HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দাঈদের প্রতি বার্তা

লেখকঃ শাইখ মোহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন

প্রথম অধ্যায়ঃ আল্লাহর পথে আহবান করা ওয়াজিব হওয়া এবং তার ফযীলত
আল্লাহর পথে আহবান করা অতি উত্তম আমল। কেননা এ দাওয়াত হচ্ছে সুন্দর ও ইনসাফের প্রতি, সুস্বভাব আকাংখিত জিনিসের প্রতি মস্তিষ্ক যাকে সুন্দর বলে গ্রহণ করে এবং পবিত্র আত্মা যার প্রতি ঝুঁকে থাকে।

এ দাওয়াত আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাওয়াত, এ দাওয়াত ঐ সমস্ত সঠিক বিষয়বস্ত্তকে বিশ্বাসের দাওয়াত যাতে অন্তর হয় শান্ত এবং হৃদয় হয় সম্প্রসারিত। এ দাওয়াত আল্লাহর প্রতিপালন, ইবাদাত এবং তাঁর নাম ও গুণাবলির একত্ববাদের দাওয়াত। এ দাওয়াত হচ্ছে ঐ দৃঢ় বিশ্বাসের দাওয়াত যে, তিনি প্রতিপালনে অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। আল্লাহ ছাড়া কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই, কোনো নিয়ন্ত্রক নেই। তিনি ছাড়া উভয় জগতে নেই কারো কোন অধিকার। এই দৃঢ় বিশ্বাস মনে পোষণ করার মাধ্যমে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যদের সাথে হৃদয়ের সম্পর্ক ছিন্ন হয় এবং আশা, ভরসা ও ভয় একমাত্র আল্লাহর উপর হয়। এটা বান্দাদের প্রতি এমন এক দৃঢ় বিশ্বাসের দাওয়াত যে, তাদের মাঝে আল্লাহই একমাত্র হুকুমদাতা, তিনি ছাড়া নির্ধারিত বস্ত্ততে ফায়সালা করার এবং জীবনবিধানের ব্যবস্থা করার কেউ নেই। যে বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহর মনোনীত শরীয়ত ছাড়া অন্য যে কোন হুকুম থেকে সম্পর্ক ছিন্ন হবে এবং পরিত্যাগ করবে ঐ সমস্ত বিধিনিষেধ যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ এর হুকুমের পরিপন্থী। কেননা আল্লাহ, তাঁর রাসূলের হুকুমের বিপরীত প্রতিটি বিধিনিষেধই হচ্ছে যুলুম ও ভ্রান্ত- যার শেষ পরিণাম হচ্ছে দেশ ও জাতির মধ্যে ফাসাদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُّوْقِنُوْنَ

দৃঢ় বিশ্বাসী লোকদের জন্য বিচারব্যবস্থায় আল্লাহর চেয়ে উত্তম আর কে হতে পারে? (সূরা মায়েদা- ৫০)

এই বিশ্বাসের মাধ্যমে বান্দারা আল্লাহর হুকুমের অনুগত হয় এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে ঐ হুকুমগুলো বাস্তবায়ন করে, চাই তা তাদের প্রকৃতির অনুকূলে হোক কিংবা প্রতিকূলে হোক, যেমন করে তারা আল্লাহর নির্ধারিত হুকুম তাক্বদীরকে মনে নিয়ে থাকে যে, তাক্বদীর তাদের মধ্যে বাস্তবায়িত হবেই। তারা তা সর্বান্তকরণে মেনে নেয়- তা তাদের পছন্দ হোক বা না হোক। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

اَفَغَيْرَ دِيْنِ اللهِ يَبْغُوْنَ وَلَهٗۤ اَسْلَمَ مَنْ فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ طَوْعًا وَّكَرْهًا وَّاِلَيْهِ يُرْجَعُوْنَ

আল্লাহর দেয়া জীবনব্যবস্থা বাদ দিয়ে তারা কি অন্য কিছুর সন্ধান করে, অথচ আকাশ এবং পৃথিবীতে যা আছে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সবই তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। (অবশেষে) তাদেরকে তাঁর দিকেই ফিরিয়ে নেয়া হবে। (সূরা আলে ইমরান- ৮৩)

ইয়াকীনের সাথে একমাত্র আল্লাহর ইবাদাতের আহবান জানিয়ে দাওয়াত দিতে হবে যে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদাতের উপযুক্ত নয়; না কোন মালাইকা (ফেরেশতা), না কোন নবী-রাসূল, অলী, আর না অন্য কেউ। কেননা আল্লাহই হচ্ছেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। অতএব তাঁরই ইবাদাত করা একান্ত কর্তব্য।

আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়ার অর্থ হচ্ছে- আল্লাহর সকল নাম ও সিফাতের প্রতি দৃঢ় ঈমানের আহবান জানানো যা কুরআন ও সুন্নাতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ঐ সমস্ত নাম ও সিফাত তাঁর মর্যাদার উপযোগী করে বর্ণনা করা হয়েছে- যার মধ্যে কোন বিকৃত ব্যাখ্যার অবকাশ নেই, নেই কোন অস্বীকার করার উপায় কিংবা তুলনামূলক উদাহরণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

لَيْسَ كَمِثْلِهٖ شَيْءٌۚ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ

কোনকিছুই তাঁর সাদৃশ্য নয়, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সূরা শূরা- ১১)

আল্লাহর প্রতি আহবান হচ্ছে সরল সঠিক পথের আহবান। এটা ঐ পথের অনুসরণের আহবান, যে পথ হচ্ছে নবী, সত্যবাদী, শহীদ ও নেককারগণের পথ যাদেরকে আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন। এটা সেই পথের আহবান যে পথকে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য তাঁর কাছে পৌঁছার উদ্দেশ্যে তাদের পার্থিব ও ধর্মীয় কাজের উন্নতির জন্য সৃষ্টি করেছেন। এই অনুসরণের মাধ্যমে পথভ্রষ্টকারী বিদ‘আতী পন্থাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। বিদআতকারীদের কু-প্রবৃত্তি তাদেরকে আল্লাহর দ্বীন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, তারা আল্লাহর হুকুমকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুর অনুসরণ করে। দ্বীন থেকে তারা বহু দূরে সরে যায়। আল্লাহ তাদেরকে যা হুকুম করেছেন, তারা তা বাদ দিয়ে অন্য গর্হিত বিষয়াদির অনুসরণ করে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করেন,

وَاَنَّ هٰذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُۚ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهٖؕ ذٰلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

এ পথই আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করো এবং অন্য কোন পথের অনুসরণ করো না, নতুবা তোমরা তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দেন, যেন তোমরা সাবধান হও। (সূরা আন‘আম- ১৫৩)

যে সমস্ত কাজ করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন তা করা হচ্ছে আল্লাহর প্রদর্শিত পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

شَرَعَ لَكُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا وَصّٰى بِهٖ نُوْحًا وَّالَّذِيْۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهٖۤ اِبْرَاهِيْمَ وَمُوْسٰى وَعِيْسٰۤى اَنْ اَقِيْمُوا الدِّيْنَ وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ

তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঐ দ্বীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নূহকে এবং যে ব্যাপারে আমি তোমাকে ওহী করেছিলাম। আর যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা এ দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে মতভেদ করো না। (সূরা শূরা- ১৩)

আল্লাহর দিকে আহবান করা হচ্ছে উত্তম চরিত্র, সুন্দর আমল, অধিকার সংরক্ষণ, প্রত্যেকের হক প্রদানকরত মানুষের মাঝে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা এবং যে ব্যক্তি যেই মর্যাদার অধিকারী তার সেই মর্যাদা রক্ষার আহবান। এর মাধ্যমে মুমিনদের মাঝে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকে এবং আল্লাহর শরীয়তের ভিতরে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সুশৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রত্যেক ঘৃণিত চরিত্র, খারাপ কাজ, মানব রচিত বর্বর আইন-কানুন ও ভ্রান্ত আকীদাসমূহ দুর্বল হয়ে যায়। যারা এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং তার দিকে আহবান করে, এসব আল্লাহর বান্দাদেরকে তাঁর নির্দেশিত পথ অনুসরণে যারা বাধা সৃষ্টির ইচ্ছা করে, তারা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়।

এ সমস্ত কাজের সুবাদে এবং সেগুলো উত্তম পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা ও ফাসাদ নিবারণ করার কারণে আল্লাহর পথে আহবান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মহৎ কাজ। এ কাজ সমাধাকারীগণ নবী ও রাসূলগণের ওয়ারিছ। কুরআনের বহু আয়াতে ও হাদীসে এ দায়িত্ব পালনের আদেশ ও তার ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় নবীকে বলেন,

لِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا هُمْ نَاسِكُوهُ فَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْأَمْرِ وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ إِنَّكَ لَعَلَى هُدًى مُسْتَقِيمٍ

আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য এক একটি নিয়ম-নীতি নির্ধারণ করেছি, যা তারা পালন করেছে। অতএব তারা যেন এ ব্যাপারে আপনার সাথে বিতর্ক না করে। আপনি তাদেরকে আপনার প্রভূর দিকে আহবান করুন। নিশ্চয় আপনি সরল ও সঠিক পথে আছেন। (সূরা হাজ্জ- ৬৭)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَلَا يَصُدُّنَّكَ عَنْ اٰيَاتِ اللهِ بَعْدَ اِذْ اُنْزِلَتْ اِلَيْكَ وَادْعُ اِلٰى رَبِّكَ وَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ

তোমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর তারা যেন তোমাকে কিছুতেই তা হতে বিমুখ না করে দেয়। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে আহবান করো এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (সূরা ক্বাসাস- ৮৭)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

شَرَعَ لَكُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا وَصّٰى بِهٖ نُوْحًا وَّالَّذِيْۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهٖۤ اِبْرَاهِيْمَ وَمُوْسٰى وَعِيْسٰۤى اَنْ اَقِيْمُوا الدِّيْنَ وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ مَا تَدْعُوْهُمْ اِلَيْهِ اَللهُ يَجْتَبِيْۤ اِلَيْهِ مَنْ يَّشَآءُ وَيَهْدِيْۤ اِلَيْهِ مَنْ يُّنِيْبُ وَمَا تَفَرَّقُوا إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِنْ رَبِّكَ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ أُورِثُوا الْكِتَابَ مِنْ بَعْدِهِمْ لَفِي شَكٍّ مِنْهُ مُرِيبٍ فَلِذَلِكَ فَادْعُ وَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَقُلْ آمَنْتُ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنْ كِتَابٍ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ

তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঐ দ্বীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নূহকে এবং যে ব্যাপারে আমি তোমাকে ওহী করেছিলাম। আর যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা এ দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে মতভেদ করো না। তুমি মুশরিকদেরকে যার প্রতি আহবান করছ, তা তাদের নিকট কঠিন মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে নিজের দিকে নিয়ে আসেন এবং যে ব্যক্তি তার অভিমুখী হয় তিনি তাকে পথপ্রদর্শন করেন। তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারস্পরিক অনৈক্যের কারণে মতভেদ করেছে। যদি আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্বেই সিদ্ধান্ত না থাকত, তবে তাদের ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে। সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুমের উপর অবিচল থাকুন। আপনি তাদের ধ্যান-ধারণার অনুসরণ করবেন না। বলুন আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি। (সূরা শুরা, ১৩-১৫)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِؕ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ وَلَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ تَفَرَّقُوْا وَاخْتَلَفُوْا مِنْ ۢبَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْبَيِّنَاتُؕ وَاُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ

তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক থাকা জরুরি, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই হবে সফলকাম। তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও মতভেদে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। (সূরা আলে ইমরান- ১০৪, ১০৫)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَمَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ اِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ

ঐ ব্যক্তির চেয়ে উত্তম আর কে হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা হা-মীম সাজদা- ৩৩)

আমি একজন মুসলমান, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার হতে পারে?

عَنْ سَهْلِ ابْنِ سَعْدٍ ، - قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ يَوْمَ خَيْبَرَ لَأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلًا يُفْتَحُ عَلٰى يَدَيْهِ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَه وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُوْلُه فَبَاتَ النَّاسُ لَيْلَتَهُمْ أَيُّهُمْ يُعْطٰى فَغَدَوْا كُلُّهُمْ يَرْجُوْهُ فَقَالَ أَيْنَ عَلِيٌّ فَقِيْلَ يَشْتَكِيْ عَيْنَيْهِ فَبَصَقَ فِيْ عَيْنَيْهِ وَدَعَا لَه فَبَرَأَ كَأَنْ لَمْ يَكُنْ بِه وَجَعٌ فَأَعْطَاهُ فَقَالَ أُقَاتِلُهُمْ حَتّٰى يَكُوْنُوْا مِثْلَنَا فَقَالَ انْفُذْ عَلٰى رِسْلِكَ حَتّٰى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الْإِسْلَامِ وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ فَوَاللهِ لِأَنْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُوْنَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খাইবার যুদ্ধের দিন নবী ﷺ বললেন, আগামীকাল এমন এক ব্যক্তির হাতে পতাকা দেয়া হবে, যার হাতে খাইবার বিজিত হবে। সে এমন এক ব্যক্তি যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলুল্লাহ ﷺ-ও তাকে ভালবাসেন। সবাই এ আশায় রাত্রি যাপন করেন, দেখা যাক কার হাতে পতাকা দেয়া হয়। প্রত্যেকেই সকাল বেলা মনে মনে তা প্রত্যাশা করতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলে উঠলেন, আলী কোথায়? তাঁকে বলা হল, তিনি চোখের রোগে ভুগছেন। (তাঁকে ডেকে এনে) রাসূলুল্লাহ ﷺ স্বীয় থুথু তাঁর চোখে দেন এবং দু‘আ করেন। তিনি চক্ষু রোগ থেকে পরিত্রাণ লাভ করেন। মনে হয় যেন তাঁর চোখে কোন রোগই ছিল না। তারপর আলী (রাঃ)-এর হাতে পতাকা উঠিয়ে দিলে তিনি বললেন, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলিম না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে যুদ্ধ করব? রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বললেন, তুমি স্বাভাবিকভাবে চলো, এমনকি তুমি যখন তাদের আঙ্গিনায় পৌঁছবে, তখন তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান করো এবং তাদের যা করণীয় তা তাদেরকে জানিয়ে দিয়ো। আল্লাহর কসম! হে আলী, তুমি জেনে রেখো! তোমার হাতে কাউকে আল্লাহ যদি হিদায়াত দান করেন, তবে তা তোমার জন্য রক্তিম বর্ণের উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম। [সহীহ বুখারী, হা/৩০০৯; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬৯৩২; সহীহ মুসলিম, হা/৬৩৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৮৭২; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৮০৯৩; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৭৫৩৭; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১৮৬৯২; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৫৭৪৪; মিশকাত, হা/৬০৮০।]

عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِىِّ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « الدِّينُ النَّصِيحَةُ » قُلْنَا لِمَنْ قَالَ « لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ » .

তামীম দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, সদুপদেশ দেয়াই দীন। আমরা আরয করলাম, কার জন্য উপদেশ? তিনি বললেন : আল্লাহ ও তাঁর কিতাবের, তাঁর রসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের। [সহীহ মুসলিম, হা/২০৫; আবু দাউদ, হা/৪৯৪৬; নাসাঈ, হা/৪১৯৭; মিশকাত, হা/৪৯৬৬।]

বলা বাহুল্য, আল্লাহর দিকে দাওয়াত হচ্ছে আল্লাহর জন্য নসীহত।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلاَلَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/৬৯৮০; আবু দাউদ, হা/৪৬১১; তিরমিযী, হা/২৬৭৪; ইবনে মাজাহ, হা/২০৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯১৪৯; মিশকাত, হা/১৫৮।]

এ সকল আয়াত ও হাদীসমূহ আল্লাহর দিকে দাওয়াত ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণ ও ফযীলত বর্ণনা করে। আল্লাহর শরীয়াতের প্রসার ও তার সংরক্ষণ এই দাওয়াতের উপরই নির্ভর করে। এর মাধ্যমেই মানুষ তাদের বিরাট কল্যাণ সাধন, জীবিকা নির্বাহ, ধর্মীয় ও দুনিয়াবী ফেতনা ফাসাদ থেকে বাঁচার সর্বোত্তম পন্থা পেয়ে যাবে- যদি তারা তা গ্রহণ করে এবং তা আমলে পরিণত করে। আল্লাহ তাওফীকদাতা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন