HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআনুল কারীমের অর্থানুবাদ প্রেক্ষাপট ও আবশ্যকীয় জ্ঞান

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

সঠিকভাবে কুরআন বুঝতে যা জানা দরকার
কুরআন মাজীদের সঠিক মর্ম ও উদ্দেশ্য জানার জন্য অথবা শুদ্ধভাবে তার অর্থ ও তাফসীর বুঝার জন্য শুধু আরবী ভাষা জ্ঞান ও সাহিত্যে পারদর্শিতা যথেষ্ট নয়। বরং এর জন্য চাই, আরবীর বেশ কিছু শাস্ত্রে সিদ্ধহস্ত হওয়া। কুরআন বিজ্ঞানের মহাজ্ঞানী আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘সঠিকভাবে কুরআন মাজীদের অর্থ ও তাফসীর বুঝার জন্য পনের রকমের জ্ঞানে পারদর্শী হতে হয়। যথা, আরবী ভাষা, ব্যাকরণ, ইলমে ছারফ, ইলমে ইশতিকাক, ইলমুল বায়ান, ইলমে বাদী‘, ইলমুল কির‘আত, ইলমু উসূলিদ্দীন, ইলমু উসূলিল ফিকহ, আসবাবে নুযূল, কাসাস বা ঘটনাবলী, নাসেখ ও মানসূখ, ইলমে ফিকহ, ইলমুল হাদীস এবং ইলমে লাদুনী। এসব জ্ঞান হলো তাফসীরে কুরআনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব জ্ঞানে যথেষ্ট পারদর্শিতা অর্জন ব্যতিরেকে কেউ কুরআনের তাফসীর করলে তা হবে ‘তাফসীর বির রায়’ তথা মনগড়া তাফসীর বা ব্যাখ্যা, যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’ [. রূহুল মা‘আনী, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ৬-৭। [সংক্ষেপিত]]

তবে জ্ঞান থাকলেও যদি হাদীসের জ্ঞান না থাকে অথবা হাদীসকে বাদ দেয়া হয়, তবুও কুরআন বুঝা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমের কিছু ঘটনা দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যায় :

ক. আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمۡ يَلۡبِسُوٓاْ إِيمَٰنَهُم بِظُلۡمٍ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلۡأَمۡنُ وَهُم مُّهۡتَدُونَ ٨٢﴾ [ الأنعام : 82]

‘যারা ঈমান এনেছে এবং নিজ ঈমানকে যুলমের সাথে সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত’। {সূরা আল-আন‘আম, আয়াত : ৮২}

আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, যখন আল্লাহ জাল্লা জালালুহূ এ আয়াত নাযিল করলেন, তখন সাহাবীগণ রাদিআল্লাহু ‘আনহুম একে ভারী মনে করলেন। তাঁরা আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে পাপের মাধ্যমে নিজের ওপর কোনো ‘যুলুম’ করে নি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, তোমরা আয়াতের প্রকৃত অর্থ বুঝতে সক্ষম হও নি। আয়াতে ‘যুলুম’ বলে শিরককে বুঝানো হয়েছে। দেখ অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তাআ‘লা বলেন,

﴿ وَإِذۡ قَالَ لُقۡمَٰنُ لِٱبۡنِهِۦ وَهُوَ يَعِظُهُۥ يَٰبُنَيَّ لَا تُشۡرِكۡ بِٱللَّهِۖ إِنَّ ٱلشِّرۡكَ لَظُلۡمٌ عَظِيمٞ ١٣ ﴾ [ لقمان : ١٣ ]

‘আর স্মরণ কর, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিল, ‘প্রিয় বৎস, আল্লাহর সাথে শিরক করো না; নিশ্চয় শিরক হল বড় যুলম।’ {সূরা লুকমান, আয়াত : ১৩}

কাজেই এ আয়াতের অর্থ হবে, যে ব্যক্তি বিশ্বাস স্থাপন করে, অতঃপর আল্লাহর সত্তা, নাম ও গুণাবলিতে এবং ইবাদতের বেলায় কাউকে অংশীদার না বানায়, সে শাস্তির কবল থেকে নিরাপদ ও সুপথপ্রাপ্ত। [. দেখুন, বুখারী : ৩১১০; মুসলিম : ১৭৮।]

খ. আয়েশা রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

« لَيْسَ أَحَدٌ يُحَاسَبُ إِلاَّ هَلَكَ » .

‘কেয়ামতের দিন যে ব্যক্তিরই হিসাব নেয়া হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে।’

قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ أَلَيْسَ يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ [ فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا ] قَالَ

আয়েশা বলেন, একথা শুনে আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কোরবান করুন। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ কি বলেন নি,

﴿ فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ ٧ فَسَوۡفَ يُحَاسَبُ حِسَابٗا يَسِيرٗا ٨ ﴾ [ الانشقاق : ٧، ٨ ]

‘অতঃপর যাকে তার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে; অত্যন্ত সহজভাবেই তার হিসাব-নিকাশ করা হবে।’ {সূরা ইনশিকাক, আয়াত : ৭-৮} উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

« ذَاكَ الْعَرْضُ يُعْرَضُونَ وَمَنْ نُوقِشَ الْحِسَابَ هَلَكَ » .

‘আমলনামা পেশ করার কথা যা এভাবে পেশ করা হবে। কিন্তু পরখ করে যার হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে।’ [. বুখারী : ৪৯৩৯; মুসলিম : ৭৪০৮।]

গ. আল্লাহ তা‘আালা ইরশাদ করেন,

﴿ وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَيۡطُ ٱلۡأَبۡيَضُ مِنَ ٱلۡخَيۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ مِنَ ٱلۡفَجۡرِۖ ﴾ [ البقرة : ١٨٧ ]

‘আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৮৭}

এই আয়াত নাযিল হবার পর আদী ইবন হাতেম রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহু একটি কালো সুতা ও একটি সাদা সুতা নিয়ে বালিশের নীচে রাখলেন। রাত অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে তিনি সে দুটোকে বার বার দেখতে লাগলেন। কিন্ত কালো সাদার পার্থক্য ধরা পড়ল না। সকাল হলে তিনি বললেন,

يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّى أَجْعَلُ تَحْتَ وِسَادَتِى عِقَالَيْنِ عِقَالاً أَبْيَضَ وَعِقَالاً أَسْوَدَ أَعْرِفُ اللَّيْلَ مِنَ النَّهَارِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِنَّ وِسَادَتَكَ لَعَرِيضٌ إِنَّمَا هُوَ سَوَادُ اللَّيْلِ وَبَيَاضُ النَّهَارِ » .

ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি কালো ও সাদা দুটি সুতো আমার বালিশের নীচে রেখেছিলাম। (তারপর সব ঘটনা বললেন।) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তাহলে তো দেখছি তোমার বালিশ বেজায় চওড়া! (কারণ রাতের কালো প্রান্তরেখা ও ভোরের সাদা প্রান্তরেখার জন্য তোমার বালিশের নীচে স্থান সংকুলান হয়েছে।) আসলে এ দুটি সুতো নয় বরং রাতের অন্ধকার এবং দিনের আলো’। [. দেখুন, বুখারী : ১৯১৬; মুসলিম : ২৫৮৫।]

ঘ. আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ ٣٤ ﴾ [ التوبة : ٣٤ ]

‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।’ {সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৩৪}

এই আয়াত নাযিল হলে সাহাবায়ে কেরাম মনে করলেন কোনো ধন-সম্পদ জমা রাখা যাবে না, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

« إِذَا أَدَّيْتَ زَكَاةَ مَالِكَ فَقَدْ أَذْهَبْتَ عَنْكَ شَرَّهُ » .

‘যদি তুমি তোমার মালের যাকাত আদায় কর তাহলে নিজ থেকে তার ক্ষতিকে তুমি দূর করে দিলে।’ [. ইবন খুযায়মা : ২২৫৮; হাকেম : ১৪৩৯। হাকেম বলেন, হাদীসটি মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ। ইমাম যাহবী তার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। ইবন আবী শাইবা হাদীসটিকে জাবির রাদিআল্লাহু আনহু থেকে ‘মাওকূফ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। (অবশ্য প্রথমে তিনি যঈফ বলেছিলেন)। দেখুন, আলবানী, সিলসিলা : ২২১৯ এবং তারাজু‘আত শায়খ আলবানী : ১৫।]

খালেদ ইবন আসলাম বর্ণনা করেন, একদা আমরা আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহুমার সঙ্গে বের হয়েছিলাম। তাঁর কাছে এক গ্রাম্য লোক ওপরের আয়াতটি উল্লেখ করে জানত চাইল এর ব্যাখ্যা কী? তিনি বললেন,

مَنْ كَنَزَهَا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهَا فَوَيْلٌ لَهُ إِنَّمَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللَّهُ طُهْرًا لِلأَمْوَالِ .

‘যে ব্যক্তি যাকাত আদায় না করে সম্পদ সঞ্চিত রাখবে তার ধ্বংস অনিবার্য। সম্পদ সঞ্চয় করলে এই শাস্তির বিধান ছিল যাকাত সংক্রান্ত আয়াত নাযিলের আগে। পরে যখন আল্লাহ তা‘আলা যাকাত ফরয ঘোষণা করে আয়াত নাযিল করেন, তখন তিনি যাকাতকে ধন-মালের পরিশুদ্ধকারী করে দিয়েছেন’। [. বুখারী : ১৪০৪।]

আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহুমা বলেন,

كُلُّ مَالٍ أَدَّيْتَ زَكَاتَهُ وَإِنْ كَانَ تَحْتَ سَبْعِ أَرْضِيْنَ فَلَيْسَ بِكَنْزٍ وَكُلُّ مَالٍ لَا تُوَدِّى زَكَاتَهُ فَهُوَ كَنْزٌ وَإِنْ كَانَ ظَاهِرًا عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ .

‘যে মালের যাকাত আদায় করা হয়, তা যদি যমীনের সাত স্তর নীচেও থাকে, তাহলেও ‘কানয’ তথা সঞ্চিত ধন-রত্নের মধ্যে গণ্য নয়। আর যে সম্পদের যাকাত আদায় করা হয় না, তা যদি যমীনের পিঠে খোলা থাকলেও ‘কানয’ তথা সঞ্চিত ধন-রত্নের অন্তর্ভুক্ত।’ [. বাইহাকী, আস-সুনান আল-কুবরা : ৭০২২।]

এ থেকে বুঝা গেল, যাকাত আদায়ের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা জমা রাখা গোনাহ নয়।

ঙ. আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَلَقَدۡ ءَاتَيۡنَٰكَ سَبۡعٗا مِّنَ ٱلۡمَثَانِي وَٱلۡقُرۡءَانَ ٱلۡعَظِيمَ ٨٧ ﴾ [ الحجر : ٨٧ ]

‘আর আমি তো তোমাকে দিয়েছি পুনঃপুনঃ পঠিত সাতটি আয়াত ও মহান কুরআন।’ {সূরা আল-হিজর, আয়াত : ৮৭}

এই আয়াতে ‘সাবয়ে মাছানী’ অর্থ যে সূরা ফাতেহা, তা আমরা একমাত্র হাদীস [. বুখারী : ৪৬৪৭।] থেকেই জানতে পারি। এমনিভাবে কুরআন মাজীদের আরো অনেক আয়াত ও শব্দের অর্থ শুধুমাত্র হাদীস থেকেই জানা যায়। হাদীস ছাড়া তা জানার অন্য কোনো উপায় নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন