HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিশ্ব বাবা দিবস ইসলামী দৃষ্টিকোণ

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

বাবা দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা কী?
পাশ্চাত্যের দেশসমূহে নীতি-নৈতিকতার অধঃপতন ও ভোগবাদী চিন্তা-ভাবনা এত প্রবল যে সেখানে মাতা-পিতার খেদমত বা সেবার কথা কল্পনা করা যায় না। সে সকল দেশে অগণিত প্রবীণ আশ্রম রয়েছে। বৃদ্ধ মাতা-পিতাকে তারা এ সকল আশ্রমে ভর্তি করিয়ে দেয়। তারা শেষ বয়সে এসে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে। মুসলিম দেশের লোকজন যখন তাদের সম্পর্কে জানার জন্য তাদের মুখোমুখি হয়, জিজ্ঞেস করে ‘প্রবীন আশ্রমে কেমন কাটছে আপনার দিনকাল।’ তখন তারা বলে, ‘এতো এক নরক। আমরা নরকে আছি। শেষ বয়সে অনেককে মনে পড়ে কিন্তু তাদের দেখতে পাই না।’

এ সকল দেশের নৈতিকভাবে অধঃপতিত মানুষেরা যদি বছরের একটি দিন তাদের মা বাবাকে ভালোবাসা জানানোর জন্য বরাদ্দ করে তখন তাতে ক্ষতি কী?

আমরা মুসলিমরা বাবা দিবস পালন করবো কোন দুঃখে? আমরাতো আল্লাহর রহমত ও তাঁর করুণায় প্রতিদিন বাবাকে ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, খেদমত করি, খোজ-খবর নেই। তাকে কোথাও নির্বাসনে পাঠাই না।

আমাদের দেশ ও সমাজে এ দিবসের আমদানী করে কি এ মেসেজ দেয়া হচ্ছে যে, বাবা মায়ের জন্য এত কিছু করার প্রয়োজন কি? এত সময়ই বা কোথায়? বছরে একটি দিন তাদের জন্য বরাদ্দ করে দাও! ব্যস তাদের হক আদায় হয়ে যাবে!

আল্লাহ আমাদের মুসলমানদের এ ধরণের অনৈতিক আচরণ ও চিন্তা-ভাবনা থেকে থেকে রক্ষা করুন!

আল্লাহ রাববুল আলামীন ও তাঁর রাসূল বাবা মায়ের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ও যত্ন নিতে যা বলেছেন, যেভাবে বলেছেন, এমন কেহ বলেনি, বলতে পারেনি।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

‘‘আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে সুন্দর আচরণের তাগিদ দিয়েছি।

তার মা অনেক কষ্টে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং বহু কষ্ট করে ভূমিষ্ট করেছে। গর্ভে ধারণ করা ও দুধ পান করানোর (কঠিন কাজের) সময়কাল হলো আড়াই বছর।’’ [সূরা আল-আহকাফ]

তিনি আরো বলেন:

وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا

‘‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, আর তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ-সুন্দর ব্যবহার করবে।’’ [সূরা আন-নিসা আয়াত ৩৬]

ইসলামী দৃষ্টি ভংগিতে শুধু মাতা-পিতা জীবিত থাকাকালে তাদের সাথে সদাচরণ যথেষ্ঠ নয়। তাদের মৃত্যুর পর সন্তানের উপর দায়িত্ব থেকে যায় তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا ﴿23﴾ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿24﴾

‘‘তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না ও পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপণীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলোনা এবং তাদের ধমক দিও না। এবং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। তাদের উভয়ের জন্য দয়ার সাথে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে আমাকে তারা লালন-পালন করেছেন।’’ [সূরা আল-ইসরা, আয়াত ২৩-২৪]

তাদের মৃত্যুর পর তাদের শান্তির জন্য দু‘আ-প্রার্থনা করা, তাদের জন্য কল্যাণ হয় এমন কাজ করে তা তাদের আত্নার জন্য উৎসর্গ করা সন্তানের দায়িত্ব। আর এ দায়িত্ব কোন দিবস, বছর বা মাস দিয়ে সীমিত করা হয়নি।

আবু হুরাইরা রা. বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমার সুন্দর আচরণের সবচাইতে বেশি হকদার কে? তিনি বললেন: তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো, এরপর কে? তিনি বললেন: তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো তারপর কে? তিনি বললেন: তোমার মা। সে আবারও জিজ্ঞেস করলো এরপর কে? তিনি বললেন: তোমার পিতা। [৬ সহিহ আল বুখারী, এইচ এম সাঈদ কম্পানী,আদব মঞ্জিল, করাচী, কিতাবুল আদব, ২খ, পৃ;৮৮২; সহিহ মুসলিম, প্রাগুক্ত আরো দ্রঃ ইবন মাজাহ, পৃ. ২৬০ আল মুসতাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০ ফাতহুর রববানী ১৯খ , পৃ. ৩৮]

বাহ্য ইবন হাকিম তাঁর পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কার সাথে সবচেয়ে বেশী ভালো ব্যবহার করব? তিনি বললেন: ‘তোমার মায়ের সাথে।’ আমি পূনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেন : ‘তোমার মায়ের সাথে।’ তিনি আবারও জিজ্ঞস করলেন: তারপর কার সাথে? এবারও তিনি বললেন: ‘তোমার মায়ের সাথে।’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেন: ‘তোমার পিতার সাথে। অত:পর পর্যায়ক্রমে নিকটতম আত্মীয়- স্বজনের সাথে।’ [৭ আল মুস্তাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০;]

মিকদাম ইবন মা’দিকারাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের মায়েদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। অর্থাৎ তাদের সাথে সদাচরণ করার আদেশ দিচ্ছেন। একথা তিনি তিনবার বললেন । নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের পিতাদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। নিশ্চয় আল্লাহ পর্যায়ক্রমে নিকটবর্তীদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। (সদাচারের) [৮ ইবনে মাজাহ; পৃ. ২৬০]

এ সামান্য কয়েকটি বানীর প্রতি লক্ষ্য করে দেখুন! এ ধরনের আরো অসংখ্য নির্দেশ রয়েছে মায়ের সাথে সুন্দর আচরণ করার জন্য।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, শয়তান মানুষের ভাল কাজকে বিনষ্ট করার জন্য তার সাথে এমন কিছু মিশ্রন ঘটায়, যার কারণে তার ভাল কাজটি আল্লাহর কাছে অগ্রহণযোগ্য হয়ে যায়। বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে যেয়ে আমরা যেন শয়তানের পদাংক অনুসরণে লিপ্ত না হয়ে যাই। প্রতি মুহুর্তে, প্রতিদিন আমরা মাকে ও বাবাকে ভালোবাসব, তাকে শ্রদ্ধা করব, তাদের সেবা করব, তাদের কথা মান্য করব, তাদের উপহার দেব, তার মনে সামান্য কষ্ট লাগে বা বিরক্ত হয় এমন কোন কথা বা কাজ আমরা সর্বদা পরিহার করব। এটা হল ইসলামের প্রভু মহান আল্লাহ ও ইসলামের নবীর নির্দেশ। কোন দিন বা সময়ের সাথে এ নির্দেশটাকে সীমাবদ্ধ করা হয়নি। যদি কেহ করতে চান সেটা হবে সীমালংঘন।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন