HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
শরিয়া বিধানের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য
লেখকঃ ইকবাল হোসাইন মাসুম
৯
মাকাসিদুশ শরিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতার মন্দ পরিণতিইত:পূর্বে আমরা মাকাসিদুশ শরিয়া সম্পর্কে জ্ঞান লাভের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ও প্রসিদ্ধ কিছু মাকাসিদ সম্পর্কে সুস্পষ্টরূপে জানতে পেরেছি। এর মাধ্যমে অবশ্যই করে আমাদের বুঝে এসেছে যে মাকাসিদ সম্বন্ধে অজ্ঞতা (ফতোয়া প্রদানকারীর (মুফতি) পক্ষ থেকে) ভুল বিধান ও মাসআলা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। কেননা ‘‘শরয়ি হুকুমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অজ্ঞতা কখনো কখনো কোন কোন মানুষকে সে হুকুম অস্বীকার করতে প্ররোচিত করতে পারে। কারণ তার ধারণা ও বিশ্বাস হচ্ছে বিধানকর্তা আল্লাহ শরয়ি বিধান অবশ্যই বান্দার কল্যাণ ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যে দিয়ে থাকেন সেটি ব্যক্তি কেন্দ্রিক হোক কিংবা গোষ্ঠি কেন্দ্রিক। অতএব হুকুমের সাথে যখন গ্রহণযোগ্য কোন কল্যাণের সম্পর্ক থাকবে না অথবা বিধানটি যখন কল্যাণ ও স্বার্থ বিরোধী দেখতে পাবে। তখন সে এটিকে এ কথার দলিল ও প্রমাণ হিসাবে জ্ঞান করবে যে এ বিধানটি শরয়ি কোন বিধান নয়। একে লোকেরা ব্যাখ্যা বা ইজতিহাদের মাধ্যমে শরীয়তের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে’’। [ড. ইউসুফ আল কারযাভী, আল মারজাইয়্যাতুল উলইয়া ফিল ইসলাম। (পৃ:২৪০)।]
সুতরাং একজন ফকিহর জন্যে অবশ্যই সচেতনতা ও জ্ঞানের ব্যুৎপত্তি থাকতে হবে। মাকাসিদ সম্পর্কে যথেষ্ট গবেষণা ও অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত। এ সম্বন্ধে ধারণার অপ্রতুলতা নিয়ে ইসলামের ওপর চলা ও ফতোয়া প্রদান করা এককথায় অসম্ভব। প্রাজ্ঞ আলেমে রববানীদের এ থেকে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই। কারণ এ সম্বন্ধে তাদের পিছিয়ে থাকার অর্থই হবে মাকাসিদুশ শরিয়া ও তার তাৎপর্যগুলো শরিয়ত অনুসারীদের থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। আর এরই মাধ্যমে ইসলামি ফিকহ সন্দেহযুক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। ইসলাম বিদ্বেষীরা বলবে, ইসলামি শরিয়ত একটি অনগ্রসরমান, কঠিন, অহেতুক ও সেকেলে জীবন ব্যবস্থার নাম। যাতে মানব জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির কোন ধারা ও নিয়ম-নীতি নেই। মানুষের কল্যাণ সাধন এবং ক্ষতি প্রতিরোধের কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই।
ফতোয়ার উদ্দেশ্য যখন শরয়ি বিধান ও বিধানকর্তার আদেশ-নিষেধ বাস্তবতার ওপর নিয়ে আসা এবং প্রত্যেক ফতোয়া তলবকারীর নিকট বিধানকর্তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা ও প্রমাণিত করা। আর অবস্থার বিভিন্নতা ও সকল ফতোয়া তলবকারীর ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন থাকবে। তবে সে উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন রূপ অবস্থা ও ব্যক্তির ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন হতে পারে। তাই প্রত্যেক ফতোয়া প্রদানকারীকে এক্ষেত্রে যথেষ্ট চিন্তা ও বিচক্ষণতার সাথে কাজ নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে বিধানকর্তার উদ্দেশ্য যাতে ঠিক থাকে। অবস্থা ও ফতোয়া তলবকারীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ বিধি হচ্ছে ব্যক্তি ও অবস্থার বিভিন্নতায় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত থাকবে। পরিবর্তন হবে শুধুমাত্র ফতোয়া। আর এ পরিবর্তনটিও সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যেই।
এর উদহারণ যেমন আব্দুল্লাহ বিন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘটনা, যখন তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি ফতোয়া চেয়েছিলেন এ মর্মে যে, হত্যাকারীর জন্য তওবার কোন সুযোগ আছে কি না?
ঘটনার বিবরণ হচ্ছে, হাদিসে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট এসে বলল, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মোমিনকে হত্যা করবে তার জন্যে তওবার সুযোগ আছে কি না? তিনি বললেন, না। জাহান্নাম ভিন্ন তার কোন গতি নেই। ওই ব্যক্তি চলে গেলে উপস্থিত লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আপনি কি ইত:পূর্বে আমাদের এমনই ফতোয়া দিয়েছেন? আপনিতো আমাদের ফতোয়া দিয়েছেন যে, হত্যাকারীর তওবা গ্রহণযোগ্য। জবাবে ইবনে আববাস বললেন, আমি তাকে রাগান্বিত দেখতে পেয়েছি, সে কোন মোমিনকে হত্যা করতে চায়। বর্ণনাকারী বলেন, তখন তারা ওই ব্যক্তির পেছনে পেছনে একজনকে পাঠাল এবং তারা তাকে সেরূপই দেখতে পেল। [মুসান্নাফ ইবনু আবি শায়বা, কিতাবুদ দিয়াত, (৫/৪৩৫)]
তওবার প্রতি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে বিধানকর্তার উদ্দেশ্য যখন মানুষের আত্মশুদ্ধি, তাদেরকে সত্য ও সৎ পথে প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং অন্যায় অপরাধের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে তা হতে তাদের বিরত রাখা। আর ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্য ছিল তওবার সুযোগ গ্রহণ করে শরিয়ত প্রবর্তকের উদ্দেশ্যের বিপরীতে কাজ করা। তাই ইবনে আববাস রা. ফতোয়া দিলেন তার তওবার কোন সুযোগ নেই। হয়ত এ ফতোয়া তাকে তার পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখবে এবং সঠিক পথে ফিরিয়ে আনবে যা বিধানদাতার মূল উদ্দেশ্য। [ড. নোমান জোগায়ম,তুরুকুল কাশফ আন মাকাসিদিশ শারে।পৃ:৪৯]
এ উদাহরণ থেকে আমরা সুস্পষ্টরূপে জানতে পারি যে, মাকাসিদুশ শরিয়া তথা শরয়ি বিধানের তাৎপর্য সম্পর্কে অজ্ঞতা শরিয়ত অনুসারীকে বিভ্রান্তিতে নিপতিত করে। সুযোগ পেলেই তার ইমানকে নাড়িয়ে দেয়। তাই লোকদের মাঝে এ শাস্ত্রের প্রসার একান্ত জরুরী। ইলম পিপাসুদের উচিৎ এ বিদ্যা আহরণে তৎপর ও সক্রিয় হওয়া। যাতে কখনো তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিধানকর্তার লক্ষ্য উদ্দেশ্যের বিপরীত ও সাঙ্ঘর্ষিক না হয়। কারণ মুকাল্লাফ তথা শরিয়ত অনুসারীর জন্য অত্যাবশ্যক হচ্ছে তার উদ্দেশ্য শরিয়ত-প্রবর্তকের উদ্দেশ্যের অনুকূলে হওয়া।
সমাপ্ত
সুতরাং একজন ফকিহর জন্যে অবশ্যই সচেতনতা ও জ্ঞানের ব্যুৎপত্তি থাকতে হবে। মাকাসিদ সম্পর্কে যথেষ্ট গবেষণা ও অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত। এ সম্বন্ধে ধারণার অপ্রতুলতা নিয়ে ইসলামের ওপর চলা ও ফতোয়া প্রদান করা এককথায় অসম্ভব। প্রাজ্ঞ আলেমে রববানীদের এ থেকে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই। কারণ এ সম্বন্ধে তাদের পিছিয়ে থাকার অর্থই হবে মাকাসিদুশ শরিয়া ও তার তাৎপর্যগুলো শরিয়ত অনুসারীদের থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। আর এরই মাধ্যমে ইসলামি ফিকহ সন্দেহযুক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। ইসলাম বিদ্বেষীরা বলবে, ইসলামি শরিয়ত একটি অনগ্রসরমান, কঠিন, অহেতুক ও সেকেলে জীবন ব্যবস্থার নাম। যাতে মানব জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির কোন ধারা ও নিয়ম-নীতি নেই। মানুষের কল্যাণ সাধন এবং ক্ষতি প্রতিরোধের কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই।
ফতোয়ার উদ্দেশ্য যখন শরয়ি বিধান ও বিধানকর্তার আদেশ-নিষেধ বাস্তবতার ওপর নিয়ে আসা এবং প্রত্যেক ফতোয়া তলবকারীর নিকট বিধানকর্তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা ও প্রমাণিত করা। আর অবস্থার বিভিন্নতা ও সকল ফতোয়া তলবকারীর ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন থাকবে। তবে সে উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন রূপ অবস্থা ও ব্যক্তির ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন হতে পারে। তাই প্রত্যেক ফতোয়া প্রদানকারীকে এক্ষেত্রে যথেষ্ট চিন্তা ও বিচক্ষণতার সাথে কাজ নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে বিধানকর্তার উদ্দেশ্য যাতে ঠিক থাকে। অবস্থা ও ফতোয়া তলবকারীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ বিধি হচ্ছে ব্যক্তি ও অবস্থার বিভিন্নতায় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত থাকবে। পরিবর্তন হবে শুধুমাত্র ফতোয়া। আর এ পরিবর্তনটিও সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যেই।
এর উদহারণ যেমন আব্দুল্লাহ বিন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘটনা, যখন তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি ফতোয়া চেয়েছিলেন এ মর্মে যে, হত্যাকারীর জন্য তওবার কোন সুযোগ আছে কি না?
ঘটনার বিবরণ হচ্ছে, হাদিসে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট এসে বলল, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মোমিনকে হত্যা করবে তার জন্যে তওবার সুযোগ আছে কি না? তিনি বললেন, না। জাহান্নাম ভিন্ন তার কোন গতি নেই। ওই ব্যক্তি চলে গেলে উপস্থিত লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আপনি কি ইত:পূর্বে আমাদের এমনই ফতোয়া দিয়েছেন? আপনিতো আমাদের ফতোয়া দিয়েছেন যে, হত্যাকারীর তওবা গ্রহণযোগ্য। জবাবে ইবনে আববাস বললেন, আমি তাকে রাগান্বিত দেখতে পেয়েছি, সে কোন মোমিনকে হত্যা করতে চায়। বর্ণনাকারী বলেন, তখন তারা ওই ব্যক্তির পেছনে পেছনে একজনকে পাঠাল এবং তারা তাকে সেরূপই দেখতে পেল। [মুসান্নাফ ইবনু আবি শায়বা, কিতাবুদ দিয়াত, (৫/৪৩৫)]
তওবার প্রতি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে বিধানকর্তার উদ্দেশ্য যখন মানুষের আত্মশুদ্ধি, তাদেরকে সত্য ও সৎ পথে প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং অন্যায় অপরাধের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে তা হতে তাদের বিরত রাখা। আর ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্য ছিল তওবার সুযোগ গ্রহণ করে শরিয়ত প্রবর্তকের উদ্দেশ্যের বিপরীতে কাজ করা। তাই ইবনে আববাস রা. ফতোয়া দিলেন তার তওবার কোন সুযোগ নেই। হয়ত এ ফতোয়া তাকে তার পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখবে এবং সঠিক পথে ফিরিয়ে আনবে যা বিধানদাতার মূল উদ্দেশ্য। [ড. নোমান জোগায়ম,তুরুকুল কাশফ আন মাকাসিদিশ শারে।পৃ:৪৯]
এ উদাহরণ থেকে আমরা সুস্পষ্টরূপে জানতে পারি যে, মাকাসিদুশ শরিয়া তথা শরয়ি বিধানের তাৎপর্য সম্পর্কে অজ্ঞতা শরিয়ত অনুসারীকে বিভ্রান্তিতে নিপতিত করে। সুযোগ পেলেই তার ইমানকে নাড়িয়ে দেয়। তাই লোকদের মাঝে এ শাস্ত্রের প্রসার একান্ত জরুরী। ইলম পিপাসুদের উচিৎ এ বিদ্যা আহরণে তৎপর ও সক্রিয় হওয়া। যাতে কখনো তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিধানকর্তার লক্ষ্য উদ্দেশ্যের বিপরীত ও সাঙ্ঘর্ষিক না হয়। কারণ মুকাল্লাফ তথা শরিয়ত অনুসারীর জন্য অত্যাবশ্যক হচ্ছে তার উদ্দেশ্য শরিয়ত-প্রবর্তকের উদ্দেশ্যের অনুকূলে হওয়া।
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন