HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
সালাত শিক্ষা
লেখকঃ ড. আব্দুল্লাহ ইবন আহমাদ আলী আয-যাইদ
৪
কিছু কথানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, সহীহ হাদীসে এসেছে , তিনি বলেন,
«بني الإسلام على خمسٍ شهادة أن لا إله إلا الله وأنّ محمداً رسول الله وإقامِ الصلاة وإيتاءِ الزّكاةِ وصومِ رمضانَ وحجِّ البيت لمن استطاع إليه سبيلاً ..»
“ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের ওপর স্থাপিত, সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, রমাযান মাসে সাওম পালন করা। সক্ষম ব্যক্তির জন্য আল্লাহর ঘরে (কাবা শরীফে) হজ পালন করা”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম]
উক্ত হাদীসটি ইসলামের পাঁচটি রুকন বা স্তম্ভকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
প্রথম স্তম্ভ:
«شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمداً رسول الله»
“আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রাসূল- এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা।” আর এখানে ‘লা ইলাহা’ শব্দটি প্রমাণ করছে যে, আল্লাহ ছাড়া যা কিছুর ইবাদত করা হয় তা সবই বাতিল এবং ‘ইল্লাল্লাহ’ শব্দটি প্রমাণ করছে ইবাদত কেবল এক আল্লাহর জন্যই নিবেদিত হতে হবে, যাঁর কোনো অংশীদার নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَأُوْلُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَآئِمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ١٨﴾ [ ال عمران : ١٨ ]
“আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, আর ফিরিশতা ও জ্ঞানীগণও। তিনি ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]
আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, এ কথার সাক্ষ্য দানের মাধ্যমে তিনটি জিনিসের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
প্রথমত: তওহীদুল উলুহিয়্যাহ, অর্থাৎ সকল প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহর নিমিত্তে, এ কথার স্বীকারোক্তি দেওয়া এবং ইবাদতের কোনো অংশই আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্যে নিবেদন না করার অঙ্গিকার করা। আর এ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিজগতকে অস্তিত্বে এনেছেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]
“আমি জ্বিন ও মানব জাতিকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]
আর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে রাসূলগণকে কিতাবসহ পাঠিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَ﴾ [ النحل : ٣٦ ]
“প্রত্যেক উম্মাতের নিকট আমরা রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা কেবল আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত (আল্লাহ ব্যতীত যে জিনিস বা বস্তুকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করা হয়) থেকে দূরে অবস্থান কর”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]
আর তাওহীদের সম্পূর্ণ বিপরীত হলো শির্ক। অতএব, তাওহীদের অর্থ যেহেতু সকল প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহ জন্য নির্দিষ্ট করা। তাই শির্ক হলো ইবাদতের কোনো অংশ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য নির্দিষ্ট করা। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজ খেয়াল-খুশি মতো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে সালাত, সাওম, দো‘আ (প্রার্থনা) নযর-মান্নত, জীবজন্তু উৎসর্গ ইত্যাদি করবে অথবা মৃতব্যক্তির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, সে ইবাদতের ক্ষেত্রে শির্কের আশ্রয় নিল, আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার হিসেবে সাব্যস্ত করে নিল। শির্ক হলো সবচেয়ে বড় গুনাহ। এটি সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। এমনকি শির্কে নিপতিত ব্যক্তির জান-মালের সম্মান পর্যন্ত রহিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, অর্থাৎ এ কথা স্বীকার করা যে, একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, জীবন দানকারী, মৃত্যু প্রদানকারী, মুদাব্বির (ব্যবস্থাপক) এবং আসমান ও যমীনে একমাত্র তাঁরই বাদশাহী। এ প্রকার তাওহীদকে স্বীকৃতি দেওয়া সৃষ্টিজগতের একটি স্বভাবজাত ফিতরত-প্রকৃতি, এমনকি যেসব মুশরিকের মাঝে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত হয়েছিলেন তারাও তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহকে স্বীকার করত এবং তা অস্বীকার করত না।
আল্লাহ বলেন,
﴿قُلۡ مَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ أَمَّن يَمۡلِكُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَمَن يُخۡرِجُ ٱلۡحَيَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۚ فَسَيَقُولُونَ ٱللَّهُۚ فَقُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ٣١﴾ [ يونس : ٣١ ]
“বল, আসমান ও যমীন থেকে কে তোমাদের রিযিক দেন? অথবা কে (তোমাদের) শ্রবণ ও দৃষ্টিসমূহের মালিক? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন আর জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন? কে সব বিষয় পরিচালনা করেন? তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। সুতরাং তুমি বল, ‘তার পরও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না?” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৩১]
এ প্রকার তাওহীদকে খুব কম সংখ্যক মানুষই অস্বীকার করে, যারা অস্বীকার করে তারাও আবার বাহ্যিক অস্বীকার সত্ত্বেও হৃদয়ের মনিকোঠায়, নিভৃতে, স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে থাকে। তাদের বাহ্যিক অস্বীকৃতিটা হয় কেবলই জেদ ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে। এ বিষয়টির প্রতিই আল্লাহ তা‘আলা ইঙ্গিত করে বলেন,
﴿وَجَحَدُواْ بِهَا وَٱسۡتَيۡقَنَتۡهَآ أَنفُسُهُمۡ ظُلۡمٗا وَعُلُوّٗا﴾ [ النمل : ١٤ ]
“তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে অহংকার করে নিদর্শনগুলোকে প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে দৃঢ়বিশ্বাস করেছিল”। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ১৪]
তৃতীয়ত: তাওহীদুল আসমা ওয়াসসিফাত, অর্থাৎ আল্লাহ যেসব নাম ও গুণে নিজকে গুণান্বিত করেছেন অথবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব নাম ও গুণে তাঁকে গুণান্বিত করেছেন, তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং কোনোরূপ সুনির্দিষ্ট আকার, সাদৃশ্য, বিকৃতি ও বিলুপ্তি ইত্যাদির আশ্রয়ে না গিয়ে, তাঁর মহত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, এমনভাবে সে নাম ও গুণরাজির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَا﴾ [ الاعراف : ١٨٠ ]
“আর আল্লাহর রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাক।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮০]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ﴾ [ الشورا : ١١ ]
“তাঁর মতো কিছু নেই, আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]
সুতরাং কালেমায়ে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” উক্ত তিন প্রকার তাওহীদের স্বীকারোক্তিকে শামিল করে।
অতএব, যে ব্যক্তি এই কালেমা সম্যকরূপে অনুধাবন করে তার দাবি মোতাবেক আমল করল, অর্থাৎ শির্ক বর্জন এবং তাওহীদে বিশ্বাস করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ উচ্চারণ করল এবং সে অনুযায়ী আমল করল সেই প্রকৃত মুসলিম বলে পরিগণিত হবে। আর যে ব্যক্তি অন্তরে বিশ্বাস না রেখে কেবল বাহ্যিকভাবে মুখে উচ্চারণ করল, সাথে বাহ্যিক আমলগুলোও করে গেল, সে প্রকৃত মুসলিম নয়, সে বরং মুনাফিক। আর যে ব্যক্তি এই কালেমা মুখে উচ্চারণ করে তার দাবির বিপরীত আমল করল, সে কাফির, যদিও সে মৌখিকভাবে এই কালেমা বার বার উচ্চারণ করে চলে, তবুও।
“মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ প্রেরিত রাসূল”- এ কথার সাক্ষ্য প্রদানের তাৎপর্য হলো, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নিকট থেকে যে রিসালাত (বার্তা) নিয়ে এসেছেন তার ওপর ঈমান ও বিশ্বাস স্থাপন করা। অর্থাৎ তাঁর আনীত বিধি-বিধানের আনুগত্য করা ও নিষেধাবলি থেকে বিরত থাকা এবং সকল কাজ তাঁর প্রদর্শিত পদ্ধতি মোতাবেক প্রতিপালন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لَقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيصٌ عَلَيۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١٢٨﴾ [ التوبة : ١٢٨ ]
“নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্যে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৮]
এ বিষয়ে আল-কুরআনের আরো অনেক বাণী প্রনিধানযোগ্য, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَ﴾ [ النساء : ٨٠ ]
“যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮০]
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ١٣٢﴾ [ ال عمران : ١٣٢ ]
“আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও তার রাসূলের যাতে তোমাদেরকে দয়া করা হয়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩২]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلۡكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيۡنَهُمۡ﴾ [ الفتح : ٢٩ ]
“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এবং তার সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর; পরস্পরের প্রতি সদয়”। [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ২৯]
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তম্ভ: সালাত প্রতিষ্ঠিত করা ও যাকাত প্রদান করা।
এ সম্পর্কে আল্লাহর ঘোষণা:
﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ ٥﴾ [ البينة : ٥ ]
“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর, ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়; আর এটিই হলো সঠিক দীন।” [সূরা আল - বায়্যিনাহ, আয়াত: ৫]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱرۡكَعُواْ مَعَ ٱلرَّٰكِعِينَ ٤٣﴾ [ البقرة : ٤٣ ]
“আর তোমরা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৪৩]
সালাত: এটা হলো আমাদের মূল আলোচ্য বিষয়।
যাকাত: আর তা হচ্ছে ঐ সম্পদ যা ধনবানের নিকট থেকে সংগৃহীত হয় এবং ধনহীন ও যাকাতের অন্যান্য হকদারদেরকে দেওয়া হয়। যাকাত ইসলামের একটি মহান বিধান, যা দ্বারা সমাজের সদস্যদের মাঝে সংহতি, সৌহার্দ, সহযোগিতা সুনিশ্চিত হয়। যাকাতের বিধানের মাধ্যমে দরিদ্র, অসহায় ও যাকাতের হকদারের প্রতি কোনোরূপ দয়াপ্রদর্শন নয় বরং ধনীদের সম্পদে বিত্তহীনদের এটি একটি নির্দিষ্ট অধিকার।
চতুর্থ স্তম্ভ: রমযান মাসে সাওম পালন করা।
এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩]
পঞ্চম স্তম্ভ: সক্ষম ব্যক্তির জন্য হজ পালন করা। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর ঘোষণা:
﴿وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ ٱلۡعَٰلَمِينَ﴾ [ ال عمران : ٩٧ ]
“সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরয। আর যে কুফুরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭]
«بني الإسلام على خمسٍ شهادة أن لا إله إلا الله وأنّ محمداً رسول الله وإقامِ الصلاة وإيتاءِ الزّكاةِ وصومِ رمضانَ وحجِّ البيت لمن استطاع إليه سبيلاً ..»
“ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের ওপর স্থাপিত, সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, রমাযান মাসে সাওম পালন করা। সক্ষম ব্যক্তির জন্য আল্লাহর ঘরে (কাবা শরীফে) হজ পালন করা”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম]
উক্ত হাদীসটি ইসলামের পাঁচটি রুকন বা স্তম্ভকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
প্রথম স্তম্ভ:
«شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمداً رسول الله»
“আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রাসূল- এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা।” আর এখানে ‘লা ইলাহা’ শব্দটি প্রমাণ করছে যে, আল্লাহ ছাড়া যা কিছুর ইবাদত করা হয় তা সবই বাতিল এবং ‘ইল্লাল্লাহ’ শব্দটি প্রমাণ করছে ইবাদত কেবল এক আল্লাহর জন্যই নিবেদিত হতে হবে, যাঁর কোনো অংশীদার নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَأُوْلُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَآئِمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ١٨﴾ [ ال عمران : ١٨ ]
“আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, আর ফিরিশতা ও জ্ঞানীগণও। তিনি ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]
আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, এ কথার সাক্ষ্য দানের মাধ্যমে তিনটি জিনিসের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
প্রথমত: তওহীদুল উলুহিয়্যাহ, অর্থাৎ সকল প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহর নিমিত্তে, এ কথার স্বীকারোক্তি দেওয়া এবং ইবাদতের কোনো অংশই আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্যে নিবেদন না করার অঙ্গিকার করা। আর এ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিজগতকে অস্তিত্বে এনেছেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]
“আমি জ্বিন ও মানব জাতিকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]
আর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে রাসূলগণকে কিতাবসহ পাঠিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَ﴾ [ النحل : ٣٦ ]
“প্রত্যেক উম্মাতের নিকট আমরা রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা কেবল আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত (আল্লাহ ব্যতীত যে জিনিস বা বস্তুকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করা হয়) থেকে দূরে অবস্থান কর”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]
আর তাওহীদের সম্পূর্ণ বিপরীত হলো শির্ক। অতএব, তাওহীদের অর্থ যেহেতু সকল প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহ জন্য নির্দিষ্ট করা। তাই শির্ক হলো ইবাদতের কোনো অংশ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য নির্দিষ্ট করা। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজ খেয়াল-খুশি মতো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে সালাত, সাওম, দো‘আ (প্রার্থনা) নযর-মান্নত, জীবজন্তু উৎসর্গ ইত্যাদি করবে অথবা মৃতব্যক্তির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, সে ইবাদতের ক্ষেত্রে শির্কের আশ্রয় নিল, আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার হিসেবে সাব্যস্ত করে নিল। শির্ক হলো সবচেয়ে বড় গুনাহ। এটি সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। এমনকি শির্কে নিপতিত ব্যক্তির জান-মালের সম্মান পর্যন্ত রহিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, অর্থাৎ এ কথা স্বীকার করা যে, একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, জীবন দানকারী, মৃত্যু প্রদানকারী, মুদাব্বির (ব্যবস্থাপক) এবং আসমান ও যমীনে একমাত্র তাঁরই বাদশাহী। এ প্রকার তাওহীদকে স্বীকৃতি দেওয়া সৃষ্টিজগতের একটি স্বভাবজাত ফিতরত-প্রকৃতি, এমনকি যেসব মুশরিকের মাঝে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত হয়েছিলেন তারাও তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহকে স্বীকার করত এবং তা অস্বীকার করত না।
আল্লাহ বলেন,
﴿قُلۡ مَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ أَمَّن يَمۡلِكُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَمَن يُخۡرِجُ ٱلۡحَيَّ مِنَ ٱلۡمَيِّتِ وَيُخۡرِجُ ٱلۡمَيِّتَ مِنَ ٱلۡحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۚ فَسَيَقُولُونَ ٱللَّهُۚ فَقُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ٣١﴾ [ يونس : ٣١ ]
“বল, আসমান ও যমীন থেকে কে তোমাদের রিযিক দেন? অথবা কে (তোমাদের) শ্রবণ ও দৃষ্টিসমূহের মালিক? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন আর জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন? কে সব বিষয় পরিচালনা করেন? তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। সুতরাং তুমি বল, ‘তার পরও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না?” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৩১]
এ প্রকার তাওহীদকে খুব কম সংখ্যক মানুষই অস্বীকার করে, যারা অস্বীকার করে তারাও আবার বাহ্যিক অস্বীকার সত্ত্বেও হৃদয়ের মনিকোঠায়, নিভৃতে, স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে থাকে। তাদের বাহ্যিক অস্বীকৃতিটা হয় কেবলই জেদ ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে। এ বিষয়টির প্রতিই আল্লাহ তা‘আলা ইঙ্গিত করে বলেন,
﴿وَجَحَدُواْ بِهَا وَٱسۡتَيۡقَنَتۡهَآ أَنفُسُهُمۡ ظُلۡمٗا وَعُلُوّٗا﴾ [ النمل : ١٤ ]
“তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে অহংকার করে নিদর্শনগুলোকে প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে দৃঢ়বিশ্বাস করেছিল”। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ১৪]
তৃতীয়ত: তাওহীদুল আসমা ওয়াসসিফাত, অর্থাৎ আল্লাহ যেসব নাম ও গুণে নিজকে গুণান্বিত করেছেন অথবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব নাম ও গুণে তাঁকে গুণান্বিত করেছেন, তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং কোনোরূপ সুনির্দিষ্ট আকার, সাদৃশ্য, বিকৃতি ও বিলুপ্তি ইত্যাদির আশ্রয়ে না গিয়ে, তাঁর মহত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, এমনভাবে সে নাম ও গুণরাজির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَا﴾ [ الاعراف : ١٨٠ ]
“আর আল্লাহর রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাক।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮০]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ﴾ [ الشورا : ١١ ]
“তাঁর মতো কিছু নেই, আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]
সুতরাং কালেমায়ে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” উক্ত তিন প্রকার তাওহীদের স্বীকারোক্তিকে শামিল করে।
অতএব, যে ব্যক্তি এই কালেমা সম্যকরূপে অনুধাবন করে তার দাবি মোতাবেক আমল করল, অর্থাৎ শির্ক বর্জন এবং তাওহীদে বিশ্বাস করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ উচ্চারণ করল এবং সে অনুযায়ী আমল করল সেই প্রকৃত মুসলিম বলে পরিগণিত হবে। আর যে ব্যক্তি অন্তরে বিশ্বাস না রেখে কেবল বাহ্যিকভাবে মুখে উচ্চারণ করল, সাথে বাহ্যিক আমলগুলোও করে গেল, সে প্রকৃত মুসলিম নয়, সে বরং মুনাফিক। আর যে ব্যক্তি এই কালেমা মুখে উচ্চারণ করে তার দাবির বিপরীত আমল করল, সে কাফির, যদিও সে মৌখিকভাবে এই কালেমা বার বার উচ্চারণ করে চলে, তবুও।
“মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ প্রেরিত রাসূল”- এ কথার সাক্ষ্য প্রদানের তাৎপর্য হলো, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নিকট থেকে যে রিসালাত (বার্তা) নিয়ে এসেছেন তার ওপর ঈমান ও বিশ্বাস স্থাপন করা। অর্থাৎ তাঁর আনীত বিধি-বিধানের আনুগত্য করা ও নিষেধাবলি থেকে বিরত থাকা এবং সকল কাজ তাঁর প্রদর্শিত পদ্ধতি মোতাবেক প্রতিপালন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لَقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيصٌ عَلَيۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١٢٨﴾ [ التوبة : ١٢٨ ]
“নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্যে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৮]
এ বিষয়ে আল-কুরআনের আরো অনেক বাণী প্রনিধানযোগ্য, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَ﴾ [ النساء : ٨٠ ]
“যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮০]
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ١٣٢﴾ [ ال عمران : ١٣٢ ]
“আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও তার রাসূলের যাতে তোমাদেরকে দয়া করা হয়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩২]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلۡكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيۡنَهُمۡ﴾ [ الفتح : ٢٩ ]
“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এবং তার সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর; পরস্পরের প্রতি সদয়”। [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ২৯]
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তম্ভ: সালাত প্রতিষ্ঠিত করা ও যাকাত প্রদান করা।
এ সম্পর্কে আল্লাহর ঘোষণা:
﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ ٥﴾ [ البينة : ٥ ]
“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর, ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়; আর এটিই হলো সঠিক দীন।” [সূরা আল - বায়্যিনাহ, আয়াত: ৫]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱرۡكَعُواْ مَعَ ٱلرَّٰكِعِينَ ٤٣﴾ [ البقرة : ٤٣ ]
“আর তোমরা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৪৩]
সালাত: এটা হলো আমাদের মূল আলোচ্য বিষয়।
যাকাত: আর তা হচ্ছে ঐ সম্পদ যা ধনবানের নিকট থেকে সংগৃহীত হয় এবং ধনহীন ও যাকাতের অন্যান্য হকদারদেরকে দেওয়া হয়। যাকাত ইসলামের একটি মহান বিধান, যা দ্বারা সমাজের সদস্যদের মাঝে সংহতি, সৌহার্দ, সহযোগিতা সুনিশ্চিত হয়। যাকাতের বিধানের মাধ্যমে দরিদ্র, অসহায় ও যাকাতের হকদারের প্রতি কোনোরূপ দয়াপ্রদর্শন নয় বরং ধনীদের সম্পদে বিত্তহীনদের এটি একটি নির্দিষ্ট অধিকার।
চতুর্থ স্তম্ভ: রমযান মাসে সাওম পালন করা।
এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [ البقرة : ١٨٣ ]
“হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩]
পঞ্চম স্তম্ভ: সক্ষম ব্যক্তির জন্য হজ পালন করা। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর ঘোষণা:
﴿وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ ٱلۡعَٰلَمِينَ﴾ [ ال عمران : ٩٧ ]
“সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরয। আর যে কুফুরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭]
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন