HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদিস সম্ভার

. ঈমান অধ্যায়

جمع الحديث

/ পরিচ্ছেদঃ ঈমান অধ্যায় তাওহীদ ও শিরক বিষয়ক হাদীসসমূহ

সহিহ হাদিস

মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা আমি উফাইর নামক এক গাধার পিঠে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে সওয়ার ছিলাম। তিনি বললেন, “হে মুআয! তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার এবং আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার কী?” আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল অধিক জানেন। তিনি বললেন, “বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার হল এই যে, বান্দা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার হল এই যে, তাঁর সাথে যে শরীক করে না তাকে আযাব দেবেন না।” (বুখারী ২৮৫৬ মুসলিম ১৫৩নং)

সহিহ হাদিস

উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ‘আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্য উপাস্য নেই’ এ কথা জানা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম ১৪৫, আহমাদ ৪৬৪নং)

সহিহ হাদিস

মুআয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি সত্য-চিত্তে (ইখলাসের সাথে) “আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, অআন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (আহমাদ ২২০০৩, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৭, সিঃ সহীহাহ ২২৭৮ নং)

সহিহ হাদিস

মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যার শেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হবে, সে বেহেশ্তে প্রবেশ করবে।” (আহমাদ ২২০৩৪, ২২১২৭, আবূ দাঊদ ৩১১৮, হাকেম ১২৯৯, সহীহুল জামে’ ৬৪৭৯নং)

সহিহ হাদিস

আৰু মালেক থেকে বর্ণিতঃ

আবূ মালেক তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমি শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই) বলবে এবং আল্লাহ ব্যতীত পূজ্যমান যাবতীয় ব্যক্তি ও বস্তুকে অস্বীকার ও অমান্য করবে, তার জান ও মাল অবৈধ হয়ে যাবে। (অর্থাৎ সে ইসলামী রাষ্ট্রে নিরাপত্তা লাভ করবে।) আর তার হিসাব আল্লাহর উপর।” (মুসলিম ১৩৯নং)

সহিহ হাদিস

মুসাইয়িব থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিতৃব্য আবু তালেবের যখন মরণকাল উপস্থিত হয়, তখন তিনি তাঁকে বলেছিলেন, ‘হে পিতৃব্য! আপনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন---এটা এমন এক কলেমা যাকে আল্লাহর নিকট আপনার (মুক্তির) জন্য দলীল স্বরূপ পেশ করব।” (বুখারী ৩৮৮৪, ৪৭৭২, ৬৬৮১নং)

সহিহ হাদিস

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “(পরকালে) আল্লাহ বলবেন, সেই ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের কর, যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে যবের দানা পরিমাণ মঙ্গল (ঈমান) আছে। সেই ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের কর, যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে অণু (বা ভুট্টা) পরিমাণ মঙ্গল (ঈমান) আছে। আর সেই ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের কর, যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে গমের দানা পরিমাণ মঙ্গল (ঈমান) আছে।” (আহমাদ ৩/২৭৬, তিরমিযী ২৫৯৩নং, এ হাদীসের মূল রয়েছে সহীহায়নে)

১০

সহিহ হাদিস

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি কোন কিছুকে আল্লাহর শরীক (শির্ক) না করে মারা যাবে, সে ব্যক্তি বেহেশ্ত্ প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি কোন কিছুকে আল্লাহর শরীক (শির্ক) করে মারা যাবে, সে ব্যক্তি দোযখ প্রবেশ করবে।” (মুসলিম ২৭৯নং)

সহিহ হাদিস

আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “নুহ (আঃ) মৃত্যুর সময় তাঁর দুই ছেলেকে অসিয়ত করে বললেন, ---আমি তোমাকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (বলার) আদেশ করছি। যেহেতু যদি সাত আসমান এবং সাত যমীনকে দাঁড়িপাল্লার এক পাল্লায় রাখা হয় এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’কে অপর পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র পাল্লা বেশী ভারী হবে। যদি সাত আসমান এবং সাত যমীন নিরেট গোলাকার বস্তু হয়, তাহলেও ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তা চূৰ্ণবিচূর্ণ করে দেবে।---” (আহমদ ৭ ১০ ১, ত্বাবরানী বায্‌যার, মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২ ১৯, সিঃ সহীহাহ ১৩৪নং)

১১

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “সাতটি সর্বনাশী কর্ম হতে দূরে থাক।” সকলে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! তা কী কী?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর সাথে শির্ক করা, যাদু করা, ন্যায় সঙ্গত অধিকার ছাড়া আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা করা হারাম করেছেন তা হত্যা করা, সূদ খাওয়া, এতীমের মাল ভক্ষণ করা, (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) যুদ্ধের দিন পলায়ন করা এবং সতী উদাসীনা মুমিনা নারীর চরিত্রে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া।” (বুখারী ২৭৬৬, ৬৮৫৭, মুসলিম ২৭২নং, আবূ দাঊদ, নাসাঈ)

১২

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

“তোমার নিকটতম স্বজনবর্গকে তুমি সতর্ক ক’রে দাও।” (শুআ’রাঃ২১৪) এই আয়াত যখন অবতীর্ণ হল, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর আত্মীয় ও বংশকে সম্বোধন করে বললেন, “হে কুরাইশদল! তোমরা আল্লাহর নিকট নিজেদেরকে বাঁচিয়ে নাও, আমি তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর নিকট কোন উপকার করতে পারব না। হে বানী আব্দুল মুত্তালিব! আমি আল্লাহর দরবারে তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে (চাচা) আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব! আমি আল্লাহর দরবারে আপনার কোন কাজে আসব না। হে আল্লাহর রসূলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আপনার জন্য আল্লাহর দরবারে কোন উপকারে আসব না। হে আল্লাহর রসূলের বেটী ফাতেমা! আমার কাছে যে ধন-সম্পদ চাইবে চেয়ে নাও, আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোন উপকার করতে পারব না।” (বুখারী ৩৫২৭, মুসলিম ৫২২, ৫২৫নং)

১৩

সহিহ হাদিস

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ

একদা এক ব্যক্তি কোন ব্যাপারে তাঁকে বলল, ‘আল্লাহ ও আপনি যা চেয়েছেন (তাই হয়েছে)।’ তা শুনে তিনি বললেন, “তুমি তো আল্লাহর সঙ্গে আমাকে শরীক (বা সমকক্ষ) করে ফেললে! না, বরং আল্লাহ একাই যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে।” (আহমদ ১৮৩৯, বুখারীর আদব ৭৮৩, ইবনে মাজাহ ২১১৭, বাইহাক্বী ৫৬০৩, সিঃ সহীহাহ ১৩৯নং)

সহিহ হাদিস

আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “(কিয়ামতের দিন) আল্লাহ আমার উম্মতের একটি লোককে বেছে নিয়ে তার সামনে নিরানব্বইটি (আমল-নামা) রেজিষ্টার বিছিয়ে দেবেন; প্রত্যেকটি রেজিষ্টার দৃষ্টি বরাবর লম্বা! অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, ‘তুমি কি লিখিত পাপের কোন কিছু অস্বীকার কর? আমার আমল সংরক্ষক ফেরেশতা কি তোমার প্রতি কোন অন্যায় করেছে?’ লোকটি বলবে, 'না, হে আমার প্রতিপালক!’ আল্লাহ বলবেন, ‘তোমার কি কোন পেশ করার মত ওযর আছে অথবা তোমার কি কোন নেকী আছে?’ লোকটি হতবাক হয়ে বলবে, ‘না, হে আমার প্রতিপালক!’ আল্লাহ বলবেন, ‘অবশ্যই আমাদের কাছে তোমার একটি নেকী আছে। আর আজ তোমার প্রতি কোন প্রকার অবিচার করা হবে না।’ অতঃপর একটি কার্ড বের করা হবে, যাতে লেখা থাকবে, ‘আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অআন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরসূলুহ।’ আল্লাহ মীযান (দাঁড়িপাল্লা) আনতে আদেশ করবেন। লোকটি বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! এতগুলি বড় বড় রেজিষ্টারের কাছে এই কার্ডটির ওজন আর কী হবে?’ আল্লাহ বলবেন, ‘তোমার প্রতি অবিচার করা হবে না।’ অতঃপর রেজিষ্টারগুলোকে দাঁড়ির এক পাল্লায় এবং ঐ কার্ডটিকে অন্য পাল্লায় চড়ানো হবে। দেখা যাবে, রেজিষ্টারগুলোর ওজন হাল্কা এবং কার্ডটির ওজন ভারী হয়ে গেছে! যেহেতু আল্লাহর নামের চেয়ে অন্য কিছু ভারী নয়।” (আহমাদ ৬৯৯৪, তিরমিযী ২৬৩৯, ইবনে মাজাহ ৪৩০০নং, হাকেম ১/৪৬)

১৪

সহিহ হাদিস

উবাদাহ বিন স্বামেত থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মরণের পূর্বে কখনই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবে না।” (আহমদ ২২৭৬৪, নাসাঈর কুবরা ৭৭৬৪, সহীহুল জামে’ ২৪৫৯নং)

১৫

সহিহ হাদিস

উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা আমাকে নিয়ে (আমার তা’যীমে) বাড়াবাড়ি করো না, যেমন খ্রিষ্টানরা ঈসা ইবনে মারয়্যামকে নিয়ে করেছে। আমি তো আল্লাহর দাস মাত্র। অতএব তোমরা আমাকে আল্লাহর দাস ও তাঁর রসূলই বলো।” (বুখারী ৩৪৪৫,, মিশকাত ৪৮৯৭ নং)

১৭

সহিহ হাদিস

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি একদা (সওয়ারীর উপর) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে (বসে) ছিলাম। তিনি বললেন, “ওহে কিশোর! আমি তোমাকে কয়েকটি (গুরুত্বপূর্ণ কথা শিক্ষা দেব (তুমি সেগুলো স্মরণ রেখো)। তুমি আল্লাহর (বিধানসমূহের) রক্ষণাবেক্ষণ কর (তাহলে) আল্লাহও তোমার রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহর (অধিকারসমূহ) স্মরণ রাখো, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সম্মুখে পাবে। যখন তুমি চাইবে, তখন আল্লাহর কাছেই চাও। আর যখন তুমি সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। আর এ কথা জেনে রাখ যে, যদি সমগ্র উন্মত তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। আর তারা যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। কলমসমূহ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং খাতাসমূহ (ভাগ্যলিপি) শুকিয়ে গেছে।” (তিরমিযী ২৫১৬নং)

১৮

সহিহ হাদিস

আনাস বিন মালেক থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তায় পড়লে বলতেন, “হে চিরঞ্জীব! হে অবিনশ্বর! আমি তোমার রহমতের অসীলায় (তোমার নিকট) সাহায্যের আবেদন করছি।” (তিরমিযী ৩৫২৪নং)

১৯

সহিহ হাদিস

আবূ সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না কি? অথচ আমি তাঁর নিকট বিশ্বস্ত যিনি আকাশে আছেন। আমার নিকট সকাল ও সন্ধ্যায় আকাশের খবর আসে।” (বুখারী ৪৩৫১, মুসলিম ২৫০০নং)

২০

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “ঈমান সত্তর বা ষাটের অধিক শাখাবিশিষ্ট; যার উত্তম (ও প্রধান) শাখা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই) বলা এবং সবচেয়ে ক্ষুদ্র শাখা পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। আর লজ্জাশীলতা ঈমানের অন্যতম শাখা।” (মুসলিম ১৬২নং)

১৬

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “---কিয়ামতে লোকেরা সবাই সুপরিশের জন্য আদম, নুহ, ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসা নবীর কাছে যাবে। তাঁরা একে একে সকলে ওযর পেশ করলে অবশেষে লোকেরা শেষনবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এসে বলবে, ‘হে মুহাম্মদ! আপনি আল্লাহর রসূল। আপনি আখেরী নবী। আল্লাহ আপনার পূর্বাপর যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। অতএব আপনি আমাদের জন্য আপনার প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না, আমরা কি (ভয়াবহ) দুঃখ ও যন্ত্রণা ভোগ করছি।’ তখন তিনি চলে যাবেন এবং আরশের নীচে তাঁর প্রতিপালকের জন্য সিজদাবনত হবেন। অতঃপর আল্লাহ তাঁর প্রশংসা ও গুণগানের জন্য তাঁর হৃদয়কে এমন উন্মুক্ত করে দেবেন, যেমন ইতিপূর্বে আর কারো জন্য করেননি। অতঃপর আল্লাহ বলবেন, ‘হে মুহাম্মদ! মাথা উঠাও, চাও, তোমাকে দেওয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে।’ তখন শেষনবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঠিয়ে বলবেন, “আমার উম্মতকে (রক্ষা করুন) হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মতকে (রক্ষা করুন) হে প্রতিপালক! আমার উম্মতকে (রক্ষা করুন) হে প্রতিপালক!” (বুখারী ৩৩৪০, মুসলিম ৫০১নং)

২১

সহিহ হাদিস

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে তাঁকে বলল, ‘আল্লাহ ও আপনার ইচ্ছা।’ তিনি বললেন, “তুমি কি আমাকে আল্লাহর শরীক (ও সমকক্ষ) করে ফেললে? বল, ‘একমাত্র আল্লাহরই ইচ্ছা।” (বুখারীর আদাব ৭৮৩, নাসাঈর কুবরা ১০৮২৫, বাইহাক্বী ৫৬০৩, ত্বাবারানী ১২৮২৯নং)

২২

সহিহ হাদিস

মুআবিয়া বিন হাকাম সুলামী থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহুদ ও জাওয়ানিয়্যাহর মধ্যবর্তী জায়গায় আমার কিছু ছাগল ছিল, যার দেখাশোনা করত আমারই এক ক্রীতদাসী। একদা সে পাল ছেড়ে দিলে অকস্মাৎ এক নেকড়ে এসে একটি ছাগল নিয়ে চম্পট দেয়। আমি আদম সন্তানের অন্যতম মানুষ, মনস্তাপ ও ক্রোধে দাসীকে চপেটাঘাত করলাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে সে কথার উল্লেখ করলে তিনি তা আমার জন্য বড় গুরুতর মনে করলেন। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি ওকে মুক্ত করে দেব না কি?’ তিনি বললেন, “ওকে ডাকো।” আমি ওকে ডেকে আনলে তিনি ওকে প্রশ্ন করলেন, “আল্লাহ কোথায়?” দাসীটি বলল, ‘আকাশে।’ তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, “আমি কে?” সে বলল, ‘আপনি আল্লাহর রসূল।’ তিনি বললেন, “ওকে মুক্ত করে দাও; যেহেতু ও মুমিন নারী।” (মুসলিম ১২২৭, আবূ দাঊদ ৯৩১, নাসাঈড় কুবরা ১১৪১, প্রভৃতি)

২৩

সহিহ হাদিস

আৰু মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ আয্‌যা অজাল্ল্‌ ঘুমান না এবং ঘুম তার জন্য শোভনীয় নয়। তিনি তুলাদণ্ড (রুযী অথবা মর্যাদা) নিম্ন করেন ও উত্তোলন করেন। তার প্রতি উখিত করা হয় দিনের আমলের পূর্বে রাতের আমল এবং রাতের আমলের পূর্বে দিনের আমল।” (মুসলিম ৪৬৫, ইবনে মাজাহ ১৯৫নং)
/ পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহ্‌র গুণাবলী

২৫

সহিহ হাদিস

আৰু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আল্লাহ ঐ দু’টি লোককে দেখে হাসেন, যাদের মধ্যে একজন অপরজনকে হত্যা করে এবং দু’জনই জান্নাতে প্রবেশ করবে।” লোকেরা বলল, ‘তা কীভাবে হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, “নিহত ব্যক্তিকে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা অবস্থায় (কোন কাফের কর্তৃক) হত্যা ক’রে দেওয়া হয়। পরে আল্লাহ তাআলা হত্যাকারী কাফেরকে তওবা করার তাওফীক প্রদান করেন। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ ক’রে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে যায়।” (বুখারী ২৮২৬, মুসলিম ৫০০০-৫০০২ নং)

২৪

সহিহ হাদিস

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সেই আল্লাহর যাবতীয় প্রশংসা, যাঁর শ্রবণশক্তি সকল শব্দতে পরিব্যপ্ত। বিতণ্ডাকারী মহিলা রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে বাদানুবাদ করছিল এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করছিল। আমি ঘরের এক পাশে ছিলাম, আমি তার কথা শুনতে পাইনি, কিন্তু মহান আল্লাহ (সাত আসমানের উপর থেকে তার কথা শুনে নিয়ে) সূরা মুজাদিলাহ অবতীর্ণ করলেন। (ইবনে মাজাহ ১৮৮নং)

২৭

সহিহ হাদিস

আবূ রাযীন থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমাদের প্রতিপালক নিজ বান্দার নিকটে তার (মন্দ) অবস্থার পরিবর্তন করবেন তা সত্ত্বেও তার নিরাশ হওয়ার ব্যাপারে হাসেন।” আবূ রাযীন বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! মহান প্রতিপালকও কি হাসেন?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ--!” আবূ রাযীন বললেন, ‘সেই প্রতিপালকের নিকট কল্যাণ অবর্তমান কক্ষনই পাব না, যিনি হাসেন।’ (আহমাদ ১৬১৮৭, ইবনে মাজাহ ১৮১, ত্বাবারানী ১৫৮০০, প্রমুখ সিলসিলাহ সহীহাহ ২৮১০নং)

২৮

সহিহ হাদিস

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

একদা আলী (রাঃ) সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে নির্দিষ্ট দুআ পড়ার পর হাসলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আমীরুল মু'মিনীন! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, ‘আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখলাম, তিনি তাই করলেন, যা আমি করলাম। অতঃপর তিনি হাসলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, “তোমার মহান প্রতিপালক তাঁর সেই বান্দার প্রতি আশ্চর্যান্বিত হন, যখন সে বলে, ‘ইগফির লী যুনূবী’ (অর্থাৎ, আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা ক’রে দাও।) সে জানে যে, আমি (আল্লাহ) ছাড়া পাপরাশি আর কেউ মাফ করতে পারে না।” (আবূ দাঊদ ২৬০৪, তিরমিযী ৩৪৪৬নং)

২৯

সহিহ হাদিস

উকবাহ বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের প্রতিপালক বিস্মিত হন পর্বত চূড়ায় সেই ছাগলের রাখালকে দেখে, যে নামাযের জন্য আযান দিয়ে (সেখানেই) নামায আদায় করে; আল্লাহ আযযা অজাল্ল্‌ বলেন, “তোমরা আমার এই বান্দাকে লক্ষ্য কর, (এমন জায়গাতেও) আযান দিয়ে নামায কায়েম করছে! সে আমাকে ভয় করে। আমি তাকে ক্ষমা ক’রে দিলাম এবং জান্নাতে প্রবেশ করালাম।” (আবূ দাঊদ ১২০৫, নাসাঈ ৬৬৬, সহীহ তারগীব ২৩৯ নং)

২৬

সহিহ হাদিস

ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সর্বশেষে যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে তার সম্পর্কে অবশ্যই আমার জানা আছে। এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে (বা বুকে ভর দিয়ে) চলে জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল্‌ বলবেন, ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।’ তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে সে ফিরে এসে বলবে ‘হে প্ৰভু! জান্নাত তো পরিপূর্ণ দেখলাম।’ আল্লাহ আয্‌যা অজাল্ল্‌ বলবেন, ‘যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর।’ তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত তো ভরে গেছে। তাই সে আবার ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্ৰভু! জান্নাত তো ভরতি দেখলাম।’ তখন আল্লাহ আয্‌যা অজাল্ল্‌ বলবেন ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর সমতুল্য এবং তার দশগুণ (পরিমাণ বিশাল জান্নাত)! অথবা তোমার জন্য পৃথিবীর দশগুণ (পরিমাণ বিশাল জান্নাত রইল)!’ তখন সে বলবে, ‘হে প্ৰভু! তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? অথবা আমার সাথে হাসি-মজাক করছ অথচ তুমি বাদশাহ (হাসি-মজাক তোমাকে শোভা দেয় না)।’ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর চোয়ালের দাঁতগুলি প্রকাশিত হয়ে গেল। (আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনি হাসলেন কেন হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, “রব্বুল আলমীনের হাসির কারণে। অতঃপর তিনি বলবেন, ‘আমি তোমার সাথে হাসি-মজাক করিনি। বরং আমি যা ইচ্ছা তাই করতে সক্ষম।’ তিনি বললেন, “এ হল সর্বনিম্ন মানের জান্নাতী।” (বুখারী ৬৫৭১, মুসলিম ৪৮১নং)

৩০

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সেই সম্প্রদায়ের প্রতি বিস্মিত হন, যাদেরকে শিকলে বেঁধে বেহেশ্‌তে প্রবেশ করানো হবে।” (আহমাদ ৮০১৩, বুখারী ৩০১০, আবূ দাঊদ ২৬৭৯, সিলসিলাহ সহীহাহ ২৮৭৪নং)

৩১

সহিহ হাদিস

ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা সেই ব্যক্তির প্রতি বিস্মিত হন, যে নিজের বিছানা, লেপ ও স্ত্রী ছেড়ে উঠে নামায পড়ে।” (আহমাদ ৩৯৪৯, বাইহাক্বী ১৮৩০৫, ত্বাবারানী ১০৩৮৩, ইবনে হিব্বান ২৫৫৮, সিলসিলাহ সহীহাহ ৮/৩৪)

৩২

সহিহ হাদিস

উকবাহ বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা সেই যুবকের প্রতি বিস্মিত হন, যার যৌবনে কোন কুপ্রবৃত্তি ও ভ্ৰষ্টতা নেই।” (আহমাদ ১৭৩৭১, ত্বাবারানী ১৪২৬৯, সিলসিলাহ সহীহাহ ২৮৪৩নং)

৩৩

সহিহ হাদিস

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ আয্‌যা অজাল্ল্‌ বলেন, যে ব্যক্তি একটি নেকী করবে তার জন্য দশ গুণ নেকী রয়েছে অথবা ততোধিক বেশী। আর যে ব্যক্তি একটি পাপ করবে তার বিনিময় (সে) ততটাই (পাবে; তার বেশী নয়) অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বিঘত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হবে আমি তার প্রতি দু’হাত নিকটবর্তী হব। যে আমার দিকে হেঁটে আসবে আমি তার দিকে দৌড়ে যাব। আর যে ব্যক্তি প্রায় পৃথিবী সমান পাপ করে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, অথচ সে আমার সাথে কাউকে শরীক করেনি, তার সাথে আমি তত পরিমাণই ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাৎ করব।” (মুসলিম ৭০০৯নং)

৩৪

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা প্রত্যহ রাত্রের শেষ তৃতীয়াংশে নীচের আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন, “কে আমাকে ডাকে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার নিকট প্রার্থনা করে? আমি তাকে দান করব। এবং কে আমার নিকট ক্ষমা চায়? আমি তাকে ক্ষমা করব।” (বুখারী ১১৪৫, ৭৪৯৪ মুসলিম ১৮০৮, সুনান আরবাআহ, মিশকাত ১২২৩ নং)

৩৫

সহিহ হাদিস

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “হে মুহাম্মাদের উম্মত! আল্লাহ অপেক্ষা বেশি ঈর্ষাবান কেউ নেই যে, তার ক্রীতদাস অথবা দাসী ব্যভিচার করবে (আর সে তা সহ্য ক’রে নেবে)। হে মুহাম্মাদের উন্মত! আল্লাহর কসম! আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে, তাহলে অল্প হাসতে এবং বেশি কাদঁতে। (বুখারী ১০৪৪, মুসলিম ২১২৭ নং)

৩৬

সহিহ হাদিস

মুগীরাহ বিন শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা সা’দ বিন উবাদাহ বললেন, ‘যদি কোন ব্যক্তিকে আমার স্ত্রীর সাথে (ব্যভিচারে লিপ্ত) দেখি, তাহলে তরবারির ধারালো দিকটা দিয়ে তাকে আঘাত করব।’ এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেন, “তোমরা কি সা’দের ঈর্ষায় আশ্চর্যান্বিত হও? নিশ্চয় আমি ওর থেকে বেশি ঈর্ষান্বিত এবং আল্লাহ আমার চেয়েও বেশি ঈর্ষান্বিত।” (বুখারী ৬৮৪৬, ৭৪১৬, মুসলিম ৩৮৩৭ নং)

৩৭

সহিহ হাদিস

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি (তার) বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে একটি খেজুর পরিমাণও কিছু দান করে---আর আল্লাহতে বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণই করেন না---সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন। (অতঃপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন;) পরিশেষে তা রহমানের করতলে বৃদ্ধিলাভ ক’রে পাহাড় থেকেও বড় হয়ে যায়। যেমন তোমাদের কেউ তার অশ্ব-শাবককে লালন-পালন ক’রে থাকে।” (বুখারী ১৪১০, মুসলিম ২৩৮৯-২৩৯০নং, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রভৃতি)
/ পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্‌র দীদার

৪১

সহিহ হাদিস

উবাদাহ বিন স্বামেত থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মরণের পূর্বে কখনই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবে না।” (আহমাদ ২২৭৬৪, সহীহুল জামে’ ২৪৫৯নং)

৩৯

সহিহ হাদিস

আবূ যার থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনি কি আপনার প্রতিপালককে দেখেছেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, “নূর, তাঁকে কীরূপে দেখা সম্ভব?” (মুসলিম ৪৬১নং) অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, “আমি নূর দেখেছি।” (মুসলিম ৪৬২নং)

৪০

সহিহ হাদিস

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তাঁর পর্দা (অন্তরাল) হল নূর (জ্যোতি)। যে পর্দা উন্মোচিত হলে তাঁর আনন-দীপ্তি সমগ্র সৃষ্টিকুলকে দগ্ধীভূত ক’রে ফেলবে।” (মুসলিম ৪৬৩নং)

৩৮

সহিহ হাদিস

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আজ রাত্রে স্বপ্নে আমার রব তাবারাকা অতাআলা সুন্দর আকৃতিতে আমার কাছে এসে বললেন, ‘হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশ্‌তা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, ‘না।‘ অতঃপর তিনি তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন। এমনকি আমি আমার বক্ষস্থলে তার শীতলতা অনুভব করলাম। সুতরাং (তার ফলে) আমি জানতে পারলাম আসমানে যা আছে এবং যমীনে যা আছে। অতঃপর তিনি বললেন, ‘হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশ্‌তা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, হ্যাঁ। কাফ্‌ফারা (পাপের প্রায়শ্চিত্ত) ও মর্যাদাসমূহের ব্যাপারে। কাফ্‌ফারা হল, নামায আদায়ের পর মসজিদে অবস্থান করা, জামাআতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টের সময় পূর্ণরূপে উযূ করা। আর মর্যাদাসমূহ হল, সালাম প্রচার করা, অন্নদান করা এবং রাতে লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন নামায পড়া। তিনি বললেন, ‘সত্য বলেছ। যে এগুলি পালন করবে, সে কল্যাণের সাথে জীবন-যাপন করবে, কল্যাণের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং সে সেদিনকার মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।--- ’ (তিরমিয়ী ৩২৩৩-৩২৩৫নং)

৪২

সহিহ হাদিস

মাসরূক থেকে বর্ণিতঃ

আমি আয়েশা (রাঃ) এর নিকট হেলান দিয়ে বসে ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেন, ‘হে আবূ আয়েশা! যে ব্যক্তি তিনটের মধ্যে একটি কথা বলে, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করেঃ-
(১) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ তাঁর প্রতিপালক (আল্লাহ)কে দেখেছেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। যেহেতু আল্লাহ বলেন,

﴿لاَّ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ﴾

“দৃষ্টিসমূহ তাঁকে আয়ত্ব করতে পারে না, কিন্তু দৃষ্টিসমূহ তাঁর আয়ত্বে আছে এবং তিনিই সূক্ষ্ণদর্শী; সম্যক পরিজ্ঞাত।” (আনআমঃ ১০৩)

﴿وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاء حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاء إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ﴾

“কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন ওহীর (প্রত্যাদেশ) মাধ্যম ব্যতিরেকে, অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা কোন দূত প্রেরণ ব্যতিরেকে; আর তখন আল্লাহ যা চান তা তাঁর অনুমতিক্রমে অহী (প্রত্যাদেশ) করেন; নিঃসন্দেহে তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময়।” (শূরাঃ ৫১)
বর্ণনাকারী মাসরূক বলেন, আমি হেলান দিয়ে বসে ছিলাম। এ কথা শুনে সোজা হয়ে বসে বললাম, ‘হে উন্মুল মু’মিনীন! একটু থামুন, আমার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবেন না। আল্লাহ তাআলা কি বলেননি যে,

﴿وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى﴾

“নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল।” (নাজমঃ ১৩) “অবশ্যই সে তাকে স্পষ্ট দিগন্তে দর্শন করেছে।” (তাকভীরঃ ২৩)
মা আয়েশা বললেন, “আল্লাহর কসম! আমি এ ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেন,

﴿إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ لَمْ أَرَهُ عَلَى صُورَتِهِ الَّتِى خُلِقَ عَلَيْهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ﴾

“তিনি হলেন জিব্রীল। তাঁকে ঐ দুইবার ছাড়া অন্য বারে তাঁর সৃষ্টিগত আসল রূপে দর্শন করিনি। যখন তিনি আসমানে অবতরণরত ছিলেন, তাঁর বিরাট সৃষ্টি-আকৃতি আকাশ-পৃথিবীর মধ্যবর্তী স্থানকে ঘিরে রেখেছিল!”
(২) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মদ আল্লাহর অবতীর্ণ কিছু অহী গোপন করেছেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। অথচ আল্লাহ বলেন, “হে রসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা প্রচার কর, (যদি তা না কর, তাহলে তো তুমি তাঁর বার্তা প্রচার করলে না।)” (সূরা মাইদাহ ৬৭ আয়াত)
(৩) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ ভবিষ্যতের খবর জানেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। অথচ আল্লাহ বলেন, “বল, আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না।” (নামলঃ ৬৫) (মুসলিম ৪৫৭নং, তিরমিযী ৩০৬৮নং প্রমুখ)
/ পরিচ্ছেদঃ গায়বী খবর আল্লাহ্ই জানেন

৪৫

সহিহ হাদিস

রুবাইয়ে বিন্তে মুআওবিয থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক বালিকাকে যখন কবিতায় বলতে শুনলেন, “আমাদের মাঝে এমন নবী আছেন; যিনি আগামীকালের অবস্থা জানেন।” তখন তিনি বললেন, “এই কথাটি ছেড়ে দাও (বলো না) বাকী যেগুলি বলছিলে সেগুলি বল।” (বুখারী ৪০০১নং)

৪৩

সহিহ হাদিস

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন বৃষ্টি-সম্ভাবনাময় মেঘ দেখলে অগ্র-পশ্চাৎ হয়ে হাঁটাহাটি করতেন। অতঃপর বৃষ্টি হলে শঙ্কামুক্ত হতেন। একদা আমি বললাম, (‘আপনি এমন শঙ্কাগ্রস্ত হন কেন? লোকেরা তো মেঘ দেখলে খোশ হয়।’) তিনি বললেন, “জানি না, হয়তো-বা তাই হতে পারে, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেন, অতঃপর যখন তাদের উপত্যকার দিকে তারা মেঘ আসতে দেখল, তখন তারা বলতে লাগল, ‘ওটা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবে।’ (হূদ বলল) ‘বরং ওটাই তো তা, যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছ; এক ঝড়, যাতে রয়েছে মর্মন্তদ শাস্তি। (আহক্বাফঃ ২৪, আহমাদ ২৬০৩৭, মুসলিম ২১২২, তিরমিযী ৩২৫৭, ইবনে মাজাহ ৩৮৯১, সিঃ সহীহাহ ২৭৫৭নং)

৪৪

সহিহ হাদিস

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নসীহত করার জন্য আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি বললেন, “হে লোক সকল! তোমাদেরকে আল্লাহর নিকট উলঙ্গ পা, উলঙ্গ দেহ ও খতনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। (আল্লাহ বলেন,) ‘যেমন আমি প্রথম সৃষ্টি করেছি আমি পুনর্বার তাকে সেই অবস্থায় ফিরাবো। এটা আমার প্রতিজ্ঞা, যা আমি পুরা করব।’ (সূরা আম্বিয় ১০৪ আয়াত)
জেনে রাখো! কিয়ামতের দিন সৃষ্টির মধ্যে সর্বপ্রথম ইব্রাহীম (আঃ) -কে বস্ত্র পরিধান করানো হবে। আরো শুনে রাখ! সে দিন আমার উম্মতের কিছু লোককে নিয়ে আসা হবে অতঃপর তাদেরকে বাম দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর আমি বলব, ‘হে প্ৰভু! এরা তো আমার সঙ্গী।’ কিন্তু আমাকে বলা হবে, ‘এরা আপনার (মৃত্যুর) পর (দ্বীনে) কী কী নতুন নতুন রীতি আবিষ্কার করেছিল, তা আপনি জানেন না।’ (এ কথা শুনে) আমি বলব--যেমন নেক বান্দা (ঈসা (আঃ)) বলেছিলেন, “যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি ছিলাম তাদের ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী। কিন্তু যখন তুমি আমাকে তুলে নিলে, তখন তুমিই তো ছিলে তাদের ক্রিয়াকলাপের পর্যবেক্ষক। আর তুমি সর্ববস্তুর উপর সাক্ষী। তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও, তবে তারা তোমারই বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (সূরা ময়েদা ১১৭ আয়াত) অতঃপর আমাকে বলা হবে যে, ‘নিঃসন্দেহে আপনার ছেড়ে আসার পর এরা (ইসলাম থেকে) পিছনে ফিরে গিয়েছিল।’ (বুখারী ৩৪৪৭, মুসলিম ৩৭৮০নং)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন