hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম-১ ঈমান

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন

১৯
প্রশ্ন: (১৫) বর্তমান কালের ডাক্তারগণ মাতৃগর্ভে পুত্র সন্তান আছে না কন্যা সন্তান বলে দিতে পারে। আর কুরআনে আছে, وَيَعْلَمُ مَا فِىْ الأَرْحَامِ অর্থ: “মাতৃগর্ভে কী আছে তা আল্লাহই জানেন।” ইবন জারীর মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন যে, একজন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, আমার স্ত্রী কি সন্তান প্রসব করবে? তখন উক্ত আয়াত নাযিল হয়। কাতাদা থেকেও অনুরূপ তাফসীর বর্ণিত আছে। আল্লাহর বাণী, مَا فِىْ الأَرْحَامِ “গর্ভে যা আছে” এ কথাটি ব্যাপক। এ ব্যাপকতা ভঙ্গকারী বিশেষ কোনো দলীল আছে কী? অর্থাৎ কোনো অবস্থাতে আল্লাহ ছাড়া অন্যরাও কি মাতৃগর্ভের অবস্থা সম্পর্কে খবর রাখতে পারে?
উত্তর: উপরের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমি বলতে চাই যে, কুরআনের কোনো আয়াত কখনই বাস্তব সত্য কোনো ঘটনার বিরোধী হতে পারে না। যদিও কখনো কোনো ব্যাপারে প্রকাশ্যভাবে এ রকম কিছু দেখা যায়, তবে হয়তো এটা হবে নিছক অবাস্তব দাবী অথবা কুরআনের আয়াতটি সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নয়। কেননা কুরআনের প্রকাশ্য আয়াত এবং প্রকৃত বাস্তব ঘটনা উভয়টিই অকাট্য। দু’টি অকাট্য বিষয়ের মধ্যে কখনো বিরোধ হতে পারে না।

প্রশ্নোল্লিখিত বিষয়টি সত্য হয়ে থাকলে বলব যে, অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে তারা এখন জানতে পেরেছে যে, মাতৃগর্ভে কি আছে। বর্তমানে ডাক্তারগণ ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান হওয়া সম্পর্কে যে আগাম খবর প্রদান করে, তা যদি মিথ্যা হয় তাহলে কোনো কথা নেই। আর যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলেও আয়াতের সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আয়াতটি গায়েবী বিষয় সংক্রান্ত। এখানে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা আল্লাহর জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। তম্মধ্যে মাতৃগর্ভে কি আছে তা একটি। শিশু মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায় গায়েবী বিষয়গুলো হলো সে কত দিন মায়ের পেটে থাকবে, কত দিন দুনিয়াতে বেঁচে থাকবে, কি রকম আমল করবে, সে কতটুকু রিযিক গ্রহণ করবে, সৌভাগ্যবান হবে না দুর্ভাগ্যবান হবে। গঠন পূর্ণ হওয়ার পূর্বে ছেলে না মেয়ে হবে এ সম্পর্কে অবগত হওয়া। আর গঠন পূর্ণ হওয়ার পরে মাতৃগর্ভে ছেলে না মেয়ে এ সম্পর্কে অবগত হওয়া ইলমে গায়েবের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা গঠন পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বিষয়ের জ্ঞানের মতই হয়ে গেল। তবে শিশুটি তিনটি অন্ধকারের ভিতরে লুকায়িত অবস্থায় রয়েছে। যদি অন্ধকারের আবরণগুলো অপসারণ করা হয়, তাহলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। ইহা অসম্ভব নয় যে, আল্লাহর সৃষ্টিসমূহের মধ্যে এমন শক্তিশালী যন্ত্র রয়েছে, যা এ তিনটি অন্ধকার ভেদ করতে সক্ষম। যাতে করে শিশুটি ছেলে না মেয়ে, তা জানা যায়। আর আয়াতে মাতৃগর্ভে ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান হওয়ার জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছে- একথা বলা হয় নি। হাদীসেও এ মর্মে কোনো সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই।

আয়াতের শানে নুযুলের ক্ষেত্রে মুজাহিদ থেকে যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা মুনকাতে। [মুনকাতে সেই হাদীসকে বলা হয়, যার সনদ হতে কোনো বর্ণনাকারী বাদ পড়ে যায়। হাদীসের সনদ হতে বর্ণনাকারী বাদ পড়ার কারণে হাদীস দূর্বল হয়ে যায়।] কারণ তিনি তাবেঈদের অন্তর্ভুক্ত।

কাতাদার তাফসীরের অর্থ এ যে, গঠন হওয়ার পূর্বে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না যে, ছেলে হবে না মেয়ে হবে। গঠন পূর্ণ হওয়ার পর আল্লাহ ব্যতীত অন্যরাও জানতে পারে। ইবন কাছীর সূরা লুকমানের আয়াতের তাফসীরে বলেন, মাতৃগর্ভে যা আছে তা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা কি সৃষ্টি করতে চান, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। কিন্তু যখন ছেলে বা মেয়ে হওয়ার কিংবা সৌভাগ্যবান বা দুর্ভাগ্যবান হওয়ার আদেশ দিয়ে দেন, তখন ফিরিশতাগণ এবং অন্যান্য সৃষ্টি জীবেরাও জানে। আল্লাহর বাণী,

﴿وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ﴾ [ لقمان : ٣٤ ]

“মাতৃগর্ভে যা আছে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪]

এ থেকে মানুষ কোনো কিছু জানতে পারে কিনা। জানলে তা কিসের মাধ্যমে? এ প্রশ্নের জবাবে আমরা বলব যে, আয়াতের মাধ্যমে যদি গঠন প্রণালী পূর্ণ হওয়ার পর ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বাস্তব উপলব্ধির মাধ্যমে তা নির্ণয় করা সম্ভব। আয়াতের মাধ্যমে আমরা বুঝি যে, মাতৃগর্ভের ছোট-বড় যাবতীয় অবস্থা আল্লাহ তা‘আলা বিস্তারিতভাবে অবগত আছেন। মানুষ শুধুমাত্র গঠন পূর্ণ হওয়ার পর ছেলে না মেয়ে এ একটি মাত্র অবস্থা জানতে পারে। আরো অসংখ্য অবস্থা এখনও রহস্যময় রয়ে গেছে। উসূলবিদগণ [কুরআন-সন্নাহর থেকে গবেষণা করে যারা দীনের মাসায়েল বের করার মূলনীতি নির্ধারণ করেন তাদেরকে উসূলবিদ (উসূলী) বলা হয়।] উল্লেখ করেছেন যে, কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাপকার্থক বিষয়গুলো থেকে কোনো জিনিসকে আলাদা করার জন্য কুরআন-সুন্নাহর কোনো দলীল কিংবা ইজমা [কুরআন-সুন্নার কোন বিধানের উপর মুসলিম উম্মাহর সকল আলেমদের একমত হওয়াকে ইজমা বলা হয়।] বা কিয়াস [দীনের কোন মাসআলায় কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলীল না থাকলে সেখানে বিশুদ্ধ কিয়াসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।] বা বাস্তব উপলোব্ধি অথবা বিশুদ্ধ বিবেকের [বিশুদ্ধ বিবেক ও বাস্তব সত্য কখনও কুরআন-সুন্নাহর বিরোধী হতে পারে না।] দরকার। এ ব্যাপারে আলিমদের আলোচনা অত্যন্ত পরিস্কার।

আর আয়াতের মাধমে যদি সন্তান সৃষ্টির পূর্বের অবস্থা উদ্দেশ্য হয়, তাহলে ডাক্তারদের কথা এবং কুরআনের আয়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ডাক্তাররা সন্তান সৃষ্টির হওয়ার পূর্বে বলতে পারে না যে, ছেলে হবে না মেয়ে হবে।

আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা যে, পৃথিবীতে কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলীল বিরোধী কোনো বাস্তব ঘটনা পাওয়া যায় নি। ইসলামের শত্রুরা কিছু কিছু বাস্তব বিষয়ে বাহ্যিকভাবে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ভেবে তাতে আঘাত করেছে। আল্লাহর কিতাব বুঝতে অক্ষম হওয়ার কারণে অথবা তাদের উদ্দেশ্য অসৎ হওয়ার কারণেই তারা এমনটি করে থাকে; কিন্তু মুসলিম উম্মাহর আলিমগণ তাদের এ সমস্ত ভ্রান্ত ধারণার মূলোৎপাটন করে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত:

প্রথম শ্রেণির লোকেরা কুরআনের আয়াতের প্রকাশ্য অর্থটিকে গ্রহণ করেছে এবং এর বিপরীতে প্রতিটি বাস্তব সত্য বিষয়কে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। অথচ আয়াতটি উক্ত অর্থে সুস্পষ্ট নয়। এতে করে সে নিজের অক্ষমতার কারণে নিজের ওপর কিংবা কুরআনের ওপর দোষ টেনে এনেছে।

অন্য একটি দল কুরআনের শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণ বিমুখ হয়ে পার্থিব বিষয়কেই গ্রহণ করার কারণে নাস্তিকে পরিণত হয়েছে।

অন্য দিকে মধ্যমপন্থী দলের লোকেরা কুরআনের শিক্ষাকে গ্রহণ করেছে এবং বাস্তব সত্য বিষয়াবলীকেই সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তারা জানে যে, উভয়টিই সত্য। কারণ, কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াতগুলো চাক্ষুষ বস্তুগুলোর বিরোধী হতে পারে না। তারা দলীল এবং বিবেক সম্মত বিষয়, উভয়টির ওপরই আমল করে। এর মাধ্যমে তাদের দীন এবং বিবেক উভয়টিই নিরাপদ থাকল। ঈমানদারগণ যখন সত্যের ব্যাপারে মতবিরোধ করেন, তখন আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত দান করেন। আল্লাহ যাকে চান সঠিক পথের দিকে পথ প্রদর্শন করেন।

আল্লাহ আমাদেরকে এবং আমাদের দীনী ভাইদেরকে তাওফীক দান করুন এবং সঠিক পথপ্রাপ্ত এবং সঠিক পথের দিকে আহ্বানকারী ও উম্মতের জন্য সংশোধনকারী নেতা হিসাবে নির্ধারণ করুন। আমি আল্লাহর কাছে তাওফীক চাই, তারই ওপর ভরসা করি এবং তারই দিকে ফিরে যাব।

সূর্য ঘুরে না পৃথিবী?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন