মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
হাফেয ইবনে কাসীর রহ. বলেন, জুমু’আকে জুমু‘আ করে নাম করণ করা হয়েছে। কারণ হল, জুমু‘আ শব্দটি الجمع ‘একত্র হওয়া’ শব্দ হতে নির্গত। মুসলিমরা প্রতি সপ্তাহে এ দিনে আল্লাহর মহান আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে মসজিদে একত্র হয়ে থাকেন। তাই এ দিনকে জুমু’আ বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে এ দিন একত্র হওয়ার নির্দেশ দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“হে মুমিনগণ, যখন জুমু‘আর দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও”। [সূরা আল্-জুমু‘আ, আয়াত: ৯]
আয়াতে السعي দ্বারা উদ্দেশ্য দৌড়ে আসা নয়। বরং, এ দ্বারা উদ্দ্যেশ্য হল, তোমরা জু মু‘আর সালাতের দিকে গুরুত্বের সাথে অগ্রসর হও। কারণ, সালাতে দৌড়ে আসতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে।
হাসান রহ. বলেন, “এখানে السعي দ্বারা উদ্দেশ্য হল, অন্তরের দৌড়। অন্যথায় সালাতে শান্তশিষ্টভাবে ও গাম্ভীর্যের সাথে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং দৌড়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে”। [দেখুন, তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৩৮৫/৩৮৬/৪]
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম রহ. বলেন, “জুমু‘আর দিনটি ইবাদতের দিন। মাসের মধ্যে রমাদান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, দিবস সমূহের মধ্যে জুমু‘আও অনুরূপ গুরুত্বপূর্ণ। জুমু‘আর দিনে একটি মুহুর্ত এমন আছে, সে মহুর্তে দু‘আ করলে আল্লাহ তা‘আলা দু্’আ কবুল করেন। জুমু‘আর দিনে সে মহুর্তটুকু রমাদান মাসের ক্বাদর রাত্রির মত গুরুত্বপূর্ণ”। [দেখুন, যাদুল মা’আদ: ৩৯৮/১]
এক- জুমু‘আর দিন সর্বোত্তম দিন:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিনকে সর্বোত্তম দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«خير يوم طلعت عليه الشمس يوم الجمعة، فيه خلق آدم، وفيه أدخل الجنة، وفيه أخرج منها، ولا تقوم الساعة إلا في يوم الجمعة» [ مسلم ].
“সূর্য উদয় হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন জুমু‘আর দিন। এ দিন আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়। আর কিয়ামত জুমু‘আর দিনেই সংঘটিত হবে”। [মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪, ১৮; তিরমিযি, হাদিস: ৪৮৮; নাসায়ী, হাদিস: ৮৯/৩]
দুই- এ দিনটির মধ্যে জুমু‘আর সালাত রয়েছে যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং মুসলিমদের মহান মিলন মেলা। যে ব্যক্তি কোন কারণ ছাড়া জুমু‘আর সালাত ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তা‘আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেবে। [মুসলিম, হাদিস নং ৮৬৫]
তিন- এ দিনটি দু‘আ কবুল হওয়ার দিন:
জুমু‘আর দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে মুহূর্তে দু‘আ করলে, আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবুল করেন। তবে মুহূর্তটি অজ্ঞাত রাখা হয়েছে, যাতে মানুষ পুরো জুমু’আর দিনটিকে গুরুত্ব দেয় এবং মুহূর্তটি অনুসন্ধান করতে থাকে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إن في الجمعة ساعة لا يوافقها عبد مسلم وهو قائم يصلي يسأل الله شيئا إلا أعطاه إياه – وقال بيده يقللها» [ متفق عليه ].
“জুম‘আর দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যদি কোন মুসলিম বান্দা ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় রত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করেন আল্লাহ তা‘আলা তাকে তা অবশ্যই দেবেন”। [বুখারি, হাদিস: ৯৩৫ মুসলিম, হাদিস: ৮৫২]
আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. জুমু‘আর দিন দু‘আ কবুলের সময়টির ব্যাপারে আলেমদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরার পর বলেন, সবচেয়ে গ্রহণ যোগ্য মতামত হল, দুটি মত যে দুটি মতামত হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত ও প্রমাণিত।
১- ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত মুহূর্তটি। কারণ, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«هي ما بين أن يجلس الإمام إلى أن تقضى الصلاة» [ مسلم ].
“ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত”। [মুসলিম, হাদিস: ৮৫৩; সহীহ ইবনু খুজাইমা, ১৭৩৯; বাইহাকী, হাদিস: ৫৯৯৯]
২- মুহুর্তটি হল, জুমু‘আর দিন আছরের সালাত আদায়ের পর। এটি উল্লেখিত দুটি মতের মধ্যে সর্বাধিক গ্রহণ যোগ্য মতামত। [দেখুন, যাদুল মা’আদ: ৩৯০, ৩৮৯/১]
চার- সদকা করার জন্য উত্তম দিন:
জুম‘আর দিন সদকা করা অন্যান্য দিনের তুলনায় অধিক উত্তম। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম রহ. বলেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনে সদকা করার তুলনায় এ দিনে সদকা করা এমন উত্তম যেমন বছরের অন্যান্য মাসের সদকার তুলনায় রমাদান মাসে সদকা করা উত্তম। কা’আব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বিশুদ্ধ সনদে মওকুফ হাদিস যা মারফু হাদিস বলে বিবেচিত এমন একটি হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
«... والصدقة فيه أعظم من الصدقة في سائر الأيام» [ موقوف صحيح وله حكم الرفع ].
“জুমু‘আর দিন সদকা করা অন্যান্য দিন সদকা করার তুলনায় অধিক সাওয়াব ও গুরুত্বপূর্ণ”। [মুসলিম, হাদিস:]
পাঁচ-জান্নাতীদের আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের দিন:
জুমু‘আ এমন একটি দিন, যে দিন আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে মুমিন বন্ধুদের সাথে সাক্ষাত করবেন। আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহ তা‘আলার বাণীর – وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ তাফসীরে বলেন, يتجلى لهم في كل جمعة . “আল্লাহ তা‘আলা প্রতি জুমু‘আর দিন জান্নাতীদের জন্য প্রকাশ্যে আসবেন”।
ছয়- জুমু‘আর দিন মুসলিমদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন:
জুমু‘আর দিন মুসলিমদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إن هذا يوم عيد جعله الله للمسلمين فمن جاء الجمعة فليغتسل ...» الحديث .[ ابن ماجه وهو في صحيح الترغيب 1/298].
“এটি ঈদের দিন আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হয় সে যেন ওজু করে উপস্থিত হয়”। [ইবনু মাযা, হাদিস: ১০৯৮; সহীহ আত-তারগীব: ২৯৮/১; আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।]
সাত- গুনাহ মাফের দিন:
এ দিন আল্লাহ তা‘আলা বান্দার গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেন। সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يغتسل رجل يوم الجمعة، ويتطهر ما استطاع من طهر ويدهن من دهنه، أو يمس من طيب بيته، ثم يخرج فلا يفرق بين اثنين، ثم يصلي ما كتب له، ثم ينصت إذا تكلم الإمام إلا غفر له ما بينه وبين الجمعة الأخرى» [ البخاري ].
“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করল, যথাসাধ্য পবিত্রতা অর্জন করল, তেল লাগালো এবং ঘর থেকে আতর খোশবু লাগিয়ে ঘর থেকে বের হল, দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে গেল না, অতঃপর তার তাকদীরে যত সালাত পড়া নির্ধারিত ছিল তা আদায় করল এবং ইমামের খুতবার সময় সে চুপ থাকল, তাহলে তার এ জুমু‘আ থেকে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে”। [বুখারি, হাদিস: ৯১০, ৮৮৩]
আট-এক বছর কিয়ামুল লাইল ও এক বছর রোজা রাখার সাওয়াব:
জুমু‘আর দিন পায়ে হেঁটে জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হওয়া এক বছর রোজা রাখা ও এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সম পরিমাণ সাওয়াব সমতুল্য।
আউস ইবনে আওস আস-সাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
«من غسل واغتسل يوم الجمعة، وبكر وابتكر، ودنا من الإمام فأنصت، كان له بكل خطوة يخطوها صيام سنة، وقيامها، وذلك على الله يسير» [ أحمد وأصحاب السنن وصححه ابن خزيمة ].
“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন নিজে গোসল করল, অপরকে উদ্বুদ্ধ করল, সকাল সকাল মসজিদে গমন করল, অপরকে উৎসাহ দিল এবং আরোহণ না করে পায়ে হেঁটে মসজিদে এসে ইমামের কাছাকাছি বসল, কোন অনর্থক কর্ম করল না, সে প্রতিটি কদমে এক বছর রোজা রাখা এবং এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সাওয়াব পাবে”। [আহমদ, হাদিস: ১৬১৭৩]
নয়- এ দিন জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা বন্ধ থাকে:
সপ্তাহের প্রতি দিন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়, কেবল জুমু‘আর দিন ছাড়া। জুমু‘আর দিনের সম্মানে এ দিনে জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা ও উত্তপ্ত করাকে বন্ধ করে রাখা হয়। [যাদুল মা’আদ: ৩৮৭/১]
দশ- জুমু‘আর দিন বা জুমু‘আর রাত্রিতে মৃত্যু বরণ করা শুভ লক্ষণ:
জুমু‘আর দিন বা জুমু‘আর রাত্রিতে মৃত্যু বরণ করা, উত্তম পরিণতির লক্ষণ। কারণ, জুমু‘আর দিন বা জুমু‘আর রাত্রিতে যে ব্যক্তি মারা যায় সে ব্যক্তি কবরের আযাব ও মুনকার নকীরের প্রশ্ন হতে বেঁচে যায়। আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما من مسلم يموت يوم الجمعة أو ليلة الجمعة، إلا وقاه الله تعالى فتنة القبر» [ أحمد والترمذي وصححه الألباني ].
“যে কোন মুসলিম জুমু‘আর দিন বা জুমু‘আর রাতে মারা গেল আল্লাহ তা‘আলা তাকে অবশ্যই কবরের আযাব থেকে রেহাই দেবেন”। [বর্ণনায়, আহমদ ৬৫৮২; তিরমিযি, হাদিস: ১০৭৪ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/619/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।