hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী আন্দোলনে বিজয়ের স্বরূপ

লেখকঃ ডঃ নাছের বিন সোলায়মান আল-ওমর

১৩
জনপদবাসীদের ঘটনা
এই ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা সূরা ইয়াসীনে উল্লেখ করেছেন। যেমন,

وَاضْرِبْ لَهُمْ مَّثَلاً أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُوْنَ، إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوْهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوْا إِنَّا إِلَيْكُم مُّرْسَلُوْنَ، قَالُوا مَا أَنتُمْ إِلاَّ بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَمَا أَنزَلَ الرَّحْمَنُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلاَّ تَكْذِبُوْنَ، قَالُوْا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُوْنَ، وَمَا عَلَيْنَا إِلاَّ الْبَلاَغُ الْمُبِينُ، قَالُوْا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِنْ لَّمْ تَنتَهُوْا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُم مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيْمٌ -

‘আপনি তাদের সামনে একটি জনপদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরুন। যখন তাদের নিকট রাসূলগণ গিয়েছিলেন এবং যখন আমি তাদের মাঝে দু’জন রাসূলকে পাঠিয়েছিলাম, তখন তারা ঐ দু’জনকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করেছিল। ফলে তৃতীয়জন দ্বারা আমি তাদের বল বৃদ্ধি করেছিলাম। তাঁরা (তিনজনে) বলেছিলেন, আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি প্রেরিত রাসূল। তারা বলল, তোমরা আমাদের মত মানুষ বৈ নও; আর দয়াময় কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি। তোমরা কেবলই মিথ্যাচার করছ। তাঁরা বললেন, আমাদের প্রতিপালক জানেন যে, আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি প্রেরিত। আর সুস্পষ্ট প্রচার ব্যতীত আমাদের অন্য কোন দায়িত্ব নেই। তারা বলল, আমরা তোমাদেরকে অশুভ মনে করছি। যদি তোমরা বিরত না হও তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের গায়ে পাথর মারব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের জ্বালাময়ী শাস্তি দেওয়া হবে’ (ইয়াসীন ৩৬/১৩-১৮)।

একটি জনপদ-মুফাসসিরদের ভাষায় যার নাম ‘এন্টিয়ক’, সেখানে দু’জন রাসূল প্রেরিত হন। যখন জনপদবাসীরা এ দু’জনের কথায় ঈমান আনল না তখন তৃতীয় রাসূল প্রেরিত হ’লেন। কিন্তু তাতে তাদের কুফরীর কোন পরিবর্তন ঘটল না। বরং তাদের বাড়াবাড়ি ও ক্ষোভ আরও বেড়ে গেল। তারা রাসূলদেরকে পাথর নিক্ষেপ ও হত্যার হুমকি দিল।

এখানে এসেই কি ঘটনার শেষ? না, বরং তাদের নিকট চতুর্থ একজন এসেছিলেন। তিনি ছিলেন তাদেরই ক্বওমের লোক এবং তাদের শুভাকাঙ্খী। আল্লাহ বলেন,

وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِيْنَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوْا الْمُرْسَلِيْنَ -

‘শহরের দূরপ্রাপ্ত হ’তে এক ব্যক্তি দ্রুত এসে বলল, ‘হে আমার ক্বওম! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর’ (ইয়াসীন ৩৬/২০)।

তিনি স্বীয় ক্বওমের মাঝে দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে লাগলেন, কিন্তু এবারে তারা তাঁকে কোন ধমক দিল না; বরং তাদের বিরোধিতা করার জন্য একেবারে হত্যা করে বসল। যালিম স্বৈরারীদের অবস্থা যুগে যুগে এমনই হয়। তারা কারও বিরোধিতা সহ্য করতে পারে না। চাই সে তাদের স্বগোত্রীয় হোক কিংবা ভিন গোত্রীয় হোক।

এমনি করে একটি জনপদে তিন জন রাসূল ও একজন প্রচারক আবির্ভূত হয়েছিলেন। এতদসত্ত্বেও তারা তাঁদের আহবানে সাড়া দেয়নি। শুধু তাই নয়, তারা বরং রাসূলগণকে যাচ্ছে তাই হুমকি দিয়েছিল। কেউ কেউ বলেছেন, তারা তাঁদেরকে মেরে ফেলেছিল। চতুর্থ জনের হত্যার কথা তো কুরআনেই বলা হয়েছে।

পার্থিব মুল্যায়ন অনুসারে মনে হয়, এ সকল রাসূল বিজয় লাভ করেননি। তাঁদের মিশনে তাঁরা সফল হননি। চতুর্থ জন তো তার আবেগ ও ঈমান খুব দ্রুতই তাদের সামনে তুলে ধরেছিলেন এবং তার ফলও তিনি তাৎক্ষণিক ভোগ করেছিলেন। যারা জয়-পরাজয়ের তাৎপর্য বোঝে না তাদের দৃষ্টিতে ঘটনাপ্রবাহ এভাবেই মূল্যায়িত হয়। কিন্তু সত্যের যুক্তি ও নবুঅতের কার্যধারা ঘোষণা করছে, রাসূলগণ পরিষ্কার বিজয় অর্জন করেছিলেন এবং জনপদবাসীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নিম্নের বিষয়গুলোতে তাঁদের বিজয়বার্তা ফুটে উঠেছে।

(১) রাসূলগণ আল্লাহর রিসালাত প্রচারে সক্ষম হয়েছেন। জনপদবাসীরা প্রথম যখন তাদেরকে তাদেরই মত মানুষ হিসাবে তুলনা করেছিল তখন তারা তাদের নিকট নতি স্বীকার করেননি। দ্বিতীয়বার যখন তারা তাদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করতে থাকে তখনও তাঁরা কর্তব্যচ্যুত হননি। এই প্রচারই তো তাদের গুরু দায়িত্ব। আর যে ব্যক্তি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে সেই তো সফল। কুরআনের ভাষায় তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে وَمَا عَلَيْنَا إِلاَّ الْبَلاَغُ الْمُبِيْنُ ‘আমাদের দায়িত্ব কেবল স্পষ্ট প্রচার’ (ইয়াসীন ৩৬/১৭)।

(২) ঐ জনপদের এক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ ও প্রকাশ্যে রাসূলদের সহযোগিতা দান তাদের সকলের জন্য বিজয় হিসাবে গণ্য। এ জন্যই জনপদবাসীরা তাঁর প্রতি বেশী বর্বরতা দেখিয়েছে। কেননা তাঁর কারণে তারা অপমানিত হয়েছিল। তাদের অপমান বোধের মধ্যে ঐ রাসূলদের জন্য বিজয় রয়েছে।

(৩) উক্ত ইসলাম গ্রহণকারী প্রচারকের হত্যাকান্ডের মধ্যে তাঁর নিজের ও তাঁর কর্মপদ্ধতির বিজয় নিহিত রয়েছে। আল্লাহ বলেন, قُلْ هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَا إِلاَّ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ ‘আপনি বলুন, তোমরা আমাদের বেলায় দু’টি কল্যাণের যে কোন একটির প্রতিক্ষা বৈ অন্য কিছু করছ না’ (তওবা ৯/৫২)।

এ জন্যই তাঁর হত্যাকারীরা যখন বলেছিল, ‘জান্নাতে যা’ তখন তিনি তাঁর সাফল্য ও বিজয়কে স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরার মানসে বলেছিলেন,

يَا لَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُوْنَ، بِمَا غَفَرَ لِيْ رَبِّيْ وَجَعَلَنِيْ مِنَ الْمُكْرَمِيْن -

‘হায় আফসোস! আমার কওম যদি জানত কেন আমার রব আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং সম্মানিতজনদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন’ (ইয়াসীন ২৬, ২৭)।

(৪) তাঁদের বিজয় কার্যকরী করতে গৃহীত চূড়ান্ত ব্যবস্থা প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَى قَوْمِهِ مِن بَعْدِهِ مِنْ جُنْدٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنْزِلِيْنَ، إِنْ كَانَتْ إِلاَّ صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُوْنَ -

‘তাঁর (হত্যার) পর তাঁর জাতির নিকট আমি আকাশ থেকে কোন বাহিনী অবতীর্ণ করিনি এবং আমার তা করার দরকারও ছিল না। একটি মাত্র বিকট চীৎকার হয়েছিল। আর তাতেই তারা অধমুখী হয়ে পড়েছিল’ (ইয়াসীন ৩৬/২৮, ২৯)।

ইসলাম প্রচারকদের অবশ্যই জনপদবাসীদের ঘটনা পর্যালোচনা করা এবং তার চূড়ান্ত পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।

একটি জনপদে তিন তিনজন রাসূল ও একজন প্রচারক এসেছিলেন। তাঁদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও জনপদবাসীরা ঈমান আনেনি। ঈমান আনয়নে তাদের ব্যর্থতা রাসূলদের সহযোগিতা দান এবং প্রচারকদের হক কথা বলা ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। কোন তাড়াহুড়া, আপস মীমাংসা তথা ছাড় দেওয়া কিংবা হতাশা এসে তাঁদের ঘিরে ধরেনি; বরং ইমাম ত্বাবারীর মতে এই প্রচারক তাঁর কওমের হাতে নিহত হওয়ার সময় তাদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর দরবারে দো‘আ করেছিলেন এই বলে যে, اَللَّهُمَّ اهْدِ قَوْمِىْ فَإنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُوْنَ - ‘হে আল্লাহ, আমার কওমকে হেদায়াত করুন। কেননা তারা অজ্ঞ’। আমরা তাঁর উক্তি, ‘হায়! আমার জাতি যদি জানত’- থেকে বুঝতে পারি, তিনি একথা আত্মতুষ্টি কিংবা নিজের কওমকে ক্ষুব্ধ করার মানসে বলেননি, তাদের হেদায়াতের জন্যই বরং বলেছিলেন। কেননা ইতিপূর্বে তারা বলেছিল, ‘দয়াময় আল্লাহ কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি, তোমরা শুধুই মিথ্যা বলছ’- তারপরও যখন তারা জানতে পারল যে, তাদের গোত্রীয় এই লোকটি হকের উপর বিদ্যমান, তখন তিনি যে তাদের হেদায়াত লাভে বড় আশাবাদী হয়ে এ কথা বলেছিলেন তা বলাই বাহুল্য।

এভাবেই একজন দ্বীন প্রচারক মানবদরদী হয়ে থাকেন, কোন বিদ্বেষ ও হিংসার কালিমা তাকে স্পর্শ করে না। এ হচ্ছে মনের উপর বিজয়, যা বাহ্যিক বিজয় থেকে অগ্রণী। আর যে ব্যক্তি নিজের মনের উপর বিজয় লাভে ব্যর্থ সে কখনই অন্যের উপর বিজয় লাভ করতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন