hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারীর প্রাকৃতিক রক্তস্রাব

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন

১৫
নিফাসের হুকুম
নিম্ন বর্ণিত কয়েকটি বিষয় ছাড়া হায়েয ও নিফাসের হুকুম প্রায় একই। যথা-

১. ইদ্দত প্রসঙ্গ: ইদ্দতকাল নির্ণয় করতে হবে হায়েযের দিকে লক্ষ্য করে, নিফাসের দিকে লক্ষ্য রেখে নয়। কেননা তালাক যদি প্রসবের পূর্বে দেওয়া হয় তাহলে প্রসবের সাথে সাথে ইদ্দতকাল শেষ হয়ে যাবে, নিফাসের মাধ্যমে নয়। পক্ষান্তরে যদি তালাক প্রসবের পরে হয় তাহলে হায়েযের অপেক্ষা করতে হবে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।

২. ‘ঈলা’র মেয়াদ: হায়েযের সময় অন্তর্ভুক্ত হবে, তবে নিফাসের সময়ের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

ঈলা’র সংজ্ঞা: কোনো পুরুষের এই মর্মে শপথ করাকে ঈলা বলা হয় যে, সে তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হবে না বা সেজন্য এমন সময়-সীমা নির্ধারণ করে শপথ করে যা চার মাসের উপরে। এ ধরনের শপথ করার পর স্ত্রী যখন সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার জন্য স্বামীর নিকট দাবী উত্থাপন করবে, তখন উক্ত পুরুষের জন্য শপথের পর চার মাস মেয়াদ ধার্য করা হবে। চার মাসের এই মেয়াদ শেষ হলে স্ত্রীর দাবী মেনে নেওয়ার জন্য স্বামীকে বাধ্য করা হবে। স্ত্রী যদি তার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হতে চায় তাহলে স্বামীকে স্ত্রী মিলনে বাধ্য করা হবে। আর স্ত্রী যদি তার কাছ থেকে পৃথক হতে চায় তাহলে পৃথক করতে বাধ্য করা হবে। এখানে বুঝার বিষয় হচ্ছে ঈলার হুকুম হিসেবে উল্লিখিত চার মাসের মেয়াদ চলাকালীন যদি স্ত্রীর নিফাস অর্থাৎ প্রসব জনিত কারণে রক্তস্রাব দেখা দেয় তাহলে স্বামী স্ত্রীর নিফাসের দিনগুলোকে চার মাসের মধ্যে যোগ করে হিসাব করতে পারবে না, বরং নিফাসের এই দিনগুলোকে হিসাবের আওতায় না এনে চার মাসের মেয়াদ পূর্ণ করতে হবে। পক্ষান্তরে চার মাসের সুনির্দিষ্ট মেয়াদ চলাকালে স্ত্রীর যদি হায়েয দেখা দেয় তাহলে হায়েযের দিনগুলোকে চার মাসের মধ্যে যোগ করতে হবে।

৩. হায়েযের মাধ্যমে নারী প্রাপ্তবয়স্কা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়। তবে নিফাসের মাধ্যমে নয়। কেননা বীর্যস্খলন ছাড়া নারী গর্ভবতী হতেই পারে না। সুতরাং গর্ভধারণের জন্য যে বীর্যস্খলন হয় তা দ্বারা বুঝা যাবে যে নারী গর্ভধারণের পূর্বেই প্রাপ্তবয়স্কা হয়ে গিয়েছিল।

৪. হায়েয ও নিফাসের মধ্যে চতুর্থ পার্থক্য এই যে, হায়েযের রক্ত বন্ধ হয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যদি পুনরায় আরম্ভ হয় তাহলে সেটাকে নিঃসন্দেহে হায়েয হিসেবে গণ্য করতে হবে।

দৃষ্টান্ত: একজন নারীর সাধারণতঃ প্রতি মাসে ৮ দিন করে রক্তস্রাব হয়ে থাকে। এক মাসে দেখা গেল যে, রক্তস্রাব চার দিন পর বন্ধ হয়ে গেছে এবং দুই দিন বন্ধ থাকার পর সপ্তম ও অষ্টম দিনে প্রবাহিত রক্তকে অবশ্যই হায়েয বলে গণ্য করতে হবে এবং তাকে হায়েযেরই নিয়ম-নীতি পালন করতে হবে। পক্ষান্তরে নিফাসের ব্যাপারটা এমন নয় অর্থাৎ নিফাস যদি ৪০ দিন পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বন্ধ হয়ে আবারো চালু হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি সন্দেহযুক্ত থাকবে। এমতাবস্থায় মহিলাকে নির্দিষ্ট সময়ের ফরয সালাত ও ফরয সাওম আদায় করতে হবে। মাসিক ঋতুবতী মহিলার জন্য ওয়াজিব ব্যতীত যা হারাম তার ক্ষেত্রেও তা হারাম হবে এবং এ অবস্থায় যে ফরয সালাত ও ফরয সাওম আদায় করা হয়েছে পবিত্র হওয়ার পর সেগুলোর কাযা করবে। অর্থাৎ ঋতুবতী মহিলাদের জন্য যেমন কাযা করা ওয়াজিব তেমনি নিফাসওয়ালীর জন্যও ওয়াজিব। হাম্বলী ফিকহবিদগণের নিকট এটাই প্রসিদ্ধ। তবে সঠিক অভিমত হচ্ছে যে, বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এমন সময়ের মধ্যেই যদি পুনরায় চালু হয় যখন প্রবাহিত রক্তকে নিফাস গণ্য করা সম্ভব, তাহলে নিফাস হিসেবেই গণ্য করা হবে, নতুবা হায়েয হিসেবে। আবার একাধারে বিরতিহীনভাবে অনেকদিন প্রবাহিত হতে থাকলে (৪০ দিনের পর বাকী সময়) ইস্তেহাযাহ গণ্য করা হবে। মুগনী গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, ‘উল্লিখিত সমাধানটি ইমাম মালেক রহ.-এর অভিমতের কাছাকাছি।’ ইমাম মালেক রহ. বলেছেন যে, ‘রক্ত বন্ধ হওয়ার পর দুই অথবা তিন দিনের মধ্যেই যদি পুনরায় রক্ত দেখা দেয় তাহলে নিফাস নতুবা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।’

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ.-এর অভিমতও এক্ষেত্রে একই রকম বলে বুঝা যায়। বাস্তবতার ভিত্তিতেও বলা সংগত যে, রক্তের মধ্যে সন্দেহযুক্ত বলতে কিছুই নেই। বস্তুত সন্দেহযুক্ত হওয়ার বিষয়টি আপেক্ষিক; যার মধ্যে মানুষ তাদের ইলম ও বোধশক্তি অনুপাতে মতভেদ করে থাকে। আর কুরআন ও সুন্নাহ কোনটা সঠিক এবং কোনটা সঠিক নয় এর পূর্ণ সমাধান প্রতিটি ক্ষেত্রেই দিয়েছে। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকেই দুইবার সাওম রাখার এবং দুইবার তাওয়াফ করার নির্দেশ দেন নি (যেমনটি একটু পূর্বে বলা হয়েছে)। তবে হ্যাঁ, প্রথমবার আদায় করতে গিয়ে যদি এমন কোনো ত্রুটি হয়ে থাকে যা কাযা না করে সেই ত্রুটির ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয় (তাহলে সেটা ভিন্ন কথা)। বান্দাকে যে কাজের আদেশ করা হয়েছে সাধ্যানুসারে সে কাজ করলে বান্দাহ তখন দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَا﴾ [ البقرة : ٢٨٦ ]

‘‘আল্লাহ কাউকেই তার সাধ্যের বাইরে কোনো দায়িত্ব দেন না।’’ [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৮৬]

অন্যত্র বলা হয়েছে:

﴿فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ﴾ [ التغابن : ١٦ ]

‘‘তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর।’’ [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]

৫. হায়েয যদি পূর্ব অভ্যাস অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে স্বামী উক্ত স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। পক্ষান্তরে নিফাসের রক্ত যদি ৪০ দিনের পূর্বে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে প্রসিদ্ধ মাযহাব অনুসারে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া স্বামীর জন্য মাকরূহ, তবে সঠিক সমাধান এটাই যে, মাকরূহ নয়। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের অভিমতও তাই। কেননা কোনো কাজকে মাকরূহ বলতে হলে শর‘ঈ দলীল লাগবে। অথচ এক্ষেত্রে ইমাম আহমদ কর্তৃক বর্ণিত হাদীস ছাড়া কোনো দলীল নেই।

ইমাম আহমদ রহ. উসমান ইবন আবিল ‘আস থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর স্ত্রী নিফাসের ৪০ দিন পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তাঁর কাছে আসলে তিনি বলতেন: তুমি আমার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা দ্বারা কোনো মাকরূহের হুকুম প্রমাণিত হয় না। কেননা স্ত্রীর পবিত্র হওয়া নিশ্চিত নয় বলে সাবধানতা অবলম্বনের উদ্দেশ্যে অথবা সঙ্গমে লিপ্ত হলে পুনরায় রক্ত প্রবাহ শুরু হতে পারে এই আশঙ্কায় অথবা অন্য কোনো কারণে তিনি নিষেধ করে থাকতে পারেন। আল্লাহই ভালো জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন