HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাত বর্জনকারীর বিধান

লেখকঃ মুহাম্মদ ইবন সালেহ আল-‘উসাইমীন

প্রথমত: আল-কুরআন থেকে দলীল-প্রমাণ:
আল্লাহ তা‘আলা সূরা তাওবায় বলেন:

﴿ فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ فَإِخۡوَٰنُكُمۡ فِي ٱلدِّينِۗ ﴾ [ التوبة : ١١ ]

“অতএব তারা যদি তাওবা করে সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে দ্বীনের মধ্যে তারা তোমাদের ভাই।” [সূরা আত-তাওবাহ আয়াত: ১১] আর সূরা মারইয়ামে তিনি বলেন:

﴿ فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُواْ ٱلشَّهَوَٰتِۖ فَسَوۡفَ يَلۡقَوۡنَ غَيًّا ٥٩ إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا فَأُوْلَٰٓئِكَ يَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا يُظۡلَمُونَ شَيۡ‍ٔٗا ٦٠ ﴾ [ مريم : ٥٩، ٦٠ ]

“তাদের পরে আসল অযোগ্য উত্তরসূরীরা তারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হলো। কাজেই অচিরেই তারা ক্ষতিগ্রস্ততার সম্মুখীন হবে। কিন্তু তারা নয় যারা তাওবা করেছে ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে; তারা তো জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না।” [সূরা মারইয়াম আয়াত: ৫৯-৬০]

সুতরাং সূরা মারইয়াম থেকে (আলোচ্য প্রবন্ধে) উল্লিখিত দ্বিতীয় আয়াত সালাত বর্জনকারীর কুফুরী এইভাবে প্রমাণ করে যে আল্লাহ তা‘আলা সালাত বিনষ্টকারী ও প্রবৃত্তির কামনা-বাসনার অনুসরণকারীদের সম্পর্কে বলেন

﴿إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ﴾ [ مريم : ٦٠ ]

“কিন্তু তারা নয় যারা তাওবা করেছে ঈমান এনেছে।” [সূরা মারইয়াম আয়াত: ৬০] সুতরাং এর দ্বারা বুঝা যায় যে তারা সালাত বিনষ্ট করার সময় এবং মনের কামনা-বাসনার অনুসরণ কালে মুমিন ছিল না।

আর সূরা তাওবা থেকে (আলোচ্য প্রবন্ধে) উল্লিখিত প্রথম আয়াত সালাত বর্জনকারীর কুফুরী এইভাবে প্রমাণ করে যে এতে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের এবং মুশরিকদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সাব্যস্ত করার জন্য তিনটি শর্ত আরোপ করেছেন:

১. শির্ক থেকে তাওবা করে ফিরে আসা

২. সালাত আদায় করা ও

৩. যাকাত প্রদান করা।

সুতরাং তারা যদি শির্ক থেকে তাওবা করে কিন্তু সালাত আদায় না করে এবং যাকাত প্রদান না করে তাহলে তারা আমাদের ভাই নয়। আর তারা যদি সালাত আদায় করে কিন্তু যাকাত প্রদান না করে তবুও তারা আমাদের ভাই নয়।

আর দীনী ভ্রাতৃত্ব তখনই পুরোপুরিভাবে নির্বাসিত হয় যখন মানুষ দীন থেকে সম্পূর্ণভাবে খারিজ হয়ে যায়। ফাসেকী ও ছোট কুফুরীর কারণে দীনী ভ্রাতৃত্ব খতম হতে পারে না।

তুমি কি দেখ না যে হত্যার প্রসঙ্গে বর্ণিত আল্লাহ তা‘আলার বাণী যাতে তিনি বলেছেন:

﴿فَمَنۡ عُفِيَ لَهُۥ مِنۡ أَخِيهِ شَيۡءٞ فَٱتِّبَاعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَأَدَآءٌ إِلَيۡهِ بِإِحۡسَٰن﴾ [ البقرة : ١٧٨ ]

“তবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কোন ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার রক্ত-বিনিময় আদায় করা কর্তব্য।” [সূরা আল-বাকারা আয়াত: ১৭৮] এখানে আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির ভাই বলে আখ্যায়িত করেছেন অথচ ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম বড় ধরণের কবীরা গুনাহ। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَمَن يَقۡتُلۡ مُؤۡمِنٗا مُّتَعَمِّدٗا فَجَزَآؤُهُۥ جَهَنَّمُ خَٰلِدٗا فِيهَا وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِيمٗا ٩٣﴾ [ النساء : ٩٣ ]

“আর কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রাখবেন।” [সূরা আন-নিসা আয়াত: ৯৩]

অতঃপর তুমি দেখ আল্লাহ তা‘আলার ঐ বাণীর দিকে যাতে মুমিনগণের দুই দলের মধ্যে সংঘটিত পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন:

﴿ وَإِن طَآئِفَتَانِ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٱقۡتَتَلُواْ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَهُمَاۖ فَإِنۢ بَغَتۡ إِحۡدَىٰهُمَا عَلَى ٱلۡأُخۡرَىٰ فَقَٰتِلُواْ ٱلَّتِي تَبۡغِي حَتَّىٰ تَفِيٓءَ إِلَىٰٓ أَمۡرِ ٱللَّهِۚ فَإِن فَآءَتۡ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَهُمَا بِٱلۡعَدۡلِ وَأَقۡسِطُوٓاْۖ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ ٩ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ إِخۡوَةٞ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَ أَخَوَيۡكُمۡۚ ﴾ [ الحجرات : ٩، ١٠ ]

“আর মুমিনদের দু’দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর তাদের একদল অন্য দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করলে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি তারা ফিরে আসে তবে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে আপোষ মীমাংসা করে দাও এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ ন্যায়বিচারকদেরকে ভালবাসেন। মুমিনগণ তো পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দাও।” [সূরা আল-হুজুরাত আয়াত: ৯-১০] সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা সংস্কারপন্থী গ্রুপ এবং পরস্পর যুদ্ধরত দুই দলের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অবশিষ্ট থাকার কথা ঘোষণা করেছেন অথচ মুমিন ব্যক্তির সাথে লড়াই করা কুফুরী কাজের অন্তর্ভুক্ত যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ইমাম বুখারী রহ. এবং অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদীস বর্ণনা করেন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«سباب المسلم فسوق وقتاله كفر» .

“মুসলিমকে গালি দেওয়া পাপ কাজ এবং তার সাথে মারামারি করা কুফুরী।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: ঈমান ( كتاب الإيمان ), পরিচ্ছেদ: অজ্ঞাতসারে মুমিনের আমল নষ্ট হওয়ার আশংকা ( باب خوف المؤمن من أن يحبط عمله وهو لا يشعر ), হাদীস নং ৪৮; সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ঈমান ( كتاب الإيمان ), পরিচ্ছেদ: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: মুসলিমকে গালি দেওয়া গুনাহর কাজ এবং তার সাথে মারামারি করা কুফুরী ( باب بَيَانِ قَوْلِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم : سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ), হাদীস নং ৬৪।] কিন্তু তা এমন কুফুরী যা তাকে মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ করে না। কেননা যদি তা মুসলিম মিল্লাত থেকে বহিষ্কারকারী হত তাহলে তার সাথে ঈমানী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক অটুট থাকত না অথচ উক্ত আয়াতটি মারামারিতে লিপ্ত থাকা সত্ত্বেও ঈমানী ভ্রাতৃত্ব বহাল থাকা প্রমাণ করে।

আর এর দ্বারা বুঝা গেল যে সালাত ত্যাগ করা এমন কুফুরী কাজ যা সালাত বর্জনকারী ব্যক্তিকে দীন ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়; কেননা তা যদি ফাসেকী অথবা যেনতেন নিম্নমানের কুফুরী হত তাহলে ঈমানী ভ্রাতৃত্ব সালাত বর্জনের কারণে নির্বাসিত হয়ে যেত না যেমনিভাবে তা (ঈমানী ভ্রাতৃত্ব) বিলুপ্ত হয়ে যায় না মুমিনকে হত্যা করা এবং তার সাথে মারামারি করার কারণে।

আর যদি কোনো প্রশ্নকারী প্রশ্ন করে যে আপনারা কি যাকাত আদায় না করার কারণে কেউ কাফির হয়ে যাবে বলে মনে করেন? যেমনটি সূরা তাওবার আয়াত থেকে বুঝা যায়।

জবাবে আমরা বলব: কতিপয় আলিমের মতে যাকাত আদায় না করা ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে; আর এটা ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ. এর থেকে বর্ণিত দু‘টি মতের একটি।

কিন্তু আমাদের নিকট জোরালো মত হলো সে কাফির হবে না তবে তাকে ভয়ানক শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবের মধ্যে আলোচনা করেছেন আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন তাঁর সুন্নাহর মধ্যে। তন্মধ্যে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসের মধ্যে আছে তাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত দানে বিরত থাকা ব্যক্তির শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন আর সেই হাদীসের শেষাংশে রয়েছে:

«ثم يُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّار» .

“অতঃপর তাকে তার পথ দেখানো হবে- হয় জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে।” ইমাম মুসলিম রহ. হাদীসটি “যাকাতে বাধাদানকারীর অপরাধ” ( باب إِثْمِ مَانِعِ الزَّكَاةِ ) নামক পরিচ্ছেদে দীর্ঘ আকারে বর্ণনা করেছেন।” [সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: যাকাত ( كتاب الزكاة ), পরিচ্ছেদ: যাকাতে বাধাদানকারীর অপরাধ ( باب إِثْمِ مَانِعِ الزَّكَاةِ ), হাদীস নং ৯৮৭।] আর এই হাদীসটি প্রমাণ করে যে সে কাফির হবে না। কারণ সে যদি কাফির হয়ে যেত তাহলে তার জন্য জান্নাতে যাওয়ার কোনো পথ থাকত না।

অতএব এই হাদীসটির সরাসরি বক্তব্য সূরা তাওবার আয়াতের ভাবার্থের ওপর প্রাধান্য পাবে। কারণ সরাসরি বক্তব্য ভাবার্থের ওপর প্রাধান্য পায় যেমনটি জানা যায় ফিকহ শাস্ত্রের মূলনীতিমালার মধ্যে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন