মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ঐতিহাসিক এ খুতবায় এমন কিছু ব্যাপক অর্থবোধক নমুনা ব্যক্ত হয়েছে… .. .
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/151/9
ঐতিহাসিক এ খুতবায় এমন কিছু ব্যাপক অর্থবোধক নমুনা ব্যক্ত হয়েছে যা অপরিহার্যভাবে জাহিলিয়াতের বিষয়গুলোতে অন্তর্ভুক্ত হয়। যেমন গর্হিত বাহাদুরি ও ঘৃণ্য সুদের প্রচলন। জাহেলী যুগে মানুষের জীবনের মূল্য ছিল অতি নগন্য। খুনোখুনি ছিল গর্বের বিষয়। তুচ্ছাতিতুচ্ছ ব্যাপারে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া ছিল বীরত্বের পরিচায়ক। রক্ত ঝরানো ছিল মর্যাদার চাবিকাঠি। সেখানে জীবনের কোনো লক্ষ্য ছিল না। ছিল না কোনো নির্দিষ্ট চেতনা। অরাজকতা এবং লালসার কোনো সীমা ছিল না। যে কোনো মূল্যে এবং যে কোনো পন্থায় সম্পদের অধিকারী হওয়াই ছিল সাফল্য ও নেতৃত্ব লাভের উপায়। ইসলামের আবির্ভাব হয়েছে এ ভিত্তিগুলোকে বদলে দিতে। এসবকে এমন কিছু মৌলিক বিধানের মাধ্যমে পরিবর্তিত করতে যেখানে মানবতা পাবে তার সম্মান ও নিরাপত্তা। তাই সমূলে উপড়ে ফেলা হয়েছে জাহিলিয়াতের গোঁড়ামী। তুলে ফেলা হয়েছে নগ্ন সাম্প্রদায়িকতা। মানুষের প্রয়োজন নিয়ে সওদা করতে বাধা প্রদান করা হয়েছে। বিভেদ ও ভৌগলিক আধিপত্যকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। ব্যাবধান ও উঁচু-নিচুর সকল ভেদ রেখা তুলে দিয়ে তা কেন্দ্রিভুত করা হয়েছে কেবল একটি গুণের ওপর। আর তা হলো তাকওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।’ {সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত : ১৩}
জাহিলিয়াতের বিষয়গুলো রহিত করার এই অভিযানকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম নিজের থেকেই সূচনা করেছেন :
‘সর্বপ্রথম আমাদের যে হত্যার বদলা রহিত করছি তা হলো ইবন রবিআ বিন হারেছের হত্যার প্রতিশোধ। [. হারিছ বিন আবদুল মুত্তালিব।] আর জাহেলী যুগের সর্বপ্রথম যে সুদ রহিত করছি তা হলো আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালেবের সুদ। কারণ এর সবটাই রহিত।’ [মুসলিম : ১২১৮]
যাতে বক্রহৃদয় ও প্রবৃত্তির অনুসারীরা বুঝতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়মে কোনো পক্ষপাতিত্ব, স্বার্থপরতা কিংবা মোসাহেবির স্থান নেই। আত্মীয়ের জন্য কোনো ব্যতিক্রম নেই। পরিবারের জন্য কোনো বিশেষত্ব নেই। লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই। বিচার উদ্বোধন হবে নিজেকে দিয়ে। তারপর আসবে অন্যরা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম এখানেই ছিলেন আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু এবং মহত্বের শিখর। তাই জাহিলিয়াতের রেওয়াজ ছুড়ে ফেলে সর্বপ্রথম আপন চাচাত ভাইয়ের হত্যার বদলা মাফ করে দিয়েছেন। যেমনিভাবে তার চাচার প্রাপ্য সমুদয় ঋণ বাতিল করে সূচনা করেছেন। এভাবে তিনি তাঁর বাণীগুলোকে সর্বজন প্রিয় বানিয়েছেন। এটিই আল্লাহর শিক্ষাদান পদ্ধতি যাকে কুরআন চিত্রিত করেছে :
‘যে কাজ থেকে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি, তোমাদের বিরোধিতা করে সে কাজটি আমি করতে চাই না।’ {সূরা হূদ, আয়াত : ৮৮} এবং একে বাস্তবে রূপ দিয়েছে মহান সুন্নাতে নববী :
‘হে লোক সকল, তোমাদের পূর্ববর্তীরা ধ্বংস হয়েছে এভাবে যে তাদের মধ্যে কোনো উচ্চ বংশীয় লোক চুরি করত, তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন দুর্বল ব্যক্তি চুরি করত, তখন তার ওপর হদ প্রয়োগ করত। আল্লাহর শপথ! যদি মুহম্মদের কন্যা ফাতেমাও চুরি করতো, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ [বুখারী : ৬৭৮৭ ; মুসলিম : ১৬৮৮]
ইসলাম কথা ও কাজের অমিল সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলবেন এক রকম আর করবেন অন্যরকম ইসলামে এ বড় নিন্দনীয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা তা কেন বল, যা তোমরা কর না? তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়।’ {সূরা আস-সাফ, আয়াত : ০২-০৩}
দীনদার শ্রেণীর জন্য সবচে বিপজ্জনক বিষয় হলো, সৎ কাজের আদেশ করা অথচ নিজে না করা। ভালো কাজের প্রতি আহ্বান করা অথচ নিজে তা ভুলে থাকা। পার্থিব উদ্দেশ্যে ও প্রবৃত্তির স্বার্থে কুরআনের শব্দগুলোকে যথাস্থান থেকে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা এবং অকাট্য প্রমাণসমূহের উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যা তালাশ করা। এতে শুধু দাঈ ও ধার্মিকরাই সন্দেহপূর্ণ হয়ে যান না; তাদের দীনদারী ও দাওয়াতও সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে করে দীনের ওপর মানুষের আস্থায় চিড় ধরে যেমন আস্থাহীন হয়ে পড়েন ওই দীনদার ব্যক্তি। কারণ, শব্দ যদি বিশ্বাসের আধার তথা অন্তর থেকে উৎসারিত হয় না হয়, তবে তা উচ্চারিত হয় শুষ্ক ও প্রাণহীন অবস্থায়। যার কোনো আবেদন থাকে না। মানুষ কোনো কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে না যাবৎ তার কথা কাজে অনূদিত হয়। তার বাক্য উচ্চারণ কর্মের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়। তাইতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলা হয়েছে : (রাসূলকে দেখতে চাও, তবে কুরআন দেখ। কারণ,) ‘কুরআনই তার চরিত্র।’ [মুসলিম : ৭৪৬]
কথা ও কাজ এবং আকীদা ও আচরণের মধ্যে মিল সৃষ্টির জন্য দরকার আত্মশুদ্ধির অনুশীলন। আর তা হয় আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়া এবং তাঁর সাহায্য ও তাওফীক প্রার্থনার মাধ্যমে। জীবনের ময়দান এবং বাস্তবতার টানাপোড়েন প্রায়শই মানুষকে স্বভাবজাত দুর্বলতা ও সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া মন্দের উপাদানের কারণে অন্যের আহ্বান করা পথ থেকে দূরে নিয়ে যায়। তবে সর্বদা কুরআনকে আঁকড়ে ধরা এবং সালাত ও সবরের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার মাঝে রয়েছে সুরক্ষিত প্রাচীর। এটি তার বাহককে জটিলতার গহ্বর এবং অপদস্ততার খাদ থেকে রক্ষা করে। ইরশাদ হয়েছে :
‘নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।’ {সূরা আল-ইসরা, আয়াত : ০৯}
বিদায়ী খুতবাটি ছিল সর্বশেষ বিবৃতি, যাতে সার্বিক নীতিমালাকে দৃঢ় করা হয়েছে এবং মৌলিক পদ্ধতি এঁকে দেয়া হয়েছে। এটি ছিল মহানবীর আসমানী বন্ধুর উদ্দেশে চিরবিদায়ের পূর্ব মুহূর্তে উম্মতের কাছে তাঁর রিসালাতের লক্ষ্য বর্ণনার সর্বশেষ সুযোগ। উদ্দেশ্য, উম্মতকে আশ্বস্ত করা, তাদের সৌভাগ্যের উপায় তুলে ধরা এবং আল্লাহর দীন ও তাঁর নেয়ামতের পূর্ণতার ঘোষণা দেয়া। তাই এ খুতবার পরপরই আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন :
‘যারা কুফরী করেছে, আজ তারা তোমাদের দীনের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে।’ {সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ০৩}
প্রতি বছর হজের সময় এলেই বিভিন্ন মিডিয়ায় বিদায় হজের খুতবা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করা হয়। বিজ্ঞ আলিম ও বিদ্বানগণ এ থেকে আমাদের জীবন পথের পাথেয় বলে দেন। আমাদের কাজ শুধু রাসূলুল্লাহর এ অন্তিম উপদেশগুলো কর্মে প্রতিফলিত করা। এর মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সাজিয়ে তা উচ্চ থেকে উচ্চস্তরে উন্নীত করা। ইয়া আল্লাহ আপনি আমাদের সবাইকে আপনার রাসূলের এ উপদেশ ও জীবন নির্দেশিকাগুলোকে পাথেয় হিসেবে গ্রহণের তাওফীক দিন। আমীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/151/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।