HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
কল্যাণ ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরে সহযোগিতা করা
লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
এক. সকল সৎকর্মে ও তাকওয়ার কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করা ফরজ করা হয়েছে। এমনিভাবে পাপাচার ও শরীয়তের সীমা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দুই. যে সৎকর্মটি সম্পাদন করা ওয়াজিব তাতে সহযোগিতা করাও ওয়াজিব। আর যে সৎকর্মটি করা সুন্নাত, তাতে সহযোগিতা করাও সুন্নাত।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(আরবি)
আসরের কসম! অবশ্যই মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে। (সূরা আল আসর)
দুই. যে সৎকর্মটি সম্পাদন করা ওয়াজিব তাতে সহযোগিতা করাও ওয়াজিব। আর যে সৎকর্মটি করা সুন্নাত, তাতে সহযোগিতা করাও সুন্নাত।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(আরবি)
আসরের কসম! অবশ্যই মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে। (সূরা আল আসর)
সমস্ত মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত কিন্তু তারা নয় যাদের মধ্যে চারটি গুণ থাকবে। এ গুণ চারটি হল:
এক. ঈমান
দুই. আমালে সালেহ বা সৎকাজ
তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান
চার. অপরকে ধৈর্যের উপদেশ দান
একজন প্রকৃত মুসলিম শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে না। শুধু নিজের সুখে সন্তুষ্ট থাকে না। যেমন সে নিজের দুঃখেই শুধু ব্যথিত হয় না। অন্যের কথাও চিন্তা করতে হয় তাকে। অন্যের কল্যাণে কাজ করতে হয়। অন্যের দু:খে দু:খী ও অন্যের সুখে সুখী হওয়া তার কর্তব্য।
এজন্য এ চারটি গুণের প্রথম দুটো গুণ নিজের কল্যাণের জন্য আর পরের গুণ দুটো হল অন্যের কল্যাণের জন্য।
প্রথম গুণ দুটো দ্বারা একজন মুসলিম নিজেকে পরিপূর্ণ করে, আর অপর গুণ দুটো দ্বারা অন্যকে পরিপূর্ণ করার প্রয়াস পায়।
প্রথম গুণটি হল ঈমান। এটা একটি ব্যাপক ভিত্তিক আদর্শের নাম। প্রখ্যাত তাফসীরবিদ মুজাহিদ রহ. বলেছেন, ঈমান হল, আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা, তার তাওহীদ-একত্ববাদকে সর্বক্ষেত্রে গ্রহণ করা। তার পক্ষ থেকে যা কিছু এসেছে সবগুলোকে মেনে নেয়া, সর্বক্ষেত্রেই তার কাছে জওয়াব দিতে হবে এ আদর্শ ধারণ করা। (তাফসীর তাবারী)
ঈমানের পর নেক আমল বা সৎকর্মের স্থান। সৎকর্ম সকল মানুষই কম বেশী করে থাকে। তবে ঈমান নামক আদর্শ তারা সকলে বহন করে না। ফলে তাদের আমল বা কর্মগুলো দিয়ে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। সৎকর্মশীল মানুষগুলো যদি ঈমান নামের আদর্শকে গ্রহণ করে তাহলে এ সৎকর্ম দ্বারা তারা দুনিয়াতে যেমন লাভবান হবে আখেরাতেও অনন্তকাল ধরে এ লাভ ভোগ করবে। আর যদি সৎকর্মের সাথে ঈমান নামের আদর্শ না থাকে, তাহলে সৎকর্ম দিয়ে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে কিছুটা লাভবান হলেও আখেরাতের স্থায়ী জীবনে এটা তাদের কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না। এ জন্য আল্লাহ রাববুল আলামীন প্রথমে ঈমানের কথা বলেছেন।
সৎকর্ম হল, যা কিছু ইসলাম করতে বলেছে সেগুলো পালন করা আর যা কিছু নিষেধ করেছে সেগুলো থেকে বিরত থাকা। হতে পারে তা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব বা নফল। আর বর্জনীয় বিষয়গুলো বর্জন করে চলা। হতে পারে তা হারাম, মাকরূহ।
যখন মানুষ ঈমান স্থাপন করল, তারপর সৎকর্ম করল, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিল। নিজেকে লাভ, সফলতা ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করল। কিন্তু ঈমানদার হিসাবে তার দায়িত্ব কি শেষ হয়ে গেল? সে কি অন্য মানুষ সম্পর্কে উদাসীন ও বে-খবর থাকবে ? কিভাবে সে এত স্বার্থপর হবে? অন্য সকলকে কি সে তার যাপিত কল্যাণকর, সফল জীবনের প্রতি আহবান করবে না? কেনই বা করবে না? সে তো মুসলিম। তাদের আবির্ভাব তো ঘটানো হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। আর এ জন্যই তো মুসলিমরা শ্রেষ্ঠ জাতি। আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেন বার বার:
(আরবি)
‘‘তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি, যাদেরকে মানুষের (কল্যাণের) জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
অতএব নিজেকে ঠিক করার পর তার দায়িত্ব এসে যাবে অন্যকে কল্যাণের পথে আহবান করা।
তাই ঈমান ও সৎকর্ম নামক গুণ দুটো উল্লেখ করার পর আল্লাহ তাআলা আরো দুটো গুণের কথা বললেন:
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
‘আর তারা পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’
সত্যের দিকে মানুষকে আহবান করা, এ আহবান করতে গিয়ে এবং এ আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে যে সকল বিপদ-মুসীবত, অত্যাচার-নির্যাতন আসবে তাতে ধৈর্য ধারণের জন্য একে অন্যকে উপদেশ দেয়া কর্তব্য।
প্রশ্ন হতে পারে সত্যের মধ্যেই তো ধৈর্য আছে। ধৈর্য তো হক বা সত্যের একটি। তাহলে এটা আলাদাভাবে উল্লেখ না করলে কি হত না?
কোন বিষয়ের গুরুত্ব বুঝাতে সাধারণভাবে তা উল্লেখ করা হলেও আবার বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। পরিভাষায় এটাকে বলা হয় :
ذكر الخاص بعد العام
কোন একটি বিষয় অর্জন করা সহজ হতে পারে কিন্তু সেটি ধরে রাখা ও তার উপর অটল থাকা ততটা সহজ হতে নাও পারে। আর এ জন্যই প্রয়োজন ধৈর্য ও সবরের।
এক. ঈমান
দুই. আমালে সালেহ বা সৎকাজ
তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান
চার. অপরকে ধৈর্যের উপদেশ দান
একজন প্রকৃত মুসলিম শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে না। শুধু নিজের সুখে সন্তুষ্ট থাকে না। যেমন সে নিজের দুঃখেই শুধু ব্যথিত হয় না। অন্যের কথাও চিন্তা করতে হয় তাকে। অন্যের কল্যাণে কাজ করতে হয়। অন্যের দু:খে দু:খী ও অন্যের সুখে সুখী হওয়া তার কর্তব্য।
এজন্য এ চারটি গুণের প্রথম দুটো গুণ নিজের কল্যাণের জন্য আর পরের গুণ দুটো হল অন্যের কল্যাণের জন্য।
প্রথম গুণ দুটো দ্বারা একজন মুসলিম নিজেকে পরিপূর্ণ করে, আর অপর গুণ দুটো দ্বারা অন্যকে পরিপূর্ণ করার প্রয়াস পায়।
প্রথম গুণটি হল ঈমান। এটা একটি ব্যাপক ভিত্তিক আদর্শের নাম। প্রখ্যাত তাফসীরবিদ মুজাহিদ রহ. বলেছেন, ঈমান হল, আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা, তার তাওহীদ-একত্ববাদকে সর্বক্ষেত্রে গ্রহণ করা। তার পক্ষ থেকে যা কিছু এসেছে সবগুলোকে মেনে নেয়া, সর্বক্ষেত্রেই তার কাছে জওয়াব দিতে হবে এ আদর্শ ধারণ করা। (তাফসীর তাবারী)
ঈমানের পর নেক আমল বা সৎকর্মের স্থান। সৎকর্ম সকল মানুষই কম বেশী করে থাকে। তবে ঈমান নামক আদর্শ তারা সকলে বহন করে না। ফলে তাদের আমল বা কর্মগুলো দিয়ে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। সৎকর্মশীল মানুষগুলো যদি ঈমান নামের আদর্শকে গ্রহণ করে তাহলে এ সৎকর্ম দ্বারা তারা দুনিয়াতে যেমন লাভবান হবে আখেরাতেও অনন্তকাল ধরে এ লাভ ভোগ করবে। আর যদি সৎকর্মের সাথে ঈমান নামের আদর্শ না থাকে, তাহলে সৎকর্ম দিয়ে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে কিছুটা লাভবান হলেও আখেরাতের স্থায়ী জীবনে এটা তাদের কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না। এ জন্য আল্লাহ রাববুল আলামীন প্রথমে ঈমানের কথা বলেছেন।
সৎকর্ম হল, যা কিছু ইসলাম করতে বলেছে সেগুলো পালন করা আর যা কিছু নিষেধ করেছে সেগুলো থেকে বিরত থাকা। হতে পারে তা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব বা নফল। আর বর্জনীয় বিষয়গুলো বর্জন করে চলা। হতে পারে তা হারাম, মাকরূহ।
যখন মানুষ ঈমান স্থাপন করল, তারপর সৎকর্ম করল, তখন সে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিল। নিজেকে লাভ, সফলতা ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করল। কিন্তু ঈমানদার হিসাবে তার দায়িত্ব কি শেষ হয়ে গেল? সে কি অন্য মানুষ সম্পর্কে উদাসীন ও বে-খবর থাকবে ? কিভাবে সে এত স্বার্থপর হবে? অন্য সকলকে কি সে তার যাপিত কল্যাণকর, সফল জীবনের প্রতি আহবান করবে না? কেনই বা করবে না? সে তো মুসলিম। তাদের আবির্ভাব তো ঘটানো হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য। আর এ জন্যই তো মুসলিমরা শ্রেষ্ঠ জাতি। আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেন বার বার:
(আরবি)
‘‘তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি, যাদেরকে মানুষের (কল্যাণের) জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
অতএব নিজেকে ঠিক করার পর তার দায়িত্ব এসে যাবে অন্যকে কল্যাণের পথে আহবান করা।
তাই ঈমান ও সৎকর্ম নামক গুণ দুটো উল্লেখ করার পর আল্লাহ তাআলা আরো দুটো গুণের কথা বললেন:
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
‘আর তারা পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’
সত্যের দিকে মানুষকে আহবান করা, এ আহবান করতে গিয়ে এবং এ আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে যে সকল বিপদ-মুসীবত, অত্যাচার-নির্যাতন আসবে তাতে ধৈর্য ধারণের জন্য একে অন্যকে উপদেশ দেয়া কর্তব্য।
প্রশ্ন হতে পারে সত্যের মধ্যেই তো ধৈর্য আছে। ধৈর্য তো হক বা সত্যের একটি। তাহলে এটা আলাদাভাবে উল্লেখ না করলে কি হত না?
কোন বিষয়ের গুরুত্ব বুঝাতে সাধারণভাবে তা উল্লেখ করা হলেও আবার বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। পরিভাষায় এটাকে বলা হয় :
ذكر الخاص بعد العام
কোন একটি বিষয় অর্জন করা সহজ হতে পারে কিন্তু সেটি ধরে রাখা ও তার উপর অটল থাকা ততটা সহজ হতে নাও পারে। আর এ জন্যই প্রয়োজন ধৈর্য ও সবরের।
এ সূরার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে, চারটি বিষয় অর্জন করা আমাদের জন্য জরুরী :
এক. ইলম বা জ্ঞানঅর্জন। ইলম ব্যতীত ঈমান স্থাপন সম্ভব নয়। ঈমানের জন্য কমপক্ষে তিনিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
(ক) আল্লাহ তাআলাকে জানতে হবে।
(খ) তাঁর রাসূল-কে জানতে হবে।
(গ) তাঁর প্রেরিত দীন-ধর্মকে জানতে হবে। এগুলো জানার পরই তাঁর উপর ঈমান আনা সম্ভব।
যেমন আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেন:
(আরবি)
‘‘অতএব জেনে নাও যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। এবং তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।’’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৯)
আমরা দেখলাম, এ আয়াতে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর প্রতি ঈমান আনার পূর্বে জানতে বলেছেন অর্থাৎ ইলম অর্জন করতে বলেছেন। তারপর ইস্তেগফার তথা আমল করতে বলেছেন।
দুই. ইলম অনুযায়ী কাজ করা। তিনিটি বিষয় -আল্লাহ, তাঁর রাসূল, ও তার দীন- সম্পর্কে ইলম অর্জন করে আল্লাহর প্রতি ঈমান স্থাপন করার পর সেই ইলম বা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করতে হবে।
তিন. অন্যকে এই ইলম ও আমলের দিকে আহবান করতে হবে বা দীনে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে।
চার. ইলম, ঈমান, আমল ও দাওয়াত দিতে গিয়ে যে সকল বিপদ-মুসীবত, দু:খ কষ্টের সম্মুখীন হবে তাতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিতে হবে। এছাড়া সকল প্রকার বিপদ মুসীবতে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
পাঁচ. আল্লাহ তাআলা ‘আল আসর’ তথা সময়, হায়াত, যুগের শপথ করেছেন। এ শপথের মাধ্যমে তিনি আমাদেরকে সময় ও জীবনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। মানুষের আয়ু কত মূল্যবান তা অনুধাবন করতে বলেছেন। তেমনিভাবে ‘আল আসর’ এর কসম করে যা বলেছেন সেটারও গুরুত্ব বুঝিয়েছেন তিনি। আর তা হল; মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত। মানুষ ধ্বংসের দিকে ধাবিত। তাই ক্ষতির পথ ছেড়ে তাকে লাভ ও কল্যাণের পথে আসতে হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা কিন্তু সময়টাকে বর্ণিত কাজগুলোতে লাগাচ্ছে না বলেই তারা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।
ছয়. আল্লাহ তাআলা যুগের শপথ করেছেন। যুগে যুগে যা কিছু ঘটেছে সেগুলো ইতিহাস। তাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা ও নসীহত। যুগে যুগে অত্যাচারী শক্তিধর জাতির পতন ঘটেছে। নির্যাতিত দুর্বল জাতির উত্থান হয়েছে। এ সবগুলোই মহান আল্লাহর একত্ববাদ ও রাজত্বের প্রমাণ।
সাত. মানুষ দুনিয়াতে আয়ু পায় ও শেষ করে বার্ধক্যে উপনীত হয় বটে কিন্তু সে লাভবান হয় না। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে, মানুষকে সত্যের পথে আহবান করেছে, ধৈর্য ধারণ করেছে তারা এর ব্যতিক্রম। তারা বৃদ্ধ অক্ষম হয়ে গেলেও তাদের নামে সৎকর্ম যোগ হতে থাকে। যেমন আবু মূছা আল আশআরী রা. কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একাধিকবার বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ
إذا كان العبد يعمل عملا صالحا فشغله عنه مرض أو سفر كتب له كصالح ما كان يعمل وهو صحيح مقيم .
‘‘বান্দা যদি নিয়মিতভাবে কোন নেক আমল সম্পাদন করে অত:পর সফর কিংবা অসুস্থতার কারণে সেই আমলটি করতে অসমর্থ হয়ে যায় তাহলে সুস্থ ও মুকিমাবস্থায় সম্পাদিত আমলের ন্যায়ই (তার আমলনামায়) নিয়মিত সাওয়াব লেখা হতে থাকবে। (বুখারী, জিহাদ অধ্যায়)
আট. মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কয়েকভাবে,
প্রথমত: কুফরী করার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন:
(আরবি)
‘‘আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি শির্ক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা যুমার,আয়াত: ৬৫)
দ্বিতীয়ত: মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম কম হয়ে গেলে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
(আরবি)
‘‘আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজদের ক্ষতি করল।’’ (সূরা আল মুমিনূন, আয়াত : ১০৩)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে,
(আরবি)
আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার আবাস হবে হাবিয়া। আর তোমাকে কিসে জানাবে হাবিয়া কি? প্রজ্জ্বলিত অগ্নি। (সূরা আল কারিআ, আয়াত: ৮-১১)
তৃতীয়ত: সত্য তথা ইসলামকে গ্রহণ না করে অন্য আদর্শ গ্রহণ কর। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
(আরবি)
‘‘আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
চতুর্থত: ধৈর্য ধারণ না করে হতাশ হয়ে পড়ার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
(আরবি)
‘‘মানুষের মধ্যে কতক এমন রয়েছে, যারা দ্বিধার সাথে আল্লাহর ইবাদাত করে। যদি তার কোন কল্যাণ হয় তবে সে তাতে প্রশান্ত হয়। আর যদি তার কোন বিপর্যয় ঘটে, তাহলে সে তার আসল চেহারায় ফিরে যায়। সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি হল সুস্পষ্ট ক্ষতি।’’ (সূরা আল হজ, আয়াত : ১১)
নয়. ঈমানের আভিধানিক অর্থ হল, সত্যায়ন করা, স্বীকার করা, মেনে নেয়া। পারিভাষিক অর্থ হল, হাদীসে জিবরীলে বর্ণিত ঈমানের যে ছয়টি ভিত্তি আছে তার সবগুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। একটু বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে বলা যায়, ঈমান হল: অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা, মুখ দিয়ে স্বীকার করা আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ দিয়ে বাস্তবায়ন করা।
তাই শুধু বিশ্বাস দিয়ে কাজ হবে না, যদি না সে বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করা হয়।
দশ. আমর বিল মারূফ ওয়ান নাহি আনিল মুনকার অর্থাৎ অন্যকে সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করার গুরুত্ব অনুধাবন করা যেতে পারে। সত্যের পথে মানুষকে আসার উপদেশ দেয়া মানে সৎকাজের আদেশ করা। এর জন্য প্রয়োজন হবে ধৈর্যের। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন লুকমান হাকীমের উপদেশ উল্লেখ করেছেন। সেখানেও এ বিষয়টি দেখা যায়। লুকমান তার ছেলেকে বলেছিলেনঃ
(আরবি)
‘‘হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’’ (সূরা লুকমান, আয়াত : ১৭)
এগার. আমলে সালেহ বা সৎকর্মের মধ্যে হুকুকুল্লাহ (আল্লাহর অধিকার) ও হুকুকুল ইবাদ (মানুষের অধিকার) দুটোই অন্তর্ভুক্ত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির গুরুত্ব দিলে কাজ হবে না। তাওহীদে বিশ্বাস, ঈমানে কামেল, ইবাদত-বন্দেগী, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব আমলগুলো যেমন সৎকর্ম তেমনি পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, সহযাত্রীদের সাথে সদাচারণ, তাদের অধিকারগুলো সংরক্ষণ করাও সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত। দেখুন আল কুরআনের বহু স্থানে আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজের অধিকার বর্ণনার সাথে সাথে মানুষের অধিকার সংরক্ষণের কথাও বলেছেন :
(আরবি)
‘‘তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।’’ (সূরা আন নিসা, আয়াত : ৩৬)
বার. সবর বা ধৈর্য তিন প্রকার,
(ক) আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য ধারণ করা। তার আদেশ নির্দেশগুলো মানতে গিয়ে অধৈর্য না হওয়া। এটাকে বলা হয়:
الصبر على طاعة الله
(খ) আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বাঁচতে ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ তাআলা যা কিছু হারাম করেছেন সেগুলোর ধারে কাছে না গিয়ে ধৈর্য অবলম্বন করা। এটাকে বলা হয়:
الصبر على أقدار الله المؤلمة
(গ) আপতিত বিপদ-মুসীবতে ধৈর্য ধারণ করা। এটাকে বলা হয়:
الصبر على أقدار الله المؤلمة
তের. সূরা আল বালাদেও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়ার নির্দেশ এসেছে, সেখানে এর সাথে আরও একটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।
দেখুন:
(আরবি)
‘‘অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের। তারাই সৌভাগ্যবান।’’ (সূরা আল বালাদ: ১৭-১৮)
এ আয়াতে মুমিনদের কিছু গুণাবলি উল্লেখ করতে যেয়ে আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন, তারা ধৈর্য ধারণ আর পরস্পরকে দয়া-অনুগ্রহ করার উপদেশ দেয়। তারা ডানদিকের দল। তাই একজন মুমিন যেমন নিজে ধৈর্য ধারণ করবে অন্যকেও ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেবে, তেমনি সে নিজে দয়া অনুগ্রহ করবে অন্যকেও দয়া অনুগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
তাই আমাদের সকলের উচিত হবে সৎ কাজে অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করা।
এক. ইলম বা জ্ঞানঅর্জন। ইলম ব্যতীত ঈমান স্থাপন সম্ভব নয়। ঈমানের জন্য কমপক্ষে তিনিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
(ক) আল্লাহ তাআলাকে জানতে হবে।
(খ) তাঁর রাসূল-কে জানতে হবে।
(গ) তাঁর প্রেরিত দীন-ধর্মকে জানতে হবে। এগুলো জানার পরই তাঁর উপর ঈমান আনা সম্ভব।
যেমন আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেন:
(আরবি)
‘‘অতএব জেনে নাও যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। এবং তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।’’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৯)
আমরা দেখলাম, এ আয়াতে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর প্রতি ঈমান আনার পূর্বে জানতে বলেছেন অর্থাৎ ইলম অর্জন করতে বলেছেন। তারপর ইস্তেগফার তথা আমল করতে বলেছেন।
দুই. ইলম অনুযায়ী কাজ করা। তিনিটি বিষয় -আল্লাহ, তাঁর রাসূল, ও তার দীন- সম্পর্কে ইলম অর্জন করে আল্লাহর প্রতি ঈমান স্থাপন করার পর সেই ইলম বা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করতে হবে।
তিন. অন্যকে এই ইলম ও আমলের দিকে আহবান করতে হবে বা দীনে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে।
চার. ইলম, ঈমান, আমল ও দাওয়াত দিতে গিয়ে যে সকল বিপদ-মুসীবত, দু:খ কষ্টের সম্মুখীন হবে তাতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিতে হবে। এছাড়া সকল প্রকার বিপদ মুসীবতে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
পাঁচ. আল্লাহ তাআলা ‘আল আসর’ তথা সময়, হায়াত, যুগের শপথ করেছেন। এ শপথের মাধ্যমে তিনি আমাদেরকে সময় ও জীবনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। মানুষের আয়ু কত মূল্যবান তা অনুধাবন করতে বলেছেন। তেমনিভাবে ‘আল আসর’ এর কসম করে যা বলেছেন সেটারও গুরুত্ব বুঝিয়েছেন তিনি। আর তা হল; মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত। মানুষ ধ্বংসের দিকে ধাবিত। তাই ক্ষতির পথ ছেড়ে তাকে লাভ ও কল্যাণের পথে আসতে হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা কিন্তু সময়টাকে বর্ণিত কাজগুলোতে লাগাচ্ছে না বলেই তারা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।
ছয়. আল্লাহ তাআলা যুগের শপথ করেছেন। যুগে যুগে যা কিছু ঘটেছে সেগুলো ইতিহাস। তাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা ও নসীহত। যুগে যুগে অত্যাচারী শক্তিধর জাতির পতন ঘটেছে। নির্যাতিত দুর্বল জাতির উত্থান হয়েছে। এ সবগুলোই মহান আল্লাহর একত্ববাদ ও রাজত্বের প্রমাণ।
সাত. মানুষ দুনিয়াতে আয়ু পায় ও শেষ করে বার্ধক্যে উপনীত হয় বটে কিন্তু সে লাভবান হয় না। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে, মানুষকে সত্যের পথে আহবান করেছে, ধৈর্য ধারণ করেছে তারা এর ব্যতিক্রম। তারা বৃদ্ধ অক্ষম হয়ে গেলেও তাদের নামে সৎকর্ম যোগ হতে থাকে। যেমন আবু মূছা আল আশআরী রা. কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একাধিকবার বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ
إذا كان العبد يعمل عملا صالحا فشغله عنه مرض أو سفر كتب له كصالح ما كان يعمل وهو صحيح مقيم .
‘‘বান্দা যদি নিয়মিতভাবে কোন নেক আমল সম্পাদন করে অত:পর সফর কিংবা অসুস্থতার কারণে সেই আমলটি করতে অসমর্থ হয়ে যায় তাহলে সুস্থ ও মুকিমাবস্থায় সম্পাদিত আমলের ন্যায়ই (তার আমলনামায়) নিয়মিত সাওয়াব লেখা হতে থাকবে। (বুখারী, জিহাদ অধ্যায়)
আট. মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কয়েকভাবে,
প্রথমত: কুফরী করার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন:
(আরবি)
‘‘আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি শির্ক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা যুমার,আয়াত: ৬৫)
দ্বিতীয়ত: মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম কম হয়ে গেলে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
(আরবি)
‘‘আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজদের ক্ষতি করল।’’ (সূরা আল মুমিনূন, আয়াত : ১০৩)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে,
(আরবি)
আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার আবাস হবে হাবিয়া। আর তোমাকে কিসে জানাবে হাবিয়া কি? প্রজ্জ্বলিত অগ্নি। (সূরা আল কারিআ, আয়াত: ৮-১১)
তৃতীয়ত: সত্য তথা ইসলামকে গ্রহণ না করে অন্য আদর্শ গ্রহণ কর। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
(আরবি)
‘‘আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
চতুর্থত: ধৈর্য ধারণ না করে হতাশ হয়ে পড়ার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
(আরবি)
‘‘মানুষের মধ্যে কতক এমন রয়েছে, যারা দ্বিধার সাথে আল্লাহর ইবাদাত করে। যদি তার কোন কল্যাণ হয় তবে সে তাতে প্রশান্ত হয়। আর যদি তার কোন বিপর্যয় ঘটে, তাহলে সে তার আসল চেহারায় ফিরে যায়। সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি হল সুস্পষ্ট ক্ষতি।’’ (সূরা আল হজ, আয়াত : ১১)
নয়. ঈমানের আভিধানিক অর্থ হল, সত্যায়ন করা, স্বীকার করা, মেনে নেয়া। পারিভাষিক অর্থ হল, হাদীসে জিবরীলে বর্ণিত ঈমানের যে ছয়টি ভিত্তি আছে তার সবগুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। একটু বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে বলা যায়, ঈমান হল: অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা, মুখ দিয়ে স্বীকার করা আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ দিয়ে বাস্তবায়ন করা।
তাই শুধু বিশ্বাস দিয়ে কাজ হবে না, যদি না সে বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করা হয়।
দশ. আমর বিল মারূফ ওয়ান নাহি আনিল মুনকার অর্থাৎ অন্যকে সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করার গুরুত্ব অনুধাবন করা যেতে পারে। সত্যের পথে মানুষকে আসার উপদেশ দেয়া মানে সৎকাজের আদেশ করা। এর জন্য প্রয়োজন হবে ধৈর্যের। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন লুকমান হাকীমের উপদেশ উল্লেখ করেছেন। সেখানেও এ বিষয়টি দেখা যায়। লুকমান তার ছেলেকে বলেছিলেনঃ
(আরবি)
‘‘হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’’ (সূরা লুকমান, আয়াত : ১৭)
এগার. আমলে সালেহ বা সৎকর্মের মধ্যে হুকুকুল্লাহ (আল্লাহর অধিকার) ও হুকুকুল ইবাদ (মানুষের অধিকার) দুটোই অন্তর্ভুক্ত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির গুরুত্ব দিলে কাজ হবে না। তাওহীদে বিশ্বাস, ঈমানে কামেল, ইবাদত-বন্দেগী, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব আমলগুলো যেমন সৎকর্ম তেমনি পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, সহযাত্রীদের সাথে সদাচারণ, তাদের অধিকারগুলো সংরক্ষণ করাও সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত। দেখুন আল কুরআনের বহু স্থানে আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজের অধিকার বর্ণনার সাথে সাথে মানুষের অধিকার সংরক্ষণের কথাও বলেছেন :
(আরবি)
‘‘তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।’’ (সূরা আন নিসা, আয়াত : ৩৬)
বার. সবর বা ধৈর্য তিন প্রকার,
(ক) আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য ধারণ করা। তার আদেশ নির্দেশগুলো মানতে গিয়ে অধৈর্য না হওয়া। এটাকে বলা হয়:
الصبر على طاعة الله
(খ) আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বাঁচতে ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ তাআলা যা কিছু হারাম করেছেন সেগুলোর ধারে কাছে না গিয়ে ধৈর্য অবলম্বন করা। এটাকে বলা হয়:
الصبر على أقدار الله المؤلمة
(গ) আপতিত বিপদ-মুসীবতে ধৈর্য ধারণ করা। এটাকে বলা হয়:
الصبر على أقدار الله المؤلمة
তের. সূরা আল বালাদেও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়ার নির্দেশ এসেছে, সেখানে এর সাথে আরও একটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।
দেখুন:
(আরবি)
‘‘অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের। তারাই সৌভাগ্যবান।’’ (সূরা আল বালাদ: ১৭-১৮)
এ আয়াতে মুমিনদের কিছু গুণাবলি উল্লেখ করতে যেয়ে আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন, তারা ধৈর্য ধারণ আর পরস্পরকে দয়া-অনুগ্রহ করার উপদেশ দেয়। তারা ডানদিকের দল। তাই একজন মুমিন যেমন নিজে ধৈর্য ধারণ করবে অন্যকেও ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেবে, তেমনি সে নিজে দয়া অনুগ্রহ করবে অন্যকেও দয়া অনুগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
তাই আমাদের সকলের উচিত হবে সৎ কাজে অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করা।
1 - عن أَبي عبدِ الرحمن زيدِ بن خالدٍ الْجُهَنيِّ رضيَ اللَّه عنه قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : مَنْ جهَّزَ غَازِياً في سَبِيلِ اللَّه فَقَدْ غَزَا وَمَنْ خَلَفَ غَازِياً في أَهْلِهِ بِخَيْرٍ فَقَدْ غَزَا» متفقٌ عليه .
আবু আব্দুর রহমান খালেদ আল জুহানী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে উপকরণ দিয়ে প্রস্ত্তত করবে সে নিজেই যেন যুদ্ধে অংশ নিল। আর যে ব্যক্তি কোন যুদ্ধরত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার পরিবার পরিজনের সাথে কল্যাণমূলক প্রতিনিধিত্ব করবে সেও যেন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করল। (বুখারী ও মুসলিম)
আবু আব্দুর রহমান খালেদ আল জুহানী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে উপকরণ দিয়ে প্রস্ত্তত করবে সে নিজেই যেন যুদ্ধে অংশ নিল। আর যে ব্যক্তি কোন যুদ্ধরত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার পরিবার পরিজনের সাথে কল্যাণমূলক প্রতিনিধিত্ব করবে সেও যেন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করল। (বুখারী ও মুসলিম)
এক. আল্লাহর পথে জিহাদে অংশ গ্রহণ করার গুরুত্ব ও ফজিলত প্রমাণিত হল।
দুই. আল্লাহর পথে জিহাদের উপকরণ হল, যানবাহন, খাদ্য-খাবার ও অস্ত্র।
তিন. যে ব্যক্তি অন্যকে জিহাদে অংশ নিতে সহযোগিতা করবে সে জিহাদে অংশ নেয়ার সওয়াব পাবে।
চার. জিহাদে অংশ গ্রহণকারীকে দুভাবে সহযোগিতা করা যায়। প্রথমত: তাকে উপকরণ দিয়ে দ্বিতীয়ত: তার অনুপস্থিতিতে তার পরিবার-পরিজনের দেখা শুনা করে। যে কোন প্রকারের সহযোগিতাই করা হোক না কেন সহযোগিতাকারী জিহাদে সরাসরি অংশ না নিয়েও জিহাদের পূর্ণ সওয়াব পেয়ে যাবে।
পাঁচ. এমনিভাবে যে কোন ভাল কাজে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে, সাহায্যকারী সেই কাজটি নিজে সম্পাদন না করেও তা করার সওয়াব অর্জন করতে পারে। যেমন কোন ব্যক্তি মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করল না। কিন্তু মাদরাসার ছাত্রদের কিতাব, পোশাক, খাবার, টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করল। উক্ত ব্যক্তি মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনের সওয়াব পেয়ে যাবে।
দুই. আল্লাহর পথে জিহাদের উপকরণ হল, যানবাহন, খাদ্য-খাবার ও অস্ত্র।
তিন. যে ব্যক্তি অন্যকে জিহাদে অংশ নিতে সহযোগিতা করবে সে জিহাদে অংশ নেয়ার সওয়াব পাবে।
চার. জিহাদে অংশ গ্রহণকারীকে দুভাবে সহযোগিতা করা যায়। প্রথমত: তাকে উপকরণ দিয়ে দ্বিতীয়ত: তার অনুপস্থিতিতে তার পরিবার-পরিজনের দেখা শুনা করে। যে কোন প্রকারের সহযোগিতাই করা হোক না কেন সহযোগিতাকারী জিহাদে সরাসরি অংশ না নিয়েও জিহাদের পূর্ণ সওয়াব পেয়ে যাবে।
পাঁচ. এমনিভাবে যে কোন ভাল কাজে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে, সাহায্যকারী সেই কাজটি নিজে সম্পাদন না করেও তা করার সওয়াব অর্জন করতে পারে। যেমন কোন ব্যক্তি মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করল না। কিন্তু মাদরাসার ছাত্রদের কিতাব, পোশাক, খাবার, টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করল। উক্ত ব্যক্তি মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনের সওয়াব পেয়ে যাবে।
2 - وعن أَبِي سعيدٍ الخُدْرِيِّ رضي اللَّه عنهُ أَنَّ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، بَعَثَ بَعْثاً إِلى بَني لِحيانَ مِنْ هُذَيْلٍ فقالَ : « لِيَنْبعِثْ مِنْ كُلِّ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا وَالأَجْرُ بَيْنَهُمَا » رواه مسلم .
আবু সায়ীদ আল খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজাইল গোত্রের অন্তর্ভুক্ত লেহইয়ান গোত্রের বিরুদ্ধে একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। তিনি বলেন: প্রত্যেক দু ব্যক্তির মধ্যে একজন জিহাদে অংশ গ্রহণ করবে। কিন্তু সওয়াব উভয়কে দেয়া হবে। (মুসলিম)
আবু সায়ীদ আল খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজাইল গোত্রের অন্তর্ভুক্ত লেহইয়ান গোত্রের বিরুদ্ধে একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। তিনি বলেন: প্রত্যেক দু ব্যক্তির মধ্যে একজন জিহাদে অংশ গ্রহণ করবে। কিন্তু সওয়াব উভয়কে দেয়া হবে। (মুসলিম)
এক. জিহাদ ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
দুই. জিহাদে অংশ গ্রহণ করতে যেয়ে দেশ ও পরিবার একেবারে খালী করে যাওয়া উচিত নয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: দু’জনের একজন অবশ্যই জিহাদে বের হবে। একজন যাবে অন্যজন পরিবার পরিজন দেখাশুনা করবে। যে দেখাশুনা করবে সে জিহাদে অংশ নিতে সহযোগিতা করার জন্য জিহাদের সওয়াব পাবে।
দুই. জিহাদে অংশ গ্রহণ করতে যেয়ে দেশ ও পরিবার একেবারে খালী করে যাওয়া উচিত নয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: দু’জনের একজন অবশ্যই জিহাদে বের হবে। একজন যাবে অন্যজন পরিবার পরিজন দেখাশুনা করবে। যে দেখাশুনা করবে সে জিহাদে অংশ নিতে সহযোগিতা করার জন্য জিহাদের সওয়াব পাবে।
3 - وعن ابنِ عباسٍ رضي اللَّه عنهما أَنَّ رسُولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم لَقِيَ ركْباً بالرَّوْحَاءِ فقال : «مَنِ الْقوْمُ ؟ » قالُوا : المُسْلِمُونَ ، فَقَالُوا : مَنْ أَنْتَ ؟ قال : «رسولُ اللَّه» فَرَفَعَتْ إِلَيْهِ امْرَأَةٌ صَبِيًّا فَقَالَتْ : أَلهَذَا حَجٌّ ؟ قال : « نَعمْ وَلَكِ أَجْرٌ » رواه مسلم .
ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাওহা নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একদল অশ্বারোহী সৈনিকের সাক্ষাত হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: তোমরা কারা? তারা বলল, আমরা মুসলিম। তারা জিজ্ঞেস করল, আপনি কে ? তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল। অতপর জনৈকা নারী একটি শিশুকে তাঁর সামনে উচু করে ধরে বলল, এ শিশুর কি হজ হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ, আর তোমার জন্য সওয়াব রয়েছে। (মুসলিম)
ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাওহা নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একদল অশ্বারোহী সৈনিকের সাক্ষাত হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: তোমরা কারা? তারা বলল, আমরা মুসলিম। তারা জিজ্ঞেস করল, আপনি কে ? তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল। অতপর জনৈকা নারী একটি শিশুকে তাঁর সামনে উচু করে ধরে বলল, এ শিশুর কি হজ হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ, আর তোমার জন্য সওয়াব রয়েছে। (মুসলিম)
এক. কোন অপরিচিত দল বা ব্যক্তিকে দেখলে তার পরিচয় জানতে চাওয়া ভাল কাজ।
দুই. নারীটি যেহেতু হজ করার ক্ষেত্রে শিশুটিকে সাহায্য করবে এ জন্য সে তার হজের সওয়াবও লাভ করবে। অতএব বুঝা গেল, ভাল কাজে সহযোগিতা করলে সহযোগিতাকারী অবশ্যই সেই কাজটি করার সওয়াব লাভ করবে।
তিন. অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চারা হজ করলে হজটি নফল হজ হিসাবে আদায় হবে।
চার. শিশুরা যদি ইহরাম বেঁধে হজ শুরু করে তবে তাকে হজের সব কার্যক্রম অবশ্যই পালন করতে হবে। অধিকাংশ ইমামগণ এ মতই দিয়েছেন। তবে ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন, এ অবস্থায় শিশুর জন্য হজের সকল কাজ সম্পাদন করা জরুরী নয়। কারণ সে আদিষ্ট নয়। ইমাম ইবনু তাইমিয়া ও ইবনুল কায়্যিম রহ. এ মতের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
পাঁচ. যখনই মানুষ জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাবে তখনই সে সেই সুযোগ গ্রহণ করবে। যেমন সাহাবী মহিলাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখার পর সাথে সাথে মাসআলা জিজ্ঞেস করে নিয়েছেন। এমনিভাবে কোন আলেমের দেখা হলে তার থেকে জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ হাত ছাড়া করা ঠিক হবে না।
দুই. নারীটি যেহেতু হজ করার ক্ষেত্রে শিশুটিকে সাহায্য করবে এ জন্য সে তার হজের সওয়াবও লাভ করবে। অতএব বুঝা গেল, ভাল কাজে সহযোগিতা করলে সহযোগিতাকারী অবশ্যই সেই কাজটি করার সওয়াব লাভ করবে।
তিন. অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চারা হজ করলে হজটি নফল হজ হিসাবে আদায় হবে।
চার. শিশুরা যদি ইহরাম বেঁধে হজ শুরু করে তবে তাকে হজের সব কার্যক্রম অবশ্যই পালন করতে হবে। অধিকাংশ ইমামগণ এ মতই দিয়েছেন। তবে ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন, এ অবস্থায় শিশুর জন্য হজের সকল কাজ সম্পাদন করা জরুরী নয়। কারণ সে আদিষ্ট নয়। ইমাম ইবনু তাইমিয়া ও ইবনুল কায়্যিম রহ. এ মতের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
পাঁচ. যখনই মানুষ জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাবে তখনই সে সেই সুযোগ গ্রহণ করবে। যেমন সাহাবী মহিলাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখার পর সাথে সাথে মাসআলা জিজ্ঞেস করে নিয়েছেন। এমনিভাবে কোন আলেমের দেখা হলে তার থেকে জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ হাত ছাড়া করা ঠিক হবে না।
4 - وَعَنْ أَبِي موسى الأَشْعَرِيِّ رضيَ اللَّهُ عنه ، عن النبيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم أَنَّهُ قال : « الخَازِنُ المُسْلِمُ الأَمِينُ الذي يُنَفِّذُ ما أُمِرَ بِهِ ، فَيُعْطِيهِ كَامِلاً مَوفَّراً ، طَيِّبَةً بِهِ نَفْسُهُ فَيَدْفَعُهُ إِلى الذي أُمِرَ لَهُ بِهِ أَحَدُ المُتَصَدِّقَيْنِ » متفقٌ عليه .
وفي رواية : « الذي يُعْطِي مَا أُمِرَ بِهِ » وضَبطُوا « المُتَصدِّقَيْنِ » بفتح القاف مع كسر النون على التَّثْنِيَةِ ، وعَكْسُهُ عَلَى الجمْعِ وكلاهُمَا صَحِيحٌ .
আবু মূসা আল আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মুসলিম, আমানতদার কোষাধ্যক্ষ, যে বাস্তবায়ন করে যা তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর সন্তুষ্ট ও প্রফুল্ল চিত্তে তা দিয়ে দেয়। তারপর যার নিকট অর্পন করার নির্দেশ দেয়া হয় সে তা অর্পন করে, তাহলে সে একজন সদকাকারী বলে গণ্য হবে। অপর একটি বর্ণনায় আছে, সে দুজন সদকাকারীর একজন বলে গণ্য হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
وفي رواية : « الذي يُعْطِي مَا أُمِرَ بِهِ » وضَبطُوا « المُتَصدِّقَيْنِ » بفتح القاف مع كسر النون على التَّثْنِيَةِ ، وعَكْسُهُ عَلَى الجمْعِ وكلاهُمَا صَحِيحٌ .
আবু মূসা আল আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মুসলিম, আমানতদার কোষাধ্যক্ষ, যে বাস্তবায়ন করে যা তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর সন্তুষ্ট ও প্রফুল্ল চিত্তে তা দিয়ে দেয়। তারপর যার নিকট অর্পন করার নির্দেশ দেয়া হয় সে তা অর্পন করে, তাহলে সে একজন সদকাকারী বলে গণ্য হবে। অপর একটি বর্ণনায় আছে, সে দুজন সদকাকারীর একজন বলে গণ্য হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
এক. যে কোষাধ্যক্ষ ব্যক্তি হাদীসে বর্ণিত মর্যাদা অর্জন করবে তার চারটি গুণ থাকা অপরিহার্য
(ক) তাকে মুসলিম হতে হবে। যদি মুসলিম না হয় তাহলে তার আমানতদারীর কোন মূল্য নাই।
(খ) তাকে আমানতদার হতে হবে। দুর্নীতিপরায়ণ হলে কাজ হবে না। (গ) যা তাকে নির্দেশ দেয়া হবে তা সে পালন করবে। অর্থাৎ সে নির্দেশ পালনে অলস হবে না। তাই অলস আমানতদার এ মর্যাদা অর্জন করতে পারবে না।
(ঘ) সে যে কাজগুলো সম্পাদন করবে তা মন থেকে করতে হবে। সুন্দর করে সম্পাদন করতে হবে। যদি কোন কোষাধ্যক্ষ এ চারটি গুণ অর্জন করে তাহলে তার মাধ্যমে যত টাকা পয়সা বন্টন হবে তা সদকা করার সওয়াব সে লাভ করবে।
দুই. কোষাধ্যক্ষ সদকা না করেও সদকার সওয়াব লাভ করবে এ কারণে যে, সে ভাল কাজে আমানতদারী ও নিষ্ঠার মাধ্যমে সহযোগিতা করেছে।
তিন.এ হাদীসে একজন আদর্শবান ক্যাশিয়ারের কি কি গুণ থাকা দরকার তার একটি দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চার. আমানতদারীর মর্যাদা ও ফজিলত জানা গেল।
বি: দ্র: ইমাম নববী রহ. সংকলিত রিয়াদুস সালেহীন কিতাব থেকে একটি অধ্যায়ের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা।
সমাপ্ত
(ক) তাকে মুসলিম হতে হবে। যদি মুসলিম না হয় তাহলে তার আমানতদারীর কোন মূল্য নাই।
(খ) তাকে আমানতদার হতে হবে। দুর্নীতিপরায়ণ হলে কাজ হবে না। (গ) যা তাকে নির্দেশ দেয়া হবে তা সে পালন করবে। অর্থাৎ সে নির্দেশ পালনে অলস হবে না। তাই অলস আমানতদার এ মর্যাদা অর্জন করতে পারবে না।
(ঘ) সে যে কাজগুলো সম্পাদন করবে তা মন থেকে করতে হবে। সুন্দর করে সম্পাদন করতে হবে। যদি কোন কোষাধ্যক্ষ এ চারটি গুণ অর্জন করে তাহলে তার মাধ্যমে যত টাকা পয়সা বন্টন হবে তা সদকা করার সওয়াব সে লাভ করবে।
দুই. কোষাধ্যক্ষ সদকা না করেও সদকার সওয়াব লাভ করবে এ কারণে যে, সে ভাল কাজে আমানতদারী ও নিষ্ঠার মাধ্যমে সহযোগিতা করেছে।
তিন.এ হাদীসে একজন আদর্শবান ক্যাশিয়ারের কি কি গুণ থাকা দরকার তার একটি দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চার. আমানতদারীর মর্যাদা ও ফজিলত জানা গেল।
বি: দ্র: ইমাম নববী রহ. সংকলিত রিয়াদুস সালেহীন কিতাব থেকে একটি অধ্যায়ের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা।
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন