মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১. তার অভিভাবক হওয়ার যোগ্যতা শেষ হয়ে যাওয়া: সুতরাং তাকে এমন কোনো কাজের অভিভাবক বানানো জায়েয হবে না যে কাজের জন্য ইসলাম অভিভাবকত্বের শর্তারোপ করেছে। আর এর ওপর ভিত্তি করে তাকে তার অনুপযুক্ত সন্তান ও অন্যান্যদের ওপর অভিভাবক (ওলী) নিযুক্ত করা বৈধ হবে না এবং তার তত্ত্বাবধানে তার যেসব মেয়েরা বা অন্য কেউ রয়েছে তাদের কাউকে বিয়ে দিতে পারবে না।
আর আমাদের ফিকহশাস্ত্রবিদগণ তাঁদের সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত গ্রন্থগুলোতে পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন: যখন কোনো অভিভাবক মুসলিম মেয়েকে বিবাহ দিবে তখন সেই অভিভাবকের জন্য শর্ত হলো মুসলিম হওয়া, আর তারা বলেন:
لا ولاية لكافر على مسلمة .
“মুসলিম মেয়ের ওপর কোনো কাফির ব্যক্তির অভিভাবকত্ব চলবে না।”
আর আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন:
«لا نكاح إلا بولي مرشد» .
“যোগ্য অভিভাবক ব্যতীত কোনো বিবাহ চলবে না।” আর সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হলো দীন ইসলামকে গ্রহণ করা, আর সবচেয়ে বোকামী বা মূর্খতা ও অযোগ্যতা হচ্ছে কুফুরী করা ও ইসলাম থেকে বিমূখ হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“আর যে নিজেকে নির্বোধ করেছে, সে ছাড়া ইবরাহীমের মিল্লাত থেকে আর কে বিমুখ হবে!” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৩০]
২. তার আত্মীয়দের মীরাস (পরিত্যক্ত সম্পদ) থেকে বঞ্চিত হয়ে যাওয়া। কেননা কাফির ব্যক্তি মুসলিম ব্যক্তির উত্তরাধিকারী হতে পারে না, আর মুসলিম ব্যক্তি কাফিরের উত্তরাধিকারী হতে পারে না। কারণ, উসামা ইবন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“মুসলিম কাফিরের ওয়ারিস হবে না এবং কাফিরও মুসলিমের ওয়ারিস হবে না।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: উত্তরাধিকার বণ্টনের বিধান ( كتاب الفرائض ), পরিচ্ছেদ: মুসলিম কাফিরের ওয়ারিস হবে না ( باب لاَ يَرِثُ الْمُسْلِمُ الْكَافِرَ ), হাদীস নং ৬৩৮৩; সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: উত্তরাধিকার বণ্টনের বিধান ( كتاب الفرائض ), পরিচ্ছেদ: মুসলিম কাফিরের ওয়ারিস হবে না ( باب لاَ يَرِثُ الْمُسْلِمُ الْكَافِرَ ), হাদীস নং ৪২২৫।]
৩. তার জন্য মক্কা ও তার হারামের এলাকায় প্রবেশ করা হারাম। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র, কাজেই এ বছরের পর তারা যেন মাসজিদুল হারামের ধারে-কাছে না আসে।” [সূরা আত- তাওবা আয়াত: ২৮]
৪. তার দ্বারা যবাইকৃত জীবজন্তু হারাম, অর্থাৎ গৃহপালিত জন্তু উট গরু ছাগল ইত্যাদি ধরনের জীবজন্তু যা হালাল হওয়ার জন্য যবেহ করার শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কারণ, যবেহ করার জন্য অন্যতম শর্ত হলো যবেহকারীকে মুসলিম অথবা কিতাবধারী ইয়াহূদী বা খ্রিষ্টান হওয়া, আর মুরতাদ মূতিপূজক অগ্নিপূজক বা অনুরূপ কোনো ব্যক্তি যা যবেহ করবে তা খাওয়া হালাল হবে না।
প্রখ্যাত তাফসীরকারক খাযেন রহ. তাঁর তাফসীরের মধ্যে বলেছেন: “আলিমগণ এই ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, অগ্নিপূজক আরবের মুশরিকগণ ও মূতিপূজারীগণসহ সকল মুশরিক এবং যাদেরকে কোনো কিতাব দেওয়া হয় নি, এমন সকল ব্যক্তির যবাইকৃত সকল পশু-পাখি হারাম।”
আর ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ. বলেন:
لا أعلم أحدا بخلافه إلا أن يكون صاحب بدعة
“কোনো ব্যক্তি এর বিপরীত মত পোষণ করেছেন বলে আমার জানা নেই, তবে হ্যাঁ বিদ‘আতপন্থী ব্যক্তি হলে বলতে পারে।”
৫. তার মৃত্যুর পরে তার ওপর জানাযার সালাত পড়া এবং তার জন্য ক্ষমা ও রহমতের দো‘আ করা হারাম। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“আর তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে আপনি কখনো তার জন্য জানাযার সালাত পড়বেন না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবেন না; তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছিল এবং ফাসেক অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।” [সূরা আত- তাওবাহ, আয়াত: ৮৪] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
“আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। আর ইবরাহীম তার পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে, তারপর যখন এটা তার কাছে সুস্পষ্ট হলো যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন ইবরাহীম তার সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। ইবরাহীম তো কোমল হৃদয় ও সহনশীল।” [সূরা আত- তাওবা আয়াত: ১১৩–১১৪]
আর যে কোনো কারণেই হউক না কেন, যে ব্যক্তি কুফুরীর ওপর মারা গেল তার জন্য কোনো মানুষের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও রহমতের দো‘আ করাটা দো‘আর ক্ষেত্রে এক প্রকার বাড়াবাড়ির শামিল, আল্লাহর সাথে এক ধরনের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনগণের পথ থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্তর্ভুক্ত।
আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের ওপর বিশ্বাস রাখে তার পক্ষে কিভাবে সম্ভব যে সে এমন ব্যক্তির জন্য মাগফিরাত ও রহমতের দো‘আ করবে যার মৃত্যু হয়েছে কুফুরী অবস্থায় এবং সে হচ্ছে আল্লাহর শত্রু? যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“যে কেউ আল্লাহ তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর রাসূলগণ এবং জিবরীল ও মীকাঈলের শত্রু হবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদের শত্রু।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৯৮] সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, তিনি স্বয়ং প্রত্যেক কাফিরের শত্রু। ফলে প্রত্যেক মুমিনের জন্য অপরিহার্য হলো প্রত্যেক কাফির থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“আর স্মরণ করুন যখন ইবরাহীম তার পিতা এবং তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, তোমরা যেগুলোর ইবাদাত কর নিশ্চয় আমি তাদের থেকে সম্পর্কমুক্ত, তবে তিনি ব্যতীত যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর নিশ্চয় তিনি শীঘ্রই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন।” [সূরা আয-যুখরুফ আয়াত: ২৬-২৭] আর আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন:
“অবশ্যই তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার সাথে যারা ছিল তাদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। যখন তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল তোমাদের সংগে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদাত কর তা হতে আমরা সম্পর্কমুক্ত। আমরা তোমাদেরকে অস্বীকার করি। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হলো শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য, যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহতে ঈমান আন।” [সূরা আল-মুমতাহিনাহ আয়াত: ৪] আর এর মাধ্যমে সে যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে পারে, যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“আর মহান হজের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি এটা এক ঘোষণা যে, নিশ্চয় মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ দায়মুক্ত এবং তাঁর রাসূলও।” [সূরা আত- তাওবা আয়াত: ৩]
আর ঈমানের সবচেয়ে মজবুত রশি হলো: আল্লাহর জন্য ভালোবাসা আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব স্থাপন করা আর আল্লাহর জন্য শত্রুতা করা যাতে আপনি আপনার নিজের ভালোবাসার স্বার্থে ঘৃণার স্বার্থে বন্ধত্ব স্থাপনে এবং শত্রুতা প্রদর্শনে মহান আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির সন্ধানী হয়ে যেতে পারেন।
৬. মুসলিম নারীকে তার পক্ষে বিয়ে করা হারাম: কারণ সে কাফির, আর কুরআন ও সুন্নাহর বক্তব্য এবং ইজমা তথা মুসলিম মিল্লাতের ঐক্যমত্যের দ্বারা প্রমাণিত যে কাফির ব্যক্তির জন্য মুসলিম নারী বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাছে মুমিন নারীরা হিজরত করে আসলে তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা করো; আল্লাহ্ তাদের ঈমান সম্বন্ধে সম্যক অবগত। অতঃপর যদি তোমরা জানতে পার যে তারা মুমিন নারী তবে তাদেরকে কাফিরদের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ো না। মুমিন নারীগণ কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিরগণ মুমিন নারীদের জন্য বৈধ নয়।” [সূরা আল-মুমতাহিনাহ আয়াত: ১০]
আল-মুগনী ( المغني ) নামক কিতাবে (৬/৫৯২) বলা হয়েছে: “আহলে কিতাব ব্যতীত সমস্ত কাফিরের মেয়েরা এবং তাদের যবাইকৃত জীবজন্তু হারাম হওয়ার ব্যাপারে আলিমগণের মাঝে কোনো মতভেদ নেই।” তিনি আরো বলেন: “মুরতাদ (ইসলাম ত্যাগকারী) মেয়েকে বিয়ে করা হারাম, সে যে কোনো ধর্মের অনুসারীই হউক না কেন। কারণ, তার জন্য ঐ দীনের অনুসারীর বিধান সাব্যস্ত হয় নি, যে দীনে সে পরিবর্তিত হয়ে গেছে।”
আর একই গ্রন্থের মুরতাদের পরিচ্ছেদে (৮/১৩০) বলা হয়েছে: “যদি সে বিয়ে করে তার বিয়ে শুদ্ধ হবে না। কারণ, তাকে বিয়ের ওপর স্থির রাখা যায় না, আর যা বিয়ের ওপর স্থির রাখতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তা বিয়ে সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে যেমন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় কাফির কর্তৃক মুসলিম নারীকে বিয়ে করার সময়।” [হানাফী কিতাব মাজমা‘উল আনহুর ( المجمع الأنهر ) এর কাফিরের বিয়ে নামক পরিচ্ছেদ ( باب نكاح الكافر ) এর শেষে (১ / ২০২) রয়েছে: “মুরতাদ পুরুষ এবং মুরতাদ নারীকে বিয়ে করা বৈধ নয়।” কারণ, এই ব্যাপারে সকল সাহাবীর ঐক্যবদ্ধ ইজমা সংঘটিত হয়েছে।]
সুতরাং আপনি তো দেখতে পেলেন যে মুরতাদ মেয়েকে বিয়ে করা পরিষ্কাভাবে হারাম করা হয়েছে; অপরপক্ষে মুরতাদ পুরুষের সঙ্গে (মুসলিম মেয়ের) বিয়ে অশুদ্ধ। অতএব, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর যদি মুরতাদ হয়ে যায় তাহলে কী হতে পারে?
আল-মুগনী ( المغني ) নামক কিতাবে (৬/২৯৮) বলা হয়েছে: “যখন স্বামী ও স্ত্রীর কোনো একজন বাসরের পূর্বেই মুরতাদ হয়ে যায় তখন সাথে সাথেই বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে এবং তাদের একজন অপর জনের ওয়ারিস (সম্পদের উত্তরাধিকারী) হবে না। আর যদি বাসরের পরে মুরতাদ হয় তাহলে এই ব্যাপারে দু‘টি মত রয়েছে: তন্মধ্যে প্রথম মতটি হলো: সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যকার বিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, আর দ্বিতীয় মত হলো: ইদ্দত পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বিয়ে স্থগিত হয়ে থাকবে (ইদ্দত পূর্ণ হলেই বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে)।”
আল-মুগনী ( المغني ) নামক কিতাবে (৬/639) আরো বলা হয়েছে: “বাসরের পূর্বে মুরতাদ হওয়ার কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে- এটা সকল আলিমের বক্তব্য এবং এর স্বপক্ষে দলীল পেশ করা হয়েছে।”
আর তাতে আরো বলা হয়েছে: বাসরের পর মুরতাদ হলে ইমাম মালেক ও আবূ হানিফা রহ.-এর মতে সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে, আর ইমাম শাফেঈ রহ.-এর মতে ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর বিবাহ বিচ্ছেদ হবে।
এ কথার দাবি হচ্ছে চার ইমামের ঐক্যবদ্ধ মতের ভিত্তিতে স্বামী ও স্ত্রীর কোনো একজন মুরতাদ হলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে; কিন্তু যদি বাসরের পূর্বে মুরতাদ হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। আর যদি বাসরের পর মুরতাদ হয় তবে ইমাম মালেক ও ইমাম আবূ হানিফা রহ.-এর মতে তাৎক্ষণিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটবে, আর ইমাম শাফেঈ রহ.-এর মতে ইদ্দত পার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে তারপর বিচ্ছেদ ঘটবে। উপরোক্ত দুই মাযহাবের অনুরূপ ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল রহ. থেকে দু‘টি বর্ণনা রয়েছে।
আল-মুগনী ( المغني ) নামক গ্রন্থের ৬৪০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে: “স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে যদি একই সঙ্গে মুরতাদ হয়ে যায় তাহলে তাদের হুকুমও অনুরূপ যেমন হুকুম রয়েছে উভয়ের মধ্য থেকে কোনো একজন মুরতাদ হলে, যদি বাসরের পূর্বে মুরতাদ হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। আর যদি বাসরের পর মুরতাদ হয় তবে কি সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে নাকি ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর বিবাহ বিচ্ছেদ হবে? এই ব্যাপারে দু‘টি বর্ণনা রয়েছে: ইমাম শাফেঈ রহ.-এর মতে ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর বিবাহ বিচ্ছেদ হবে। আর ইমাম আবূ হানিফা রহ.-এর মতে এই ক্ষেত্রে (স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে একই সঙ্গে মুরতাদ হলে) ইস্তিহসান ( استحسان ) এর ভিত্তিতে বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না। কারণ, তাদের উভয়ের ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় নি, আর এটা ঠিক তেমনই যেমন দু‘জনই যদি একই সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করে।” অতঃপর আল-মুগনী ( المغني ) নামক গ্রন্থের লেখক তার (ইমাম আবূ হানিফা রহ.-এর) উক্ত কিয়াস-এর ( طرد ) তথা গঠনমূলক ও ( عكس ) বা বিপরীতমূখী প্রমাণ প্রদানের মাধ্যমে খণ্ডন করেছেন।
আর যখন একথা সুস্পষ্ট হয়ে গেল যে মুরতাদের বিবাহ কোনো মুসলিমের সঙ্গে শুদ্ধ নয় চাই সে নারী হউক বা পুরুষ, আর এটাই কুরআন ও সুন্নাহর দ্বারা প্রমাণিত; আর এটাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে সালাত বর্জনকারী হচ্ছে কাফির যা কুরআন সুন্নাহ ও সকল সাহাবীর বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত। আর এটাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে কোনো ব্যক্তি যদি সালাত আদায় না করে এবং কোনো মুসলিম নারীকে বিয়ে করে তাহলে তার বিয়ে শুদ্ধ নয় আর এই বন্ধন দ্বারা সেই নারী তার জন্য হালালও নয়, তবে সে যদি আল্লাহ তা‘আলার নিকট তাওবা করে এবং ইসলামের দিকে ফিরে আসে তাহলে তার ওপর বিবাহকে আবার নবায়ন করা আবশ্যক হবে। আর অনুরূপ বিধান প্রযোজ্য হবে ঐ নারীর ক্ষেত্রেও যে সালাত আদায় করে না।
আর এটা কাফিরদের কুফুরী অবস্থায় সংঘটিত বিবাহ থেকে ভিন্ন রকম; যেমন একজন কাফির পুরুষ একজন কাফির মেয়েকে বিয়ে করল অতঃপর উক্ত স্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করল এই পরিস্থিতিতে যদি সে মেয়ের ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি বাসরের পূর্বে হয়ে থাকে তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। আর যদি সে মেয়ের ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি বাসরের পরে হয়ে থাকে তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না বরং স্বামীর ইসলাম গ্রহণের অপেক্ষায় থাকবে। তারপর যদি ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই স্বামী ইসলাম গ্রহণ তাহলে সে মেয়ে তারই স্ত্রীরূপে বহাল থাকবে। আর যদি স্বামীর ইসলামের পূর্বেই ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তাহলে সেই স্বামীর জন্য তার ওপর কোনো অধিকার থাকবে না। কারণ, এখানে পরিষ্কার হয়ে গেল যে সেই মেয়ের ইসলাম গ্রহণ করার সময় থেকেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।
আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে কাফিরগণ তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে একই সময় ইসলাম গ্রহণ করত এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে তাদের নিজ নিজ বিয়ের ওপর স্থির রাখতেন, তবে যদি তাদের মধ্যে বিয়ে হারাম হওয়ার কারণ বিদ্যমান থাকত তাহলে ভিন্ন কথা, যেমন স্বামী-স্ত্রী দু‘জনই অগ্নিপূজক এবং তাদের উভয়ের মাঝে এমন আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে যার কারণে তাদের একে অপরের সঙ্গে বিয়ে হারাম। অতএব, যখন তারা দু‘জন ইসলাম গ্রহণ করবে তখন তাদের মধ্যে বিয়ে হারাম হওয়ার কারণ বিদ্যমান থাকার কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।
আর এই মাসআলাটি ঐ মুসলিম ব্যক্তির মাসআলার মত নয়, যে সালাত ত্যাগ করার কারণে কাফির হয়েছে। অতঃপর মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছে। কারণ, মুসলিম নারী কাফিরের জন্য হালাল নয় এটা কুরআন ও হাদীসের বক্তব্য এবং ইজমা দ্বারা প্রমাণিত যেমনটি পূর্বে আলোচিত হয়েছে যদিও সে কাফিরটি মৌলিকভাবে মুরতাদ নয়, আর এই জন্য যদি কোনো কাফির কোনো মুসলিম নারীকে বিয়ে করে তাহলে বিয়েটি বাতিল বলে গণ্য হবে এবং তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেয়া আবশ্যক (ওয়াজিব) হবে। আর যদি সে ইসলাম গ্রহণ করে এবং সে মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে চায় তাহলে আবার নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ব্যতীরেকে তার জন্য এটা সম্ভব হবে না।
৭. সালাত বর্জনকারী কর্তৃক মুসলিম নারীকে বিয়ে করার পর জন্ম হওয়া সন্তানদের বিধান: মায়ের দিকে লক্ষ্য করলে সর্বাবস্থায় সন্তান হচ্ছে মায়ের। আর স্বামীর দিকে লক্ষ্য করলে যারা সালাত বর্জনকারীকে কাফির মনে করেন না তাদের মতে সেসব সন্তান তার সাথে সম্পৃক্ত হবে; কারণ (তাদের মতে) তার বিবাহ শুদ্ধ ছিল। আর যারা সালাত বর্জনকারীকে কাফির মনে করেন এবং এটাই সঠিক যেমনটি তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণসহ প্রথম পরিচ্ছেদে আলোচিত হয়েছে; আমরা সেই মতের ওপর ভিত্তি করে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখব:
* যদি স্বামী একথা না জানে যে তার বিবাহ বাতিল ছিল অথবা তার এই বিশ্বাস ছিল না যে (সালাত বর্জনকারী কাফির) তাহলে সন্তানগুলো তার সন্তান বলেই গণ্য হবে। কারণ, এই অবস্থায় তার ধারণা মতে স্ত্রী মিলন বৈধ ছিল। সুতরাং তার এই মিলন সংশয়ের মিলন ছিল যাতে বংশ সাব্যস্ত হয়ে যাবে।
* আর স্বামী যদি একথা জানে যে তার বিবাহ বাতিল ছিল অথবা তার এই বিশ্বাস ছিল যে (সালাত বর্জনকারী কাফির) তাহলে সন্তানগুলো তার সন্তান বলে গণ্য হবে না। কারণ, তার সন্তান এমন বীর্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে যার সম্বন্ধে তার ধারণা ও বিশ্বাস ছিল তার সহবাস হারাম হয়েছে; কেননা তার সেই সহবাস হয়েছে এমন এক স্ত্রীর সাথে যে স্ত্রী তার জন্য হালাল ছিল না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/92/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।