hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নবীর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরা ও তার প্রভাব

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ সালিহ আল-‘উসাইমীন রহ.

সুন্নতকে আঁকড়ে ধরা ও এর প্রশংসনীয় প্রভাবের আরো ফায়েদা হলো:
সুন্নতের অনুসরণ তার জন্য আদর্শ হবে ও এটাই তার ইমাম হবে। এতে কোনো ঘাটতি অনুপ্রবেশ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি অন্য মুসলিম ইমামের অনুসরণ করে ইবাদত করে, এতে কিছু ঘাটতি ঘটতে পারে। সহজেই তাকে বলা যায় যে, এ আমলে তোমার দলিল কি? কিন্তু সুন্নতের অনুসরণে এ ধরণের কিছু হয় না। যদি কেউ জিজ্ঞেস করে: তোমার দলিল কি? সে তখন বলবে, “এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাজ”, যদি তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাজের অন্তর্ভুক্ত হয়। আর যদি তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীর অন্তর্ভুক্ত হয় তবে সে বলবে, “এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী”। এতে করে সে দুর্গম কেল্লায় প্রবেশ করল, কেননা সে সুন্নতে হামীদার বা প্রশংসনীয় পদ্ধতির প্রাচীরে প্রবেশ করেছে।

সুন্নতে হামীদার আর একটি ফায়েদা হলো: এর দ্বারা মানুষ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আখলাককে ধারণ করে। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উত্তম চরিত্রকে পূর্ণ করতে প্রেরণ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে সর্বোত্তম চরিত্র দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানূষ যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণ করবে তখন সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্রে চরিত্রবান হবে এবং এটা তাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে নিকটবর্তী করবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«أَكْمَل الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا »

“ঈমানদারদের মধ্যে সে ব্যক্তিই পূর্ণ ঈমানদার যে চরিত্রে সর্বোত্তম।” [তিরমিযী, হাদীস নং ৪৬৮২।]

সুন্নতে মুতাহহারার অনুসরণের আরেকটি উপকার হলো: মানুষ আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে অতি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি বাদ দিয়ে মধ্যপন্থা অনুসরণকারী হবে। ইসলাম ধর্ম হলো মধ্যপন্থী ধর্ম, এতে অতি বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ি নেই। বরং তারা এ দুয়ের মাঝামাঝি। তাই সুন্নতের অনুসরণ হলো আল্লাহর পথে অতি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি না করে সব কিছু তার নিজস্ব স্থানে রেখে সঠিক পদ্ধতিতে আল্লাহর ইবাদত করা।

আমি এখানে দু’টি উদাহরণ পেশ করব, তা হলো:

প্রথম উদাহরণ: অজ্ঞ ব্যক্তির সাথে তার অবস্থা অনুযায়ী আচরণ করা।

দ্বিতীয় উদাহরণ: জেনে শুনে ইচ্ছাকৃত কাজ সম্পাদনকারীর সাথে তার অবস্থা অনুযায়ী আচরণ করা।

প্রথম উদাহরণে বলা যায় যে, এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে (মসজিদে নববী) ঢুকল এবং মসজিদের এক পাশে গিয়ে পেশাব করতে লাগল। সাহাবাগণ তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করল এবং তারা জোরে জোরে ডাকাডাকি করতে লাগল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা লোকটিকে পেশাব করতে বারণ করো না, তাকে পেশাব করতে দাও। অথচ বেশী পেশাব করা মসজিদ বেশী অপবিত্র করা। কিন্তু এ কাজে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিকমত ছিল যা সাহাবারা বুঝতে পারেন নি। ফলে বেদুঈন লোকটি পেশাব শেষ করল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদেরকে নির্দেশ দিলেন লোকটির পেশাবের উপর এক বালতি পানি ঢেলে দিতে। ফলে মসজিদ থেকে ময়লা দূর হলো এবং পবিত্র হয়ে গেল। আর বেদুঈন লোকটিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেকে বললেন:

«إِنَّ هَذِهِ الْمَسَاجِدَ لَا تَصْلُحُ لِشَيْءٍ مِنْ هَذَا الْبَوْلِ، وَلَا الْقَذَرِ إِنَّمَا هِيَ لِذِكْرِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَالصَّلَاةِ وَقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ»

“মসজিদসমূহে কষ্টদায়ক ও অপবিত্রকর কিছু করা উচিত নয়, এগুলো নামায ও কুরআন তিলাওয়াতের স্থান”। [বুখারী, হাদীস নং ৬০২৫।] বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যেভাবে বলেছেন। একথা শুনে বেদুঈন লোকটি বলল: “ইয়া আল্লাহ! আমাকে ও মুহাম্মদকে দয়া করো, আমাদের সাথে কাউকে দয়া করো না”।

দেখুন কিভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ লোকটির সাথে আচরণ করেছেন। তাই রাসূলের সুন্নতের অনুসরণ তার কাজের মত কাজ করারই নামান্তর। অজ্ঞকে ধমক, ভর্ৎসনা বা দোষারোপ না করে তার সাথে হিকমতের সাথে কাজ করা।

দ্বিতীয় উদাহরণ হলো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে সোনার আংটি পরিধান করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পবিত্র হাতে আংটিটি খুলে নিক্ষেপ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন:

«يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ إِلَى جَمْرَةٍ مِنْ نَارٍ فَيَجْعَلُهَا فِي يَدِهِ»

“কেউ কি ইচ্ছাকৃতভাবে আগুনের এক টুকরা পাথর নিয়ে হাতে পরিধান করবে?

সুতরাং এখানে এ ব্যক্তি ও উক্ত বেদুঈন ব্যক্তির সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণগত পার্থক্য দেখেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেলে তাকে বলা হলো: তুমি তোমার আংটিটি নাও। সে বলল: “আল্লাহর কসম, যে আংটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিক্ষেপ করে ফেলে দিয়েছেন সে আংটি আমি নিবো না”। [মুসলিম, হাদীস নং ২০৯০।]

সুন্নতের অনুসরণ ব্যক্তিকে রহমত, ভালবাসা, নম্রতা ও ভদ্রতা শিক্ষা দেয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের সাথে আনন্দ- মজা করতেন। তাদের ভুল ত্রুটির উপর তিনি ধৈর্য ধারণ করতেন। যেমন তিনি এক বালকের সাথে মজা করেছেন, যার কাছে “নুগায়ের” নামে একটি পাখি ছিল। সে পাখিটির সাথে খেলা ও আনন্দ করতেন। যেমনটি অন্যান্য শিশুরা করে থাকে। পাখিটি মারা গেল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজা করে তাকে বললেন:

«يَا أَبَا عُمَيْرٍ مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ؟» “হে আবু ‘উমায়ের, তোমার নুগায়েরের কি হলো?” [বুখারী, হাদীস নং ২১৫০।] এটা তার সাথে রাসূলের ভালবাসা ও মজা ছিল।

একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদেরকে নিয়ে নামায পড়ছিলেন। তাঁর সিজদারত অবস্থায় হাসান ইবন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর কাছে এসে পিঠে চড়লেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদা থেকে উঠতে বিলম্ব করলেন। অতঃপর যখন রাসূল সালাম ফিরালেন তিনি তাঁর সাহাবীগণকে জানালেন যে, তাঁর ছেলে (নাতি) তাকে বাহন বানিয়েছিল, আর তিনি চাইলেন যে, তাকে সেভাবে রাখবেন যতক্ষণ না সে তার ইচ্ছা পূর্ণ করে (আর তাই সাজদায় দেরী করেছিলেন)। হে আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম পেশ করুন, আমাদের কেউ কি এমন কিছু করবে? সে মনে করবে যদি সে এমনটি করে তবে বহু মানুষ তার সমালোচনা করবে, অথচ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই করেছেন। তিনি তা করেছেন শিশুদের সাথে প্রতি রহম ও তাদেরকে খুশী করতে। আমাদের অনেকেই শিশুদেরকে ভালবাসে না। তাদের প্রতি দয়া দেখায় না; বরং ধমক দেয়, এমনকি কোনো শিশু আদব সহকারে মজলিসে আসলেও ধমক দেয়। আর বলে: “তুমি তোমার বাড়ি চলে যাও”। বা অনুরূপ কথা বলে। যদি তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, তুমি এমনটি করলে কেন? তখন সে উত্তর দেয় যে, “হয়ত সে বয়স্কদের পথে ঢুকে খেলাধুলা করবে’’। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِي رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَةٞ لِّمَن كَانَ يَرۡجُواْ ٱللَّهَ وَٱلۡيَوۡمَ ٱلۡأٓخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرٗا ٢١ ﴾ [ الاحزاب : ٢١ ]

“অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” [সূরা আল-আহযাব: ২১]

অতএব, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে অনেক সুপ্রভাব আছে। কিন্তু এগুলো সুন্নত সম্পর্কে ইলম অর্জন করাকে অত্যাবশ্যকীয় করে। এজন্যই আমি তালিবে ইলম ভাই বোনদেরকে বলব, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত জানা ও আমল করার চেষ্টা করো। আর মানুষকে একাজে ডাকো, কেননা এতে রয়েছে স্থায়ী কল্যাণ।

আমার বক্তব্যে উল্লেখ করেছি যে, সুন্নতের অনুসরণ বিদ‘আতকে ঘৃণা করা, একে নিঃশেষ করা ও এ থেকে দূরে থাকা অত্যাবশ্যকীয় করে। এ উপলক্ষ্যে বলব, আমরা এখন হারাম মাস তথা রজব মাসে আছি। এ মাসের আমল নিয়ে আমি কিছু বিষয় লিখেছি যা আল্লাহ আমাকে লিখতে তাওফিক দিয়েছেন। সেগুলো এখন আপনাদের কাছে পাঠ করার ইচ্ছা পোষণ করছি। আশা করি এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে উপকৃত করবেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন