hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সূরা কাফিরুন ও ইখলাস আমাদেরকে যা শেখায়

লেখকঃ ফায়িয বিন সাঈদ আয-যাহরানী

১২
সপ্তম পর্ব:
কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের ও অমুসলিমদের মাঝে কোনো মিল নেই। বরং উভয়ের মাঝে সুস্পষ্ট দূরত্ব ও বৈপরীত্ব বিদ্যমান। সুতরাং কোনো ক্ষেত্রেই তাদের সাথে আমাদের মিলন সম্ভব নয়, না আকিদা-বিশ্বাসে না চিন্তা-চেতনায় না মতবাদে এবং না রীতি-নীতিতে।

আকিদা-বিশ্বাসে সম্ভব নয় কারণ আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবূদ নেই আর তারা পাথর, গাছপালা, মানুষ ইত্যাদিকে তাঁর সাথে শরিক করে, যে ব্যাপারে কোনো দলিল-প্রমাণ অবতীর্ণ হয়নি।

আমরা সকল নবী-রাসূলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করি,

} آَمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آَمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ﴿285﴾

অর্থাৎ, রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন স্থল।}

আর তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাতকে অস্বীকার করে, তাঁকে গালমন্দ ও তিরস্কার করে।

চিন্তা-চেতনায় মিলন অসম্ভব কারণ, আমাদের চিন্তায় এ নিখিল বিশ্ব আমাদের দান করা হয়েছে এবং আমাদের কল্যাণে আমাদেরই অনুগত করে দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এ প্রসঙ্গে প্রচুর আয়াত নাযিল হয়েছে। যেমন,

وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ سَكَنًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ جُلُودِ الْأَنْعَامِ بُيُوتًا تَسْتَخِفُّونَهَا يَوْمَ ظَعْنِكُمْ وَيَوْمَ إِقَامَتِكُمْ وَمِنْ أَصْوَافِهَا وَأَوْبَارِهَا وَأَشْعَارِهَا أَثَاثًا وَمَتَاعًا إِلَى حِينٍ ﴿80﴾ وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِمَّا خَلَقَ ظِلَالًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنَ الْجِبَالِ أَكْنَانًا وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُمْ بَأْسَكُمْ كَذَلِكَ يُتِمُّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْلِمُونَ ﴿81﴾

আর আল্লাহ তোমাদের ঘরগুলোকে তোমাদের জন্য আবাস করেছেন এবং তোমাদের পশুর চামড়া দিয়ে তাবুর ব্যবস্থা করেছেন, যা খুব সহজেই তোমরা সফরকালে ও অবস্থানকালে বহন করতে পার। আর তাদের পশম, তাদের লোম ও তাদের চুল দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গৃহসামগ্রী ও ভোগ-উপকরণ (তৈরি করেছেন)

আর আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তা থেকে তোমাদের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং পাহাড় থেকে তোমাদের জন্য আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন, আর ব্যবস্থা করেছেন পোশাকের, যা তোমাদেরকে গরম থেকে রক্ষা করে এবং বর্মেরও ব্যবস্থা করেছেন যা তোমাদেরকে রক্ষা করে যুদ্ধে। এভাবেই তিনি তোমাদের উপর তার নিয়ামতকে পূর্ণ করবেন, যাতে তোমরা অনুগত হও। (সূরা নাহল : ৮০-৮১)

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴿21﴾ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ فِرَاشًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً وَأَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَكُمْ فَلَا تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿22﴾

হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদেরকে, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।

যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে করেছেন বিছানা, আসমানকে ছাদ এবং আসমান থেকে নাযিল করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর তাঁর মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিয্‌কস্বরূপ। সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না। {বাকারা: ২১-২২}

আল্লাহ তাআলাই এটি আমাদের দান করেছেন। এবং চেষ্টা-শ্রম ব্যয় করে আবাদ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সে চেষ্টা চলবে তাঁর বাতানো রীতি-নীতি অনুযায়ী, নিজ খেয়াল-খুশি মত নয়।

আর অমুসলিমরা বিশ্বাস করে এ নিখিল বিশ্ব প্রাকৃতিক, প্রাকৃতিকভাবেই তার আবির্ভাব ঘটেছে। এর মাধ্যমে তারা আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করল। তাদের বিশ্বাস হচ্ছে, নিজ বিবেক-বুদ্ধির কল্যাণে তারা চাহিদামত নানা জিনিস সৃষ্টি ও আয়ত্তে আনার ক্ষমতা রাখে। এ বিশ্বাসের মাধ্যমে রুবুবিয়্যাতের স্তরে পৌঁছে যাওয়ার দাবি করল। এমন অলীক বিশ্বাসের মাধ্যমে তারা সবকিছু গোলমেলে করে ফেলেছে।

কোরআন-সুন্নাহর কল্যাণে মানুষের জীবনের সামগ্রীক দিক (শুরু-শেষ-গন্তব্য ও পরিণতি) সম্বন্ধে আমাদের জানা আছে সবিস্তারে। অমুসলিমদের এ বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষের আদি অবস্থা নিয়ে অমর্যাদাকর ধারণা করে বসে আছে। বিবর্তণবাদের মন্দ বিশ্বাসের কারণে তারা মনে করে মানুষের প্রাথমিক বিকাশ হচ্ছে বানর।

আমাদের বিশ্বাস পার্থিব জীবন একটি ব্যাপক জীবনের অংশ মাত্র, এর পর রয়েছে কবরের জীবন-বরযখ, তার পর আছে পরকালীন জীবন-আখেরাত।

দুনিয়ার জীবনকে আমরা আখেরাতের জীবনের সুখ-সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্র মনে করি।

وَإِنَّ الدَّارَ الْآَخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ ) ‌‌ অর্থাৎ এবং নিশ্চয় আখেরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন।)

আর অমুসলিমরা দুনিয়ার জীবনকেই মূল জীবন মনে করে। তারা বরযখ, আখেরাত, হিসাব, প্রতিদান ইত্যাদিতে বিশ্বাসী নয়।( زَعَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنْ لَنْ يُبْعَثُوا অর্থাৎ,কাফিররা ধারণা করেছিল যে, তারা কখনোই পুনরুত্থিত হবে না।) তাই তারা তাতে গোলযোগ সৃষ্টি করে। স্বার্থ চরিতার্থ করতে মৃত্যুকে জয় করতে চায়।

আর মতবাদেও মিল সম্ভব নয়, কারণ আমাদের মতবাদ হচ্ছে কোরআন ও সুন্নাহ যা মূলত: দোষ-ত্রুটিমুক্ত ওহী-এ-এলাহী। বাতেল এর সমপর্যায়ের মতবাদ পেশ করতে পারবে না কখনো। আর অমুসলিমদের মতবাদ হচ্ছে দিকভ্রান্ত মানুষের অসার মস্তিষ্ক প্রসূত দুর্বল ও কাল্পনিক কিছু মতবাদ। যাকে তারা কানুন ও সংবিধানের মর্যাদা দিয়ে রেখেছে।

বাকি থাকল রীতি-নীতি, তাতেও মিলন অসম্ভব। কারণ আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক এক কথায় সার্বিক জীবনাচার ও রীতি ওহী সূত্রে প্রাপ্ত। সে রীতি ও দর্শন আমাদের জীবন, স্বাধীনতা, অভ্যাস ও পারস্পরিক সম্পর্ককে মর্যাদা, শিষ্টতা, দায়বদ্ধতা, আত্মমর্যাদাবোধ ও আল্লাহভীতিতে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। ফলে সকল কাজ আমাদেরকে উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্পাদন করতে হয়। ফলে জীবন হয় নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল।

আর অমুসলিমদের জীবনাচারে তেমন কোনো বাধ্য-বাধকতা নেই। নেই কোনো দায়িত্বশীলতা। না ব্যক্তিগত ব্যাপারে না সমাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যাপারে এবং না অন্য কোনো ক্ষেত্রে। বরং সব ক্ষেত্রেই আছে কেবল স্বার্থপরতা, আত্মম্ভরিতা, দায়িত্বহীনতা ও উশৃঙ্খলতা। কেবল উন্মুক্ত স্বাধীনতা যা সবকিছু বরবাদ করে দেয়। এতো জন্তু-জানোয়ারের জীবন। আল্লাহ বলেন, (তারা চতুষ্পদ জন্তু সদৃশ বরং এর চেয়েও বিভ্রান্ত)। মুক্ত অর্থনীতি ও অবাধ যৌনাচারের নৈরাজ্যকর বৈশ্বিক পরিস্থিতি, পালনকর্তা আল্লাহকে অস্বীকারকারী কাফেরের বিকৃত চিন্তারই নাপাক ফসল।

জীবন চলার পথে তাদের সাথে আমাদের মিলন কিভাবে সম্ভব ? তাদের ও আমাদের মাঝেতো উদয় ও অস্তাচলের দূরত্ব বিদ্যমান।

শ্রুতি মত- উম্মতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যার একটি দল যখন তাদের সাথে মিলে-মিশে জীবন যাপন করার বাসনা লালন করছে, চলার পথে তাদের সাথী হতে প্রয়াস চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশে পরিস্কার বলতে পারি, এ বাসনা চরিতার্থ করার মাধ্যমে বাস্তবে তারা নিজেদেরকে তাদের কোলে নিক্ষিপ্ত করছে এবং তাদের পঙ্কিলতার ডোরে আবদ্ধ করারই প্রয়াস চালাচ্ছে। লাঞ্ছনা, অপমান, পরাজয় ও লোকসান ছাড়া প্রাপ্তি বলতে আর কিছুই মিলবে না, এ কথা নিশ্চিত বলা যায়। এছাড়া সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার আর কোনো ব্যবস্থা নেই। সত্য রেসালত এমন সতর্কবাণীই উচ্চারণ করে গেছে সহস্র বছর আগে। ছাওবান রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে, (আমার উম্মতের একটি দল মুশরিকদের সাথে মিলিত হওয়া এবং তাদের একাধিক দল মূর্তি পুজা করা অবধি কিয়ামত সঙ্ঘটিত হবে না। {আবু দাউদ:৪২৫২}

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন