HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কল্যাণ ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরে সহযোগিতা করা

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

সূরা থেকে আমরা আরো যা শিখতে পারি:
এ সূরার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে, চারটি বিষয় অর্জন করা আমাদের জন্য জরুরী :

এক. ইলম বা জ্ঞানঅর্জন। ইলম ব্যতীত ঈমান স্থাপন সম্ভব নয়। ঈমানের জন্য কমপক্ষে তিনিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

(ক) আল্লাহ তাআলাকে জানতে হবে।

(খ) তাঁর রাসূল-কে জানতে হবে।

(গ) তাঁর প্রেরিত দীন-ধর্মকে জানতে হবে। এগুলো জানার পরই তাঁর উপর ঈমান আনা সম্ভব।

যেমন আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেন:

(আরবি)

‘‘অতএব জেনে নাও যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। এবং তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।’’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৯)

আমরা দেখলাম, এ আয়াতে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর প্রতি ঈমান আনার পূর্বে জানতে বলেছেন অর্থাৎ ইলম অর্জন করতে বলেছেন। তারপর ইস্তেগফার তথা আমল করতে বলেছেন।

দুই. ইলম অনুযায়ী কাজ করা। তিনিটি বিষয় -আল্লাহ, তাঁর রাসূল, ও তার দীন- সম্পর্কে ইলম অর্জন করে আল্লাহর প্রতি ঈমান স্থাপন করার পর সেই ইলম বা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করতে হবে।

তিন. অন্যকে এই ইলম ও আমলের দিকে আহবান করতে হবে বা দীনে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে।

চার. ইলম, ঈমান, আমল ও দাওয়াত দিতে গিয়ে যে সকল বিপদ-মুসীবত, দু:খ কষ্টের সম্মুখীন হবে তাতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিতে হবে। এছাড়া সকল প্রকার বিপদ মুসীবতে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও অন্যকে ধৈর্য ধারণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

পাঁচ. আল্লাহ তাআলা ‘আল আসর’ তথা সময়, হায়াত, যুগের শপথ করেছেন। এ শপথের মাধ্যমে তিনি আমাদেরকে সময় ও জীবনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। মানুষের আয়ু কত মূল্যবান তা অনুধাবন করতে বলেছেন। তেমনিভাবে ‘আল আসর’ এর কসম করে যা বলেছেন সেটারও গুরুত্ব বুঝিয়েছেন তিনি। আর তা হল; মানুষ ক্ষতিতে নিপতিত। মানুষ ধ্বংসের দিকে ধাবিত। তাই ক্ষতির পথ ছেড়ে তাকে লাভ ও কল্যাণের পথে আসতে হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা কিন্তু সময়টাকে বর্ণিত কাজগুলোতে লাগাচ্ছে না বলেই তারা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।

ছয়. আল্লাহ তাআলা যুগের শপথ করেছেন। যুগে যুগে যা কিছু ঘটেছে সেগুলো ইতিহাস। তাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা ও নসীহত। যুগে যুগে অত্যাচারী শক্তিধর জাতির পতন ঘটেছে। নির্যাতিত দুর্বল জাতির উত্থান হয়েছে। এ সবগুলোই মহান আল্লাহর একত্ববাদ ও রাজত্বের প্রমাণ।

সাত. মানুষ দুনিয়াতে আয়ু পায় ও শেষ করে বার্ধক্যে উপনীত হয় বটে কিন্তু সে লাভবান হয় না। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে, মানুষকে সত্যের পথে আহবান করেছে, ধৈর্য ধারণ করেছে তারা এর ব্যতিক্রম। তারা বৃদ্ধ অক্ষম হয়ে গেলেও তাদের নামে সৎকর্ম যোগ হতে থাকে। যেমন আবু মূছা আল আশআরী রা. কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একাধিকবার বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ

إذا كان العبد يعمل عملا صالحا فشغله عنه مرض أو سفر كتب له كصالح ما كان يعمل وهو صحيح مقيم .

‘‘বান্দা যদি নিয়মিতভাবে কোন নেক আমল সম্পাদন করে অত:পর সফর কিংবা অসুস্থতার কারণে সেই আমলটি করতে অসমর্থ হয়ে যায় তাহলে সুস্থ ও মুকিমাবস্থায় সম্পাদিত আমলের ন্যায়ই (তার আমলনামায়) নিয়মিত সাওয়াব লেখা হতে থাকবে। (বুখারী, জিহাদ অধ্যায়)

আট. মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কয়েকভাবে,

প্রথমত: কুফরী করার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন:

(আরবি)

‘‘আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি শির্ক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা যুমার,আয়াত: ৬৫)

দ্বিতীয়ত: মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম কম হয়ে গেলে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

(আরবি)

‘‘আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজদের ক্ষতি করল।’’ (সূরা আল মুমিনূন, আয়াত : ১০৩)

অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে,

(আরবি)

আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার আবাস হবে হাবিয়া। আর তোমাকে কিসে জানাবে হাবিয়া কি? প্রজ্জ্বলিত অগ্নি। (সূরা আল কারিআ, আয়াত: ৮-১১)

তৃতীয়ত: সত্য তথা ইসলামকে গ্রহণ না করে অন্য আদর্শ গ্রহণ কর। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ

(আরবি)

‘‘আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)

চতুর্থত: ধৈর্য ধারণ না করে হতাশ হয়ে পড়ার মাধ্যমে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ

(আরবি)

‘‘মানুষের মধ্যে কতক এমন রয়েছে, যারা দ্বিধার সাথে আল্লাহর ইবাদাত করে। যদি তার কোন কল্যাণ হয় তবে সে তাতে প্রশান্ত হয়। আর যদি তার কোন বিপর্যয় ঘটে, তাহলে সে তার আসল চেহারায় ফিরে যায়। সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি হল সুস্পষ্ট ক্ষতি।’’ (সূরা আল হজ, আয়াত : ১১)

নয়. ঈমানের আভিধানিক অর্থ হল, সত্যায়ন করা, স্বীকার করা, মেনে নেয়া। পারিভাষিক অর্থ হল, হাদীসে জিবরীলে বর্ণিত ঈমানের যে ছয়টি ভিত্তি আছে তার সবগুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। একটু বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে বলা যায়, ঈমান হল: অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা, মুখ দিয়ে স্বীকার করা আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ দিয়ে বাস্তবায়ন করা।

তাই শুধু বিশ্বাস দিয়ে কাজ হবে না, যদি না সে বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করা হয়।

দশ. আমর বিল মারূফ ওয়ান নাহি আনিল মুনকার অর্থাৎ অন্যকে সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করার গুরুত্ব অনুধাবন করা যেতে পারে। সত্যের পথে মানুষকে আসার উপদেশ দেয়া মানে সৎকাজের আদেশ করা। এর জন্য প্রয়োজন হবে ধৈর্যের। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন লুকমান হাকীমের উপদেশ উল্লেখ করেছেন। সেখানেও এ বিষয়টি দেখা যায়। লুকমান তার ছেলেকে বলেছিলেনঃ

(আরবি)

‘‘হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ।’’ (সূরা লুকমান, আয়াত : ১৭)

এগার. আমলে সালেহ বা সৎকর্মের মধ্যে হুকুকুল্লাহ (আল্লাহর অধিকার) ও হুকুকুল ইবাদ (মানুষের অধিকার) দুটোই অন্তর্ভুক্ত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির গুরুত্ব দিলে কাজ হবে না। তাওহীদে বিশ্বাস, ঈমানে কামেল, ইবাদত-বন্দেগী, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব আমলগুলো যেমন সৎকর্ম তেমনি পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, সহযাত্রীদের সাথে সদাচারণ, তাদের অধিকারগুলো সংরক্ষণ করাও সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত। দেখুন আল কুরআনের বহু স্থানে আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজের অধিকার বর্ণনার সাথে সাথে মানুষের অধিকার সংরক্ষণের কথাও বলেছেন :

(আরবি)

‘‘তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী, অনাত্মীয়- প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।’’ (সূরা আন নিসা, আয়াত : ৩৬)

বার. সবর বা ধৈর্য তিন প্রকার,

(ক) আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য ধারণ করা। তার আদেশ নির্দেশগুলো মানতে গিয়ে অধৈর্য না হওয়া। এটাকে বলা হয়:

الصبر على طاعة الله

(খ) আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বাঁচতে ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ তাআলা যা কিছু হারাম করেছেন সেগুলোর ধারে কাছে না গিয়ে ধৈর্য অবলম্বন করা। এটাকে বলা হয়:

الصبر على أقدار الله المؤلمة

(গ) আপতিত বিপদ-মুসীবতে ধৈর্য ধারণ করা। এটাকে বলা হয়:

الصبر على أقدار الله المؤلمة

তের. সূরা আল বালাদেও অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়ার নির্দেশ এসেছে, সেখানে এর সাথে আরও একটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।

দেখুন:

(আরবি)

‘‘অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের। তারাই সৌভাগ্যবান।’’ (সূরা আল বালাদ: ১৭-১৮)

এ আয়াতে মুমিনদের কিছু গুণাবলি উল্লেখ করতে যেয়ে আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন, তারা ধৈর্য ধারণ আর পরস্পরকে দয়া-অনুগ্রহ করার উপদেশ দেয়। তারা ডানদিকের দল। তাই একজন মুমিন যেমন নিজে ধৈর্য ধারণ করবে অন্যকেও ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেবে, তেমনি সে নিজে দয়া অনুগ্রহ করবে অন্যকেও দয়া অনুগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।

তাই আমাদের সকলের উচিত হবে সৎ কাজে অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন