hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম-১ ঈমান

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন

১২
প্রশ্ন: (৮) আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের নিকট ঈমান অর্থ কী? ঈমান কি বাড়ে এবং কমে?
উত্তর: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মতে ঈমান হচ্ছে, অন্তরের স্বীকৃতি, মৌখিক উচ্চারণ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমে কর্মে আনয়ন। সুতরাং ঈমান তিনটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে,

১- অন্তরের স্বীকৃতি,

২- মৌখিক উচ্চারণ এবং

৩- অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল।

যেহেতু উক্ত বিষয়সমূহের সমষ্টির নাম ঈমান, সে হিসাবে তা বাড়বে এবং কমবে এটিই স্বাভাবিক। কারণ, অন্তরের স্বীকৃতির তারতম্য হয়ে থাকে। অতএব, সংবাদ শুনে কোনো কিছু স্বীকার করা আর আপন চোখে দেখে স্বীকার করা এক কথা নয়। অনুরূপভাবে একজনের দেওয়া সংবাদ স্বীকার করা আর দু’জনের সংবাদ স্বীকার করে নেওয়া এক কথা নয়। এ জন্যই ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন,

﴿رَبِّ أَرِنِي كَيۡفَ تُحۡيِ ٱلۡمَوۡتَىٰۖ قَالَ أَوَ لَمۡ تُؤۡمِنۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَٰكِن لِّيَطۡمَئِنَّ قَلۡبِيۖ﴾ [ البقرة : ٢٦٠ ]

“হে আমার রব! আমাকে দেখান আপনি কীভাবে মৃতকে জীবিত করেন। আল্লাহ বললেন, তুমি কি ঈমান আন নি? ইবরাহীম বললেন, ঈমান তো অবশ্যই এনেছি, কিন্তু আমার অন্তর যাতে পরিতৃপ্ত হয় এজন্য আমি স্বচক্ষে দেখতে চাই।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৬০]

কাজেই অন্তরের স্বীকৃতি এবং তার স্থীরতা ও প্রশান্তির দিক থেকে ঈমান বৃদ্ধি পায়। মানুষ তার অন্তরে তা সহজেই অনুভব করে থাকে। সে যখন ইসলামী অনুষ্ঠান বা ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত হয়ে নসীহত শুনে বা জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা শুনে, তখন তার ঈমান বৃদ্ধি পায়। এমন কি সে যেন জান্নাত- জাহান্নাম স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছে। অতঃপর যখন গাফিলতি চলে আসে এবং যখন মজলিস থেকে উঠে যায়, তখন তার অন্তরে সে দৃঢ়বিশ্বাস হালকা হয়ে যায়।

এমনিভাবে মুখের আমলের (যিকির) কারণেও ঈমান বৃদ্ধি পায়। কেননা যে ব্যক্তি দশবার আল্লাহর যিকির করল, সে একশতবার যিকিরকারীর সমান নয়। দ্বিতীয় ব্যক্তির আমল প্রথম ব্যক্তির আমলের চেয়ে অনেক বেশি। বেশি হওয়াই স্বাভাবিক।

এমনিভাবে যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে ইবাদাত সম্পন্ন করবে আর যে ব্যক্তি ত্রুটিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করবে- উভয়ে সমান নয়।

এমনিভাবে আমলের মাধ্যমেও ঈমান বাড়ে। যে ব্যক্তি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে বেশি আমল করে তার ঈমান কম আমলকারীর চেয়ে বেশি। বেশি-কম হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট দলীল-প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا جَعَلۡنَآ أَصۡحَٰبَ ٱلنَّارِ إِلَّا مَلَٰٓئِكَةٗۖ وَمَا جَعَلۡنَا عِدَّتَهُمۡ إِلَّا فِتۡنَةٗ لِّلَّذِينَ كَفَرُواْ لِيَسۡتَيۡقِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ وَيَزۡدَادَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِيمَٰنٗا﴾ [ المدثر : ٣١ ]

“আমরা জাহান্নামের তত্বাবধায়ক হিসেবে ফিরিশতাগণকেই রেখেছি। আমরা কাফিরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যই তাদের এ সংখ্যা নির্ধারণ করেছি, যাতে কিতাবধারীরা দৃঢ় বিশ্বাসী হয় এবং মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায়।” [সূরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ৩১]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَإِذَا مَآ أُنزِلَتۡ سُورَةٞ فَمِنۡهُم مَّن يَقُولُ أَيُّكُمۡ زَادَتۡهُ هَٰذِهِۦٓ إِيمَٰنٗاۚ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ فَزَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَهُمۡ يَسۡتَبۡشِرُونَ ١٢٤ وَأَمَّا ٱلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٞ فَزَادَتۡهُمۡ رِجۡسًا إِلَىٰ رِجۡسِهِمۡ وَمَاتُواْ وَهُمۡ كَٰفِرُونَ ١٢٥﴾ [ التوبة : ١٢٤، ١٢٥ ]

“আর যখন কোনো সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এ সূরা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান কতটা বৃদ্ধি করল? তবে যারা ঈমানদার, এ সূরা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়েছে। বস্তুতঃ যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে এটি তাদের অন্তরে কলুষের সাথে আরো কলুষ বৃদ্ধি করেছে এবং তারা কাফির অবস্থায়ই মৃত্যু করল।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৪-২৫]

সহীহ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে,

«مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الْحَازِمِ مِنْ إِحْدَاكُنَّ»

“দীন ও জ্ঞানে অপূর্ণ হওয়া সত্বেও জ্ঞানী পুরুষদের জ্ঞানকে তোমাদের চেয়ে অধিক হরণকারী আর কাউকে দেখি নি।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল হাঈদ।] সুতরাং ঈমান বাড়ে এবং কমে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ঈমান বাড়ার কারণ কী?

ঈমান বৃদ্ধি হওয়ার উপায়সমূহ

প্রথম উপায়: আল্লাহর সমস্ত নাম ও গুণাবলীসহ আল্লাহ তা‘আলার পরিচয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান যতই বৃদ্ধি পাবে, নিঃসন্দেহে তার ঈমানও তত বৃদ্ধি পাবে। এ জন্যই যে সমস্ত আলিম আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তারা এ সম্পর্কে জ্ঞানহীন আলিমদের চেয়ে ঈমানের দিক থেকে অধিক শক্তিশালী।

দ্বিতীয় উপায়: সৃষ্টির ভিতরে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে গবেষণা করা এবং আল্লাহ মানব জাতিকে যে জীবন বিধান দিয়েছেন, তার ভিতরে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা। মানুষ আল্লাহর সৃষ্টিরাজি নিয়ে যতই চিন্তা করবে, ততই তার ঈমান বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

﴿ وَفِي ٱلۡأَرۡضِ ءَايَٰتٞ لِّلۡمُوقِنِينَ ٢٠ وَفِيٓ أَنفُسِكُمۡۚ أَفَلَا تُبۡصِرُونَ ٢١﴾ [ الذاريات : ٢٠، ٢١ ]

“দৃঢ়বিশ্বাসীদের জন্য পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তোমরা কি চক্ষুষ্মান হবে না?” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ২০-২১] আল্লাহর সৃষ্টিরাজির মধ্যে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করলে যে ঈমান বৃদ্ধি পায়, এ মর্মে অনেক দলীল-প্রমাণ রয়েছে।

তৃতীয় উপায়: বেশি বেশি সৎ কাজ সম্পাদন করা। সৎ আমল যতই বৃদ্ধি পাবে, ঈমান ততই বৃদ্ধি পাবে। এ সৎ আমল মুখের কথার মাধ্যমে হোক, কিংবা কাজের মাধ্যমে হোক যেমন যিকর আযকার, সালাত, সাওম এবং হজ্জ। এসব কিছুই ঈমান বৃদ্ধির মাধ্যম।

ঈমান কমে যাওয়ার কারণসমূহ

প্রথম কারণ: আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে অজ্ঞ থাকা ঈমান কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কেননা আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান যতই কমবে, ঈমানও তত কমতে থাকবে।

দ্বিতীয় কারণ: সৃষ্টিতে ও শরী‘আতে আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে গবেষণা করা থেকে বিরত থাকা। কেননা আল্লাহর সৃষ্টিতে চিন্তা-ভাবনা না করা ঈমানের ঘাটতি হওয়ার অন্যতম কারণ।

তৃতীয় কারণ: গুনাহের কাজে লিপ্ত হওয়া। কেননা গুনাহের কাজ করলে অন্তরে এবং ঈমানের উপর বিরাট প্রভাব পড়ে। এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لَا يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ»

“ব্যভিচারী ঈমান থাকা অবস্থায় ব্যভিচারে লিপ্ত হতে পারে না।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল হুদূদ; সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান।]

চতুর্থ কারণ: সৎ আমল না করা ঈমান হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু যদি বিনা কারণে কোনো ওয়াজিব কাজ ছেড়ে দেয় তাহলে ঈমান কমার সাথে সাথে সে তিরস্কার ও শাস্তির সম্মুখীন হবে। অবশ্য গ্রহণযোগ্য কারণে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে অথবা ওয়াজিব নয় এমন কাজ ছেড়ে দিলে ঈমানের ঘাটতি হবে, কিন্তু তিরস্কারের সম্মুখীন হবে না। এ জন্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে জ্ঞান ও দীনের ক্ষেত্রে অপূর্ণ বলেছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাদের যখন মাসিকের রক্ত বের হয়, তখন তারা সালাত-সাওম থেকে বিরত থাকে। অথচ মাসিক অবস্থায় সালাত-সাওম থেকে বিরত থাকার কারণে তাদেরকে দোষারোপ করা হয় না; বরং তা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু যেহেতু পুরুষদের তুলনায় তাদের আমল কম হয়ে গেল, সে হিসেবে তারা পুরুষের চেয়ে কম ঈমানের অধিকারী।

হাদীসে জিবরীল এবং আবদুল কায়েসের হাদীসের মধ্যে সমন্বয়:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন