hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া একটি পর্যালোচনা

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

দুআ-মুনাজাতে নবী রাসূলের অসীলা দেয়া
الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين محمد وعلى آله وأصحابه أجمعين .

বিভিন্ন দুআ মুনাজাতের সময় দেখা যায়, ইমাম সাহেব বা আলেম সাহেব দুআ-মুনাজাতের মধ্যে বলছেন, 'হে আল্লাহ! মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তোফায়েলে আমাদের দুআ কবুল করুন।'

অনেকে বলে থাকেন, 'হে আল্লাহ আপনার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসীলায় আমাদের দুআ কবুল করুন।'

একটি মসজিদে মাঝে মধ্যে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। দেখতাম, ইমাম সাহেব দ্বিতীয় খুতবায় দুআ করার সময় বলছেন:

أللهم إنا نتوسل إليك بجاه نبيك الميمون .

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা আপনার বরকতময় নবীর অসীলা নিচ্ছি.. ।

একটি দুআ অনুষ্ঠানে শুনলাম, দুআকারী আলেম সাহেব বলছেন :

سهل يا إلهي كل صعب بحرمة سيد الأبرار .

‘হে আমার মাবুদ! নেককারদের মহান নেতার মর্যাদায় সকল মুশকিল আসান করে দিন।'

হজের সফরে বিমানে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, আমার পাশে বসে দুআ করছে, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার রওজা যিয়ারত করার জন্য হজে রওয়ানা দিলাম। আপনি আল্লাহর কাছে শাফায়াত করে আমার হজ কবুল করিয়ে দিন।'

অনেক দিন পূর্বে একটি জিকিরের জলছায় বসেছিলাম। দেখলাম, জলছার পরিচালক বলছেন, ‘সকলে বলুন, আমার কলব অমুকের কলবের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব দাদাপীর অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে। তার কলব অমুকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে ... । তার কলব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ আছে, হে মাবূদ তার অসীলায় আমাদের তওবা কবুল করুন ...।'

সুবহানাল্লাহ! তারা যা বলছে, মহান আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মুক্ত।

এগুলো সবই হল অসীলা। অবশ্যই ভ্রান্ত অসীলা। নিশ্চয় এগুলো বিদআতী অসীলা। সন্দেহ নেই- এগুলো শিরকী অসীলা। এ সকল অসীলার স্বপক্ষে আল্লাহ তাআলা কোন প্রমাণ নাযিল করেননি। তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সকল অসীলার কথা বলে যাননি।

মুমিনের জীবনে ঈমান আর ইসলাম হল সবচে বড় সম্পদ। সর্বশ্রেষ্ঠ মূলধন। এ সম্পদটিকে সর্বদা ভেজাল মুক্ত রাখতে হবে। নিখুঁত রাখতে হবে তা আল্লাহ তাআলার জন্য । ঈমান যদি কোন কিছুর মাধ্যমে ভেজাল বা কলুষিত হয়ে যায়, তাহলে মুমিনের জীবনে দুনিয়া আখেরাত সবই বরবাদ হয়ে যাবে।

দুনিয়া বরবাদ হবে, কারণ সে ইসলাম মান্য করায় কাফেরদের মত দুনিয়ার মজা ভোগ করতে পারেনি। তাদের মত অবাধে চলাফেরা ও বাধাহীন জীবন উপভোগ করতে পারেনি। আবার ঈমান ও ইসলামকে নির্ভেজাল না করার কারণে সব নেক আমল বরবাদ হয়ে গেছে, ফলে আখেরাতে কিছুই পাবে না।

তাই নিজের আসল সম্পদ ঈমানকে খালেস ও নির্ভেজাল করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ঈমানকে নির্ভেজাল করার কথা বলেছেন আল কুরআনে। ইরশাদ হচ্ছে :

(আরবি)

যারা ঈমান এনেছে এবং নিজ ঈমানকে জুলুমের সাথে সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা আর তারাই সুপথপ্রাপ্ত। (সূরা আনআম : ৮২)

এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হল, ঈমান গ্রহণ করলেই মুক্তি পাওয়া যাবে না। ঈমানকে সকল প্রকার শিরক থেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ আয়াতে জুলুম বলতে শিরককে বুঝানো হয়েছে। ঈমানদারকে সর্ব প্রকার শিরক থেকে মুক্ত থাকতে হবে।

প্রশ্ন হতে পারে, শিরক আর ঈমান কি একত্র হতে পারে? যে শিরক করে তাকে কি আবার মুমিন বলা যায়? হ্যাঁ, বলা যায়। আর সে হল ভেজাল মুমিন।

দেখুন আল্লাহ তাআলা বলেছেন :

(আরবি)

তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, তবে শিরক করা অবস্থায়। (সূরা ইউসূফ : ১০৬)

এ সকল মানুষেরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে বটে, কিন্তু সাথে সাথে তার সাথে শরীক স্থির করেছে।

আরো উদাহরণ দেখুন। কিভাবে তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখত কিন্তু সাথে সাথে শিরক করত।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

(আরবি)

আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, ‘কে আকাশমন্ডলী আর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং চন্দ্র সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন?’ তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে? (সূরা আনকাবুত : ৬১)

দেখুন, এতগুলো বিষয়ে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখার পরও তাদের ঈমান গ্রহণযোগ্য হয়নি। কারণ, তারা শিরক করত।

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:

(আরবি)

আর তুমি যদি তাদের প্রশ্ন কর, কে আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতপর তা দিয়ে মৃত্যুর পর যমীনকে জীবন দান করেন? তাহলে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। (সূরা আনকাবুত : ৬৩)

এমনিভাবে তারা আল্লাহ তাআলার সকল কর্তৃত্ব স্বীকার করে ঈমান আনার পর শিরক করেছে। ফলে তাদের ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে। সব আমল ব্যর্থ হয়ে গেছে।

আমরা অনেকেই মনে মনে ভাবি যে, আল্লাহ তাআলার প্রতি আমার বিশ্বাস অনেক মজবুত। তাই আমি যদি কবরে যেয়ে দুআ করি, মাজারে মানত করি। আর মাঝে মধ্যে একটু আধতু অসীলা দিয়ে দুআ করি, তাতে আমার ঈমানের কি এমন ক্ষতি হবে?

এমন ভাবনার মানুষের জন্য এ আয়াতসমূহে শিক্ষা গ্রহণের বিষয় আছে। আছে চিন্তার বিষয়।

আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়াত দান করুন।

শিরক ঈমানকে নষ্ট করে দেয়। সকল ভাল কাজ ও নেক আমলকে বরবাদ করে দেয়। শিরক এমন মারাত্নক বিষয় যা নবীওয়ালা ঈমানেকও শেষ করে দেয়। দেখুন আল্লাহ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্বোধন করে বলছেন :

(আরবি)

আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে অহী পাঠানো হয়েছে যে, যদি তুমিও শিরক করো, তাহলে অবশ্যই তোমার আমল ব্যর্থ হয়ে যাবে। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা যুমার : ৬৫)

শিরক নবী রাসূলদের মজবুত ঈমান-আমলকেও নষ্ট করে দিত, যদি তারা তাতে জাড়াতেন।

তাই সকল মুমিন-মুসলমানের উচিত হল সদা-সর্বদা শিরক থেকে সচেতন থাকা। যে সব বিষয়াদি শিরকের পথে নিয়ে যায় তা থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে নিজের ঈমানকে হিফাজত করা আর আমলকে কার্যকর রাখা।

যে সকল বিষয় মানুষকে শিরকের দিকে নিয়ে যায় তার একটি হল অসীলা গ্রহণ। দুআ-মুনাজাতে অসীলা গ্রহণ, আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য অসীলা গ্রহণ, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অসীলা গ্রহণ ইত্যাদি সকল অসীলাই শিরক। তবে যে অসীলাসমূহ শরীয়ত অনুমোদিত তা শিরক নয়।

এই অসীলার পথ দিয়েই অনেক মানুষ মারাত্মক শিরকের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এই অসীলার ধারণা থেকেই বহু মানুষ মূর্তি পূজা ও পৌত্তলিকতায় লিপ্ত হয়েছে। তারা অনেকে বিশ্বের সকল কর্তৃত্ব আল্লাহ তাআলার বলে বিশ্বাস করত। কিন্তু মূর্তি ও বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করত এ বিশ্বাসে যে, এগুলো তাদেরকে আল্লাহ তাআলার কাছে পৌছে দেয়ার মাধ্যম। এ ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা ইবাদত তো কেবল আল্লাহর জন্যই করি। আর ঐ সকল মূর্তি ও দেব-দেবী অসীলা মাত্র।

দেখুন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন :

(আরবি)

আর যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের অলী হিসাবে গ্রহণ করে তারা বলে, আমরা তাদের ইবাদত করি না তবে এ জন্য যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে। (সূরা যুমার : ৩)

দেখুন, তাদের বক্তব্যই প্রমাণ, তাদের ইবাদত-বন্দগীর মূল লক্ষ্য ছিল কিন্তু আল্লাহ তাআলা। তাঁর নৈকট্য অর্জনের জন্যই তো তারা এগুলোকে অসীলা হিসাবে গ্রহণ করেছে। এগুলোর সামনে মাথা নত করে প্রণাম করেছে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেননি। কাজটাকে আল্লাহ তাআলা, তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যকে গ্রহণ বলে অভিহিত করেছেন। অসীলা গ্রহণের ফলে তাদের ইবাদত-বন্দেগী ভেজালে কলুষিত হয়ে গেছে।

তবে দুআ মুনাজাতে সব ধরনের অসীলা কিন্তু নিষিদ্ধ নয়। কিছু অসীলা আছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ দ্বারা অনুমোদিত ও প্রমাণিত। এগুলো শিরক নয়। আর যে সকল অসীলা কুরআন বা সহীহ হাদীস দ্বারা অনুমোদিত নয় তা পরিত্যাগ করতে হবে।

এখানে আমরা শরীয়ত অনুমোদিত অর্থাৎ কুরআন সুন্নাহ সমর্থিত অসীলাগুলোর কথা আলোচনা করব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন