hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষিপ্ত হজ, উমরা ও যিয়ারত

লেখকঃ নু‘মান আবুল বাশার

১৫
ইহরামের সুন্নাতসমূহ
ইহরাম বাঁধার পূর্বে নিচের বিষয়গুলো সুন্নাত:

১. নখ কাটা, গোঁফ ছাঁটা, বগল ও নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করা। রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«الْفِطْرَةُ خَمْسٌ : الْخِتَانُ وَالاِسْتِحْدَادُ وَنَتْفُ الإِبْطِ وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ وَقَصُّ الشَّارِبِ»

‘পাঁচটি জিনিস ফিতরাতের অংশ: খাতনা করা, ক্ষৌরকার্য করা, বগলের চুল উপড়ানো, নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করা।’ ফিকহবিদগণ বলেছেন, এই আমলগুলো ইবাদতের মনোরম পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

«وَقَّتَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِى قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَحَلْقِ الْعَانَةِ وَنَتْفِ الإِبْطِ أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ يَوْمًا» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জন্য গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা ও বগলের চুল উপড়ানোর সর্বোচ্চ সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা যেন চল্লিশ দিনের বেশি এসব কাজ ফেলে না রাখি।” [নাসাঈ, হাদীস নং ১৪; তিরমিযী, হাদীস নং ২৯৮৪।]

মাথার চুল ছোট না করে যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিন। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম ইহরামের পূর্বে মাথার চুল কেটেছেন বা মাথা মুণ্ডন করেছেন বলে কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না।

উল্লেখ্য, ইহরামের আগে বা পরে কখনো দাড়ি কামানো যাবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ وَفِّرُوا اللِّحَى وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ» .

“তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধাচারণ করো। দাড়ি লম্বা করো এবং গোঁফ ছোট করো।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৯২; সহীহ মুসলিম, হদীস নং ২৯৫।]

২. গোসল করা। যায়েদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

«أَنَّهُ رَأَى النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم تَجَرَّدَ لإِهْلاَلِهِ وَاغْتَسَلَ» .

“তিনি দেখেছেন যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরামের জন্য সেলাইযুক্ত কাপড় পাল্টিয়েছেন এবং গোসল করেছেন।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৮৩০।]

এই গোসল পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য, এমনকি নিফাস ও হায়েযবতীর জন্যও সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসমা বিন্ত উমাইস রাদিয়াল্লাহু আনহু কে যুল-হুলায়ফায় সন্তান প্রসবের পর বলেন,

«اغْتَسِلِى وَاسْتَثْفِرِى بِثَوْبٍ وَأَحْرِمِى» .

“তুমি গোসল কর, কাপড় দিয়ে পট্টি বাঁধ এবং ইহরাম বাঁধো।” [সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১২১৮।]

গোসল করা সম্ভব না হলে অযু করা। অযু-গোসল কোনোটাই যদি করার সুযোগ না থাকে তাহলেও কোন সমস্যা নেই। এ ক্ষেত্রে তায়াম্মুম করতে হবে না। কেননা গোসলের উদ্দেশ্য হচ্ছে, পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও দুর্গন্ধমুক্ত হওয়া। তায়াম্মুম দ্বারা এই উদ্দেশ্য হাসিল হয় না।

৩. ইহরাম বাঁধার পূর্বে শরীরে, মাথায় ও দাড়িতে উত্তম সুগন্ধি ব্যবহার করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাঁধার পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করেছেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদীসে এসেছে,

«كُنْتُ أُطَيِّبُ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ أَنْ يُحْرِمَ وَيَوْمَ النَّحْرِ قَبْلَ أَنْ يَطُوفَ بِالْبَيْتِ بِطِيبٍ فِيهِ مِسْكٌ» .

“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর ইহরাম বাঁধার পূর্বে এবং কুরবানীর দিন বাইতুল্লাহর তাওয়াফের পূর্বে মিশকযুক্ত সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম।” [সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১১৯১। কুরবানীর দিন বায়তুল্লাহ’র তাওয়াফ করার আগেই হাজীগণ হালাল হয়ে সাধারণ পবিত্র পোশাক পরে থাকেন। এ সময় ইহরাম অবশিষ্ট থাকে না বিধায় সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। স্মর্তব্য যে, ইহরাম থাকা অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না।]

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুগন্ধি তাঁর মাথা ও দাড়িতে অবশিষ্ট থাকত যেমনটি অনুমিত হয় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার উক্তি থেকে। তিনি বলেন,

«كُنْتُ أُطَيِّبُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِأَطْيَبِ مَا يَجِدُ حَتَّى أَجِدَ وَبِيصَ الطِّيب فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ» .

“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর কাছে থাকা উত্তম সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম এমনকি আমি তাঁর মাথা ও দাড়িতে সুগন্ধির চকচকে ভাব দেখতে পেতাম।” তিনি আরো বলেন,

«كَأَنِّي أَنْظُرُ إلَى وَبِيصِ الْمِسْكِ فِي مَفْرِقِ رَسُولِ اللَّهِ وَهُوَ مُحْرِمٌ » .

“আমি যেন মুহরিম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিঁথিতে মিশকযুক্ত সুগন্ধির চকচকে ভাব লক্ষ্য করছি।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৩৮; সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১১৯০।]

লক্ষণীয়, ইহরাম বাঁধার পর শরীরের কোনো অংশে সুগন্ধির প্রভাব রয়ে গেলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে ইহরামের কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা কোনোভাবেই জায়েয নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিমকে সুগন্ধিযুক্ত কাপড় পরিধান পরিহার করতে বলেছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘ইহরাম অবস্থায় কাপড় পরতে আমাদের কী করণীয়? উত্তরে তিনি বলেন, ‘তোমরা জাফরান এবং ওয়ারস (এক প্রকার সুগন্ধি) লাগানো কাপড় পরিধান করো না।’ [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৩৮; সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১১৭৭।]

৪. সেলাইবিহীন সাদা লুঙ্গি ও সাদা চাদর পরা এবং এক জোড়া জুতো বা স্যান্ডেল পায়ে দেওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«وَلْيُحْرِمْ أَحَدُكُمْ فِي إِزَارٍ، وَرِدَاءٍ، وَنَعْلَيْنِ» .

“তোমাদের প্রত্যেকে যেন একটি লুঙ্গি, একটি চাদর এবং এক জোড়া চপ্পল পরিধান করে ইহরাম বাঁধে।” [মুসনাদ, হদীস নং ৪৮৯৯; ইবন খুযাইমা, হদীস নং ২৬০১।]

সাদা কাপড় পুরুষের সর্বোত্তম পোশাক। তাই পুরুষের ইহরামের জন্য সাদা কাপড়ের কথা বলা হয়েছে। ইহরামের ক্ষেত্রে মহিলার আলাদা কোন পোশাক নেই। শালীন ও ঢিলে-ঢালা, পর্দা বজায় থাকে এ ধরনের যেকোনো পোশাক পরে মহিলা ইহরাম বাঁধতে পারে। ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা ও মাথা আবৃত করা পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ হলেও মহিলার জন্য নিষিদ্ধ নয়। [এ ব্যাপারে ইমাম ইবনুল মুনযির ও ইবন আবদিল বার ইমামদের ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন। আল ইজমা: ১৮, আত-তামহীদ, ১৫/১০৪।]

তবে ইহরাম অবস্থায় নিকাব বা অনুরূপ কোন পোশাক দিয়ে সর্বক্ষণ চেহারা ঢেকে রাখা বৈধ নয়। হাদীসে এসেছে, ‘মহিলা যেন নেকাব না লাগায় ও হাতমোজা না পরে।’ [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৩৮।] তবে এর অর্থ এ নয় যে, বেগানা পুরুষের সামনেও মহিলা তার চেহারা খোলা রাখবে। এ ক্ষেত্রে আলিমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, মাথার ওপর থেকে চাদর ঝুলিয়ে দিয়ে চেহারা ঢেকে মহিলাগণ বেগানা পুরুষ থেকে পর্দা করবে। [আত-তামহীদ: ১৫/১০৮।]

৫. সালাতের পর ইহরাম বাঁধা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পর ইহরাম বেঁধেছেন। জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহুবলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে সালাত আদায় করে উটের পিঠে আরোহণ করলেন এবং তাওহীদের বাণী:

» لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ»

(লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লা শারীকা লাকা লাব্বাইক) বলে ইহরাম বাঁধলেন।’ [সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১২১৮।]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুল-হুলাইফাতে দুই রাকাত সালাত আদায় করেন। এরপর উটটি যখন তাঁকে নিয়ে যুল-হুলাইফার মসজিদের পাশে সোজা হয়ে দাঁড়াল, তখন তিনি সেই কালেমাগুলো উচ্চারণ করে ইহরাম বাঁধলেন।’ [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৪৯; সহীহ মুসলিম, হদীস নং ১১৮৪।]

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আকীক উপত্যকায় বলতে শুনেছি,

«أَتَانِي اللَّيْلَةَ آتٍ مِنْ رَبِّي فَقَالَ صَلِّ فِي هَذَا الْوَادِي الْمُبَارَكِ وَقُلْ عُمْرَةً فِي حَجَّةٍ» .

“আমার রবের পক্ষ থেকে একজন আগন্তুক রাতের বেলায় আমার কাছে এসে বলল, এই বরকতময় উপত্যকায় সালাত আদায় করুন এবং বলুন, একটি হজের মধ্যে একটি উমরা।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৩৪।]

এসব হাদীসের আলোকে একদল আলিম বলেন, ইহরাম বাঁধার পূর্বে দুই রাকাত ইহরামের সালাত আদায় করা সুন্নাত। আরেকদল ‘আলিমের মতে ইহরামের জন্য কোনো বিশেষ সালাত নেই। তারা বলেছেন, ইহরাম বাঁধার সময় যদি ফরয সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে হজ ও উমরা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য ফরয সালাত আদায়ের পর ইহরাম বাঁধা উত্তম। অন্যথায় সালাত ছাড়াই ইহরাম বাঁধবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয সালাতের পর ইহরাম বেঁধেছিলেন। আর তাঁর সালাতে এমন কোনো লক্ষণ ছিল না, যা ইহরামের বিশেষ সালাতের প্রতি ইঙ্গিত বহন করে।

তবে সঠিক কথা হচ্ছে, ইহরামের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সালাত নেই। তাই ইহরাম বাঁধার সময় যদি ফরয সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে ফরয সালাত আদায়ের পর ইহরাম বাঁধবে। অন্যথায় সম্ভব হলে তাহিয়্যাতুল অযু হিসেবে দুই রাকাত সালাত পড়ে ইহরামে প্রবেশ করবে। [ইবন বায, ফাতাওয়া মুহিম্মাহ তাতাআল্লাকু বিল হাজ্জি ওয়াল উমরা: পৃ. ৭; ইবন তাইমিয়া, মাজমু‘ ফাতাওয়া: ২৬/১০৮; শারহু উমদাতুল ফিকহ: ১/৪১৭; ইবন উসাইমিন, আল-মানহাজ লিমুরীদিল উমরাতি ওয়াল হাজ্জ: পৃ. ২৩।]

৬. তালবিয়ার শব্দগুলো বেশি বেশি উচ্চারণ করা। কেননা তালবিয়া হজের শ্লোগান। তালবিয়া যত বেশি পাঠ করা যাবে, তত বেশি সাওয়াব অর্জিত হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন