HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানব জীবনে ইসলামি আকিদার প্রভাব

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

আকিদার প্রভাব ও কার্যকারিতা
এ পর্যায়ে আমরা মুসলিম উম্মাহর জীবন থেকে নেয়া কয়েকটি ঘটনার মাধ্যমে এ আকিদার প্রভাব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। প্রসঙ্গত: যারা একে প্রত্যাক্ষান করেছে, তারাও যে এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, সে ব্যাপারেও কিছু উল্লেখ করার চেষ্টা করব।

১. ইসলামি আকিদার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে, আল্লাহ ভীতি ও কিয়ামত দিবসের বিশ্বাস। এর ফলে স্বেচ্ছাচারীতা বন্ধ হয়, সর্বক্ষেত্রে আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নিজ দায়িত্ববোধ সদা জাগ্রত থাকে। উদাহরণ স্বরূপ ওমর রা.-এর কথা উল্লেখ করতে পারি, তিনি ছিলেন খলিফাতুল মুসলিমিন। রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত দায়িত্বশীল। তিনি আল্লাহ ভীতি ও নিজ দায়িত্ববোধ থেকে বলেছিলেন, ‘‘ইয়ামানের সানআতেও যদি কোন গাধার পা পিছলে যায়, তাহলে সে ব্যাপারে আমিই দায়ী, কেন তার রাস্তা সমতল করে দেইনি।’’

২. এ আকিদায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তারা নিজ জান ও মালের মাধ্যমে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদর যে নমুনা পেশ করেছেন, তার দৃষ্টান্তও বিরল। এর ওপর নির্ভর করেই জগৎ সংসারে ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সামান্য অস্ত্র ও সীমিত জনবল দিয়েই বিপুল অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত, দ্বিগুন-তিনগুন বেশী শত্রু বাহিনীর মোকাবিলায় অবিশ্বাস্য বিজয় অর্জন করেছেন।

৩. এ আকিদায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছেন, তারই সুবাদে এক সময় এ বসুন্ধরার সর্বত্র নিরাপত্তাময় পরিবেশ বিরাজমান ছিল।

৪. সামাজিক নিরাপত্তামূলক তহবিল গঠন। এ আকিদায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তারা সামাজিক নিরাপত্তা মূলক তহবিল গঠন করেছেন। যার ফলে পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সহযোগিতার বন্ধন সুদৃঢ় হয়েছে। ঐক্য ও সম্মিলিত শক্তি বিনষ্টকারী মানবিক ব্যাধি হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব হয়েছে। পরার্থপরতা ও সহমর্মিতার সুবাতাস বয়ে বেড়ায়েছে পুরো ইসলামি সমাজে। যা আমরা বর্তমানে প্রত্যক্ষ করি বিভিন্ন কল্যাণ মূলক কাজের জন্য ওয়াকফকৃত দান-অনুদানের ভেতরে।

৫. পারস্পরিক চুক্তির যথাযথ সংরক্ষণ। মুসলিম উম্মাহ এ ব্যাপারে যতটুকু এগিয়ে পূর্ণ মানব ইতিহাসে তার কোন দৃষ্টান্ত নেই ।

৬. ধরাপৃষ্ঠে ইনসাফের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন। যা কোন জাতির ইতিহাসে বিদ্যমান নেই। তারা স্বজনপ্রীতি ও সর্বপ্রকার স্বার্থের উর্দ্ধে থেকে গরীব-ধনী, ছোট-বড়, মুসলিম-অমুসলিমদের মাঝে যে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তার কোন দৃষ্টান্ত ইতিহাস আজো পর্যন্ত পেশ করতে পারেনি।

৭. ইসলামি রাষ্ট্রের অধীন অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতার হেফাজত। তারা অমুসলিমদের ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক যে স্বাধীনতা প্রদান করেছেন, তার নজির খোদ অমুসলিম রাষ্ট্রেও অনুপস্থিত।

৮. ইসলামি সমাজের আদর্শ ও ভাবমূর্তির যথাযথ সংরক্ষণ। ইসলামি সমাজে মাদকদ্রব্য, অনৈতিক কার্যকলাপের কোন প্রশ্রয় নেই। যে কারণে ইতিহাস সাক্ষ্য দিতে বাধ্য, মুসলিম সমাজে অন্য যে কোন সমাজের তুলনায় অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার উপস্থিতি ছিল একেবারেই গৌন। নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত বর্তমান পাশ্চাত্য বিশ্ব যে সব মরণ ব্যাধি, যেমন এইডস, গণরিয়া, সিফিলিস ইত্যাদিতে আক্রান্ত, তার সিকি ভাগও মুসলিম সমাজে বিদ্যমান নেই। যদি কোথাও তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, তাও তাদের অনুসরণে অভ্যস্ত, তাদের শিক্ষায় শিক্ষিত পরিবার ও সমাজে সীমাবদ্ধ। নিকট অতীতেও যারা ইসলামের অনুসরণ করেছে, তাদের মধ্যে মানবিক অধিকার ও সম্মান নিরাপদ ছিল। তবে ইদানিং কতিপয় লোক ও গোষ্ঠি ইসলামের অনুসরণ ত্যাগ করে, আধুনিকতা ও প্রগতির নামে পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুসরণ করছে, আর তাদের মধ্যেই লক্ষিত হচ্ছে পশ্চিমাদের সে অশ্লীলতা ও মরণ ব্যাধি এইডসসহ নানা মারাত্মক রোগ।

৯. ইসলামি আকিদায় বিশ্বাসী মুসলিম জাতির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচাঞ্চল্যতার বৃদ্ধি ঘটে। যার প্রমাণ ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় স্বল্পতম সময়ে বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রসার। সঙ্গে সঙ্গে আরবি ভাষারও বিস্তার।

১০. ইসলামি আকিদায় বিশ্বাসী জাতির মধ্যে জ্ঞান আহরণ প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। যার প্রমাণ মুসলিম জাতির কুরআন ও হাদিসের ব্যাপক চর্চা। আরো প্রমাণ, তাদের বিজ্ঞানকে থিওরিগত বিদ্যা থেকে বের করে বাস্তব ও অভিজ্ঞতাপূর্ণ বিদ্যায় রূপান্তর করণ। তাদের আবিষ্কার ছিল বাস্তবভিত্তিক, বস্ত্তনিষ্ঠ ও প্রমাণিত। ব্যক্তি ও দার্শনিকদের নিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।

১১. এ আকিদার ফলে বিশ্বব্যাপী ইসলামি সভ্যতার আন্দোলন ঘটে। যে আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শারীরিক ও আত্মিক সাধনার মধ্যে সমন্বয় ঘটানো। ইহকাল ও পরকালের মাঝে যোগসূত্র স্থাপন করা।

১২. বিশ্বময় দেশ ও জাতির মধ্যে ঐক্যের সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করা। যার মূলভিত্তি ছিল এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। তার মধ্যে ছিল না কোন ভাষা, বংশ ও জাতির বিবাদ-ভেদাভেদ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে বিচরণ করেছে, তাতে ছিল না কোন বাধা, ভিসা কিংবা নিরাপত্তার নামে অন্য কোন হয়রানি। তাদের মধ্যে ছিল না কোন পরদেশির ভাবনা। অথচ তাদের সরকার ভিন্ন, দেশ ভিন্ন। আবার কোন কোন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও এক আকিদার ফলে পরস্পরের মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন অটুট ছিল।

এ হলো ইসলামি আকিদায় গঠিত ও এর রঙে রঙ্গিন মুসলিম জাতির বর্ণীল ইতিহাস। ইসলামি সমাজের সামান্য নমুনা। সংক্ষেপে বলতে পারি, এ আকিদার দ্বারা এমন একটি জাতি তৈরি হয়, যারা হয় বিশ্বস্ত-আমানতদার, সৎ-নীতিবান, আল্লাহ ভীরু ও মানবতার কল্যাণকামী। আরো একটু ব্যাপক করে বলা যায়, তারা আল্লাহর খাঁটি আবেদ-আনুগত্যশীল, তারা নিজ কর্ম, চিন্তা, চেতনা, বোধ ও অনুভুতিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণকারী। পূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে উচ্চারণ করে,

إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ . لَا شَرِيكَ لَهُ ﴿االأنعام : ১৬২-১৬৩﴾

‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ আলাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব, তাঁর কোনো শরিক নেই।’ [সূরা আনআম : ১৬২-১৬৩]

যে ব্যক্তি জাগতিক চাহিদার ওপর নিজ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে স্বক্ষম; প্রতিমা ও দেবদেবীর পূজা-অর্চনা ত্যাগ করে আল্লার এবাদত-আনুগত্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে স্বক্ষম; স্বীয় চাল-চলন, চিন্তা-গবেষণা ও পার্থিব জগতের উন্নয়নে বোধ-বুদ্ধির ভারসাম্য রক্ষায় যত্নশীল, একমাত্র সেই পারে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে পাথেয় বানাতে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন