মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সব প্রশংসা আল্লাহর, আমরা তাঁর প্রশংসা করছি, তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি, তাঁর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি, তাঁর কাছে আমাদের অন্তরের সব কলুষতা ও পাপ থেকে পানাহ চাই। তিনি যাকে হিদায়েত দান করেন কেউ তাকে গোমরাহ করতে পারে না, আর তিনি যাকে পথ-ভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে হিদায়েত দিতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাকে হিদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, আর তিনি তাঁর রিসালা পৌঁছেছেন, আমানত আদায় করেছেন, উম্মতকে উপদেশ দিয়েছেন, আল্লাহর পথে যথাযথ প্রচেষ্টা করেছেন। তাই আল্লাহর সালাত ও সালাম তাঁর উপর, তাঁর পরিবার পরিজন, সাহাবীগণ ও কিয়ামত পর্যন্ত নিষ্ঠার সাথে যারা তাঁর অনুসরণ করবে সকলের উপর বর্ষিত হোক।
আজ বৃহস্পতিবার রাত, ১৯শে রজব ১৪১৯ হিজরী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে মদিনাবাসী আমার ভাইবোনদের সাথে মিলিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদের এ মিলনকে বরকতময় ও উপকারী করেন।
আজকের আলোচনার বিষয় হলো “সুন্নাহ তথা হাদীসে নববীকে আঁকড়ে ধরা ও জীবনে এর প্রভাব” যা আপনারা ইতোপূর্বেই শুনেছেন। বান্দাহর জন্য সুন্নাহ নববী কুরআনের মতই দলিল। তারা যেভাবে কুরআনের বিধান আমল করতে আদিষ্ট, সেভাবে হাদীসে নববীর উপরও আমল করতে আদিষ্ট।
সুন্নাহ নববী: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা, কাজ ও সমর্থনকে সুন্নাহ নববী তথা হাদীস বলে। কুরআনের মত হাদীসের উপরও আমল করা ফরয; তবে পার্থক্য হলো কুরআনের দ্বারা দলিল পেশ করলে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয় আর হাদীসের দ্বারা দলিল পেশ করলে দু’টি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়।
আল-কুরআনের ক্ষেত্রে: দলিল পেশকারীকে দলিল প্রদানকারী নসের দালালাত তথা নসের নির্দেশকের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। (কুরআনের ভাষ্যে কি বুঝানো হয়েছে তা ভালোভাবে জানতে হবে; আর এটা বুঝার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে তারতম্য লক্ষণীয়; কারণ) মানুষের ইলম ও জ্ঞানের পার্থক্যের কারণে সব মানুষ এক স্তরের নয়। মানুষ তাদের ইলম, জ্ঞান, আল্লাহর উপর ঈমান ও তাঁর সম্মান অনুধাবনের ভিন্নতার কারণে কুরআনের দালালাত (কী বুঝাতে চেয়েছেন তা) বুঝার ক্ষেত্রে নানা স্তরের হয়ে থাকে।
অন্যদিকে সুন্নাহের দ্বারা দলিল পেশকারীকে দু’টি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়, সে দু’টি হলো:
প্রথমত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি সহীহভাবে সাব্যস্ত কিনা তা বিবেচনা করা; কেননা সুন্নাহের মধ্যে অনেক দ‘য়ীফ (দুর্বল) ও মওদু‘উ (জাল) হাদীস অনুপ্রবেশ করেছে, ফলে দলিল পেশকারীকে হাদীসটি সহীহ ও রাসূলের থেকে প্রমাণিত কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। এজন্যই উলামা কিরামগণ রিজাল তথা হাদীসের রাবীদের অবস্থা বর্ণনায় অনেক কিতাব প্রণয়ন করেছেন। এমনিভাবে মুসতালাহা (পরিভাষা) এর উপরও অনেক কিতাব লিখেছেন, যাতে দুর্বল থেকে সহীহ হাদীসটি আলাদা করা যায়।
দ্বিতীয়তঃ কুরআনের মতই খেয়াল রাখতে হবে অর্থাৎ দালাতুন নসের (তথা হাদীসের ভাষ্যের চাহিদা কী সে) দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ ব্যাপারে মানুষ নানা ধরণের হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও।” [সূরা হাশর: ৭]
যদিও এটা ফাই (যুদ্ধ ব্যতীত অর্জিত) সম্পদের বণ্টনের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাই এর মাল ইজতিহাদ করে বণ্টন করেছেন, তথাপিও আমাদেরকে এ বিধান গ্রহণ করা ওয়াজিব, আর শরীয়তের আহকামের ক্ষেত্রে তো আরো বেশী অগ্রগণ্য।
“অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” [সূরা আল-আহযাব: ২১]
রাসূলের অনুকরণ ও অনুসরণ বলতে বুঝায় দালালাতুল কুরআন (কুরআনের নস) মুতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব কাজ করেছেন ও তিনি নিজে যা সুন্নত করেছেন সে সব কাজ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম‘আর খুতবায়ে ঘোষণা করেছেন,
“তোমরা আমার সুন্নত ও আমার পরে হিদায়েতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতের অনুসরণ করো, এগুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরো” [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬০৭।]
এ ব্যাপারে আরো অনেক হাদীস এসেছে।
কতিপয় দুর্ভাগা ও হতভাগারা বলে থাকে যে, “কুরআনে যা আছে শুধু তার উপরই আমল করতে হবে”। অথচ তারা নিজেরাই এর বিপরীত আমল করে থাকে। যেমন: যখন তারা বলে “শুধু কুরআনে যা আছে তাই মানতে হবে” তখন তাদেরকে বলা হবে, কুরআনই রাসূলের অনুসরণ করা ওয়াজিব করেছে। তুমি যা বলছ তা যদি সত্য হয় তবে অবশ্যই তোমাকে হাদীসে যে সব বিধান এসেছে তা গ্রহণ করতে হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরণের লোকদের সম্পর্কে আগেই সতর্ক করেছেন, তিনি বলেছেন:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি যেন তোমাদের মাঝে কাউকে এমন না পাই যে, সে তার খাটের উপর ঠেস দিয়ে বসে থাকবে, আর আমি যা আদেশ দিয়েছি বা যা থেকে নিষেধ করছি তা তার কাছে পৌঁছলে সে তখন বলবে: এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা, আমরা আল্লাহর কিতাবে যা পেয়েছি তারই অনুসরণ করি” জেনে রাখো, নিশ্চয় আমাকে কুরআন ও এর অনুরূপ একটি কিতাব (সুন্নাহ) দেয়া হয়েছে। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬০৪ ও ৪৬০৫।]
এছাড়া কুরআনের অনেক আয়াত মুজমাল (ব্যাখ্যা বিশ্লেষণহীন) যা হাদীস ছাড়া ব্যাখ্যা করা যায় না। তাহলে যদি আমরা বলি হাদীস গ্রহণ করা যাবে না তাহলে তো কুরআনের মুজমাল আয়াতের উপর আমল করা সম্ভব হবে না। আর এটা খুবই মারাত্মক ব্যাপার। এজন্যই আমরা বলব, ফরয, মুস্তাহাব, মুবাহ, মাকরূহ বা হারাম সাব্যস্তের ক্ষেত্রে রাসূলের হাদীসের উপর কুরআনের মতই আমল করা ওয়াজিব।
সালাফে সালেহীনরা রাসূলের সুন্নতের উপর আমল করতেন, এ ব্যাপারে তারা কোনো ধরনের ত্রুটি করতেন না, ছাড়ও দিতেন না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে কোনো আদেশ আসলে আল্লাহ তা‘আলার আদেশের মতই তারা তা গ্রহণ করতেন।
সাহাবা কিরামদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো আদেশ দিলে তারা জিজ্ঞেস করতেন না এটা কি ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব? কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তারা তা পালন করতেন। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার হলো, কিছু লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ শুনলে জিজ্ঞেস করে “এটা কি ফরয নাকি মুস্তাহাব?’’ সুবহানাল্লাহ!! কিভাবে এটা সম্ভব? কিভাবে আমরা এভাবে ব্যাখ্যা তালাশ করি?! অথচ আল্লাহ তা ‘আলা বলেছেন:
তোমাকে যা আদেশ করা হয়েছে তা পালন কর। যদি তা ফরযের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে তুমি তোমার উপর অর্পিত দায়িত্ব থেকে মুক্ত হলে, আর যদি মুস্তাহাব হয় তবে সাওয়াবের অধিকারী হবে।
কেউ একথা বলতে পারবে না যে, সাহাবাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো আদেশ দিলে তারা জিজ্ঞেস করেছেন যে, এটা কি ফরয নাকি মুস্তাহাব? তবে হ্যাঁ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে কিছু ইঙ্গিত দিলে তারা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। যেমন: বারীরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার হাদীস, তিনি দাসী ছিলেন। মুগীস নামে একজন তাকে বিয়ে করেছিলেন। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাকে আযাদ করেন। তিনি আযাদ হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পূর্বের স্বামীর সাথে বহাল থাকা বা সে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার ইখতিয়ার দেন। ফলে তিনি বিয়ে বিচ্ছেদের মত দেন। কিন্তু তার স্বামী তার সাথে সম্পর্ক রাখতে খুব আগ্রহী ছিলেন এবং মদিনার বাজারে তাকে অনুসরণ করতে থাকেন ও কাঁদতে থাকেন, যাতে স্ত্রী তার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে। কিন্তু তিনি ফিরে আসতে অস্বীকার করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পূর্বের স্বামী মুগীসের কাছে যেতে বললেন। তখন তিনি বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! যদি আপনি আমাকে আদেশ করেন তবে তা শিরোধার্য। আর যদি আপনি আমাকে পরামর্শ দেন তবে আমার এ বিয়েতে মত নেই। এখানে সাহাবী প্রশ্ন করেছেন যে, যদি রাসূলের এ কথাটি আদেশসূচক হয় তবে তা তিনি পালন করবেন। আর যদি তা পরামর্শ হয় তবে তা তিনি ইচ্ছা করলে গ্রহণ করতে পারেন বা নাও গ্রহণ করতে পারেন।
মূলকথা হলো: আমি তালিবে ইলমকে অনুরোধ করবো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে কোনো আদেশ আসলে তা কোনো ব্যাখ্যা চাওয়া ব্যতীতই গ্রহণ করা। আল্লাহ তা ‘আলা বলেছেন:
“মু’মিনদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি এ মর্মে আহবান করা হয় যে, তিনি তাদের মধ্যে বিচার, মীমাংসা করবেন, তাদের কথা তো এই হয় যে, তখন তারা বলে: ‘আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।’’ [সূরা আন-নূর: ৫১]
“আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না।” [সূরা আল-আহযাব: ৩৬]
তবে হ্যাঁ, যখন কোনো মু’মিনের তরফ থেকে এর বিপরীত কিছু ঘটে যাবে তখন দেখা হবে সেটা কি ওয়াজিব ছিল? কেননা ওয়াজিব তরক করলে তাকে তাওবা করতে হবে। আর যদি তা মুস্তাহাব হয় তবে সে ব্যাপারটা একটু হালকা। কিন্তু আল্লাহর আদেশ গ্রহণের ক্ষেত্রে তোমার অন্তরকে প্রশস্ত করো। তুমি বলো: ﴿ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۚ ﴾ [ النور : ٥١ ] “‘আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।’’ [সূরা আন-নূর: ৫১] তুমি তা করো। আর এটাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ মান্যকারী একজন মানুষের করা উচিত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/248/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।