HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ্জের মর্মার্থ ও শিক্ষা

লেখকঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

দ্বিতীয়তঃ তাওহীদ তথা একত্ববাদের চর্চা ও প্রতিষ্ঠা
মহান হজ্জব্রতের সকল বিধান ও কর্মকান্ডই তাওহীদ তথা একত্ববাদের উপর প্রতিষ্ঠিত। মানুষের চিন্তা, চেতনা ও কর্মে একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করাই হজ্জের অন্যতম লক্ষ্য। আল্লাহ বলেন,

﴿ وَأَتِمُّواْ ٱلۡحَجَّ وَٱلۡعُمۡرَةَ لِلَّهِۚ ﴾ [ البقرة : ١٩٦ ]

‘‘আর তোমরা হজ্জ ও উমরা আল্লাহর জন্য সম্পন্ন কর।’’ [সূরা আল-বাকারাহ : ৯৬] কা‘বাকে শির্কমুক্ত করার প্রসঙ্গটি এনে আল্লাহ বলেন,

﴿وَإِذۡ بَوَّأۡنَا لِإِبۡرَٰهِيمَ مَكَانَ ٱلۡبَيۡتِ أَن لَّا تُشۡرِكۡ بِي شَيۡ‍ٔٗا وَطَهِّرۡ بَيۡتِيَ لِلطَّآئِفِينَ وَٱلۡقَآئِمِينَ وَٱلرُّكَّعِ ٱلسُّجُودِ ٢٦ ﴾ [ الحج : ٢٦ ]

‘‘আর স্মরণ কর, যখন আমি ইবরাহীমকে সে ঘরের (বায়তুল্লাহর) স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না আর আমার ঘরকে পাক সাফ রাখবে তাওয়াফকারী, দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।’’ [সূরা আল-হাজ্জ : ২৬]

তাওহীদের চিরন্তন ধারাকে অভ্রান্ত ও নির্ভেজাল রাখার জন্যই সূরা আল-হাজ্জে আল্লাহ শির্ক তথা তাওহীদ বিরোধী সকল কর্মকান্ড সম্পর্কে এভাবে সতর্ক করেন,

﴿ فَٱجۡتَنِبُواْ ٱلرِّجۡسَ مِنَ ٱلۡأَوۡثَٰنِ وَٱجۡتَنِبُواْ قَوۡلَ ٱلزُّورِ ٣٠ ﴾ [ الحج : ٣٠ ]

‘‘সুতরাং মূর্তিপূজার অপত্রিতা থেকে বিরত থাক এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ হয়ে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করে।’’ [সূরা আল-হাজ্জ : ৩০-৩১]

হজ্জের মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাওহীদকেই প্রিয় নবী সা. তাঁর জীবনের মধ্যমনি বানিয়েছেন ও এর জন্যই সর্বস্ব উৎসর্গ করতে সচেষ্ট হয়েছেন। পবিত্র হজ্জ পালনে রাসূলুল্লাহ সা. এর নিম্নবর্ণিত কর্মধারা ও আমল একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলে এ বিষয়টি মূর্ত হয়ে ওঠে।

১.তালবিয়ার মহান ধ্বনি :

তালবিয়া হচ্ছে হজ্জের শ্লোগান। আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য ও তাগুতকে অস্বীকার করার উদ্দেশ্যেই ইহরামের নিয়ত করার সাথে সাথে তালবিয়া পাঠ হাজীদের জন্য নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। তালবিয়ার ঘোষণায় একথা শনৈঃ শনৈঃ অনুরণিত হতে থাকে যে, ‘‘ইবাদাত-আরাধনা, জীবন-মরণ সবকিছুই একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত।’’ জাবের রা. বলেন,

أنَّ رَسُولَ اللهُ صلَّى اللهُ عَلَيهِ وسَلَّمَ أَهَلَّ بِالتَّوْحِيدِ : لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ

‘‘তাওহীদ দিয়েই রাসূল সা. তালবিয়া শুরু করলেন ও বললেন, আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির। আমি হাজির, তোমার কোন শরীক নেই, আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা, নিয়ামত ও রাজত্ব তোমার, তোমার কোন শরীক নেই।’’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮]

তালবিয়ার শব্দমালায় এক আল্লাহর সান্নিধ্যে হাজিরা দেয়া ও তাঁর লা-শরীক হবার ঘোষণা বারবার উচ্চারিত হয়, আলোড়িত হয় একত্ববাদ অবিচল দৃঢ়তায়। তালবিয়া যেন সকল পৌত্তলিকতা, প্রতিমা-পূজা অথবা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্তার সমীপে দীনতা-হীনতা ও আনুগত্য প্রকাশের বিরুদ্ধে এক অমোঘ ঘোষণা, যে ঘোষণার সার্থক রূপায়ন ঘটতে দেখা যায় রাসূলুল্লাহ সা.এর জীবনে শির্ক ও মুশরিকদের সকল অসার কর্মকান্ড থেকে নিজেকে ও অনুসারী সকল সাহাবাকে মুক্ত করে নেয়ার মাধ্যমে।

২.ইখলাস ও ঐকান্তিকতা :

ইবাদাত পালনে ইখলাস ও ঐকান্তিক নিষ্ঠা যেন অর্জিত হয় এবং রিয়া ও প্রদর্শনেচ্ছা থেকে যেন দূরে থাকা যায় সে জন্য মহান রবের দরবারে আকুতি-মিনতি তাওহীদমুখিতারই বহিঃপ্রকাশ। এ প্রসঙ্গে আনাস রা. থেকে একটি মারফু হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,

«اللهم حَجَّةً لا رِيَاءَ فِيهَا وَلاسُمْعَة»

‘‘হে আল্লাহ, এমন হজ্জ চাই যা হবে রিয়া ও লোক দেখানো থেকে মুক্ত।’’ [সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৮৯০]

৩. তাওয়াফের দু’রাকাত সালাত :

তাওয়াফ শেষে যে দু’রাকাত সালাত আদায় করতে হয় তাতে সূরা ইখলাস ও সূরা আল-কাফিরূন পাঠের সুন্নাত তাওহীদের প্রতি গুরুত্বেরই বহিঃপ্রকাশ। জাবির রা.এর হাদীসে এসেছে,

«فقَرَأَ فِيهِمَا بِالتَّوْحِيْدِ و﴿ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡكَٰفِرُونَ ١ ﴾ »

‘‘রাসূল সা.এ দু’ রাকাতে তাওহীদের সূরা ও ‘কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরূন’ পাঠ করলেন’’ [সুনান আবি দাঊদ, হাদীস নং ১৯১৯, সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ৮৬৯]

৪.সাফা-মারওয়ায় সা‘ঈ করার দো‘আ

সাফা-মারওয়ায় সায়ী করার প্রাক্কালে তাওহীদ বিষয়ক দো‘আ একত্ববাদের সাথে রাসূলুল্লাহ সা.এর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে প্রকটভাবে ফুটিয়ে তোলে। জাবির রা.এর হাদীসে এসেছে,

فَبَدَأَ بِالصَّفَا فَرَقِىَ عَلَيْهِ حَتَّى رَأَى الْبَيْتَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَوَحَّدَ اللَّهَ وَكَبَّرَهُ وَقَالَ « لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كَلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ أَنْجَزَ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ »

‘‘অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফা পাহাড় দিয়ে শুরু করে তাতে আরোহণ করলেন, কা‘বা দৃষ্টিগ্রাহ্য হলো, তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর একত্ববাদের কথা বললেন এবং তাঁর মাহাত্ম্যের ঘোষণা দিলেন। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁর। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান’.......।’’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮]

৫.‘আরাফার দো‘আ :

‘আরাফার দো‘আ ও যিকরসমূহেও তাওহীদের বাণী উচ্চারিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«خير الدعاء دعاء يوم عرفة وخير ما قلت أنا والنبيون من قبلي : لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِير»

‘‘উত্তম দো‘আ হলো ‘আরাফার দিবসের দো‘আ। আর আমি ও আমার পূর্ববর্তী নবীদের সর্বোত্তম কথাটি হলো - ‘আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁর। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।’’ [সহীহ সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৮৩৭]

হজ্জের প্রতিটি কর্মে তাওহীদের অমোঘ বাণীর বহুমুখী উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজ্জ বিষয়ক স্বীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে উম্মাতের উদ্দেশ্যে বারবার তুলে ধরেছেন। তাই হজ্জ পালনকারী প্রতিটি ব্যক্তিরই উচিত তাওহীদের নির্ভেজাল শিক্ষা জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে দেয়া এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাওহীদের ধারক-বাহক বনে যাওয়া।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন