HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মিশকাতুল মাসাবিহ

. পর্ব-৬ঃ যাকাত

مشكاة المصابيح

/ পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৫

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِىْ ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «مَا مِنْ رَجُلٍ يَكُونُ لَه إِبِلٌ أَوْ بَقَرٌ أَوْ غَنَمٌ لَا يُؤَدِّىْ حَقَّهَا إِلَّا أَتى بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْظَمَ مَا يَكُوْنُ وَأَسْمَنَه تَطَؤُه بِأَخْفَافِهَا وَتَنْطِحُه بِقُرُوْنِهَا كُلَّمَا جَازَتْ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُولَاهَا حَتّى يُقْضى بَيْنَ النَّاسِ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির উট,গরু ও ছাগল থাকবে,আর সে এসবের হাক্ব (যাকাত) আদায় করবে না। ক্বিয়ামাতের দিন এসব জন্তু খুব তরতাজা মোটাসোটা করে আনা হবে এবং তারা তাদের পা দিয়ে তাদের পিষবে। তাদের শিং দিয়ে গুতোবে। শেষ দলটি পিষে যাবার পর আবার প্রথম দলটি আসবে হিসাব-নিকাশ হওয়া পর্যন্ত (এভাবে চলতে থাকবে)। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৬০, মুসলিম ৯৯০, আত্ তিরমিযী ৬১৭, নাসায়ী ২৪৪০, আহমাদ ২১৪৯১।

১৭৭২

সহিহ হাদিস
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ: «إِنَّكَ تَأتِىْ قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ. فَادْعُهُمْ إِلى شَهَادَةِ أَنْ لَّا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللّهِ. فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوْا لذَلِكَ. فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ. فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوْا لذلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَن الله قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنَ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ فِىْ فُقَرَائِهِمْ. فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ. فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّه لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الله حِجَابٌ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠাবার সময় বললেন,মু’আয! তুমি আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও খৃস্টান) নিকট যাচ্ছো। প্রথমতঃ তাদেরকে এ লক্ষ্যে দ্বীনের প্রতি আহবান করবে,এক আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই,আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল। যদি তারা এটা মেনে নেয় তাহলে তাদের সামনে এই ঘোষণা দেবে যে,নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তাদের ওপর দিনরাতে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত ফার্‌য করেছেন। তারা এটা মেনে নিলে তাদেরকে জানাবে,নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তাদের ওপর যাকাত ফার্‌য করেছেন। তাদের ধনীদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করে তাদের গরীবদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। যদি তারা এ হুকুমের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তাহলে তুমি (তাদের) ভাল ভাল মাল গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে,মাযলূমের ফরিয়াদ হতে বাঁচার চেষ্টা করবে। কেননা মাযলূমের ফরিয়াদ আর আল্লাহ তা’আলার মধ্যে কোন আড়াল থাকে না। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২১৪৯৬, মুসলিম ১৯, আবূ দাঊদ ১৫৮৪, আত্ তিরমিযী ৬২৫, নাসায়ী ২৫২২, ইবনু মাজাহ্ ১৭৮৩, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২২৭৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৭৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৫৭, ইরওয়া ৭৮২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ২২৯৮।

১৭৭৪

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ اتَاهُ اللّهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَه مُثِّلَ لَه مَالُه شُجَاعًا أَقْرَعَ لَه زَبِيْبَتَانِ يُطَوَّقُه يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ - يَعْنِىْ بِشِدْقَيْهِ - يَقُولُ: أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ». ثُمَّ تَلَا هذِه الْايَة: ﴿وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَا اتَاهُمُ اللّهُ مِنْ فَضْلِه﴾. [آل عمران 3 : 180]. إِلى اخر الْايَة. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন,অথচ সে ঐ ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করেনি,সে ধন-সম্পদকে ক্বিয়ামাতের দিন টাকমাথা সাপে পরিণত হবে। এ সাপের দু’চোখের উপর দু’টি কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ বিষাক্ত সাপ)। এরপর ঐ সাপ গলার মালা হয়ে ব্যক্তির দু’চোয়াল আঁকড়ে ধরে বলবে,আমিই তোমার সম্পদ,আমি তোমার সংরক্ষিত ধন-সম্পদ। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন,অর্থাৎ “যারা কৃপণতা করে,তারা যেন মনে না করে এটা তাদের জন্য উত্তম বরং তা তাদের জন্য মন্দ। ক্বিয়ামতের দিন অচিরেই যা নিয়ে তারা কৃপণতা করছে তা তাদের গলায় বেড়ী করে পরিয়ে দেয়া হবে”। (সূরাহ্ আল ‘ইমরান ৩ : ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (বুখারী) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪০৩, আহমাদ ৮৬৬১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩১১৩, সহীহ আত্ তারগীব ৭৬১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬০।

১৭৭৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدُ اللّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: إِذا أَتَاكُمُ الْمُصَدِّقُ فَلْيَصْدُرْ عَنْكُمْ وَهُوَ عَنْكُمْ رَاضٍ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যাকাত আদায়কারী যখন তোমাদের নিকট যাকাত আদায় করতে আসে তখন যেন তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে (যাকাত উসূল করে) ফিরে যায়। আর তোমরাও যেন সন্তুষ্ট ও খুশী থাকো। (মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৯৮৯, নাসায়ী ২৪৬১, আহমাদ ১৯১৮৭।

১৭৭৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدُ اللّهِ بْنِ أَبِىْ أَوْفى رَضِيَ اللّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا أَتَاهُ قَوْمٌ بِصَدَقَتِهِمْ قَالَ: اللّهُمَّ صَلِّى عَلى الِ فلَانٍ . فَأَتَاهُ أَبِىْ بِصَدَقَتِه فَقَالَ: اللّهُمَّ صَلِّ عَلى ال أَبِىْ أوْفى. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ) وَفِي رِوَايَة: إِذا أَتَى الرَّجُلُ النَّبِيَّ بِصَدَقَتِه قَالَ: اللّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,কোন ক্বওম নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তাদের যাকাত নিয়ে এলে তিনি বলতেন,“আল্ল-হুম্মা স-ল্লি ‘আলা- আ-লি ফুলা-ন” (অর্থাৎ হে আল্লাহ! অমুকের ওপর রহ্‌মাত বর্ষণ করো)। আমার পিতাও যখন তার নিকট যাকাত নিয়ে এলেন তিনি বললেন,“আল্ল-হুম্মা সল্লি ‘আলা- আ-লি আবী আওফা” (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আবূ আওফা ও তার বংশধরদের ওপর রহ্‌মাত বর্ষণ করো)। (বুখারী,মুসলিম) [১]
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে,যখন কোন ব্যক্তি তার নিজের যাকাত নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসতেন,তিনি বলতেন,“হে আল্লাহ! এ ব্যক্তির ওপর রহ্‌মাত বর্ষণ করো।”
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৯৭, ৬৩৫৯, মুসলিম ১০৭৮, আবূ দাঊদ ১৫৯০, নাসায়ী ২৪৫৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৬৫৭, ইরওয়া ৮৫৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৬৪৩।

১৭৭৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَا مِنْ صَاحِبِ ذَهَبٍ وَلَا فِضَّةٍ لَا يُؤَدِّىْ مِنْهَا حَقَّهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ صُفِّحَتْ لَه صَفَائِحُ مِنْ نَارٍ فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُكْوى بِهَا جَنْبُه وَجَبِيْنُه وَظَهْرُه كُلَمَّا بَرَدَتْ أُعِيْدَتْ لَه فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتّى يُقْضى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرى سَبِيلُه إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللّهِ فَالْإِبِلُ؟ قَالَ: «وَلَاصَاحِبُ إِبِلٍ لَا يُؤَدِّىْ مِنْهَا حَقَّهَا وَمِنْ حَقِّهَا حَلْبُهَا يَوْمَ وِرْدِهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ أَوْفَرَ مَا كَانَت لَا يَفْقِدُ مِنْهَا فَصِيْلًا وَاحِدًا تَطَؤُه بِأَخْفَافِهَا وَتَعَضُّه بِأَفْوَاهِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُوَلَاهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتّى يُقْضى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرى سَبِيلُه إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّار» قيل: يَا رَسُوْلَ الله فَالْبَقَرُ وَالْغَنَمُ؟ قَالَ: «وَلَا صَاحِبُ بَقْرٍ وَلَا غَنَمٍ لَا يُؤَدِّىْ مِنْهَا حَقَّهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ لَا يَفْقِدُ مِنْهَا شَيْئًا لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ وَلَا جَلْحَاءُ وَلَا عَضْبَاءُ تَنْطِحُه بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُه بِأَظْلَافِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُولَاهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتّى يُقْضى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرى سَبِيلُه إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ» . قِيلَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ فَالْخَيْلُ؟ قَالَ: «الْخَيْلُ ثَلَاثَةٌ: هِيَ لِرَجُلٍ وِزْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ سِتْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ. فَأَمَّا الَّتِىْ هِيَ لَه وِزْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا رِيَاءً وَفَخْرًا وَنِوَاءً عَلَى اهْلِ الْإِسْلَامِ فَهِيَ لَه وِزْرٌ. وَأَمَّا الَّتِىْ لَه سِتْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِىْ سَبِيلِ اللّهِ ثُمَّ لَمْ يَنْسَ حَقَّ اللّهِ فِي ظُهُورِهَا وَلَا رِقَابِهَا فَهِيَ لَه سِتْرٌ. وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَه أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِىْ سَبِيلِ الله لِأَهْلِ الْإِسْلَامِ فِي مَرَجٍ أَو رَوْضَةٍ فَمَا أَكَلَتْ مِنْ ذلِكَ الْمَرْجِ أَوِ الرَّوْضَةِ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا كُتِبَ لَه عَدَدَ مَا أَكَلَتْ حَسَنَاتٌ وَكُتِبَ لَه عَدَدَ أَرْوَاثِهَا وَأَبْوَالِهَا حَسَنَاتٌ وَلَا تَقْطَعُ طِوَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ إِلَّا كَتَبَ اللّهُ لَه عَدَدَ اثَارِهَا وَأَوْرَاثِهَا حَسَنَاتٍ وَلَا مَرَّ بِهَا صَاحِبُهَا عَلى نَهْرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلَا يُرِيْدُ أَنْ يَسْقِيَهَا إِلَّا كَتَبَ اللّهُ لَه عَدَدَ مَا شَرِبَتْ حَسَنَاتٍ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللّهِ فَالْحُمُرُ؟ قَالَ: مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ فِي الْحُمُرِ شَيْءٌ إِلَّا هذِهِ الْايَةُ الْفَاذَّةُ الْجَامِعَةُ ﴿فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَهٗ - وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهٗ﴾ [الزلزلة 99 : 7-8]. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সোনা রূপার (নিসাব পরিমাণ) মালিক হবে অথচ তার হাক্ব (যাকাত) আদায় করবে না তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন (তা দিয়ে) আগুনের পাত বানানো হবে। এগুলোকে জাহান্নামের আগুনে এমন ভাবে গরম করা হবে যেন তা আগুনেরই পাত। সে পাত দিয়ে তার পাঁজর,কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। তারপর এ পাত পৃথক করা হবে। আবার আগুনে উত্তপ্ত করে তার শরীরে লাগানো হবে। আর লাগানোর সময়ের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। (এ অবস্থা চলবে) বান্দার (জান্নাত জাহান্নামের) ফায়সালা হওয়া পর্যন্ত। তারপর তাকে নেয়া হবে জান্নাত অথবা জাহান্নামে। সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রসূল! উটের বিষয়টি (যাকাত না দেবার পরিণাম) কি? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ উটের মালিক যদি এর হাক্ব (যাকাত) আদায় না করে- যেদিন উটকে পানি খাওয়ানো হবে সেদিন তাকে দুহানোও তার একটা হাক্ব - ক্বিয়ামাতের দিন ওই ব্যক্তিকে সমতল ভূমিতে উটের সামনে মুখের উপর উপুড় করে ফেলা হবে। তার সবগুলো উট গুণে গুণে (আনা হবে) মোটা তাজা একটি বাচ্চাও কম হবে না। এসব উট মালিককে পায়ের নিচে ফেলে পিষতে থাকবে, দাঁত দিয়ে কামড়াবে। এ উটগুলো চলে গেলে,আবার আর একদল উট আসবে। যে দিন এমন ঘটবে,সে দিনের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এমনকি বান্দার হিসাব-নিকাশ শেষ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামের দিকে অগ্রসর হবে। সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের যাকাত আদায় না করলে (মালিকদের) কি অবস্থা হবে? তিনি বললেন,যে ব্যক্তি গরু-ছাগলের মালিক হয়ে এর হাক্ব (যাকাত) আদায় করে না ক্বিয়ামাতের দিন তাকে সমতল ভূমিতে উপুড় করে ফেলা হবে। তার সব গরু ও ছাগলকে (ওখানে আনা হবে) একটুও কম-বেশি হবে না। গরু-ছাগলের শিং বাঁকা কিংবা ভঙ্গ হবে না। শিং ছাড়াও কোনটা হবে না। এসব গরু ছাগল শিং দিয়ে মালিককে গুতো মারতে থাকবে,খুর দিয়ে পিষবে। এভাবে একদলের পর আর একদল আসবে। এ সময়ের মেয়াদও হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এর মধ্যে বান্দার হিসাব-নিকাশ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামে তার গন্তব্য দেখতে পাবে।
সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার অবস্থা কি হবে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঘোড়া তিন প্রকারের। প্রথমতঃ যা মানুষের জন্য গুনাহের কারণ হয়। দ্বিতীয়তঃ যা মানুষের জন্য পর্দা। আর তৃতীয়তঃ মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ।
গুনাহের কারণ ঘোড়া হলো ঐ মালিকের,যেগুলোকে সে মুসলিমদের ওপর গৌরব,অহংকার ও শৌর্যবীর্য দেখাবার জন্য পালন করে। আর যেগুলো মালিক-এর জন্য পর্দা হবে,সেগুলো ঐ ঘোড়া,যে সবের ঘোড়ার মালিক আল্লাহর পথে লালন পালন করে। সেগুলোর পিঠ ও গর্দানের ব্যাপারে আল্লাহর হাক্ব ভুলে যায় না। মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ ঘোড়া ব্যক্তির যে মালিক আল্লাহর পথের মুসলিমদের জন্য তা’ পালে। এদেরকে সবুজ মাঠে রাখে। এসব ঘোড়া যখন আসে ও চারণ ভুমিতে ঘাস খায়,তখন ওই (ঘাসের সংখ্যার সমান) সাওয়াব তার মালিক-এর জন্য লিখা হয়। এমনকি এদের গোবর ও পেশাবের পরিমাণও তার জন্য সাওয়াব হিসেবে লিখা হয়। সেই ঘোড়া রশি ছিঁড়ে যদি এক বা দু’টি ময়দান দৌড়ে ফিরে,তখন আল্লাহ তা’য়ালা এদের কদমের চিহ্ন ও গোবরের (যা দৌড়াবার সময় করে) সমান সাওয়াব তার জন্য লিখে দেন। এসব ঘোড়াকে পানি পান করাবার জন্য নদীর কাছে নেয়া হয়,আর নদী হতে পানি পান করে,তাহলে আল্লাহ তা’আলা ঘোড়াগুলোর পান করা পানির পরিমাণ সাওয়াব ওই ব্যক্তির জন্য লিখে দেন। যদি মালিক-এর পানি পান করাবার ইচ্ছা নাও থাকে। সহাবীগণ আরয করলেন,হে আল্লাহর রসূল! গাধার ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি বললেন গাধার ব্যাপারে আমার ওপর কোন হুকুম নাযিল হয়নি। সকল নেক কাজের ব্যাপারে এ আয়াতটিই যথেষ্ট “যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ নেক ‘আমাল করবে তা সে দেখতে পাবে। আর যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ বদ ‘আমাল করবে তাও সে দেখতে পাবে”- (সূরাহ্ আয্ যিলযাল ৯৯ : ৭-৮)।
[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৯৮৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪১৮, সহীহ আত্ তারগীব ৭৫৪, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭২৯।

১৭৭৮

সহিহ হাদিস
عَن أَبِىْ هُرَيْرَةَ. قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ عُمَرَ عَلَى الصَّدَقَةِ. فَقِيلَ: مَنَعَ ابْنُ جَمِيلٍ وَخَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ وَالْعَبَّاسُ. فَقَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَا يَنْقِمُ ابْنُ جَمِيلٍ إِلَّا أَنَّه كَانَ فَقِيْرًا فَأَغْنَاهُ اللّهُ وَرَسُولُه. وَأَمَّا خَالِدٌ فَإِنَّكُمْ تَظْلِمُونَ خَالِدًا. قَدِ احْتَبَسَ أَدْرَاعَه وَأَعَتُدَه فِىْ سَبِيلِ اللّهِ. وَأَمَّا الْعَبَّاسُ فَهِيَ عَلَيَّ. وَمِثْلُهَا مَعَهَا» . ثُمَّ قَالَ: «يَا عُمَرُ أَمَا شَعَرْتَ أَنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوَ أَبِيْهِ؟». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকাত আদায়ের জন্য ‘উমার (রাঃ)-কে পাঠালেন। কেউ এসে খবর দিলো যে,ইবনু জামিল,খালিদ ইবনু ওয়ালীদ আর ‘আব্বাস (রাঃ) যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে। (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইবনু জামিল এজন্য যাকাত দিতে অস্বীকার করেছেন যে,(প্রথম দিকে) গরীব ছিল। এরপর আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাকে সম্পদশালী করেছেন। আর খালিদ ইবনু ওয়ালীদ-এর ব্যাপার হলো,তোমরা তার ওপর যুল্‌ম করছ। সে তো তার যুদ্ধসামগ্রী আল্লাহর পথে ওয়াক্‌ফ করে দিয়েছে (কাজেই তোমরা তার শুধু এ বছরই নয় বরং) এ রকম (আগামী বছর)ও। এরপর থাকে ‘আব্বাস-এর বিষয়। তার এ বছরের যাকাত এবং এর সমপরিমাণ আমার দায়িত্বে। অতঃপর তিনি বললেন,হে ‘উমার! তুমি কি জানো না কোন ব্যক্তির চাচা তার পিতার মতই। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৬৮, মুসলিম ৯৮৩, নাসায়ী ২৪৬৪, ইবনু খুযায়মাহ্ ২৩৩০, ইবনু হিব্বান ৩২৭৩, আহমাদ ৮২৮৪, দারাকুত্বনী ২০০৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৯১৬।

১৭৮০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَدِيِّ بْنِ عُمَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنِ اسْتَعْمَلْنَاهُ مِنْكُم عَلى عَمَلٍ فَكَتَمَنَا مِخْيَطًا فَمَا فَوْقَه كَانَ غُلُولًا يَأْتِىْ بِه يَوْم الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আদী ইবনু ‘উমায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদের কাউকে কোন কাজের জন্য (যাকাত ইত্যাদি উসূল করার জন্য) নিয়োগ করলে,সে যদি একটি সূঁচ সমান বা এর চেয়ে ছোট বড় কোন জিনিস গোপন করে তা খিয়ানাত হবে। ক্বিয়ামাতের দিন তা (লাঞ্ছনা সহকারে) আনা হবে। (মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ১৮৩৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২০৪৭৫, ইবনুর আবী শায়বাহ্ ২১৯৬৩, সহীহ আত্ তারগীব ৭৮১, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৬০২৪।

১৭৭৯

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ: اسْتَعْمَلَ النَّبِيُّ ﷺ رَجُلًا مِنَ الْأَزْدِ يُقَالُ لَهُ ابْنُ الْلُتْبِيَّةِ الْأُتْبِيَّةِ عَلَى الصَّدَقَةِ فَلَمَّا قَدِمَ قَالَ: هذَا لَكُمْ وَهذَا أُهْدِيَ لِىْ فَخَطَبَ النَّبِيُّ ﷺ فَحَمِدَ اللّهَ وَأُثْنى عَلَيْهِ وَقَالَ: «أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّىْ أَسْتَعْمِلُ رِجَالًا مِنْكُمْ عَلى أُمُوْرٍ مِمَّا وَلَانِي اللهُ فَيَأْتِىْ أَحَدُكُم فَيَقُوْلُ: هذَا لَكُمْ وَهذَا هَدِيَّةٌ أُهْدِيَتْ لِىْ فَهَلَّا جَلَسَ فِىْ بَيْتِ أَبِيْهِ أَوْ بَيْتِ أُمِّه فَيَنْظُرُ أَيُهْدى لَه أَمْ لَا؟ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِه لَا يَأْخُذُ أَحَدٌ مِنْهُ شَيْئًا إِلَّا جَاءَ بِه يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَحْمِلُه عَلى رَقَبَتِه إِنْ كَانَ بَعِيْرًا لَه رُغَاءٌ أَوْ بَقْرًا لَه خُوَارٌ أَوْ شَاةً تَيْعَرُ» ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتّى رَأَيْنَا عُفْرَةَ إِبِطَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «اللّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللّهُمَّ هَل بَلَّغْتُ» . قَالَ الْخَطَّابِيُّ: وَفِىْ قَوْلِه: «هَلَّا جَلَسَ فِي بَيْتِ أُمِّه أَوْ أَبِيهِ فَيَنْظُرُ أَيُهْدى إِلَيْهِ أَمْ لَا؟» دَلِيْلٌ عَلى أَنَّ كُلَّ أَمْرٍ يُتَذَرَّعُ بِه إِلى مَحْظُورٍ فَهُوَ مَحْظُورٌ وَكُلٌّ دَخَلَ فِي الْعُقُودِ يُنْظَرُ هَلْ يَكُونُ حُكْمُه عِنْدَ الِانْفِرَادِ كَحُكْمِه عِنْدَ الِاقْتِرَانِ أَمْ لَا؟ هَكَذَا فِىْ شَرْحِ السُّنَّةِ. (مُتَّفق عَلَيْهِ)

আবূ হুমায়দ আস্ সা‘ইদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,একবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয্‌দ গোত্রের ইবনুল লুত্‌বিয়াহ্‌ নামক ব্যক্তিকে যাকাত আদায় করার জন্য কর্মকর্তা নিযুক্ত করলেন। সে (যাকাত উসূল করে) মাদীনায় ফিরে এসে (মুসলিমদের নিকট) বলতে লাগল,এ পরিমাণ সম্পদ তোমাদের (যাকাত হিসেবে উসূল হয়েছে,তোমরা এর হাক্বদার)। আর এ পরিমাণ সম্পদ তুহফা হিসেবে আমাকে দেয়া হয়েছে (এটা আমার হাক্ব)। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (এসব কথা শুনে) লোকদের উদ্দেশে হাম্‌দ ও সানা পড়ে খুতবাহ্‌ দিলেন। তিনি (খুতবায়) বললেন,তোমাদের কিছু লোককে আমি ওসব কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছি যেসব কাজের জন্য আল্লাহ আমাকে হাকিম বানিয়েছেন। এখন তোমাদের এক ব্যক্তি এসে বলছে,এটা (যাকাত) তোমাদের জন্য,আর এটা হাদিয়্যাহ্‌। এ হাদিয়্যাহ্‌ আমাকে দেয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসা করো,সে ব্যক্তি তার পিতা অথবা মাতার বাড়িতে বসে রইল না কেন? তখন সে দেখত (তুহফা দানকারীরা) তাকে তার বাড়ীতেই তুহফা পৌঁছে দিয়ে যেত কিনা? ঐ মহান সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন। তোমাদের যে ব্যক্তি যে কোন জিনিস তদ্রুপ করবে তা ক্বিয়ামাতের দিন তার গর্দানের উপর বহন করে নিয়ে আসবে। যদি তা উট হয় তাহলে তার আওয়াজ উটের আওয়াজ হবে। যদি তা গরু হয় তাহলে তার আওয়াজ গরুর আওয়াজ হবে। যদি তা বকরী হয় তাহলে বকরীর আওয়াজ হবে। (অর্থাৎ দুনিয়ার কোন জিনিস অন্যায়ভাবে গ্রহণ করলে,তা ক্বিয়ামাতের দিন তার ঘাড়ে সওয়ার হয়ে কথা বলতে থাকবে)। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দু’হাত এত উপরে উঠালেন যে,আমরা তার বগলের নিচের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। এরপর তিনি বললেন,হে আল্লাহ! আমি মানুষের কাছে কি তা পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি (তোমার কথা) কি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি? (বুখারী,মুসলিম) [১]
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী,“তাকে জিজ্ঞেস করো,সে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার বাড়িতে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখত তুহফা তার বাড়ীতে পৌঁছে দিয়ে যায় কিনা?” এ সম্পর্কে খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন,এ বাণী এ কথারই দলীল যে,কোন হারাম কাজের জন্য যে জিনিসকে উপায় বা ওয়াসিলা বানানো হয় সে উপায়ে বা ওয়াসিলাও হারাম। আরো বলা যায়,কোন একটি ব্যাপারকে অন্য একটি ব্যাপারের সাথে (যেমন-বেচাকেনা,বিয়ে-শাদী ইত্যাদি) সম্পর্কিত করলে দেখতে হবে,সে ব্যাপারগুলোর কোন পৃথক পৃথক হুকুম এদের এক সাথে সম্পর্কিত হুকুমের সদৃশ কি-না। হলে তা জায়িয। আর না হলে না জায়িয। (শারহুস্‌ সুন্নাহ্‌)
[১] সহীহ : বুখারী ৭১৭৪, মুসলিম ১৮৩২, আবূ দাঊদ ২৯৪৬, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ২১৯৬২, আহমাদ ২৩৫৯৮, ইবনু খুযায়মাহ্ ২৩৩৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৬৬৪, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬৮।
/ পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১৭৮৩

সহিহ হাদিস
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللّهِ قَالَ: جَاءَ نَاسٌ يَعْنِىْ مِنَ الْأَعْرَابِ إِلى رَسُولِ اللّهِ ﷺ فَقَالُوا: إِنَّ نَاسًا مِنَ الْمُصَدِّقِيْنَ يَأْتُوْنَا فَيَظْلِمُوْنَا قَالَ: فَقَالَ: «أَرْضُوْا مُصَدِّقِيْكُمْ وَإِنْ ظُلِمْتُمْ» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,(একবার) গ্রাম্য ‘আরাবদের কিছু লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। তারা জানান যে,যাকাত আদায়কারী কিছু লোক তাদের কাছে যায় এবং তারা তাদের ওপর যুল্‌ম করে। (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাদেরকে খুশী রাখো। তোমাদের সাথে যুল্‌ম করলেও তাদের খুশী করো। (আবূ দাঊদ) [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ৯৮৯, আবূ দাঊদ ১৫৮৯, নাসায়ী ২৪৬০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৫৩০। সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৯০১।

১৭৮২

দুর্বল হাদিস
عَن جَابِرِ بْنِ عَتِيْكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «سَيَأْتِيكُمْ رُكَيْبٌ مُبَغَّضُونَ فَإِذا جَاؤُوْكُمْ فَرَحِّبُوا بِهِمْ وَخَلُّوا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ مَا يَبْتَغُونَ فَإِنْ عَدَلُوا فَلِأَنْفُسِهِمْ وَإِنْ ظَلَمُوا فَعَلَيْهِمْ وَأَرْضُوهُمْ فَإِنَّ تَمَامَ زَكَاتِكُمْ رِضَاهُمْ وَلْيَدْعُوا لَكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

জাবির ইবনু ‘আতীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কাছে একটি ছোট কাফিলা (যাকাত আদায়কারী প্রশাসক) আসবেন। এরা লোকদের কাছে অযাচিত বিবেচিত হবে। তাই যখন তারা তোমাদের কাছে আসবে তখন স্বাগত জানাবে। তাদের কাছে যাকাতের মাল এনে জমা করবে। যদি তারা যাকাত উসূলে ইনসাফ করে তা তাদের উপকার করবে। আর যদি যুল্‌ম করে তাহলে তার পরিণাম ভোগ করবে। তোমরা যাকাত উসূলকারীদেরকে সন্তুষ্ট রাখবে। তোমাদের সকল সম্পদের যাকাত আদায় করাই হবে তাদের সন্তুষ্টির কারণ। যাকাত আদায়কারীদের উচিত হবে তোমাদের জন্য দু’আ করা। (আবূ দাঊদ)[১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ১৫৮৮, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৯৮৩৯, য‘ঈফ আত্ তারগীব ৪৭৯, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩২৯৭। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেছেন, এর সানাদে তিনটি ত্রুটি রয়েছে। প্রথমতঃ ‘আবদুর রহমান ইবনু জাবির একজন মাজহূল রাবী যেমনটি হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেছেন। দ্বিতীয়তঃ সখর ইবনু ইসহক একজন মাজহূল রাবী। তৃতীয়তঃ আবুল গুসন সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেনঃ সে সত্যবাদী তবে ধারণা প্রবণ।

১৭৮৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «لَا جَلَبَ وَلَا جَنَبَ وَلَا تُؤْخَذُ صَدَقَاتُهُمْ إِلَّا فِىْ دُورِهِمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

‘আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ যাকাত উসূলকারীর কাছে চতুষ্পদ পশুকে টেনে আনবে না। কিংবা চতুষ্পদ পশুর মালিকগণও দূরে সরে থাকবে না। এসব পশুর যাকাত তাদের অবস্থানে বসেই উসূল করবে। (আবূ দাঊদ) [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১৫৯১, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৪৮৪।

১৭৮৪

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ بَشِيرِ بْنِ الْخَصَاصِيَّةِ قَالَ: قُلْنَا: أَنَّ أَهْلَ الصَّدَقَةِ يَعْتَدُوْنَ عَلَيْنَا أَفَنَكْتُمُ مِنْ أَمْوَالِنَا بِقَدْرِ مَا يَعْتَدُوْنَ؟ قَالَ: لَا - رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

বাশীর ইবনুল খাসাসিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সবিনয়ে জানালাম যে,যাকাত আদায়কারীরা যাকাতের ব্যাপারে আমাদের উপর বাড়াবাড়ি করে। (এ অবস্থায়) পরিমাণের চেয়ে যে মাল তারা বেশী নেয়,আমরা কি তা গোপন রাখতে পারি? তিনি বললেন,না। (আবূ দাঊদ) [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ১৫৮৬। কারণ এর সানাদে দায়সাম একজন অপরিচিত রাবী।

১৭৮১

দুর্বল হাদিস
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللّهُ عَنْهُمَا قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ ﴿وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ﴾ [التوبة 9 : 34] كَبُرَ ذلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ. فَقَالَ عُمَرُ أَنَا أُفَرِّجُ عَنْكُمْ فَانْطَلَقَ. فَقَالَ: يَا نَبِيَّ اللّهِ قَدْ كَبُرَ عَلى أَصْحَابِكَ هذِهِ الْايَةُ. فَقَالَ نَبِيُّ اللّهِ ﷺ: «إِنَّ اللّهَ لَمْ يَفْرِضِ الزَّكَاةَ إِلَّا لِيُطَيِّبَ بهَا مَا بَقِيَ مِنْ أَمْوَالِكُمْ وَإِنَّمَا فَرَضَ الْمَوَارِيْثَ وَذَكَرَ كَلِمَةً لِتَكُوْنَ لِمَنْ بَعْدَكُمْ قَالَ فَكَبَّرَ عُمَرُ. ثُمَّ قَالَ لَه: «أَلَا أُخْبِرُكَ بِخَيْرِ مَا يَكْنِزُ الْمَرْءُ الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ إِذَا نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ وَإِذَا أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ وَإِذَا غَابَ عَنْهَا حَفِظَتْهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,যখন এ আয়াত,অর্থাৎ “যেসব লোক সোনা-রূপা জমা করে রাখে”-(সূরাহ্‌ আত্‌ তাওবাহ্‌ ৯ : ৩৪) আয়াতের শেষ পর্যন্ত নাযিল হল তখন সহাবীগণ চিন্তিত হয়ে পড়ল। ‘উমার (রাঃ) বলেন,আমি তোমাদের এ দুশ্চিন্তা নিরসন করে দিচ্ছি। তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলেন। তাঁকে বললেন,হে আল্লাহর নাবী! এ আয়াত তো আপনার সাথীদের জন্য ভারি বোঝা হয়েছে। (এ কথা শুনে) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা (সকল ব্যয় নির্বাহের পর) অবশিষ্ট মাল পবিত্র করার ব্যবস্থা স্বরূপ তোমাদের ওপর যাকাত ফার্‌য করেছেন। আল্লাহ তা’আলা এজন্যই ওয়ারিস ঠিক করে দিয়েছেন। এরপর তিনি এ বাক্য উল্লেখ করলেন,যেন তোমাদের পরবর্তীরা যাতে এ মালের মালিক হয়ে যায়। ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,এ কথা শুনে ‘উমার ‘আল্ল-হু আকবার’ বলে উঠলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমারকে বললেন,আমি কি তোমাকে মানুষের সবচেয়ে উত্তম গচ্ছিত বস্তু সম্পর্কে অবহিত করব না? তা হলো চরিত্রবান স্ত্রী। স্বামী যখন তার প্রতি দৃষ্টিপাত করবে খুশী হয়ে যাবে,তাকে কোন হুকুম করলে পালন করবে,সে ঘরে না থাকলে তার ধন-সম্পদের সুরক্ষা করবে। (আবূ দাঊদ) [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ১৬৬৪, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৪৮৭। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীসটির সানাদ বাহ্যিকভাবে সহীহ হলেও মূলত তা মা‘লুল। কারণ গায়লান এবং জা‘ফার ইবনু ইয়াস-এর মধ্যে অনুল্লোখিত একজন রাবী রয়েছে তিনি ‘উসমান আবুল ইয়াক্বযান যিনি একজন দুর্বল রাবী।

১৭৮৮

হাসান হাদিস
وَعَنْ عَلِيٍّ : أَنَّ الْعَبَّاسَ سَأَلَ رَسُولَ اللّهِ ﷺ فِىْ تَعْجِيْلِ صَدَقَتِه قَبْلَ أَنْ تَحِلَّ: فَرَخَّصَ لَه فِىْ ذلِكَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَةَ وَالدَّارِمِيُّ

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,(একবার) এক বছর পরিপূর্ণ হবার আগে নিজের যাকাত দিতে পারা যাবে কিনা ‘আব্বাস (রাঃ) তা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাকে অনুমতি দিলেন। (আবূ দাঊদ,তিরমিযী,ইবনু মাজাহ, দারিমী) [১]
[১] হাসান : আবূ দাঊদ ১৬২৪, আত্ তিরমিযী ৬৭৮, ইবনু মাজাহ্ ১৭৯৫, আহমাদ ৮২২, দারিমী ১৬৭৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৫৪৩১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৯৬৬।

১৭৮৫

হাসান সহিহ
وَعَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيْجٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «الْعَامِلُ عَلَى الصَّدَقَةِ بِالْحَقِّ كَالْغَازِىْ فِىْ سَبِيلِ اللّهِ حَتّى يَرْجِعَ إِلى بَيْتِه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ

রাফি‘ ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে প্রশাসক যথাযথভাবে যাকাত উসূল করে সে গাযীর মতো যতক্ষণ না সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে। (আবূ দাঊদ ও (তিরমিযী) [১]
[১] হাসান সহীহ : আবূ দাঊদ ৭৭৩, আত্ তিরমিযী ৬৪৫, ইবনু মাজাহ্ ১৮০৯, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৭১৬, ইবনু খুযায়মাহ্ ২৩৩৪, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৪৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩১৭৬, সহীহ আত-তারগী ৭৭৩।

১৭৮৭

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنِ اسْتَفَادَ مَالًا فَلَا زَكَاةَ فِيهِ حَتّى يَحُوْلَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَذَكَرَ جَمَاعَةٌ أَنَّهُمْ وَقَفُوهُ عَلَى ابْنِ عُمَرَ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি কোন ধন-সম্পদ লাভ করবে,এক বছর অতিবাহিত হবার আগে এ ধন-সম্পদের উপর তাকে যাকাত দিতে হবে না। (তিরমিযী;একদল লোক বলেছেন,এ হাদীসটির সানাদ ইবনু ‘উমার পর্যন্ত পৌঁছেছে,রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত নয়।) [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৬৩১, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৭০৩০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৩১৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৭৬। তবে আত্ তিরমিযী ব্যতীত বাকীরা অনেকে হাদীসটি মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

১৭৯০

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ النَّبِيُّ ﷺ وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ: يَا أَبَا بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتّى يَقُولُوا: لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ فَمَنْ قَالَ: لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ عَصَمَ مِنِّىْ مَالَه وَنَفْسَه إِلَّا بِحَقِّه وَحِسَابُه عَلَى الله». قَالَ أَبُو بَكْرٍ: وَاللّهِ لَأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللّهِ لَوْ مَنَعُونِىْ عَنَاقًا كَانُوا يُؤَدُّونَهَا إِلى رَسُولِ اللّهِ ﷺ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلى مَنْعِهَا. قَالَ عُمَرُ: فَوَاللّهِ مَا هُوَ إِلَّا أَن رَأَيْتُ أَنْ قَدْ شَرَحَ اللهُ صَدْرَ أَبِىْ بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) খলীফাহ হন তখন ‘আরাবের কিছু লোক যাকাত প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানায়। (আবূ বকর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুনে) ‘উমার (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে বললেন আপনি কীভাবে যুদ্ধ করবেন? অথচ রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে,মানুষ যে পর্যন্ত ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই-এ কথার) ঘোষণা না দিবে ততক্ষণ তাদের সাথে যুদ্ধ করবে,যে ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলল সে নিজের ধন-সম্পদ ও জীবন আমার থেকে নিরাপদ করে নিলো। তবে ইসলামের কারণে হলে ভিন্ন কথা। আর এর হিসাব আল্লাহর কাছে। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন,আল্লাহর কসম যে ব্যক্তি সলাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করবে,আমি অবশ্য অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব। কারণ নিঃসন্দেহে যাকাত সম্পদের হক। আল্লাহর কসম! তারা (যাকাত অস্বীকারকারীরা) যদি আমাকে একটি ছাগলের বাচ্চা দিতেও অস্বীকার করে যা তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় দিতো,তাহলেও আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। (তখন) ‘উমার বললেন,আল্লাহর শপথ! যুদ্ধের এই সিদ্ধান্ত আল্লাহর তরফ থেকে আবূ বকর-এর অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু বলে আমি মনে করি না। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৯২৪-২৫, মুসলিম ২০, আবূ দাঊদ ১৫৫৬, আত্ তিরমিযী ২৬০৭, নাসায়ী ২৪৪৩, আহমাদ ১১৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬৭।

১৭৮৯

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ خَطَبَ النَّاسَ فَقَالَ: «أَلَا مَنْ وَلِيَ يَتِيمًا لَه مَالٌ فَلْيَتَّجِرْ فِيهِ وَلَا يَتْرُكْهُ حَتّى تَأْكُلَهُ الصَّدَقَةُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: فِىْ إِسْنَادِه مَقَالٌ: لِأَنَّ الْمُثَنَّى بْنِ الصَّبَاحِ

আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন যে,নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একদিন) লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,সাবধান! যে ব্যাক্তি কোন ইয়াতীমের অভিভাবক হবে,(আর সে ইয়াতীমের যাকাত দেবার মতো ধন-সম্পদ হবে) সে যেন এই সম্পদকে ফেলে না রেখে ব্যবসায় খাটায়। কারণ ব্যবসা ছাড়া মাল আটকে রাখলে যাকাত দিতে দিতে তা শেষ হয়ে যাবে।(তিরমিযীঃ তিনি বলেন,এ হাদীসের সানাদের ব্যাপারে কথা আছে। কারণ এর একজন বর্ণনাকারী দুর্বল।) [১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তিরমিযী ৬৪১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৩৩৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮৯, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ২১৭৯। কারণ এর সানাদে আল মুসান্না ইবনু আস্ সববাহ একজন দুর্বল রাবী।
/ পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১৭৯২

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «مَا مِنْ رَجُلٍ لَا يُؤَدِّىْ زَكَاةَ مَالِه إِلَّا جَعَلَ اللّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي عُنُقِه شُجَاعًا» ثُمَّ قَرَأَ عَلَيْنَا مِصْدَاقَه مِنْ كِتَابِ اللّهِ: ﴿وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَا اتَاهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِه﴾ [آل عمران 3 : 180] الْايَة. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيّ وَابْنُ مَاجَهْ

ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করবে না,কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার গলায় সাপ লটকিয়ে দেবেন। তারপর তিনি কালামে পাক থেকে এ অর্থের তিলাওয়াত করলেন,অর্থাৎ “যারা আল্লাহর দেয়া মাল ব্যয়ে কৃপণতা করে,তারা যেন মনে না করে এ কাজ তাদের জন্য কল্যাণকর হয়েছে”-(সূরাহ আ-ল ‘ইমরান ৩: ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (তিরমিযী, নাসায়ী,ইবনু মাজাহ) [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৩০১২, নাসায়ী ২৪৪১, ইবনু মাজাহ্ ১৭৮৪, সহীহুল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭১৯।

১৭৯১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «يَكُوْنُ كَنْزُ أَحَدِكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ يَفِرُّ مِنْهُ صَاحِبُه وَهُوَ يَطْلُبُه حَتّى يُلْقِمَه أَصَابِعَه» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তোমাদের ধন-সম্পদ বিষধর সাপের রূপ ধারণ করবে। মালিক এর থেকে পালিয়ে থাকবে,আর সে মালিককে খুঁজতে থাকবে। পরিশেষে সে মালিককে পেয়ে যাবে এবং তার আঙ্গুলগুলোকে লুকমা বানিয়ে মুখে পুরবে। (আহমাদ) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৯৫৮, আহমাদ ১০৮৫৫, ইবনু খুযায়মাহ্ ২২৫৪।

১৭৯৩

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «مَا خَالَطَتِ الزَّكَاةُ مَالًا قَطُّ إِلَّا أَهْلَكَتْهُ» . رَوَاهُ الشَّافِعِيُّ وَالْبُخَارِيُّ فِىْ «تَارِيخِه» وَالْحُمَيْدِيُّ وَزَادَ قَالَ: يَكُوْنُ قَدْ وَجَبَ عَلَيْكَ صَدَقَةٌ فَلَا تُخْرِجْهَا فَيُهْلِكُ الْحَرَامُ الْحَلَالَ. وَقَدِ احْتَجَّ بِه مَنْ يَرى تَعَلُّقَ الزَّكَاةِ بِالْعَيْنِ هَكَذَا فِي «الْمُنْتَقى وَرَوَى الْبَيْهَقِيُّ فِىْ «شُعَبِ الْإِيْمَانِ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ بِإِسْنَادِه إِلى عَائِشَةَ. وَقَالَ أَحْمَدُ فِىْ «خَالَطَتْ» : تَفْسِيرُه أَنَّ الرَّجُلَ يَأْخُذُ الزَّكَاةَ وَهُوَ مُوسِرٌ أَو غَنِيٌّ وَإِنَّمَا هِيَ للْفُقَرَاءِ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি,যে ধন-সম্পদের সাথে যাকাত মিশে যাবে নিশ্চয় তা তাকে ধ্বংস করে ছাড়বে। শাফি’ঈ,বুখারী,হুমায়দী; হুমায়দী বেশী এমন বর্ণনা করেছেন যে,ইমাম বুখারী বলেছেন,মালের উপর যাকাত ওয়াজিব হবার পর তোমরা যদি তা আদায় না করো তাহলে এ যাকাত সম্পদের সাথে মিশে যায়। তাই হারাম মাল হালাল মালকে ধ্বংস করে দেয়। যেসব সম্মানিত ব্যক্তিগণ এ কথা বলেন যে,যাকাত মূল মালের সাথে সম্পর্কিত। তারা এ হাদীসকে তাদের স্বপক্ষে দলীল মনে করেন। (মুনতাকা’)[১]

শু’আবুল ঈমানে ইমাম বায়হাকী এ হাদীসটিকে ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল হতে ‘আয়িশাহ (রাঃ) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করেছেন। বস্তুত ইমাম আহমাদ (রহঃ) এ হাদীসের শব্দ “কোন ব্যক্তির যাকাত গ্রহণের” ব্যাপারে এ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, কেউ ধনী ও সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও যদি যাকাত গ্রহণ করে। প্রকৃতপক্ষে যাকাত ফকির-মিসকীন ও অন্যান্যদের হক।
[১] য‘ঈফ : মুসনাদ আশ্ শাফি‘ঈ ৬০৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৬৬৬, শু‘আবুল ঈমান ৩২৪৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬৩, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫০৫৭।
/ পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৯৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَيْسَ عَلَى الْمُسْلِمِ صَدَقَةٌ فِىْ عَبْدِه وَلَا فِىْ فَرَسِه» . وَفِىْ رِوَايَةٍ قَالَ: «لَيْسَ فِىْ عَبْدِه صَدَقَةٌ إِلَّا صَدَقَةُ الْفِطْرِ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গোলাম ও ঘোড়ার জন্য মালিক মুসলিমকে যাকাত দিতে হবে না। আর এক বর্ণনায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গোলামের যাকাত দেয়া কোন মুসলিমের জন্য ওয়াজিব নয়। তবে সদাক্বায়ে ফিত্‌র দেওয়া ওয়াজিব। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৬৪, মুসলিম ৯৮২, ২৪৭২।

১৭৯৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «فِيمَا سَقَتِ السَّمَاءُ وَالْعُيُونُ أَوْ كَانَ عَثَرِيًّا الْعُشْرُ. وَمَا سُقِىَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে স্থান আকাশের অথবা প্রবাহিত কূপের পানিতে সিক্ত হয় অথবা যা নালার পানিতে তরতাজা হয়,তাতে ‘উশর (১০ভাগের ১ভাগ) আদায় করতে হবে। আর যে সব ফসল সেঁচের মাধ্যমে উৎপাদিত হয় তাতে নিস্ফে ‘উশর (২০ভাগের ১ভাগ) আদায় করতে হবে।(বুখারী) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৮৩, আবূ দাঊদ ১৫৯৬, আত্ তিরমিযী ৬৪০, নাসায়ী ২৪৮৮, ইবনু মাজাহ্ ১৮১৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪৮৫, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮০, ইরওয়া ৭৯৯।

১৭৯৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ مِنَ التَّمْرِ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ أَوَاقٍ مِنَ الْوَرِقِ صَدَقَةٌ وَلَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ مِنَ الْإِبِلِ صَدَقَةٌ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পাঁচ ওয়াসাকের কম খেজুর থাকলে যাকাত ওয়াজিব হয়না। পাঁচ উকিয়ার কম রূপায় যাকাত বাধ্যতামূলক নয়। কিংবা পাঁচটির কম উট থাকলেও যাকাত ওয়াজিব হয় না। (বুখারী,মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৫৯, মুসলিম ৯৮০, আবূ দাঊদ ২৪৭৪, মুয়াত্ত্বা মালিক ৮৩৩, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৭২৫৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭২৪৩, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬৯।

১৭৯৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «اَلْعَجْمَاءُ جُرْحُهَا جُبَارٌ وَالْبِئْرُ جُبَارٌ وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ وَفِي الرِّكَازِ الْخُمُسُ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোনও জানোয়ার (যেমন-ঘোড়া,গরু,মহিষ ইত্যাদি) কাউকে আহত করলে তা মাফ। কূপ খনন করতে কেউ মারা গেলে তাতে মালিকের ওপর ক্ষতিপূরণ মাফ। তেমনি খনি খনন করতে কেউ মারা গেলেও মালিকের দোষ মাফ। আর রিকাযে এক-পঞ্চমাংশ অংশ দেয়া ওয়াজিব।(বুখারী, মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৯১২, আবূ দাঊদ ৪৫৯৩, আত্ তিরমিযী ৬৪২, নাসায়ী ২৪৯৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৭৩৭৪, আহমাদ ৭২৫৪, দারিমী ২৪২২, মুসলিম ১৭১০।

১৭৯৬

সহিহ হাদিস
وَعَن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَن أَبَا بَكْرٍ كَتَبَ لَه هذَا الْكِتَابَ لَمَّا وَجَّهَه إِلَى الْبَحْرِينِ: بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ هذِه فَرِيضَةُ الصَّدَقَةِ الَّتِىْ فَرَضَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ عَلَى الْمُسْلِمِينَ وَالَّتِىْ أَمَرَ اللّهُ عَزَّ وَجَلَّ بهَا رَسُوْلَه فَمَنْ سَأَلَهَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ عَلى وَجْهِهَا فَلْيُعْطِهَا وَمَنْ سُئِلَ فَوْقَهَا فَلَا يُعْطِ: فِىْ أَرْبَعٍ وَعِشْرِينَ مِنَ الْإِبِل فَمَا دُوْنِهَا مِنَ الْغَنَمِ مِنْ كُلِّ خَمْسٍ شَاةٌ. فَإِذَا بَلَغَتْ خَمْسًا وَعِشْرِينَ إِلى خَمْسٍ وَثَلَاثِينَ فَفِيهَا بِنْتُ مَخَاضٍ أُنْثى فَإِذَا بَلَغَتْ سِتًا وَثَلَاثِينَ فَفِيْهَا بِنْتُ لَبُوْنٍ أُنْثى. فَإِذا بَلَغَتْ سِتَّةً وَأَرْبَعِيْنَ إِلى سِتِّينَ فَفِيهَا حِقَّةٌ طَرُوقَةُ الْجَمَلِ فَإِذَا بَلَغَتْ وَاحِدَةً وَسِتِّينَ فَفِيْهَا جَذَعَةٌ. فَإِذا بَلَغَتْ سِتًا وَسَبْعِيْنَ فَفِيهَا بِنْتَا لَبُونٍ. فَإِذَا بَلَغَتْ إِحْدى وَتِسْعِينَ إِلى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ فَفِيهَا حِقَّتَانِ طَرُوقَتَا الْجَمَلِ. فَإِذَا زَادَتْ عَلى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ فَفِىْ كُلِّ أَرْبَعِينَ بِنْتُ لَبُونٍ وَفِىْ كُلِّ خَمْسِينَ حِقَّةٌ. وَمَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَه إِلَّا أَرْبَعٌ مِنَ الْإِبِلِ فَلَيْسَ فِيهَا صَدَقَةٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. فَإِذَا بَلَغَتْ خَمْسًا فَفِيهَا شَاةٌ وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَه مِنَ الْإِبِلِ صَدَقَةَ الْجَذَعَةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَه جَذَعَةٌ وَعِنْدَه حِقَّةٌ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْحِقَّةُ وَيُجْعَلُ مَعَهَا شَاتَيْنِ إِنِ اسْتَيْسَرَتَا لَه أَوْ عِشْرِينَ دِرْهَمًا. وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَه صَدَقَةُ الْحِقَّةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَهُ الْحِقَّةُ وَعِنْدَهُ الْجَذَعَةُ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْجَذَعَةُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِيْنَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَه صَدَقَةَ الْحِقَّةِ وَلَيْسَتْ إِلَّا عِنْدَه بِنْتُ لَبُوْنٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ لَبُونٍ وَيُعْطِىْ مَعهَا شَاتَيْنِ أَوْ عِشْرِينَ دِرْهَمًا. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُه بِنْتَ لَبُوْنٍ وَعِنْدَه حِقَّةٌ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْحِقَّةُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُه بَنْتَ لِبَوْنٍ وَلَيْسَتْ عِنْدَه وَعِنْدَه بِنْتُ مَخَاضٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ مَخَاضٍ وَيُعْطى مَعَهَا عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُه بَنْتَ مَخَاضٍ وَلَيْسَتْ عِنْدَه وَعِنْدَه بِنْتُ لَبُونٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. فَإِنْ لَمْ تَكُنْ عِنْدَه بِنْتُ مَخَاضٍ عَلى وَجْهِهَا وَعِنْدَهُ ابْن لَبُونٍ فَإِنَّهُ يُقْبَلُ مِنْهُ وَلَيْسَ مَعَه شَيْءٌ. وَفِىْ صَدَقَةِ الْغَنَمِ فِىْ سَائِمَتِهَا إِذَا كَانَتْ أَرْبَعِينَ فَفِيْهَا شَاةٌ إِلى عِشْرِيْنَ وَمِائَةِ شَاةٍ فَإِن زَادَتْ عَلى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ إِلى مِائَتَيْنِ فَفِيهَا شَاتَان. فَإِن زَادَتْ عَلى مِائَتَيْنِ إِلى ثَلَاثِمِائَةٍ فَفِيْهَا ثَلَاثُ شِيَاهٍ. فَإِذَا زَادَتْ عَلى ثَلَاثِمِائَةٍ فَفِىْ كُلِّ مِائَةٍ شَاةٌ. فَإِذَا كَانَتْ سَائِمَةُ الرَّجُلِ نَاقِصَةً مِنْ أَرْبَعِينَ شَاةً وَاحِدَةً فَلَيْسَ فِيهَا صَدَقَةٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. وَلَا تُخْرَجَ فِي الصَّدَقَة هَرِمَةٌ وَلَا ذَاتُ عَوَرٍ وَلَا تَيْسٌ إِلَّا مَا شَاءَ الْمُصَدِّقُ. وَلَا يُجْمَعُ بَيْنَ مُتَفَرِّقٍ وَلَا يُفَرَّقُ بَيْنَ مُجْتَمَعٍ خَشْيَةَ الصَّدَقَةِ وَمَا كَانَ مِنْ خَلِيطَيْنِ فَإِنَّهُمَا يَتَرَاجَعَانِ بَيْنَهُمَا بِالسَّوِيَّةِ. وَفِي الرِّقَةِ رُبُعُ الْعُشْرِ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ إِلَّا تِسْعِينَ وَمِائَةً فَلَيْسَ فِيهَا شَيْءٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আবূ বাক্‌র সিদ্দীক্ব (রাঃ) যখন তাঁকে বাহরাইনের শাসনকর্তা নিয়োগ দিয়ে পাঠান তখন এ নির্দেশনামাটি লিখে দিয়েছিলেন,বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম। এ চিঠি ফরজ সদাক্বাহ অর্থাৎ যাকাত সম্পর্কে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটি মুসলিমদের ওপর ফার্‌য করেছেন এবং এটিকে জারী করার জন্য আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে মুসলিম কোন ব্যক্তির কাছে নিয়মানুযায়ী যাকাত চাওয়া হলে সে যেন তা আদায় করে। আর কোন ব্যক্তির নিকট নিয়ম ভেঙ্গে যাকাত চাওয়া হলে সে যেন (বেশী যাকাত) না দেয়। চব্বিশ ও চব্বিশের কম উটের যাকাত হবে বকরী। প্রতি পাঁচ উটে একটি বকরী দিতে হবে। (পাঁচটি উটের কম হলে যাকাত দিতে হবে না। পাঁচ থেকে নয় উটে এক বকরী। দশ থেকে চৌদ্দটি হলে দু’টি বকরী। পনের হতে ঊনিশে তিনটা বকরী। আর বিশ থেকে চব্বিশ পর্যন্ত চারটি বকরী। উটের সংখ্যা পঁচিশ থেকে পয়ত্রিশ পর্যন্ত এক বছরের মাদি উট (বিনতে মাখায) যাকাত দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হলে একটু দু’বছরের মাদী উট (বিনতে লাবুন) যাকাত দিতে হবে। ছেচল্লিশ থেকে ষাট পর্যন্ত উটে নরের সাথে মিলনের যোগ্য একটি তিন বছরের মাদী উট (হিক্কাহ) দিতে হবে। উটের সংখ্যা একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত পৌঁছালে চার পেরিয়ে পাঁচ বছরে পা দিয়েছে এমন একটি মাদী উট (জাযা’আহ) দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছিয়াত্তর থেকে নব্বই পৌঁছে গেলে দু’টি দু’বছরের উটনী (বিনতু লাবুন) যাকাত লাগবে। একানব্বই হতে একশত বিশ পর্যন্ত উটে তিন বছর বয়সী নরের সাথে মিলনের যোগ্য দু’টি উট (হিক্কাতানে)। একশ’বিশ ছাড়ালে প্রতি চল্লিশ উটে দু’বছরের একটি মাদি উট (বিনতু লাবুন) ও পঞ্চাশটি করে বাড়লে পুরা তিন বছর বয়সী উট যাকাত দিতে হবে। যার নিকট শুধু চারটি উট আছে তার যাকাত লাগবে না। অবশ্য মালিক চাইলে,নাফল সদাকাহ কিছু দিতে পারে। উটের সংখ্যা পাঁচ হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। আর চার বছরের মাদী উট নিসাবে পৌঁছে গেলে (৬১-৭৫) এবং তা তাঁর নিকট না থাকলে,তিন বছর বয়সী উট (অর্থাৎ একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত উটের সংখ্যার যাকাত) দিতে হবে। এর সাথে বাড়তি দু’টি বকরী দিবে যদি সহজসাধ্য হয়। অথবা বিশ দিরহাম দিয়ে দিবে। চার বছর পার হয়ে ও পাঁচ বছরে পদার্পণ করা উটের যাকাত দিতে হবে। কিন্তু তাঁর তিন বছর বয়সী মাদী উট থাকলে সেটাই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। কিন্তু যাকাত গ্রহণকারী প্রদানকারীকে বিশ দিরহাম অথবা দু’টি বকরী ফেরত দিবে। কোন ব্যক্তির নিকট দু’বছরের উট থাকলে তার যাকাত দিতে হবে। যদি তার কাছে না থেকে এক বছরের উট থাকে। তবে থেকে এক বছরের উটই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যাকাত আদায়কারী এর সাথে আরো বিশ দিরহাম অথবা দু’টি বকরী আদায় করবে। যে ব্যক্তির যাকাত হিসেবে একটি এক বছরের উট ওয়াজিব আছে কিন্তু তার কাছে তা’ নেই। বরং দু’বছরের উট (ইবনু লাবুন) থাকে,তার থেকে তাই গ্রহণ করতে হবে। তবে এ অবস্থায় অন্যকিছু ওয়াজিব হবে না।
আর পালিত বকরীর ক্ষেত্রে বকরীর সংখ্যা চল্লিশ হতে শুরু করে একশত বিশ পর্যন্ত হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। একশ’ বিশ হতে দু’শ পর্যন্ত দু’টি বকরী। আর দু’শ হতে তিন’শ বকরীর জন্য তিনটি বকরী। তিনশ’র বেশী হলে,প্রত্যেক একশ’টি বকরীর জন্য একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। যার নিকট পালিত বকরী চল্লিশ থেকে একটিও কম হবে তার উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। তবে মালিক ইচ্ছা করলে নাফল সদাকাহ হিসেবে কিছু দিতে পারে। যাকাতের মাল যেন (উট,গরু,ছাগল) অতিবৃদ্ধ,ত্রুটিযুক্তি না হয়। যাকাত উসূলকারী গ্রহণ করতে চাইলে জায়িয। বিভিন্ন পশুকে এক জায়গায় একত্র না করা উচিত। যাকাত দেবার ভয়ে পশুকে পৃথক পৃথক রাখাও ঠিক না। যদি যাকাতের নিসাবে দু’ব্যক্তি যৌথভাবে শরীক হয়,তাহলে সমানভাবে ভাগ করে নেয়া উচিত। আর রূপার ক্ষেত্রে চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত ওয়াজিব। কোন ব্যক্তি একশত নব্বই দিরহামের মালিক হলে (যা নিসাব হিসেবে গণ্য নয়) তার উপর কিছু ফারয হবে না। তবে নফল সদাকাহ হিসেবে কিছু দিতে পারে। (বুখারী)
[১]
[১] সহীহ : বুখারী ১৪৪৮, ১৪৫০, ১৪৫১, ১৪৫৩, ১৪৫৪, ১৪৫৫, দারাকুত্বনী ১৯৮৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৩৮৮।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন