HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী নীতিমালার আলোকে বরকত অর্জন

লেখকঃ সালেহ ইবন আবদুল আযীয ইবন মুহাম্মাদ আলে শাইখ

পরিচ্ছেদ
‘আল-মাফাহীম’ নামক গ্রন্থের লেখক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যক্তিসত্তা কিংবা কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা বরকত অর্জনের ব্যাপারে হাদীস ও আছার বর্ণনা করার পর ১৫৬ পৃষ্ঠায় বলেন, “এ আছার ও হাদীসগুলোর মোদ্দাকথা হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে, তার চিহ্নসমূহের মাধ্যমে ও তার সাথে সম্পর্কিত সকল কিছুর মাধ্যমে বরকত অর্জন সুন্নাতে মারফুআ‘ এবং শরী‘আতসম্মত প্রশংসিত পন্থা”।

আমি বলি, এ কথার মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে। নিরীক্ষণ না করা এবং হাদীসের উক্তিসমূহ নিয়ে চিন্তা গবেষণা না করাই এর কারণ। কেননা ‘আল মাফাহীম’ গ্রন্থকার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যক্তিসত্তা কিংবা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন অংশ দ্বারা বরকত অর্জন এবং যে সকল স্থানে তিনি সালাত পড়েছেন কিংবা বসেছেন সে সব স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহ দ্বারা বরকত অর্জনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নিরূপণ করেন নি।

বরকত অর্জনের প্রথম বিষয়টি (যেমন, ইতোপূর্বে বর্ণিত হয়েছে) নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপস্থিতিতেই করা হয়েছে এবং তিনি তা অনুমোদনও করেছেন। অতএব, তা সুন্নাত ও শরী‘আতসম্মত।

কিন্তু দ্বিতীয় বিষয়টি তথা স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহ দ্বারা বরকত অর্জন শরী‘আতসম্মত নয়। এজন্যই ‘আল মাফাহীম’ গ্রন্থকার এমন কোনো দলীল নিয়ে আসতে পারেননি যদ্বারা “মারফু‘ সুন্নাত” বলে তিনি যে দাবী তুলেছেন তার সত্যতা প্রতিপন্ন হয়। এ বক্তব্য মূলতঃ পৃথক বস্তুসমূহের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ না করা এবং মুহাক্কিক উলামাদের পথ পরিত্যাগ করারই শামিল।

স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ দ্বারা বরকত অর্জন যে শরী‘আতসম্মত নয়, বরং তা নব-আবিস্কৃত আমল, সে ব্যাপারে প্রমাণ বহনকারী বিষয়ের মধ্যে রয়েছে:

প্রথমত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে বরকত অর্জনের এ প্রকারটি ছিল না। এ বিষয়ে বিশুদ্ধ, উত্তম ও দুর্বল কোনো সনদেই সঠিকভাবে কোনো কিছুই বর্ণিত হয়নি। কেননা এমন কোনো বর্ণনা নেই যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে তাঁর চিহ্ন সম্বলিত কোনো স্থানের মাধ্যমে কেউ বরকত অর্জন করেছেন। অতএব, এ ধরনের বর্ণনার কার্যকারণ যথেষ্ট পরিমাণে থাকা সত্ত্বেও এবং এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণনার হিম্মত থাকা সত্ত্বেও যখন তা বর্ণিত হয়নি, জানা গেল যে, তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় ছিল না। আর এমন ধরনের বিষয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করা বিদ‘আত। প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা। বিদ‘আত থেকে নিষেধ করা এবং তার বিরোধিতা করা ওয়াজিব।

খলিফায়ে রাশিদ উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এ কাজ থেকে ও স্মৃতি চিহ্ন বিজড়িত স্থান তালাশ করা থেকে নিষেধ করার প্রতিই দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন, যা ইতোপূর্বে মা‘রূর ইবন সুয়াইদ আল আসাদীর বর্ণনায় এসেছে।

দ্বিতীয়ত: নবী ও রাসূলগণের ব্যক্তিসত্তার বরকত ভূ-স্থানের প্রতি সঞ্চারিত হয় না। অন্যথায় এ বিষয়টি অবধারিত হয়ে যাবে যে, তারা যে সকল স্থান মাড়িয়েছেন কিংবা যে স্থানে বসেছেন অথবা যে স্থান দিয়ে তারা অতিক্রম করেছেন, সে সব স্থানের বরকত অনুসন্ধান করে তা দ্বারা বরকত অর্জন করা যাবে। আর সন্দেহাতীতভাবে যেহেতু এ ব্যাপারটি বাতিল, অতএব, এ দ্বারা যা অবধারিত হলো তাও বাতিল বলে গণ্য।

তৃতীয়ত: স্থানের মাধ্যমে বরকত অর্জনের অন্বেষা আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্বেকার সকল নবীদের সুন্নাতের খেলাফ। কেননা তারা তাদের পূর্ববর্তী নবীদের চিহ্ন সম্বলিত স্থান অনুসন্ধান করেন নি এবং তা করতে নির্দেশও দেননি। এর বিপরীত যা কিছুই হয়েছে, তা পরবর্তী লোকেরাই (যারা এমন কাজ করতো যার নির্দেশ তাদেরকে দেওয়া হয় নি) তাদের নবীদের পর উদ্ভাবন করেছে, যখন শর‘ঈ বিধান মেনে চলা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। ফলে তারা চিহ্ন সম্বলিত স্থান দ্বারা বিদ‘আতী পন্থায় বরকত অর্জনের মাধ্যমে পাপের ক্ষমাপ্রাপ্তি ও অধিক হারে পুণ্য অর্জনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়ে। এজন্যই উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা এরকম কাজের ফলেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তারা তাদের নবীগণের স্মৃতি বিজড়িত চিহ্নসমূহের অনুসরণ করত”। ইতোপূর্বে এ হাদীসটি কোথায় কোথায় সংকলিত হয়েছে তা বর্ণনা করা হয়েছে।

চতুর্থত: কোনো স্থানে সার্বক্ষণিক ইবাদাতে মশগুল থাকার মাধ্যমেই শুধু সে স্থান বরকতময় হতে পারে। আর ইবাদাতে মশগুল থাকাটাই মূলতঃ সে স্থানে আল্লাহর বরকত দেওয়ার কারণ। এজন্যই মসজিদসমূহ বরকতময়। ইবাদাত না হলে এ স্থানসমূহের বরকত আর থাকে না।

এর একটি উদাহরণ হলো: যে সমস্ত মসজিদ কুফুরী শক্তির কুক্ষিগত হয়েছে এবং তারা সেগুলোকে গির্জায় রূপান্তরিত করেছে, সেগুলো থেকে মসজিদের ঐ বরকত চলে গিয়েছে, ইবাদাত কর্ম সম্পাদনকালে যে বরকত সেগুলোতে বিদ্যমান ছিল। কিন্তু সেখানে শির্কী কার্য সম্পাদন হওয়ার পর এবং ইসলামী শরী‘আত ছাড়া অন্য নিয়মে তাতে ইবাদাত হওয়ার পর সেখানকার বরকত চলে যায়। এ ব্যাপারে কোনো বিতর্ক ও বিবাদে লিপ্ত হওয়ার কোনো অবকাশই নেই।

পঞ্চমত: স্মৃতি বিজড়িত স্থান দ্বারা বরকত অর্জনের বিষয়টি সে স্থানকে পবিত্র বলে সাব্যস্তকরণ ও সে সমস্ত স্থানে (বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের মতো) বিশ্বাস করার ন্যায় আরও বড় ভয়াবহ ভ্রান্তিতে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যম। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেননা ঐতিহাসিকগণ ইসমাইল আলাইহিস্ সালামের সন্তানদের সম্পর্কে বলেন: “মক্কা তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গেল। আর তাদের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ ঘটল এবং শত্রুতা সৃষ্টি হলো। তারা একে অন্যকে বের করে দিল। অতঃপর তারা বিভিন্ন দেশে জীবিকার সন্ধানে ছড়িয়ে পড়ল। আর যা তাদেরকে প্রতিমা ও পাথর পূজার দিকে ঠেলে দিয়েছিল তা হলো, হারামের প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে এবং মক্কার প্রতি ভালবাসা পোষণের কারণে প্রত্যেক মুসাফিরই তার সাথে হারামের কোনো একটি পাথর না নিয়ে মক্কা থেকে সফর করত না”। [দেখুন, আল-আসনাম পৃ. ৬। তবে আমি দলীল নেওয়ার জন্য এ উদ্ধৃতি পেশ করি নি, বরং তাদের অবস্থা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা বর্ণনার জন্য।]

আর যার বৈশিষ্ট্য এমন- তা নিষিদ্ধ হওয়ার অধিক উপযোগী। কেননা শরী‘আতসম্মত নয় এমন বিষয়ের দিকে যে মাধ্যম ধাবিত করে, সে মাধ্যমটিও শরী‘আত-অসমর্থিত, যেন উক্ত কাজের দ্বার রুদ্ধ হয় এবং মাধ্যমটির মূলোচ্ছেদ ঘটে।

আরবী কবি বলেন:

“নিশ্চয় সালমা ও তার প্রতিবেশিনী থেকে সালামাত তথা নিরাপত্তা লাভের উপায় হলো, সে যেন তার উপত্যকায় আগমনকারী কোনো ব্যক্তির কাছে গমন না করে”।

ষষ্ঠত: (রাসূলের সাথে সম্পৃক্ত) বরকতের যে দু’ প্রকার আজ আমাদের কাছে অবশিষ্ট রয়েছে, তার মাধ্যমেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তার থেকে বরকত লাভের প্রত্যাশা ও তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ সাধিত হতে পারে । আর সে বরকত হলো তাকে অনুসরণের (মাধ্যমে অর্জিত) বরকত, তার সুন্নাত অনুযায়ী আমলের বরকত, তার সুন্নাতের যারা শত্রু ও শরী‘আতের নির্দেশের যারা বিরোধিতাকারী এবং যে সব মুনাফিক মানুষকে ফেতনায় লিপ্ত করে ও বিভ্রান্ত করে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের (মাধ্যমে অর্জিত) বরকত। এর প্রতিই তাবেয়ীন ও সঠিক পথের দিশা-দানকারী ইমামগণ প্রমুখ সালাফে সালেহীন উৎসাহ প্রদান করেছেন যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যিকারভাবে মহব্বত করেছেন। অতঃপর তাকে অনুসরণের ততটুকু বরকত তাদের অর্জিত হয়েছে যতটুকু আল্লাহ মঞ্জুর করেছেন। এতদ্ব্যতীত স্মৃতিচিহ্ন বিজড়িত স্থান দ্বারা বরকত অর্জন তারা পরিত্যাগ করেছেন। অতএব, বুঝা গেল যে, যে কাজটি তারা পরিত্যাগ করেছিলেন সেটি তাদের মাঝে পরিচিত ছিল না, আর শরী‘আতসম্মতও ছিল না।

হিদায়াত ও আল্লাহর প থেকে তাওফীক প্রত্যাশীর জন্য এ বিষয়গুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত উপাদান রয়েছে। আর সঠিক কথা ও কাজে আগ্রহী ব্যক্তির জন্য রয়েছে যথেষ্ট উপকরণ। নিশ্চয় হক তথা সত্য-ই অনুসৃত হওয়ার সর্বাধিক উপযোগী। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৎকর্মসমূহের তাওফীকদাতা।

‘আলমাফাহীম' গ্রন্থকার ১৫৬ পৃষ্ঠায় বলেন: “কুরআন-হাদীসের যে সকল দলীল আমরা বর্ণনা করেছি তা দ্বারা ঐ ব্যক্তির অসত্যতা স্পষ্ট হয়ে উঠে, যে ধারণা করে- ইবন উমার ছাড়া আর কোনো সাহাবী এ কাজের প্রতি গুরুত্ব দেন নি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আর কোনো সাহাবী ইবন উমারের সমর্থনে অনুরূপ আমল করেন নি।

এটা হলো মূর্খতা কিংবা মিথ্যাবাদিতা অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা।

কেননা ইবন উমার ছাড়াও আরও অনেকে এ আমল করেছেন এবং তৎপ্রতি গুরুত্বও আরোপ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন: খোলাফায়ে রাশেদীন রাদিয়াল্লাহু আনহুম, উম্মে সালামাহ, খালেদ ইবন ওয়ালীদ, ওয়াসিলা ইবন আলআসকা, সালামা ইবন আকওয়া, আনাস ইবন মালেক, উম্মে সুলাইম, উসাইদ ইবন হুদাইর [এখানে খুদাইর লিখা ছিল। আমি তা শুদ্ধ করে দিলাম।], সাওয়াদ ইবন গাযিয়া, সাওয়াদ ইবন আমর, আবদুল্লাহ ইবন সালাম, আবু মূসা, আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আযাদকৃত দাস সাফীনাহ, উম্মে সালামার খাদেম সাররা, মালেক ইবন সিনান, আসমা বিনতে আবু বকর, আবু মাহযুরা, মালেক ইবন আনাস এবং মদীনাবাসী তার অনেক মাশাইখ যেমন, সাঈদ ইবনুল মুসাইয়েব, ইয়াহইয়া ইবন সায়ীদ”।

সাহাবী ও তাবেঈদের প্রতি সম্পর্কিত করে যে বিবরণ এখানে পেশ করা হলো সে ব্যাপারে আমার বক্তব্য দীর্ঘায়িত না করেই আমি বলবো, এখানে কয়েকটি বিষয় রয়েছে:

এক. ইবন উমার একাই স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত স্থানের মাধ্যমে বরকত অর্জনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন বলে বক্তব্য পেশকারীর প্রতি 'আলমাফাহীম' গ্রন্থকার মিথ্যাচার, মূর্খতা ও ধুম্রজাল সৃষ্টির যে অপবাদ দিয়েছেন তা অতীব মন্দ ও নিন্দনীয়।

কেননা হাদীস, ফিক্‌হ ও দীনের বড় বড় যে সকল ইমামগণ ইবন উমার এককভাবে উক্ত আমল করেছেন বলে বক্তব্য পেশ করেছেন, এটা ভাবা যায় না যে, তাদের কনিষ্ঠরা তাদেরকে এ ব্যাপারে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করেছে।

দুই. (আল-মাফাহীম গ্রন্থকারের) এ বক্তব্যই বরং অজ্ঞতা ও মূর্খতার প্রতি সম্পর্কিত হওয়ার অধিক উপযোগী। কেননা ব্যক্তিসত্তার বরকত ও স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত স্থানের মধ্যে যে ব্যক্তি পার্থক্য নিরূপণ করে না, তার কথা প্রত্যাখ্যান করাই অধিক যুক্তিযুক্ত।

তিন. যারা এ সকল সাহাবীগণের নাম উল্লেখ করেছেন, তারা তাদের থেকে এটাই বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তারা তার দেহের যে সব চিহ্ন বর্তমান ছিল তা দ্বারা এবং তার ঘাম, জুব্বা ও চাদর প্রভৃতি দ্বারা বরকত অর্জন করেছেন, যদি এ বর্ণনা শুদ্ধ হয়ে থাকে। অন্যথায় তাহকীক করলে দেখা যাবে, এ বিষয়ে সামান্য কিছু ছাড়া আর বিশুদ্ধ কিছুই পাওয়া যায় না।

সুতরাং যিনি (পূর্বোক্ত বিষয় দু’টির মধ্যে) পার্থক্য করেছেন, তাকে মিথ্যাবাদী বলা যাবে না, বরং এটাই বিশুদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি এবং শক্তিশালী কথা। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি জ্ঞানকে পরিমাপ করে দেখেনি এবং সবচেয়ে কম দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও কম জানা লোকের সমকক্ষ হয়েও তুষ্ট থেকেছে, জ্ঞানবানদের কাছে তার কথার কোনো মূল্যই নেই।

আল-মাফাহীম গ্রন্থকারের এ অন্ধ গোঁড়ামী দ্বারা সে সব লোক প্রতারিত হবে যারা তার প্রতি সুধারণা রাখে এবং তার ইলমের ওপর ভরসা রাখে। কিয়ামতের দিন তাদের হবে কঠিন অবস্থা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿إِذۡ تَبَرَّأَ ٱلَّذِينَ ٱتُّبِعُواْ مِنَ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُواْ﴾ [ البقرة : ١٦٦ ]

“যখন অনুসৃতগণ অনুসারীদের দায়িত্ব অস্বীকার করবে”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৬৬]

‘আল-মাফাহীম’ গ্রন্থকার ইবন উমার ছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য কোনো সাহাবী থেকে সহীহ কিংবা উত্তম সনদে এটা বর্ণনা করতে পারবেন না যে, তিনি স্মৃতি বিজড়িত স্থান দ্বারা বরকত অর্জন করেছেন।

চার. মদীনার ইমাম ও আলিম ইমাম মালেকের সাথে উক্ত বরকত অর্জনের যে সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছে তা শুদ্ধ নয়। কেননা মালেক রাহিমাহুল্লাহ স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত স্থান অনুসন্ধান করতে নিষেধ করতেন। বরং তিনি মদীনার বড় বড় তাবেয়ীন থেকে তা বর্ণনা করেছেন। আর মালিকের সাথীদের গ্রন্থে এ বিষয়ে অনেক সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে।

তন্মধ্যে স্পেনের মুহাদ্দিস ইবন ওয়াদ্দ্যাহ স্বীয় “বিদআ‘ত ও তা থেকে নিষেধকরণ” নামক গ্রন্থের ৪৩ পৃষ্ঠায় বলেন: “মালেক ইবন আনাস ও মদীনার অপরাপর আলিমগণ উক্ত মসজিদসমূহে আসা অপছন্দ করতেন। অথচ সে সবই ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরই স্মৃতিচিহ্ন, একমাত্র কোবা ও উহুদ ছাড়া”।

সুতরাং ইমাম মালিকের মাযহাবের প্রতি যিনি সম্পর্কিত, কেন এ মাসায়েলগুলোতে তিনি মালেকী হতে পারলেন না, হতে পারলেন না সালাফী? যেমন, ছিলেন ইমাম মালেক (আল্লাহ তাকে প্রশস্ত রহমাত দিয়ে করুণা করুন)।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন