HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআনুল কারীমের অর্থানুবাদ প্রেক্ষাপট ও আবশ্যকীয় জ্ঞান

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

বাংলায় কুরআন অনুবাদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
অনুবাদ বা ভাষান্তর এমনিতেই একটি দুরূহ কাজ। আল-কুরআনের মতো একটি আসমানী গ্রন্থের ব্যাপারে জটিলতার সঙ্গে স্পর্শকাতরতার বিষয়ও জড়িত। মানব রচিত গ্রন্থের বেলায় বক্তার কথার হুবহু ভাষান্তর না হলে তেমন কি-ই বা আসে যায়। বড় জোর বলা যায় অনুবাদক মূল লেখকের কথাটার সঙ্গে যথাযথ ইনসাফ করতে পারেন নি। কিন্তু আল-কুরআনের ক্ষেত্রে বিষয়টি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে অনুবাদের একটু হেরফের হলে স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলার কথাই বিতর্কিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এসব কারণেই মুসলমানদের মাঝে কেউই এক দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আল-কুরআনের অনুবাদের ঝুঁকি নিতে চায় নি।

এমনকি বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মধ্য এশিয়ার আলেমরা ফতোয়ার মাধ্যমে তাতারি ভাষায় আল-কুরআনের যাবতীয় অনুবাদ প্রচেষ্টাকে বন্ধ করে রাখেন। আফ্রিকা মহাদেশে বিশষ করে নাইজেরিয়া ও নাইজারে হাউসা হচ্ছে আরবীর পর সর্বাধিক সমৃদ্ধ ভাষা। এই ভাষায় আলেমরা দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাদের ভাষায় আল-কুরআনের অনুবাদকে এই বলে বন্ধ করে রাখেন যে, এতে আল-কুরআনের মর্যাদাহানী হতে পারে। এই মহাদেশের ক্যামেরুন রাজ্যের সুলতান সাঈদ নিজেও আলেমদের প্রবল বিরোধিতার কারণে বামুম ভাষায় কুরআনের অনুবাদ কাজ থেকে ফিরে আসেন। মুসলিম দুনিয়ার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফতোয়া বোর্ডও তো এই সেদিন পর্যন্ত আল-কুরআনের যাবতীয় অনুবাদকর্মের বিরোধিতা করে আসছিলো।

তারা ১৯২৬ সালে তুরস্কে উসমানী খেলাফত বিলুপ্তির পর তুর্কী ভাষায় আল-কুরআনের অনুবাদ প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন। কুরআনের ইংরেজি অনুবাদক নওমুসলিম মার্মডিউক পিকথল যখন কুরআনের অনুবাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন তখন হায়দারাবাদের শাসক নিযাম তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিলেও আল আযহার কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেন। অবশ্য দীর্ঘদিন পর হলেও মক্কাভিত্তিক মুসলিম সংস্থা রাবেতা আলামে ইসলামী আয়োজিত বিশ্বের সর্বমতের উলামা কুরআন অনুবাদের একটি ঘোষণাপত্রে সই করে এ পথের যাবতীয় বাধা অপসারণ করেন। কিন্তু এটা তো ১৯১৮ সালের কথা, মাত্র সেদিনের ঘটনা। অবশ্য এরও বহু আগে ইংরেজ লেখক জর্জ সেল কুরআনের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছেন। ১৭৩৪ সালে এই অনুবাদ কর্মটির প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। ১৭৬৪ সালে তার পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ মুদ্রিত হয়। ১৮২৫ সালে এটি পুনর্মুদ্রিত হয়।

যেমনটি আমি একটু আগেও বলে এসেছি যে, কুরআনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাবো, কুরআন অনুবাদের এই মোবারক ধারাটি স্বয়ং তাঁর হাতেই সূচিত হয়েছে যার ওপর এই কুরআন নাযিল হয়েছে। আমরা জানি, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দাওয়াতী আন্দোলনের এক পর্যায়ে তৎকালীন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দূত পাঠাতেন। তাঁর পাঠানো এসব চিঠিতে অবশ্যই একাধিক কুরআনের আয়াত লেখা থাকতো। যেসব দেশের রাজা বাদশাহরা আরবী বুঝতেন না রাসূলের দূত তাদের কাছে গোটা চিঠির সঙ্গে সেসব আয়াতের তরজমাও পেশ করতেন। এ কারণেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দূতকে যে দেশে পাঠাতেন তাকে আগেই সে দেশের ভাষা শিখতে বলতেন। অধিকাংশ নতুন এলাকায় তিনি পারদর্শী দোভাষীও পাঠাতেন। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে সা‘দ বলেন, যে প্রিয়নবী তার ব্যক্তিগত সহকারী ওহী লেখক যায়েদ ইবন ছাবিত রাদিআল্লাহু আনহুকে সিরিয়ান ও হিব্রু ভাষা শেখার আদেশ দিয়েছিলেন। তাছাড়া আমীর ইবন উমাইয়া যে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাসীর কাছে লেখা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরবী চিঠিকে আমহারিক ভাষায় অনুবাদ করেছেন তারও একাধিক প্রমাণ ইতিহাস গ্রন্থে মজুদ রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় কুরআনের এসব আংশিক অনুবাদ ছিলো অনেকটা মুখে মুখে। কোথায়ও লিখিত আকারে এগুলোকে কুরআনের আয়াতের অনুবাদ হিসেবে কেউ সংরক্ষণ করেন নি। পরবর্তী সময়ে যখন কুরআনের বাণী নিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উৎসর্গিতপ্রাণ সাহাবীরা দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়লেন তখন এর প্রয়োজনীয়তা তীব্র হয়ে দেখা দিলো। কুরআনের বিষয়বস্তু ও ভাষাশৈলীর স্পর্শকাতরতার কারণে কুরআনের গবেষকরা প্রথম দিকে নানা আপত্তি উত্থাপন করলেও শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাষায় কুরআন অনূদিত হতে শুরু করলো। এভাবেই কুরআনের আবেদন মূল আরবী ভাষার পরিমণ্ডল ছাড়িয়ে বিভিন্ন ভাষায় ছড়িয়ে পড়লো।

বাইরের পরিমণ্ডলে এসে সম্ভবত ফার্সী ভাষায়ই সর্বপ্রথম কুরআন অনূদিত হয়েছে। প্রিয় নবীর ইনতিকালের প্রায় ৩৫০ বছর পর ইরানের সাসানী বাদশা আবু সালেহ মানসুর ইবন নূহ কুরআনের পূর্ণাঙ্গ ফার্সী অনুবাদ করেন। কুরআনের ফার্সী অনুবাদের এই বিরল কাজের পাশাপাশি তিনি মুসলিম ইতিহাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ তাফসীর গ্রন্থ ইমাম মুহাম্মদ ইবন জারীর আত-তাবারীর ৪০ খণ্ডে সমাপ্ত বিশাল আরবী ‘তাফসীর জামেউল বয়ান আত-তাওয়ীলূল কুরআন’-এর ফার্সী অনুবাদ করেন। আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশে শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী কুরআনের যে ফার্সী ভাষান্তর করেছিলেন তা ছিলো আরো ৮০০ বছর পরের ঘটনা। প্রায় একই সময়ে অর্থাৎ ১৭৭৬ সালে শাহ রফিউদ্দীন ও ১৭৮০ সালে শাহ আবদুল কাদের কুরআনের উর্দূ অনুবাদ করেন।

বাংলা ভাষায় কুরআন অনুবাদের কাজটি আসলেই অনেক দেরীতে শুরু হয়েছে। এর পেছনে কারণও ছিলো অনেক। প্রথমত আমাদের এই ভূখণ্ডে যারা কুরআনের ইলমের সঙ্গে সুপরিচিত ছিলেন সেসব কুরআন সাধকদের অনেকেরই কুরআন শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র ছিলো ভারতের উর্দূ প্রধান এলাকার ঐতিহ্যবাহী দীনী প্রতিষ্ঠান দেওবন্দ, সাহারানপুর, নদওয়া, জামেয়াতুল ইসলাহ, জামেয়াতুল ফালাহসহ উর্দূ ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর সব কয়টির ভাষাই ছিলো উর্দূ কিংবা ফার্সী, তাই স্বাভাবিকভাবেই এসব দীনি প্রতিষ্ঠান থেকে যারা উচ্চতর সনদ নিয়ে বের হন তাদের কুরআন গবেষণার পরিমণ্ডলও সে ভাষার বাইরে ছড়াতে পারে নি।

দ্বিতীয়ত পলাশীর ট্রাজেডির ফলে আমাদের এ অঞ্চলে কুরআন গবেষণার কাজটি নানারকম পঙ্গুত্বের কারণে এক রকম দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলো। ফলে বাংলা আসামে কুরআনের আশানুরূপ কোনো অনুবাদই হয় নি। তৃতীয় কারণ হিসেবে বাংলা মুদ্রণ যন্ত্রের কথা উল্লেখ করতে হয়। ১৭৭৭ সালে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার হলেও এ অঞ্চলের মুসলমানরা ১৮১৫ সালের আগে বাংলা মুদ্রণযন্ত্রের সঙ্গে পরিচিত হবার কোনো সুযোগই পান নি। [. হাফেজ মুনির উদ্দিন আহমদ, কোরআন শরীফ সহজ সরল বাংলা অনুবাদ, ভূমিকা অবলম্বনে।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন