HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দাঈদের প্রতি বার্তা

লেখকঃ শাইখ মোহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন

দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ আল্লাহর দিকে দাওয়াতের মাধ্যম ও তার পদ্ধতি
দাওয়াতের মাধ্যম বলতে ঐ সমস্ত পন্থাকে বুঝানো হয়, যার দ্বারা দাঈ তার দাওয়াত পৌঁছায়। তা তিন প্রকার। প্রত্যেকটি প্রকারের এক একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

প্রথমঃ সরাসরি মৌখিক কথা-বার্তার মাধ্যমে

এ পদ্ধতিতে দাওয়াত দেয়ার নিয়ম হলো, আহবানকারী যাদেরকে দাওয়াত দিবে, তাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। তাদের সামনা-সামনি হয়ে বয়ান করবে এবং যে বিষয়ের দিকে সে ডাকছে তার হাকীকত, ফযীলত ও তার বাহ্যিক ও ওয়াদাকৃত প্রতিদানসমূহের বর্ণনা স্পষ্টভাবে তুলে ধরবে। এই প্রকারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, দাঈ যাদেরকে ডাকবে, তাদের গ্রহণের মানসিকতা ভালো করে জানবে; তাদের অন্তরের প্রশস্ততা ও প্রফুল্লতা লক্ষ্য করে দাওয়াত দিবে, আমলের জন্য উদ্ধুদ্ধ করবে, স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা করে তাদের সাথে ব্যবহার করবে। সন্তুষ্ট হওয়া ও গ্রহণ করা পর্যন্ত তাদের মাঝে কথাবার্তা চালিয়ে যাবে। অন্যান্য মাধ্যমের চেয়ে মৌখিক মাধ্যমটাই সবচেয়ে কার্যকরী।

দ্বিতীয়ঃ মৌখিক কথাবার্তার মাধ্যমে, তবে সরাসরি নয়; যেমন রেডিও এবং টিভির মাধ্যমে

এই প্রকারের দাওয়াতের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এ পদ্ধতিতে দাওয়াত এমন ব্যাপকভাবে পৌঁছে থাকে, যা মুখোমুখী কথাবার্তার মাধ্যমে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

তৃতীয়ঃ লিখনির মাধ্যমে। যেমন, বই সংকলন, পেপার-পত্রিকা, পোস্টার-ব্যানার প্রকাশ ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার।

এ প্রকারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে বিষয়ের প্রতি তাদেরকে আহবান করা হচ্ছে, তারা প্রয়োজনে তা কয়েক বার পাঠ করে তার ফযীলত ও ফলাফল অনুধাবন করতে পারে।

আল্লাহর দিকে দাওয়াতের পদ্ধতি, বয়ান এবং যাকে ডাকা হবে তার অবস্থা বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। সাধারণত এর তিন অবস্থা :

১. একজন ভালো ও উত্তম বস্ত্ত পেতে আগ্রহী, তবে সে এসবই বিষয়ে অজ্ঞ এবং তা তার কাছে অস্পষ্ট। এমতাবস্থায় তার জন্য সাধারণ দাওয়াতই যথেষ্ট। যেমন তাকে বলা যে, এটি আল্লাহর আদেশ ও রাসূল ﷺ এর নির্দেশ। অতএব এটা পালন করো। অথবা বলা হবে, এটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিষেধ করেছেন। অতএব এর থেকে বিরত থাকো। এ পদ্ধতি এই জন্য যে, তার ভালো কাজে আগ্রহ রয়েছে এবং তা সে গ্রহণ করতে আগ্রহী। অতএব এতটুকুতেই সে গ্রহণ করবে এবং অনুসরণ করবে।

২. দ্বিতীয় অবস্থা হচ্ছে, যার মধ্যে উত্তম কাজ ও তার গ্রহণে রয়েছে অলসতা ও দুর্বলতা এবং খারাপ কাজে রয়েছে আগ্রহ। এমতাবস্থায় সাধারণ দাওয়াত তার জন্য যথেষ্ট নয়, বরং কর্তব্য হচ্ছে, উত্তম কাজের প্রতি ও তার অনুসরণে উৎসাহিত করা, তার ফযীলত বর্ণনা করা, সুন্দর শেষ পরিণাম ও প্রশংসিত প্রতিদানের ব্যাখ্যা উদাহরণের মাধ্যমে সুন্দরভাবে তুলে ধরা। তেমনিভাবে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহর ভয়ঙ্কর শাস্তির কথা শুনিয়ে ভীতিপ্রদর্শন করা, তার নিকৃষ্টতার বর্ণনা দেয়া, কু-পরিণাম ও ফাসিকদের নিকৃষ্ট শেষ পরিণতি সম্পর্কে উপমা সহকারে বর্ণনা পেশ করা। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

ثُمَّ كَانَ عَاقِبَةَ الَّذِينَ أَسَاءُوا السُّوأَى أَنْ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَكَانُوا بِهَا يَسْتَهْزِئُونَ

যারা মন্দ কাজ করেছে, তাদের পরিণামও হয়েছে মন্দ। কারণ তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলত এবং সেগুলো নিয়ে ঠাট্টা করত।

(সূরা রোম- ১০)

৩. তৃতীয় অবস্থা হচ্ছে, যে ভালো কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং খারাপের দিকে ধাবিত হয়, তদুপরি এ ব্যাপারে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এই ব্যক্তির ব্যাপারে শুধুমাত্র দাওয়াত ও উপদেশই যথেষ্ট নয় বরং তার সাথে উত্তম পন্থায় যুক্তিতর্কের মাধ্যমে তার কাছে দাওয়াত তুলে ধরতে হবে। যুক্তিতর্কের উত্তম পন্থা হলো, হক বা সত্য এমনভাবে যুক্তি প্রমাণের সাথে উপস্থাপন করা, যাতে তার যুক্তি খন্ডে যায় এবং তার পথ ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়।

দাওয়াতের উল্লেখিত তিন অবস্থায় দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اُدْعُ اِلٰى سَبِيْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِيْ هِيَ اَحْسَنُ

তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান করো হেকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে তর্ক করবে উত্তম পন্থায়। (সূরা নাহল- ১২৫)

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত। কেউ হককে স্বীকার করে এবং তার অনুসরণ করে। সে-ই হচ্ছে হেকমতওয়ালা। আর কেউ হককে স্বীকার করে, কিন্তু আমল করে না। এ ক্ষেত্রে তাকে উপদেশ দেয়া প্রয়োজন, যাতে সে আমল করে। আর যে হককে স্বীকার করে না, তার সাথেই উত্তম পন্থায় বিতর্ক করা প্রয়োজন। কেননা উত্তেজনাকর মুহূর্তেই বিতর্ক সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই যদি তা উত্তম পন্থায় হয়, তবেই যথেষ্ট কল্যাণজনক হয়ে থাকে।

যদি আহবানকৃত ব্যক্তি এ সকল পন্থায় দাওয়াত মাধ্যমে ন্যায়ের পথে চলে আসে, হককে স্বীকার করে এবং তার অনুগত হয় তবে তা ভালো। অন্যথায় আমরা বিপথগামী হয়ে যাব।

সেই চতুর্থ অবস্থা হচ্ছে তা-ই, নিম্নোক্ত আল্লাহর বাণী যার দিকে ইঙ্গিত করে,

وَلَا تُجَادِلُوْاۤ اَهْلَ الْكِتَابِ اِلَّا بِالَّتِيْ هِيَ اَحْسَنُ اِلَّا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مِنْهُمْ

তোমরা উত্তমপন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হবে না; তবে তাদের মধ্যে যারা সীমালঙ্ঘন করেছে তাদের সাথে করতে পার। (সূরা আনকাবূত- ৪৬)

ইবনে কাসীর (রহ.) বলেন, তাদের (আহলে কিতাবের) মধ্যে যারা যুলুম করেছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যারা হক থেকে সরে গিয়েছে এবং স্পষ্ট প্রমাণাদি থেকে অন্ধ হয়েছে, বিরুদ্ধাচারণ ও অহংকার করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দাওয়াতের কার্যক্রম তর্ক-বির্তকের পর্যায় হতে জিহাদের পর্যায়ের দিকে চলে যেতে পারে। তখন তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে লড়তে হবে, যেন তারা বিরুদ্ধাচরণ ছেড়ে দেয় এবং ভীত-সন্ত্রস্ত হয়। এই চতুর্থ অবস্থা সাধারণ ব্যক্তির কাজ নয়, বরং এটি তাদের কাজ, যাদের হাতে ক্ষমতা বা হুকুমত রয়েছে। কেননা সর্ব সাধারণ তো সরকারের অধীন। তাই যদি তা সরকারের মাধ্যমে না হয়, তবে অরাজকতা দেখা দিবে এবং অনেক ক্ষতি ও বিরাট ফাসাদের সৃষ্টি হবে।

এই হচ্ছে আহবানকৃত ব্যক্তির কবুল করা অথবা কবুল না করার পরিপ্রেক্ষিতে দাওয়াতের পদ্ধতি।

আর যে জিনিসের প্রতি আহবান করা হবে, তার ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে দাওয়াতের পদ্ধতি হবে এই যে, প্রথমে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দিয়ে শুরু করবে। অতঃপর একের পর এক আহবানকৃত ব্যক্তিকে ক্রমানুসারে অন্যান্য বিধানের প্রতি নিয়ে যাবে।

উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, আমরা যদি এমন এক ব্যক্তিকে আহবান করি, যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে স্বীকার করা, তার ইবাদাত করা ও রাসূলের অনুসরণ করাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে, তাহলে তার কাছে আমরা প্রথমে জ্ঞান ও যুক্তিভিত্তিক দলীল-আদিল্লার বাস্তব উদাহরণ পেশ করব, যাতে করে সে এর বাস্তবতা জানতে পারে এবং স্বীকার করে নেয় যে, আল্লাহ একাই সৃষ্টিকর্তা, তাঁর কোন শরীক নেই।

অতঃপর তাকে নিয়ে যাব আল্লাহর উলুহিয়াতের প্রতি ও তার ওয়াজিব ইবাদাতের প্রতি। কেননা রুবুবিয়াতকে স্বীকার করা বাধ্য করে উলুহিয়াতকে স্বীকার করতে হবে। তা আল্লাহ তা‘আলা ধারাবাহিকভাবে পবিত্র কুরআনে বহু জায়গায় বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন ইরশাদ করেন,

يَاۤ اَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوْا رَبَّكُمُ الَّذِيْ خَلَقَكُمْ وَالَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত করো, যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার। (সূরা বাক্বারা- ২১)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ঐ ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, যে এমন কাউকে আল্লাহর সাথে শরীক করে, যে কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

أَيُشْرِكُونَ مَا لَا يَخْلُقُ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ

তারা কি এমন কাউকে শরীক সাব্যস্ত করে, যে একটি বস্ত্তও সৃষ্টি করেনি, বরং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে? (সূরা আরাফ- ৯১)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٖۤ اٰلِهَةً لَّا يَخْلُقُوْنَ شَيْئًا وَّهُمْ يُخْلَقُوْنَ وَلَا يَمْلِكُوْنَ لِاَنْفُسِهِمْ ضَرًّا وَّلَا نَفْعًا وَّلَا يَمْلِكُوْنَ مَوْتًا وَّلَا حَيَاةً وَّلَا نُشُوْرًا

তারা তাঁর পরিবর্তে এমন কিছুকে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করেছে, যারা কোনকিছুই সৃষ্টি করতে পারে না, বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা নিজেদেরই কোন অপকার কিংবা উপকারের ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও উত্থানের উপরও কোন ক্ষমতা রাখে না। (সূরা ফুরক্বান- ৩)

তারপর আমরা তাকে ইবাদাতের পদ্ধতির দিকে নিয়ে যাব এবং ইবাদাতের ওয়াজিবের বিস্তরিত বিবরণ তুলে ধরব। আর এটাই হচ্ছে রাসূলগণের পদ্ধতি। যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি জগতের কাছে প্রেরণ করেছেন এবং তাদেরকে নিদর্শন দিয়ে শক্তিশালী করেছেন, যাতে তারা সৃষ্টি জগতকে শিক্ষা দেন ঐ জিনিস, যা তাদেরকে অদৃশ্য বিষয়ে ফায়দা দিবে এবং তারা কীভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে, তা তারা বর্ণনা করেন। কেননা ইবাদাত হচ্ছে আল্লাহর হক, যা তিনি বান্দাদের উপর ওয়াজিব এমনভাবে করে দিয়েছেন, যেভাবে তিনি পছন্দ করেন। তা রাসূলগণের মাধ্যম ছাড়া জানা সম্ভব নয়। তখন সে যদি স্বীকার করে যে, সহজ পন্থায় আল্লাহর ইবাদাত করা একান্ত প্রয়োজন এবং রাসূলগণের মাধ্যম ছাড়া তা জানা অসম্ভব, তাহলে তাকে আমরা আল্লাহর মনোনীত নির্দিষ্ট রাসূলের রাস্তার দিকে নিয়ে যাব, যার অনুসরণ করা ওয়াজিব। তিনি হলেন মুহাম্মাদ ﷺ, যাকে সমস্ত মানুষের কাছে প্রমাণ সহকারে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রমাণাদি তার কাছে তুলে ধরব। তাঁর প্রতি ঈমান আনা অতীতের সমস্ত রাসূলের প্রতি ঈমানকে শামিল করে, কিন্তু তার বিপরীত নয়। অতঃপর সে যদি এটাকে স্বীকার করে, তবে তাকে আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শরীয়ত যা কিছু নিয়ে এসেছে, তার বিস্তারিত বর্ণনার দিকে নিয়ে যাব, যাতে সে তা স্বীকার করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি যেমন, নামায, রোযা ও যাকাত ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন