মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এক: কালেমা তাইয়্যেবার অর্থ জানা। অর্থাৎ এ কালেমার দুটো অংশ রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে জানা। সে দুটো অংশ হলো:
১. কোনো হক মা‘বুদ নেই
২. আল্লাহ ছাড়া (অর্থাৎ তিনিই শুধু মা‘বুদ)
দুই: কালেমা তাইয়্যেবার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। অর্থাৎ সর্ব-প্রকার সন্দেহ ও সংশয়মুক্ত পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকা।
তিন: কালেমার ওপর এমন একাগ্রতা ও নিষ্ঠা রাখা, যা সর্বপ্রকার শিরকের পরিপন্থী।
চার: কালেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা, যাতে কোনো প্রকার মিথ্যা বা কপটতা না থাকে।
পাঁচ: এ কালেমার প্রতি ভালোবাসা পোষণ এবং কালেমার অর্থকে মনে প্রাণে মেনে নেওয়া ও তাতে খুশী হওয়া।
ছয়: এই কালেমার অর্পিত দায়িত্বসমূহ মেনে নেওয়া অর্থাৎ এই কালেমা কর্তৃক আরোপিত ওয়াজিব কাজসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই সন্তুষ্টির নিমিত্তে সমাধা করা।
সাত : মনে-প্রাণে এই কালেমাকে গ্রহণ করা যাতে কখনো বিরোধিতা করা না হয়।
কালেমা তাইয়েবার যে সমস্ত শর্ত বর্ণিত হলো, তার সমর্থনে কুরআন ও হাদীস থেকে দলীল প্রমাণাদি:
“তবে যারা হক (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু)-এর সাক্ষ্য দিবে এমনভাবে যে, তারা তা জেনে শুনেই দিচ্ছে অর্থাৎ তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৬]
এখানে জেনে শুনে সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থ হলো তারা মুখে যা উচ্চারণ করছে তাদের অন্তর তা সম্যকভাবে জানে।
“নিশ্চয় মুমিন ওরাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে, অতঃপর এতে কোনো সন্দেহ-সংশয়ে পড়ে নি এবং তাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। তারাই তো সত্যবাদী।” [সুরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১৫]
এ আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান যথাযথভাবে হওয়ার জন্য সন্দেহ-সংশয়মুক্ত হওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা সন্দেহ করে নি। কিন্তু যে সন্দেহ করবে সে মুনাফিক, ভণ্ড (কপট বিশ্বাসী)।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সঠিক মা‘বুদ বা উপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহর রাসূল। যে বান্দা এ দুটো বিষয়ে সন্দেহ-সংশয়মুক্ত অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাতে হাযির হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” [সহীহ মুসলিম: (১/৫৬), হাদীস নং ২৭০।]
আর এক বর্ণনায় এসেছে:
«لا يلقى الله بهما عبد غير شاك فيهما فيحجب عن الجنة» .
“কোনো ব্যক্তি এ দু’টি নিয়ে সন্দেহহীন অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাতে হাযির হবে জান্নাতে যাওয়ার পথে তার কোনো বাধা থাকবে না।” [সহীহ মুসলিম (১/৫৬), হাদীস নং ২৭০।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অপর এক হাদীসের বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছিলেন:
«من لقيت من وراء هذا الحائط يشهد أن لا إله إلا الله مستيقنًا بها قلبه فبشره بالجنة» .
“তুমি এ বাগানের পিছনে এমন যাকেই পাও, যে মনের পরিপূর্ণ বিশ্বাস এর সাথে এ-সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সঠিক মা‘বুদ নেই- তাকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করবে।” [সহীহ মুসলিম (১/৫৯)।]
তৃতীয় শর্ত: এ কালেমাকে ইখলাস বা নিষ্ঠা সহকারে স্বীকার করা। এর দলীল:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُ﴾ [ الزمر : ٣ ]
“তবে জেনে রাখ দীন খালেস সহকারে বা নিষ্ঠা সহকারে কেবল আল্লাহর জন্যই।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৩]
“তাদেরকে এ নির্দেশই শুধু প্রদান করা হয়েছে যে, তারা নিজেদের দীনকে আল্লাহর জন্যই খালেস করে সম্পূর্ণরূপে একনিষ্ঠ ও একমুখী হয়ে তাঁরই ইবাদাত করবে।” [সূরা আল-বাইয়্যেনাহ, আয়াত: ৫]
হাদীসে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أسعد الناس بشفاعتي من قال لا إله إلا الله خالصًا من قلبه أو نفسه» .
“আমার সুপারিশ দ্বারা ঐ ব্যক্তিই বেশি সৌভাগ্যবান হবে যে অন্তর থেকে একনিষ্ঠভাবে বলেছে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার উপাস্য নেই।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৯।]
অপর এক সহীহ হাদীসে সাহাবী উতবান ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إن الله حرم على النار من قال : لا إله إلا الله يبتغي بذلك وجه الله عز وجل» .
“যে ব্যক্তি কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে لا إله إلا الله বা আল্লাহ ছাড়া হক কোনো মা‘বুদ নেই বলেছে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করেছেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪২৫; সহীহ মুসলিম (১/৪৫৬), হাদীস নং ২৬৩।]
ইমাম নাসাঈ রহ. তার বিখ্যাত “দিন-রাত্রির যিকির” নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«من قال لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد، وهو على كل شيء قدير مخلصًا بها قلبه، يصدق بها لسانه، إلا فتق الله لها السماء فتقًا حتى ينظر إلى قائلها من أهل الأرض، وحق لعبد نظر الله إليه أن يعطيه سؤاله» .
“যে ব্যক্তি মনের নিষ্ঠা সহকারে এবং মুখে সত্য জেনে নিম্নোক্ত কলেমাসমূাহ বলবে আল্লাহ সেগুলোর জন্য আকাশকে বিদীর্ণ করবেন যাতে তার দ্বারা জমিনের মাঝে কে এই কালেমাগুলো বলেছে তার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। আর যার দিকে আল্লাহর নজর পড়বে তার প্রার্থিত ও কাঙ্ক্ষিত বস্তু তাকে দেওয়া আল্লাহর দায়িত্ব। সে কালেমাগুলো হলো:
لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير
“শুধুমাত্র আল্লাহ ছাড়া হক কোনো মা‘বুদ নেই, তার কোনো শরীক বা অংশীদার নেই, তার জন্যই সমস্ত রাজত্ব বা একচ্ছত্র মালিকানা, তার জন্যই সমস্ত প্রশংসা আর তিনি প্রত্যেক বস্তুর ওপর ক্ষমতাবান”। [নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমে ওয়াল্লাইলা, হাদীস নং ২৮।]
চতুর্থ শর্ত: কলেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা। এর দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আলিফ-লাম-মীম, মানুষ কি ধারণা করেছে যে, ঈমান এনেছি বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি যাতে আল্লাহর সাথে যারা সত্য বলেছে তাদেরকে স্পষ্ট করে দেন এবং যারা মিথ্যা বলেছে তাদেরকেও স্পষ্ট করে দেন।” [সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ১-৩]
“মানুষের মাঝে কেউ কেউ বলে আমরা আল্লাহ এবং পরকালের ওপর ঈমান এনেছি, অথচ তারা ইমানদার নয়। তারা (তাদের ধারণামতে) আল্লাহ ও ইমানদারদের সাথে প্রতারণা করছে, অথচ (তারা জানে না) তারা কেবল তাদের আত্মাকেই প্রতারিত করছে কিন্তু তারা তা বুঝতেই পারছে না। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি, ফলে আল্লাহ সে ব্যাধিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৮-১০]
তেমনিভাবে হাদীসে মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما من أحد يشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدًا عبده ورسوله صدقًا من قلبه إلا حرمه الله على النار» .
“যেকোনো লোক মন থেকে সত্য জেনে এ-সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ব্যতীত হক কোনো মা‘বুদ নেই আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করেছেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৮; সহীহ মুসলিম: (১/৬১)।]
পঞ্চম শর্ত : এ কালেমাকে মনে প্রাণে ভালোবাসা। এর দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“কোনো কোনো লোক আল্লাহ ছাড়া তার অনেক সমকক্ষ ও অংশীদার গ্রহণ করে তাদেরকে আল্লাহর মত ভালোবাসে, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে অত্যন্ত বেশি ভালোবাসে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৬৫]
“হে ইমানদারগণ তোমাদের থেকে যদি কেহ তার দীনকে পরিত্যাগ করে তবে আল্লাহ এমন এক গোষ্ঠীকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করে আনবেন, যাদেরকে আল্লাহ ভালোবাসেন এবং তারাও আল্লাহকে ভালোবাসেন, যারা মুমিনদের প্রতি নরম- দয়াপরবশ, কাফিরদের ওপর কঠোরতা অবলম্বনকারী; তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে, কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করে না।” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫৪]
তেমনিভাবে হাদীস শরীফে আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«ثلاث من كن فيه وجد حلاوة الإيمان : أن يكون الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، وأن يحب المرء لا يحبه إلا لله، وأن يكره أن يعود في الكفر بعد إذ أنقذه الله منه كما يكره أن يقذف في النار» .
“যার মধ্যে তিনটি বস্তুর সমাহার ঘটেছে সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে: (এক) তার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মহব্বত বা ভালোবাসা অন্য সব-কিছু থেকে বেশি হবে। (দুই) কোনো লোককে শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসবে। (তিন) কুফুরী থেকে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেওয়ার পর সে কুফুরীর দিকে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করবে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৩; সহীহ মুসলিম: (১/৬৬)।]
ষষ্ঠ শর্ত: কালেমার হকসমূহ মনে প্রাণে মেনে নেওয়া। এর দলীল: আল্লাহর বাণী:
“আর তারচেয়ে কার দীন বেশি সুন্দর যে আল্লাহর জন্য নিজেকে সমর্পণ করেছে, এমতাবস্থায় যে, সে মুহসিন”, [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৫] মুহসিন অর্থ: নেককার, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুযায়ী আমল করেছে।
“আর যে নিজেকে শুধুমাত্র আল্লাহর দিকেই নিবদ্ধ করে আত্মসমর্পণ করেছে আর সে মুহসিন” অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুযায়ী আমল করেছে, “সে মজবুত রশিকে আঁকড়ে ধরেছে”। [সূরা লুকমান, আয়াত: ২২] অর্থাৎ: لا إله إلا الله বা আল্লাহ ছাড়া কোনো হক মা‘বুদ নেই এ কালেমাকেই সে গ্রহণ করেছে।
“তারা যা বলছে তা নয়, তোমার প্রভুর শপথ করে বলছি, তারা কখনো ইমানদার হবে না যতক্ষণ আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ার নিষ্পত্তিকারক (বিচারক) হিসাবে না মানবে, অতঃপর আপনার বিচার-ফয়সালা গ্রহণ করে নিতে তাদের অন্তরে কোনো প্রকার অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তা সম্পূর্ণ কায়মনোবাক্যে নির্দ্বিধায় মেনে নিবে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫]
অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يؤمن أحدكم حتى يكون هواه تبعًا لما جئت به»
“তোমাদের মাঝে কেউই ঐ পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ তার প্রবৃত্তি আমি যা নিয়ে এসেছি তার অনুসারী হবে।” [হাদীসটি খতীব বাগদাদী তার তারিখে বাগদাদের ৪/৩৬৯ এবং বাগাভী তার শারহুস্সুন্নাহ-এর ১০৪ নং -এ বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির সনদ শুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মতভেদ আছে।] আর এটাই পূর্ণ আনুগত্য ও তার শেষ সীমা।
সপ্তম শর্ত: কালেমাকে গ্রহণ করা। এর দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর এমনিভাবে যখনই আপনার পূর্বে আমি কোনো জনপদে ভয় প্রদর্শনকারী (রাসূল বা নবী) প্রেরণ করেছি তখনি তাদের মধ্যকার আয়েশি বিত্তশালী লোকেরা বলেছে: আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি ব্যবস্থায় পেয়েছি, আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করবো। (ভয় প্রদর্শনকারী) বলল: আমি যদি তোমাদের কাছে বাপ-দাদাদেরকে যার ওপর পেয়েছ তার থেকে অধিক সঠিক বা বেশি হিদায়াত নিয়ে এসে থাকি তারপরও (তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার অনুকরণ করবে)? তারা বলল: তোমরা যা নিয়ে এসেছ আমরা তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি, ফলে আমি (আল্লাহ) তাদের থেকে (এ কুফুরীর) প্রতিশোধ নেই, সুতরাং আপনি মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণাম-ফল কেমন হয়েছে দেখে নিন।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ২৩-২৫]
“নিশ্চয় তারা অযথা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত যখন তাদেরকে বলা হত যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো হক মা‘বুদ নেই এবং বলতো: আমরা কি পাগল কবির কথা শুনে আমাদের উপাস্য দেবতাগুলোকে ত্যাগ করবো?” [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ৩৫-৩৭]
অনুরূপভাবে হাদীসে শরীফে আবু মুসা আশ‘আরি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مثل ما بعثني الله به من الهدى والعلم كمثل الغيث الكثير أصاب أرضًا، فكان منها نقية قبلت الماء فأنبتت الكلأ والعشب الكثير، وكانت منها أجادب أمسكت الماء فنفع الله بها الناس فشربوا وسقوا وزرعوا، وأصاب منها طائفة أخرى إنما هي قيعان لا تمسك ماء ولا تنبت كلأ، فذلك مثل من فقه في دين الله ونفعه ما بعثني الله به فعلم وعلم ومثل من لم يرفع بذلك رأسًا ولم يقبل هدى الله الذي أرسلت به» .
“আল্লাহ আমাকে যে জ্ঞান বিজ্ঞান ও হিদায়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন তার উদাহরণ হচ্ছে এমন মুষলধারার বৃষ্টির মতো যা ভূমিতে এসে পড়েছে, ফলে এর কিছু অংশ এমন উর্বর পরিষ্কার ভূমিতে পড়েছে যে ভূমি পানি চুষে নিতে সক্ষম, ফলে তা পানি গ্রহণ করেছে এবং তা দ্বারা ফসল ও তৃণলতার উৎপত্তি হয়েছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছে গর্তওয়ালা ভূমিতে (যা পানি আটকে রাখতে সক্ষম) সুতরাং তা পানি সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে, ফলে আল্লাহ এর দ্বারা মানুষের উপকার করেছেন তারা তা পান করেছে, ভূমি সিক্ত করিয়েছে এবং ফসলাদি উৎপন্ন করতে পেরেছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছে এমন অনুর্বর সমতল ভূমিতে যাতে পানি আটকে থাকে না, ফলে তাতে পানি আটকা পড়ে নি, ফসলও হয় নি। ঠিক এটাই হলো ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যে আল্লাহর দীনকে বুঝতে পেরেছে এবং আমাকে যা দিয়ে পাঠিয়েছেন তা থেকে উপকৃত হতে পেরেছে, ফলে সে নিজে জেনেছে এবং অপরকে জানিয়েছে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ভূমি) এবং ঐ ব্যক্তির উদাহরণ যে এই হিদায়াত এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের দিকে মাথা উঁচু করে তাকায় নি, ফলে আল্লাহ যে হিদায়েত নিয়ে আমাকে প্রেরণ করেছেন তা গ্রহণ করেনি। (তৃতীয় শ্রেণির ভূমি)।” [সহীহ বুখারী (১/১৭৫) হাদীস নং ৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৮২।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/48/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।