HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিদায় হজের খুতবা কিছু আলোকপাত

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

১. জান-মালের নিরাপত্তা :
« إِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِى شَهْرِكُمْ هَذَا فِى بَلَدِكُمْ هَذَا » .

‘নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ তোমাদের আজকের এ দিন, তোমাদের আজকের এ মাস, তোমাদের আজকের এ শহরের মতই তোমাদের জন্য হারাম।’ [মুসলিম : ৩০০৯]

মানুষের জীবন ও মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই অবিস্মরণীয় বক্তব্যে উচ্চারিত প্রথম ঘোষণাই ছিল রক্তপাত হারাম ও জীবন নাশ থেকে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَلَا تَقۡتُلُواْ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّۚ ﴾ [ الانعام : ١٥١ ]

‘আর বৈধ কারণ ছাড়া তোমরা সেই প্রাণকে হত্যা করো না, আল্লাহ যা হারাম করেছেন।’ {সূরা আল-আন‘আম, আয়াত : ১৫১}

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

﴿ مِنۡ أَجۡلِ ذَٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَيۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعٗا وَمَنۡ أَحۡيَاهَا فَكَأَنَّمَآ أَحۡيَا ٱلنَّاسَ جَمِيعٗاۚ ﴾ [ المائ‍دة : ٣٢ ]

‘এ কারণেই, আমি বনী ইসরাঈলের উপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৩২}

এমনিভাবে আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

« لاَ يَحِلُّ دَمُ رَجُلٍ مُسْلِمٍ إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ الثَّيِّبُ الزَّانِى وَالنَّفْسُ بِالنَّفْسِ وَالتَّارِكُ لِدِينِهِ الْمُفَارِقُ لِلْجَمَاعَةِ» .

‘তিন কারণ ছাড়া কোনো মুসলমানের রক্ত হালাল নয়। বিবাহিত ব্যভিচারী, হত্যার বদলা হত্যা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত থেকে আলাদা দীন গ্রহণকারী।’ [বুখারী : ৬৮৭৮; মুসলিম : ১৬৭৬]

উপরন্তু ইসলাম যেসব অমুসলিমের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি হয়েছে, তাদের হত্যা করতেও কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। যেমন আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا» .

‘যে ব্যক্তি চুক্তিকৃত ব্যক্তিকে হত্যা করল সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না। যদিও জান্নাতের ঘ্রাণ পাওয়া যাবে চল্লিশ বছরের দূরত্ব সমান জায়গা থেকে।’ [বুখারী : ৩১৬৬]

সুতরাং শরীয়তের সীমারেখার বাইরে মানুষ হত্যা করা মহা অন্যায় এবং কবীরা গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَلَا تَقۡتُلُواْ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّۗ ﴾ [ الاسراء : ٣٣ ]

‘আর তোমরা সেই নাফসকে হত্যা করো না, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সঙ্গত কারণ ছাড়া।’ {সূরা আল-ইসরা, আয়াত : ৩৩}

মানুষের জীবন তো কেবল আল্লাহ তা‘আলাই কেড়ে নিতে পারেন যিনি জীবন দান করেন। আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ এবং শরয়ী হুদুদ ছাড়া অন্য কোনো কারণে প্রাণ সংহার করার অনুমতি অন্য কারো নেই।

তেমনি এ খুতবা জনস্বার্থে ব্যবহৃত সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে এবং সম্পদ খরচ ও তা কাজে লাগাতে জানে না এমন অর্বাচীনের হাতে এ সম্পদ অর্পন নিষিদ্ধ করেছে। সুতরাং তসরুফ করার জন্য এ সম্পদ তাদের কাছে হস্তান্তর করা যাবে না এবং এ সম্পদের ওপর নিজেদের কর্তৃত্বও প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। যদিও তাদের ভরণ-পোষণ এবং সদাচারণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَلَا تُؤۡتُواْ ٱلسُّفَهَآءَ أَمۡوَٰلَكُمُ ٱلَّتِي جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ قِيَٰمٗا وَٱرۡزُقُوهُمۡ فِيهَا وَٱكۡسُوهُمۡ وَقُولُواْ لَهُمۡ قَوۡلٗا مَّعۡرُوفٗا ٥ ﴾ [ النساء : ٥ ]

‘আর তোমরা নির্বোধদের হাতে তোমাদের ধন-সম্পদ দিও না, যাকে আল্লাহ তোমাদের জন্য করেছেন জীবিকার মাধ্যম এবং তোমরা তা থেকে তাদেরকে আহার দাও, তাদেরকে পরিধান করাও এবং তাদের সাথে উত্তম কথা বল।’ {সূরা আন-নিসা, আয়াত : ০৫}

বিনষ্টকারীর বিনষ্ট করা থেকে এবং প্রতারক ও খেয়ানতের হাত থেকে এ সম্পদ রক্ষার জন্য আল্লাহ তা‘আলা শক্তিশালী মজবুত বেষ্টনী নির্ধারণ করেছেন, যা এদের থেকে এ সম্পদকে রক্ষা করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَٱلسَّارِقُ وَٱلسَّارِقَةُ فَٱقۡطَعُوٓاْ أَيۡدِيَهُمَا جَزَآءَۢ بِمَا كَسَبَا نَكَٰلٗا مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٣٨ ﴾ [ المائ‍دة : ٣٨ ]

‘আর পুরুষ চোর ও নারী চোর তাদের উভয়ের হাত কেটে দাও তাদের অর্জনের প্রতিদান ও আল্লাহর পক্ষ থেকে শিক্ষণীয় আযাবস্বরূপ এবং আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৩৮}

আয়াতটির মাধ্যমে খুতবাকে এ মর্মে তাগিদ করা হয়েছে যে, দীনের হেফাযত করা অপরিহার্য যা একনিষ্টভাবে এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত ও জিহাদের চেতনা সংরক্ষণ ছাড়া সম্ভব নয়। তেমনি জীবনের হেফাযত করাও অপরিহার্য যা রক্তপাত ও হত্যা থেকে সংরক্ষণ ছাড়া সম্ভব নয়। ঠিক সেভাবে সম্পদ রক্ষা করাও জরুরী যা সঠিক পরিচালনা, পথ প্রদর্শন এবং মন্দ লোকের হাত থেকে রক্ষা করা ছাড়া সম্ভব নয়। ইরশাদ হয়েছে :

﴿ إِنَّمَا جَزَٰٓؤُاْ ٱلَّذِينَ يُحَارِبُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَسۡعَوۡنَ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوٓاْ أَوۡ يُصَلَّبُوٓاْ أَوۡ تُقَطَّعَ أَيۡدِيهِمۡ وَأَرۡجُلُهُم مِّنۡ خِلَٰفٍ أَوۡ يُنفَوۡاْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِۚ ﴾ [ المائ‍دة : ٣٣ ]

‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং যমীনে ফাসাদ করে বেড়ায়, তাদের আযাব কেবল এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে কিংবা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হবে।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৩৩}

এই পূর্ণাঙ্গতা ও ব্যাপকতার মাধ্যমে পবিত্র শরীয়ত এমন শক্তিশালী ও সুস্পষ্ট বিধান প্রণয়ন করেছে, যা মানুষের সম্মানজনক জীবন যাপনের অধিকারের গ্যারান্টি দেয়। যে জীবনকে ঘিরে আছে মর্যাদা এবং যার ওপর উড়তে থাকে নিরাপত্তা ও স্বস্থির পতাকা। এর ভিত্তি এমন কিছু বিষয়ের ওপর যেগুলোকে বাদ দিলে মানবাধিকারের সকল শ্লোগানই অসাড় হয়ে যায় এবং যার সামনে ম্লান হয়ে যায় পৃথিবীর সকল মানবাধিকার সংগঠন ও নিরাপত্তা আইন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন