hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আলেমগণের মধ্যে মতভেদ কারণ এবং আমাদের অবস্থান

লেখকঃ আল্লামা শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ্ আল-উসাইমীন

১১
এক্ষণে এসব মতানৈক্যের ব্যাপারে আমরা আমাদের ভূমিকার কথা আলোচনা করব।
এখানে আমরা আলেমগণের মতানৈক্য বলতে ঐসকল আলেমকে বুঝিয়েছি, যাঁরা ইলম ও দ্বীনদারিতায় নির্ভরযোগ্য। যাঁদেরকে আলেম মনে করা হয় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা আলেম নয়- এমন সব ব্যক্তির মতানৈক্য আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কেননা তাদেরকে আমরা আলেম মনে করি না এবং প্রকৃত আলেমগণের উক্তিসমূহ যেমন সংরক্ষণ করা হয়, আমরা তাদের উক্তিসমূহকে সেই পর্যায়ের মনে করি না। সেজন্য যেসব আলেম মুসলিম উম্মাহ, ইসলাম ও ইল্‌ম বিষয়ে [মানুষকে] হিতোপদেশ দিয়ে প্রসিদ্ধি অর্জন করেছেন, আমরা আলেম বলতে তাঁদেরকেই বুঝি। ঐসব আলেমের ব্যাপারে আমাদের ভূমিকা দুইভাবে হতে পারেঃ-

১. [আমাদেরকে জানতে হবে] ঐ সকল আলেম আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত মোতাবেক কোন বিষয় হওয়া সত্ত্বেও কেন তদ্বিষয়ে মতানৈক্য করেছেন? মতানৈক্যের যেসব কারণ আমরা উল্লেখ করেছি এবং যেগুলো উল্লেখ করিনি, সেগুলোর মাধ্যমে এর জবাব জানা যেতে পারে। আর সেই কারণগুলো আসলে অনেক- যা শরী‘আতের জ্ঞান পিপাসুর নিকট স্পষ্ট, যদিও তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী না হন।

২. [এরপর দেখতে হবে] তাঁদের অনুসরণের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কি হবে? তাঁদের মধ্যে আমরা কার অনুসরণ করব? মানুষ কি কোন ইমামের এমন অনুসরণ করবে যে, তাঁর কথার বাইরে যাবে না- যদিও হক্ব অন্যের সাথে থাকে-যেমনটি মাযহাবসমূহের অন্ধ ভক্তদের স্বভাব, নাকি তার কাছে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দলীলের অনুসরণ করবে- যদিও তা তার অনুসারী ইমামের বিরোধী হয়? এই দ্বিতীয়টাই সঠিক জবাব। সেজন্য যিনি দলীল জানতে পারবেন তার উপর সেই দলীলের অনুসরণ করা আবশ্যক- যদিও তা ইমামের বিরোধী হয়। তবে তা যেন ইজমার বিরোধী না হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অন্য কারো কথা সর্বাবস্থায় এবং সব সময় অবশ্য পালনীয়, সে অন্য কারো জন্য রিসালাতের বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করল। কেননা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অন্য কারো কথার বিধান এমনটা হতে পারে না এবং অন্য কারো কথা সর্বদা শিরোধার্য হতে পারে না।

তবে এ বিষয়ে আরো একটু চিন্তাভাবনার বিষয় রয়েছে। কেননা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দলীল থেকে কে হুকুম-আহকাম বের করবেন তদ্বিষয়ে আমরা এখনও গোলকধাঁধায়? এটা মুশকিলও বটে। কেননা প্রত্যেকেই বলছেন, আমি এই ক্ষমতার অধিকারী। এটা আসলে ভাল কথা নয়। যদিও কুরআন ও সুন্নাহ একজন মানুষের গাইড হবে- সে দিক বিবেচনায় সেটা ভাল কথা। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, অর্থ জানুক বা না জানুক কোন রকম দলীল উচ্চারণ করতে পারে এমন প্রত্যেকের জন্য আমরা দরজা খুলে দেব আর বলব, তুমি মুজতাহিদ [শরী‘আত গবেষক], যা ইচ্ছা তুমি তাই বলতে পার। এমনটা হলে ইসলামী শরীআত, মানব ও মানব সমাজে পচন ধরবে। এক্ষেত্রে মানুষ তিন ধরনেরঃ-

১. প্রকুত আলেম– যাঁকে আল্লাহ ইল্‌ম ও উপলব্ধি দুটোই দান করেছেন।

২. [দ্বীনের] জ্ঞান পিপাসু- যার ইল্‌ম রয়েছে। কিন্তু [প্রথম শ্রেণীর] ঐ গভীর জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তি পর্যন্ত তিনি পৌঁছতে পারেন নি।

৩. সাধারণ মানুষ- যে কিছুই জানে না।

প্রথম প্রকার ব্যক্তি শর‘ঈ বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে এবং মত পেশ করতে পারেন; বরং কারো বিরোধী হলেও তাঁর উপর দলীল অনুযায়ী বক্তব্য পেশ করা ওয়াজিব। কেননা তিনি তদ্বিষয়ে আদিষ্ট। মহান আল্লাহ বলেন, ‘…তবে তাদের মধ্যে তত্ত্বানুসন্ধিৎসুগণ ওটা উপলব্ধি করত’। [. সূরা আন-নিসা ৮৩।] এই শ্রেণীর আলেমগণই কুরআন-সুন্নাহ থেকে হুকুম-আহকাম উদ্‌ঘাটনের অধিকারী- যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম-এর বক্তব্য বুঝেন।

দ্বিতীয় শ্রেণীর ব্যক্তি- যাকে আল্লাহ জ্ঞান দিয়েছেন কিন্তু তিনি প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন নি, তার জন্য কোন দোষ নেই- যদি তিনি সাধারণ বিষয়গুলো এবং তাঁর কাছে যে জ্ঞানটুকু পৌঁছেছে তার অনুসরণ করেন। তবে তাঁকে খুব সতর্ক থাকতে হবে এবং তাঁর চেয়ে বড় আলেমকে জিজ্ঞেস করার ক্ষেত্রে মোটেও শিথিলতা প্রদর্শন করা যাবে না। কেননা তিনি ভুল করতে পারেন এবং তার জ্ঞান সে বিষয় পর্যন্ত নাও পৌঁছতে পারে– যা কোন ‘আম’ [‘আম’ ও ‘খাছ’-এর আলোচনা গত হয়ে গেছে।] عام -কে ‘খাছ’ خاص করে দিয়েছে অথবা ‘মুতলাক্ব’ [‘মুতলাক্ব’ مطلق এমন শব্দ- যা একাধিক বস্তুকে শামিল করে, তবে একই সঙ্গে নয়। বরং এটার পরিবর্তে ওটা এই সূত্রে। যেমনঃ যদি বলা হয়, একজন পুরুষ, তাহলে তা সব পুরুষকে শামিল করবে। তবে একই সঙ্গে নয়; বরং একজন একজন করে। ‘আম’-এর সাথে ‘মুতলাক্ব’-এর পার্থক্য হল, ‘আম’ একই সঙ্গে একাধিক বস্তুকে শামিল করে। পবিত্র কুরআন থেকে ‘মুতলাক্ব’-এর একটা উদাহরণঃ ‘যিহার’ ظهار -এর কাফফারাহ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘একটা দাসমুক্ত করবে’ [আল-মুজাদালাহ ৩]। কিন্তু এখানে কোন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করা হয়নি। সুতরাং দাস মুসলিম হোক বা কাফির হোক মুক্ত করলেই চলবে।‘মুক্বাইয়াদ’ مقيد -এর পরিসর ‘মুতলাক্ব’-এর তুলনায় খানিকটা সংকুচিত। যেমনঃ মহান আল্লাহর বাণী, ‘যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে ভুলক্রমে হত্যা করে, সে একজন মুমিন ক্রীতদাস মুক্ত করবে [আন-নিসা ৯২]। এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ভুলবশতঃ হত্যার কাফফারাহস্বরূপ দাসমুক্তির কথা বলেছেন; কিন্তু দাস যেন মুমিন হয় সেই শর্ত জুড়ে দিয়ে দাসের ক্ষেত্রটা সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন।–[অনুবাদক]] مطلق -কে ‘মুক্বাইয়াদ’ مقيد করে দিয়েছে। অথবা মানসূখ হওয়া কোন বিষয়কে তিনি না জেনে মুহকাম মনে করছেন।

আর তৃতীয় শ্রেণীর ব্যক্তি– যার কোন ইল্‌ম নেই–তার জন্য আলেমগণকে জিজ্ঞেস করা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে’। [. সূরা আল-আম্বিয়া ৭; সূরা আন-নাহ্‌ল ৪৩ ।] অন্য আয়াতে এসেছে, ‘অতএব জ্ঞানীদেরকে স্পষ্ট দলীল-প্রমাণসহ জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে’। [. সূরা আন-নাহ্‌ল ৪৩-৪৪।]

সুতরাং এই শ্রেণীর ব্যক্তির দায়িত্ব ও কর্তব্য হল, জিজ্ঞেস করা। কিন্তু সে কাকে জিজ্ঞেস করবে? দেশে অনেক আলেম আছেন এবং সবাই বলছেন যে, তিনি আলেম অথবা সবার সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে, তিনি আলেম! তাহলে কাকে জিজ্ঞেস করবে? আমরা কি বলব যে, যিনি সঠিকতার অধিকতর কাছাকাছি তোমাকে তাঁকে খুজে বের করতে হবে এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করে তাঁর কথা মেনে চলতে হবে? নাকি বলব, যে কাউকে ইচ্ছা তুমি জিজ্ঞেস করতে পার। কেননা নির্দিষ্ট কোন মাসআলায় কোন কোন সময় জ্ঞানে তুলনামূলক নিম্ন স্তরের আলেম তার চেয়ে উপরের স্তরের আলেমের চেয়ে বেশী তওফীকপ্রাপ্ত হতে পারেন?

আলেম সমাজ এ বিষয়ে বিভিন্ন মত দিয়েছেনঃ

কারো মতে, সাধারণ ব্যক্তির উপর তার এলাকার সবচেয়ে বিশ্বস্ত আলেমকে জিজ্ঞেস করা আবশ্যক। কেননা মানুষের শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেমন সে সবচেয়ে ভাল ডাক্তার খুঁজে, তেমনি এ ক্ষেত্রেও তা-ই করবে। কারণ জ্ঞান হল মনের ওষুধ। তুমি তোমার অসুখের জন্য যেমন ভাল ডাক্তার নির্ণয় কর, এক্ষেত্রেও তোমাকে ভাল আলেম নির্ণয় করতে হবে। দুটোর মধ্যে কোনই পার্থক্য নেই।

আবার কেউ কেউ বলেন, তার জন্য এটা আবশ্যক নয়। কেননা ভাল আলেম নির্দিষ্টভাবে প্রত্যকটা মাসআলায় তুলনামূলক নীচের স্তরের আলেমের চেয়ে জ্ঞানী নাও হতে পারেন। সেজন্য দেখা যায়, ছাহাবীগণ রাযিয়াল্লাহু আনহুম-এর যুগে মানুষ বেশী জ্ঞানী ছাহাবী থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলক কম জ্ঞানী ছাহাবীকে [অনেক সময়] জিজ্ঞেস করতেন।

এ বিষয়ে আমার অভিমত হল, সে দ্বীনদারিতায় ও জ্ঞানে তুলনামূলক উত্তম ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করবে। তবে সেটা তার জন্য ওয়াজিব নয়। কেননা তুলনামূলক বেশী জ্ঞানী ব্যক্তি নির্দিষ্ট ঐ মাসআলায় ভুল করতে পারেন এবং তুলনামূলক কম জ্ঞানী ব্যক্তি সঠিক ফাতাওয়া দিতে পারেন। সুতরাং অগ্রগণ্যতার দিক থেকে সে জ্ঞান, আল্লাহভীতি ও দ্বীনদারিতায় অধিকতর সঠিকতার নিকটবর্তী ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন