HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
ইসলামী নীতিমালার আলোকে বরকত অর্জন
লেখকঃ সালেহ ইবন আবদুল আযীয ইবন মুহাম্মাদ আলে শাইখ
৪
নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে বরকত অর্জননবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিসত্তার দিক দিয়ে বরকতময় ছিলেন, গুণাবলীর দিক দিয়ে বরকতময় ছিলেন, কাজকর্মেও বরকতময় ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিসত্তায়, গুণাবলীতে ও কাজকর্মে এ বরকত নিশ্চিতরূপে বিরাজমান ছিল।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতিপয় সাহাবী থেকে এ বিষয়টি সাব্যস্ত হয়েছে যে, তারা তাঁর শরীর হতে বিচ্ছিন্ন বস্তু যেমন, চুল, অযুর পানি, ঘাম ইত্যাদি দ্বারা বরকত অর্জন করতেন। এ বিষয়ে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এবং হাদীসের অন্যান্য গ্রন্থে অনেক বিশুদ্ধ হাদীস এসেছে।
আল্লাহ স্বীয় রাসূলগণকে যত প্রকার বরকত দান করেছেন তম্মধ্যে সর্বোচ্চ বরকত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য নির্ধারিত। তাঁর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বরকত অন্যদের মাঝে সঞ্চারিত হতে পারে এবং তদ্বারা বরকত অর্জন করা জায়েয, যেমন, একদল সাহাবী করেছিলেন।
আর যে সব স্থানের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল, যেমন, যে স্থানে তিনি চলাফেরা করেছেন কিংবা যেখানে তিনি সালাত আদায় করেছেন অথবা যে ভূমিতে তিনি অবতরণ করেছেন, শরী‘আতে এমন কোনো দলীল পাওয়া যায় নি যাতে এমন ইশারা ও ইঙ্গিত রয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরের বরকত উক্ত স্থানে সঞ্চারিত হয়ে তা বরকতময় হয়েছে এবং তদ্বারা বরকত অর্জন বৈধ। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় ও তার মৃত্যুর পর তার সাহাবীগণ এ কাজ কখনো করেন নি।
অতএব, যে পথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলাফেরা করেছেন অথবা যেখানে তিনি অবতরণ করেছেন তা দ্বারা বরকত অর্জন জায়েয হবে না। কেননা এ কাজ ঐ স্থানসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, যে স্থানসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বৈধতা শরী‘আত আমাদের জন্য প্রণয়ন করে নি। অধিকন্তু তা শির্কে লিপ্ত হওয়ার একটি মাধ্যমেও পরিণত হবে। আর যে জাতিই তাদের নবীদের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহের অনুসরণে লিপ্ত ছিল তারাই বিভ্রান্ত ও ধ্বংস হয়ে গেছে।
মা‘রুর ইবন সুয়াইদ আল-আসাদী বলেন: আমীরুল মমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাবের সাথে মক্কা থেকে আমরা মদীনার দিকে রওয়ানা হলাম। অতঃপর ভোর হলে তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এরপর তিনি দেখলেন, লোকজন একটি স্থানে গমন করছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: এরা কোথায় যাচ্ছে?
তাকে বলা হলো: হে আমীরুল মুমিনীন! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মসজিদে সালাত আদায় করেছিলেন। তারা সে মসজিদে এসে সালাত পড়ে।
তিনি বললেন: “তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা এ ধরনের কাজের ফলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তারা তাদের নবীদের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহের অনুসরণে লিপ্ত ছিল এবং এগুলোকে তারা উপাসনালয় ও ইবাদাতের স্থানে পরিণত করেছিল। এ সকল মসজিদে কেউ নামাযের সময় উপস্থিত হলে যেন সালাত আদায় করে নেয়। অন্যথায় সে যেন উক্ত স্থানসমূহে গমনের ইচ্ছা না করে চলে যায়”। সাঈদ ইবন মানসূর তার সুনান গ্রন্থে, ইবনু আবি শায়বা মুসান্নাফ গ্রন্থে (২/৩৭৬) এবং আন্দালুস (তথা প্রাচীন স্পেন) এর মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইবন ওয়াদ্দ্যাহ আল-কুরতবী ‘বিদ‘আতসমূহ ও তা হতে নিষেধকরণ’ নামক গ্রন্থে (পৃ. ৪১) ঘটনাটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেন।
এ হচ্ছে সেই খলীফায়ে রাশেদের উক্তি যার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ উমারের হৃদয়ে ও জিহ্বায় (তথা বাকযন্ত্রে) হক প্রতিভাত করেছেন”। ইমাম আহমাদ (২/৯৫) বিশুদ্ধ সনদে ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন। তিনি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য সনদেও (২/৫৩) হাদীসটি বর্ণনা করেন। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমাদ (৫/১৪৫), আবু দাউদ (২৯৬২ নং হাদীস) এবং আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমাদ (২/৪০১) হাদীসটি বর্ণনা করেন। এছাড়াও আরও অনেকে এ হাদীসটি এ সকল সাহাবী ও অন্যান্য সাহাবীদের থেকেও বর্ণনা করেন।
সন্দেহ নেই, স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহ অনুসরণের ব্যাপারে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপরোক্ত বাণী সে হকেরই অন্তর্গত যা আল্লাহ তার জিহ্বায় প্রতিভাত করেছেন। আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন।
ইবন ওয়াদ্দ্যাহ রাহেমাহুল্লাহ বলেন (পৃ. ৪৩), “মালিক ইবন আনাস ও মদীনার অন্যান্য আলিমগণ ক্বোবা ও অহুদ ছাড়া এ সকল মসজিদসমূহে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত এ চিহ্নসমূহে আগমন করা অপছন্দ করতেন”।
ইবন ওয়াদ্দ্যাহ বলেন: “আয়িম্মায়ে হুদা তথা হিদায়াতের ইমামরূপে যারা পরিচিত, তোমাদের ওপর ওয়াজিব তাদের অনুসরণ করা। পূর্ববর্তীদের কেউ কেউ বলেন, এমন অনেক ব্যাপার রয়েছে যা আজ বহু লোকের কাছে সৎকর্ম-রূপে প্রতীয়মান, পূর্ববর্তীদের কাছে তা ছিল অন্যায়, প্রিয় হবার জন্য করা হচ্ছে অথচ তা তার ওপর ঘৃণার উদ্রেককারী, নৈকট্য লাভের জন্য করা হচ্ছে অথচ তা তাকে দূরে নিক্ষেপ করে। আর প্রত্যেক বেদআতের ওপরই লেপটে আছে সৌন্দর্য ও আনন্দ”। লক্ষ্য করুন ইবন ওয়াদ্দ্যাহের এ সুদৃঢ় উক্তির প্রতি। তার মৃত্যু হয়েছিলো হিজরী ২৮৬ সালে।
এ কথার উদ্দেশ্য হলো সালাফ তথা পূর্ববর্তী ইমামগণ স্মৃতিবিজড়িত প্রাচীন স্থানসমূহ দ্বারা বরকত অর্জনকে অস্বীকার করতেন। তারা এগুলো নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা এবং বরকত লাভের আশায় এগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা সমর্থন করতেন না।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ছাড়া আর কেউ এ ব্যাপারে খেলাফ করেন নাই। তিনি সে সকল স্থানসমূহের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত ছিলেন যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত পড়েছেন। অতঃপর তিনি সে সকল স্থানে সালাত পড়েন যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছিলেন। অনুরূপ অন্যান্য ক্ষেত্রেও তিনি এ রকম আমল করেছিলেন।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ছাড়া অন্য কোনো সাহাবী থেকে এটা বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত হয়নি যে, তাদের কেউ স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহে ইবন উমারের মতই আমল করেছেন।
আর ইবন উমার স্থানের বরকত তালাশ করেন নি। তিনি চেয়েছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় যত আমল করেছেন, প্রত্যেকটি আমলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে। এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল স্থানে সালাত পড়েছেন, তিনি তার সব কয়টি স্থানে সালাত পড়তে চেয়েছেন। তিনি সে সবের সন্ধান করতেন এবং জানতেন। প্রতীয়মান হয় যে, স্থানের মাধ্যমে বরকত লাভের উদ্দেশ্যে তার এ আমল ছিল না, যে রকম পরবর্তীরা মনে করেছেন, বরং পূর্ণ অনুসরণই উদ্দেশ্য ছিল। তিনি ভিন্ন মুহাম্মাদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আর কোনো সাহাবী সে আমল করেন নি এবং তাতে সায়ও দেন নি, বরং তার পিতা স্মৃতি বিজড়িত সে সব স্থান অনুসন্ধান করতে লোকদেরকে নিষেধ করেছেন। মতভেদের সময় তার কথা তার ছেলের মতের ওপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রাধান্য পাবে। আর সাহাবীগণ কর্তৃক ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমার আমল ত্যাগ করার ওপর তাদের মতৈক্যের মোকাবেলায় এ মতভেদ ধোপে টিকে না। সন্দেহ নেই, এ ব্যাপারে হক ও সঠিক কথা ছিল উমার ও অন্য সকল সাহাবীদের। আর এটাই হচ্ছে অনুসরণের উপযোগী এবং মতভেদের সময় সর্বশেষ সিদ্ধান্ত। আল্লাহই অধিক পরিজ্ঞাত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতিপয় সাহাবী থেকে এ বিষয়টি সাব্যস্ত হয়েছে যে, তারা তাঁর শরীর হতে বিচ্ছিন্ন বস্তু যেমন, চুল, অযুর পানি, ঘাম ইত্যাদি দ্বারা বরকত অর্জন করতেন। এ বিষয়ে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এবং হাদীসের অন্যান্য গ্রন্থে অনেক বিশুদ্ধ হাদীস এসেছে।
আল্লাহ স্বীয় রাসূলগণকে যত প্রকার বরকত দান করেছেন তম্মধ্যে সর্বোচ্চ বরকত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য নির্ধারিত। তাঁর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বরকত অন্যদের মাঝে সঞ্চারিত হতে পারে এবং তদ্বারা বরকত অর্জন করা জায়েয, যেমন, একদল সাহাবী করেছিলেন।
আর যে সব স্থানের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল, যেমন, যে স্থানে তিনি চলাফেরা করেছেন কিংবা যেখানে তিনি সালাত আদায় করেছেন অথবা যে ভূমিতে তিনি অবতরণ করেছেন, শরী‘আতে এমন কোনো দলীল পাওয়া যায় নি যাতে এমন ইশারা ও ইঙ্গিত রয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরের বরকত উক্ত স্থানে সঞ্চারিত হয়ে তা বরকতময় হয়েছে এবং তদ্বারা বরকত অর্জন বৈধ। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় ও তার মৃত্যুর পর তার সাহাবীগণ এ কাজ কখনো করেন নি।
অতএব, যে পথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলাফেরা করেছেন অথবা যেখানে তিনি অবতরণ করেছেন তা দ্বারা বরকত অর্জন জায়েয হবে না। কেননা এ কাজ ঐ স্থানসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, যে স্থানসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বৈধতা শরী‘আত আমাদের জন্য প্রণয়ন করে নি। অধিকন্তু তা শির্কে লিপ্ত হওয়ার একটি মাধ্যমেও পরিণত হবে। আর যে জাতিই তাদের নবীদের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহের অনুসরণে লিপ্ত ছিল তারাই বিভ্রান্ত ও ধ্বংস হয়ে গেছে।
মা‘রুর ইবন সুয়াইদ আল-আসাদী বলেন: আমীরুল মমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাবের সাথে মক্কা থেকে আমরা মদীনার দিকে রওয়ানা হলাম। অতঃপর ভোর হলে তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এরপর তিনি দেখলেন, লোকজন একটি স্থানে গমন করছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: এরা কোথায় যাচ্ছে?
তাকে বলা হলো: হে আমীরুল মুমিনীন! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মসজিদে সালাত আদায় করেছিলেন। তারা সে মসজিদে এসে সালাত পড়ে।
তিনি বললেন: “তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা এ ধরনের কাজের ফলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তারা তাদের নবীদের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহের অনুসরণে লিপ্ত ছিল এবং এগুলোকে তারা উপাসনালয় ও ইবাদাতের স্থানে পরিণত করেছিল। এ সকল মসজিদে কেউ নামাযের সময় উপস্থিত হলে যেন সালাত আদায় করে নেয়। অন্যথায় সে যেন উক্ত স্থানসমূহে গমনের ইচ্ছা না করে চলে যায়”। সাঈদ ইবন মানসূর তার সুনান গ্রন্থে, ইবনু আবি শায়বা মুসান্নাফ গ্রন্থে (২/৩৭৬) এবং আন্দালুস (তথা প্রাচীন স্পেন) এর মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইবন ওয়াদ্দ্যাহ আল-কুরতবী ‘বিদ‘আতসমূহ ও তা হতে নিষেধকরণ’ নামক গ্রন্থে (পৃ. ৪১) ঘটনাটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেন।
এ হচ্ছে সেই খলীফায়ে রাশেদের উক্তি যার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ উমারের হৃদয়ে ও জিহ্বায় (তথা বাকযন্ত্রে) হক প্রতিভাত করেছেন”। ইমাম আহমাদ (২/৯৫) বিশুদ্ধ সনদে ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন। তিনি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য সনদেও (২/৫৩) হাদীসটি বর্ণনা করেন। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমাদ (৫/১৪৫), আবু দাউদ (২৯৬২ নং হাদীস) এবং আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমাদ (২/৪০১) হাদীসটি বর্ণনা করেন। এছাড়াও আরও অনেকে এ হাদীসটি এ সকল সাহাবী ও অন্যান্য সাহাবীদের থেকেও বর্ণনা করেন।
সন্দেহ নেই, স্মৃতিবিজড়িত চিহ্নসমূহ অনুসরণের ব্যাপারে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপরোক্ত বাণী সে হকেরই অন্তর্গত যা আল্লাহ তার জিহ্বায় প্রতিভাত করেছেন। আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন।
ইবন ওয়াদ্দ্যাহ রাহেমাহুল্লাহ বলেন (পৃ. ৪৩), “মালিক ইবন আনাস ও মদীনার অন্যান্য আলিমগণ ক্বোবা ও অহুদ ছাড়া এ সকল মসজিদসমূহে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত এ চিহ্নসমূহে আগমন করা অপছন্দ করতেন”।
ইবন ওয়াদ্দ্যাহ বলেন: “আয়িম্মায়ে হুদা তথা হিদায়াতের ইমামরূপে যারা পরিচিত, তোমাদের ওপর ওয়াজিব তাদের অনুসরণ করা। পূর্ববর্তীদের কেউ কেউ বলেন, এমন অনেক ব্যাপার রয়েছে যা আজ বহু লোকের কাছে সৎকর্ম-রূপে প্রতীয়মান, পূর্ববর্তীদের কাছে তা ছিল অন্যায়, প্রিয় হবার জন্য করা হচ্ছে অথচ তা তার ওপর ঘৃণার উদ্রেককারী, নৈকট্য লাভের জন্য করা হচ্ছে অথচ তা তাকে দূরে নিক্ষেপ করে। আর প্রত্যেক বেদআতের ওপরই লেপটে আছে সৌন্দর্য ও আনন্দ”। লক্ষ্য করুন ইবন ওয়াদ্দ্যাহের এ সুদৃঢ় উক্তির প্রতি। তার মৃত্যু হয়েছিলো হিজরী ২৮৬ সালে।
এ কথার উদ্দেশ্য হলো সালাফ তথা পূর্ববর্তী ইমামগণ স্মৃতিবিজড়িত প্রাচীন স্থানসমূহ দ্বারা বরকত অর্জনকে অস্বীকার করতেন। তারা এগুলো নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা এবং বরকত লাভের আশায় এগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা সমর্থন করতেন না।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ছাড়া আর কেউ এ ব্যাপারে খেলাফ করেন নাই। তিনি সে সকল স্থানসমূহের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত ছিলেন যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত পড়েছেন। অতঃপর তিনি সে সকল স্থানে সালাত পড়েন যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছিলেন। অনুরূপ অন্যান্য ক্ষেত্রেও তিনি এ রকম আমল করেছিলেন।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ছাড়া অন্য কোনো সাহাবী থেকে এটা বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত হয়নি যে, তাদের কেউ স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহে ইবন উমারের মতই আমল করেছেন।
আর ইবন উমার স্থানের বরকত তালাশ করেন নি। তিনি চেয়েছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় যত আমল করেছেন, প্রত্যেকটি আমলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে। এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল স্থানে সালাত পড়েছেন, তিনি তার সব কয়টি স্থানে সালাত পড়তে চেয়েছেন। তিনি সে সবের সন্ধান করতেন এবং জানতেন। প্রতীয়মান হয় যে, স্থানের মাধ্যমে বরকত লাভের উদ্দেশ্যে তার এ আমল ছিল না, যে রকম পরবর্তীরা মনে করেছেন, বরং পূর্ণ অনুসরণই উদ্দেশ্য ছিল। তিনি ভিন্ন মুহাম্মাদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আর কোনো সাহাবী সে আমল করেন নি এবং তাতে সায়ও দেন নি, বরং তার পিতা স্মৃতি বিজড়িত সে সব স্থান অনুসন্ধান করতে লোকদেরকে নিষেধ করেছেন। মতভেদের সময় তার কথা তার ছেলের মতের ওপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রাধান্য পাবে। আর সাহাবীগণ কর্তৃক ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমার আমল ত্যাগ করার ওপর তাদের মতৈক্যের মোকাবেলায় এ মতভেদ ধোপে টিকে না। সন্দেহ নেই, এ ব্যাপারে হক ও সঠিক কথা ছিল উমার ও অন্য সকল সাহাবীদের। আর এটাই হচ্ছে অনুসরণের উপযোগী এবং মতভেদের সময় সর্বশেষ সিদ্ধান্ত। আল্লাহই অধিক পরিজ্ঞাত।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন