপনার নিকট আপনার প্রতিপালকের পক্ষ হ’তে যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন, তবে আপনি তাঁর রিসালাত পৌঁছে দিলেন না’ (মায়েদাহ ৫/৬৭)।

وَإِنْ تَوَلَّوْاْ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ -

‘যদি ওরা পিছন ফিরে যায় তাহ’লে আপনার দায়িত্ব তো কেবলই প্রচার’ (আলে ইমরান ৩/২০)।

উক্ত আয়াতের তাফসীরে ইমাম ত্বাবারী (রহঃ) বলেছেন, ‘আপনি যে ইসলাম ও বিশ্বপ্রভুর খালেছ (নির্ভেজাল) তাওহীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন তাতে যদি ওরা সাড়া না দিয়ে ওদের প্রতিষ্ঠিত মতে ফিরে যায়, তাহ’লে জেনে রাখুন, আপনি তো একজন প্রচারক। আমার যে সৃষ্টিকুলের মাঝে আমি আপনাকে পাঠিয়েছি তাদের নিকট রিসালাত পৌঁছে দেওয়া এবং আপনার প্রতি আমার আদিষ্ট বিষয়ে আমার আনুগত্য করা ব্যতীত আপনার আর কোন দায়িত্ব নেই’ (তাফসীর ত্বাবারী ৬/৮৩ পৃ.)।

একই আয়াত প্রসঙ্গে ইবনু আশূর বলেছেন, কাফিরদের প্রতি আপনার এই যে উক্তি ‘তোমরা কি ইসলাম গ্রহণ করেছ?’ এ থেকে যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহ’লে আপনি সেজন্য কোন দন্ডের সম্মুখীন হবেন না। কেননা আপনার দায়িত্ব তো কেবলই প্রচার করা। এ আয়াতে فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ আসলে আরবী ব্যাকরণ মাফিক শর্তের জওয়াব নয়। উহা জওয়াবের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। প্রকৃত অর্থে বাক্যটি জওয়াবের কারণ। সুতরাং জওয়াবের স্থলে উহার অবস্থিতি কথাটির মধ্যে এক অনুপম সংক্ষিপ্ততা ( إيجاز بديع ) এনে দিয়েছে। অর্থাৎ আপনি দুঃখ করবেন না এবং ভাববেন না যে, তাদের সৎপথ লাভ না করা এবং আপনার হাতে তাদের ইসলাম গ্রহণ না করা আপনারই ত্রুটির জন্য। কেননা আপনাকে তো কেবল প্রচার কাজের জন্য পাঠানো হয়েছে। যাদের নিকট আপনি প্রচার করছেন তাদের সৎপথ আপনাকে অর্জন করিয়ে দিতে হবে এমন দায়িত্ব দিয়ে তো আপনাকে পাঠানো হয়নি।[1]

নবী-রাসূলগণের দায়িত্ব যে শুধুই প্রচার করা, সে কথাটি আল-কুরআনে অন্যত্র জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট ব্যক্ত করা হয়েছে- মানুষকে আল্লাহর পথে নিয়ে আসার দায়িত্ব না নবীদের, না রাসূলদের, না অন্য কারো। আল্লাহ বলেন,

وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ لَآمَنَ مَنْ فِي الأَرْضِ كُلُّهُمْ جَمِيْعاً أَفَأَنْتَ تُكْرِهُ النَّاسَ حَتَّى يَكُوْنُوْا مُؤْمِنِيْن -

‘আপনার প্রতিপালক চাইলে ধরিত্রীর বুকে বুদ্ধিমান প্রাণী যারাই আছে এক এক করে সবাই ঈমান আনত। আপনি কি মানুষের উপর বল প্রয়োগ করবেন যে পর্যন্ত না তারা মুমিন হয়ে যায়’? (ইউনুস ১০/৯৯)।

إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِيْ مَنْ يَشَاءُ . ‘আপনি নিশ্চয়ই যাকে ভালবাসেন তাকেই সৎপথে আনতে পারেন না। কিন্তু আল্লাহ যাকে খুশি সৎপথে আনতে পারেন’ (ক্বাছাছ ২৮/৫৬)।

فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ عَلَى آثَارِهِمْ إِنْ لَّمْ يُؤْمِنُوْا بِهَذَا الْحَدِيْثِ أَسَفاً -

‘যদি তারা এই বাণীর প্রতি ঈমান না আনে, তাহ’লে সম্ভবত আপনি তাদের পেছনে আফসোস করে করেই আপনার জীবনকে ধ্বংস করে দিবেন’ (কাহফ ১৮/৬)।

لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ أَلاَّ يَكُوْنُوْا مُؤْمِنِيْنَ -

‘তারা মুমিন হচ্ছে না বলে সম্ভবতঃ আপনি আপনার জীবন বিনাশ করে দিবেন’ (শু‘আরা ২৬/৩)।

فَلاَ تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ -

‘তাদের জন্য আফসোস করে করে যেন আপনার জীবন নির্বাপিত হয়ে না যায়’ (ফাত্বির ৩৫/৮)।

মূলতঃ হক কথা বলার সাথেই আমাদের কর্তব্য সীমিত। আর সেটাই হ’ল ‘প্রচার’। যেমনটা নিম্নোক্ত আয়াতে বর্ণিত হয়েছে-

وَقُلِ الْحَقُّ مِن رَّبِّكُمْ فَمَنْ شَاءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيَكْفُرْ -

‘আপনি বলুন, হক তো তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আগত। সুতরাং যার ইচ্ছা ঈমান আনুক, আর যার ইচ্ছা কুফরী করুক’ (কাহফ ১৮/২৯)।

নিম্নোক্ত দু’টি আয়াতের সাথে আমরা এ জাতীয় আয়াত আলোচনার সমাপ্তি টানব।

وَإِنْ كَانَ كَبُرَ عَلَيْكَ إِعْرَاضُهُمْ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَن تَبْتَغِيَ نَفَقاً فِي الأَرْضِ أَوْ سُلَّماً فِي السَّمَاءِ فَتَأْتِيَهُمْ بِآيَةٍ وَلَوْ شَاءَ اللّهُ لَجَمَعَهُمْ عَلَى الْهُدَى فَلاَ تَكُوْنَنَّ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ -

‘তাদের ইসলাম বিমুখতা যদি আপনার পক্ষে কষ্টকর হয়, তবে সাধ্যায়ত্ব হ’লে আপনি ধরাবক্ষে কোন সুড়ঙ্গ কিংবা আকাশে কোন সিঁড়ি খুঁজে নিন, তারপর (আকাশ-পাতাল ফেড়ে) তাদের জন্য একটি নিদর্শন হাযির করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে হিদায়াতের উপর জমায়েত করতে পারতেন। সুতরাং আপনি মোটেও জাহিলদের অন্তর্ভুক্ত হবে না’ (আন‘আম ৬/৩৫)।

অপরদিকে সূরা যারিয়াতের আয়াতে ভিন্ন আঙ্গিকে প্রচারের প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তাদের ইসলাম বিমুখতা হেতু প্রচারক নিজে যদি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সেজন্য তিনি তিরষ্কৃত হবেন না। তবে তাদের সকল নেতিবাচক দিক সত্ত্বেও প্রচার ও নছীহত চালিয়ে যেতে হবে। এই নছীহত দ্বীন বিমুখদের কাজে না লাগলেও দ্বীনদার মুমিনদের দ্বীনের উপর অবিচল থাকার লক্ষ্যে খুবই কাজে লাগবে। আল্লাহ বলেন,

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَا أَنْتَ بِمَلُوْمٍ، وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَى تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِيْنَ -

‘অনন্তর আপনি ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। এতে আপনি তিরষ্কৃত হবেন না। আর নছীহত করতে থাকুন। কেননা নছীহত মুমিনদের জন্য কল্যাণবহ’ (যারিয়াত ৫১/৫৪, ৫৫)।

এ হ’ল সে সকল আয়াতের কিয়দাংশ, যা আল্লাহর কিতাবে এসেছে। এগুলিতে নবী-রাসূল ও প্রচারকদের দায়িত্ব সম্পর্কিত সীমারেখা এঁকে দেওয়া হয়েছে এবং অন্য যে কোন দায়িত্ব নাকচ করে দেওয়া হয়েছে, যা প্রচারকগণ সময়ে সময়ে নিজেদের দায়িত্ব বলে ভেবে থাকেন। অথচ বিষয়টা মোটেও তা নয়। আমাদের দায়িত্ব কেবল প্রচার করা, জবরদস্তি করা নয়। মানুষকে হেদায়াতের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, তাদের হেদায়াত নিশ্চিত করা নয়। খারাপ পরিবেশ পাল্টানোর জন্য শরী‘আত সম্মত পন্থা অবলম্বন করা, গোটা পরিবেশ পরিস্থিতি পাল্টে দেওয়া নয়।

যখন আমরা এসব কথা অনুধাবন করব এবং তদনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাব তখনই আমরা আল্লাহর সাহায্যের তাৎপর্য বুঝতে পারব এবং জানতে পারব কে বিজয়ী এবং কে পরাভূত। কিন্তু যখন এসব বুনিয়াদি মৌলিক কথা ও গতিপথ প্রচারকের সামনে অনুপস্থিত থেকে যাবে, তখন তার রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে। সে সঙ্গে তার ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাবে। এদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعاً -

‘আপনি বলুন, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে অবহিত করব? তারা ওরাই, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনেই বৃথা হয়ে গেছে, অথচ তাদের ধারণা যে, তারা ভাল কাজ করে যাচ্ছে’ (কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)।

যদিও আয়াত দু’টি কাফিরদের প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে তবুও এর অর্থ কিছু কিছু নির্দেশনাসূত্রে ঐ সকল প্রচারককেও শামিল করবে।

[1]. আত-তাহরীর ওয়াত-তানভীর ৩/২০৫ পৃঃ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন