মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দাওয়াতে কৃতকার্যতা বা সফলতা অর্জন হচ্ছে এমন একটা ফসল, যা দাঈগণ চেষ্টার দ্বারা লাভের আশা করে থাকে। তাদের দাওয়াত ফলপ্রসূ হওয়ার কামনা-বাসনা যদি না থাকত, তবে তাদের আগ্রহ বা শক্তি লোপ পেত এবং তাদের দাওয়ার ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে যেত। তাই প্রত্যেক দাঈর জন্য উত্তম হচ্ছে, তার দাওয়াত ফলপ্রসূ ও সফল হওয়ার কৌশলসমূহ জেনে নিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে করে আকাঙ্খিত রেজাল্টে পৌঁছতে সক্ষম হয়। দাওয়াতে সফলতা অর্জনের কৌশল-কারণ বা শত্যাবলিসমূহ হচ্ছে নিম্নরূপ :
১. দ্বিতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে যা বর্ণিত হয়েছে তা বাস্তবায়িত করা।
২. দেশের ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তির কাছ থেকে দাওয়াতী কাজের জন্য সনদ বা অনুমতিপত্র থাকতে হবে। বলা বাহুল্য, দাওয়াত ও ক্ষমতা এ দুটিই জাতিকে সংশোধনের স্তম্ভ স্বরূপ। যদি এ দুটি বিষয় একত্রিত হয়, তবে তো আল্লাহর ইচ্ছায় লক্ষ্যবস্ত্ত ও মাকছুদ অর্জিত হওয়া নিশ্চিত। আর যদি দাওয়াত ও ক্ষমতা একটি অপরটির বিপরীতপন্থী হয়, তবে পরিশ্রম বিনষ্ট হয় অথবা বড় ধরনের দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। অতএব যে দেশ প্রকৃত স্থায়ী ইজ্জতের ইচ্ছা করে এবং পৃথিবীতে সম্মানের রাজত্ব করতে চায় সেই দেশের দায়িত্ব হবে আল্লাহর দ্বীনকে আঁকড়ে ধরা এবং তাঁর রাসূলের পথকে অনুসরণ করা। আর যে সমস্ত আইন-কানুন ও শিক্ষা আল্লাহর দ্বীন ও রাসূলের হিদায়াতের পরিপন্থী, সে সমস্ত থেকে বিমূখ থাকা। কেননা আল্লাহর বাণী হচ্ছে সুমহান, আর দ্বীন হচ্ছে বিজয়ী, যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণী ও তার দ্বীনকে সঠিকভাবে গ্রহণ করবে, তার বিরোধিতা যে করবে, তার উপর থাকবে তার প্রাধান্যতা এবং সেই হবে বিজয়ী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
অধিকাংশ মানুষ (প্রকৃত অবস্থা) জানে না। তারা পার্থিব জীবনের বাহ্যিক অবস্থাটুকুই জানে, কিন্তু তারা পরকাল সর্ম্পকে সম্পূর্ণ উদাসীন। (সূরা রূম- ৬, ৭)
আর যে দেশ প্রকৃত স্থায়ী সম্মান ও জমিনে খেলাফত চায়, তার উচিৎ হবে, আল্লাহর পথের দাওয়াতকে বিজয়ী করার জন্য কথা ও কাজ, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে সর্বশক্তি দিয়ে সাহায্য করা। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কখনো কখনো শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করেন, হুশিয়ারী বালা-মুসিবত দান করেন। যখন মানুষেল অন্তরে ঈমান দুর্বল হয়ে যায়, তখন তিনি কঠোর বাধা প্রদানকারী হয়ে গজব নাযিল করে তাদেরকে পাপ ও নাফরমানী থেকে বাধা প্রদান করেন এবং তাদেরকে আল্লাহর বিধান অনুসরণে বাধ্য করেন। এমনকি তখন তারা সংশোধন হয় এবং সঠিক পথে চলে।
এমনভাবে আল্লাহর পথের সচেতন দাঈরা দেশের ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন। পাশাপাশি তাদেরকেও হক পথে চলার জন্য উৎসাহিত করবেন। দুনিয়া ও আখিরাতের তাদের জন্য যে সমস্ত প্রশংসিত প্রতিদান রয়েছে, তা তাদের নিকট বর্ণনা করবেন এবং হকের খেলাফ করায় দুনিয়া ও আখেরাতে সে সমস্ত নিকৃষ্ট পরিণাম ও দুর্ভাগ্য রয়েছে তা তাদের জানাবেন। এমনিভাবে তাদেরকে সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহর দাওয়াতে সাহায্যের জন্য উৎসাহ প্রদান করবেন এবং হাতাশার ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক বুঝ দিবেন।
৩. দাওয়াত গ্রহণযোগ্য ও যথাস্থানে হতে হবে, যাতে করে আহবানকৃত ব্যক্তিরা তা গ্রহণ করতে প্রস্ত্তত থাকে। তাদের কাছে যেন এমন কোন বাধা প্রদানাকারী কিছু না থাকে, যা তাদের দাওয়াত গ্রহণ করার মধ্যে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে। সাধারণত দাওয়াত ঐ সম্প্রদায়ের কাছে হওয়া উচিৎ, যারা তাদের ভ্রান্ততা ও অন্যায়ের শেষ পরিণাম জানতে পেরে তার থেকে নাজাত কামনা করছে। রাসূল ﷺ এর দাওয়াতের প্রতি লক্ষ্য করুন, তাঁর এ দাওয়াত ছিল যথাযথ স্থান, কাল ও পাত্র বিশেষে। এ সময় ছিল রাসূল পাঠাবার উপযুক্ত সময়; পাত্র ছিল নিশ্চিত, মানুষ বিশেষ আগ্রহভরে রিসালাতের নূরে প্রতিক্ষায় ছিল। তার রহমতের পিপাসা ছিল তাদের অন্তরে। তখন আল্লাহ রাববুল ইজ্জত পৃথিবীবাসীর প্রতি দৃষ্টি দিলেন। শুষ্ক জমিতে রহমতের বৃষ্টির ন্যায় মানুষের মাঝে রাসূল ﷺ এর আবির্ভাব হলো।
সেকালে আউস গোত্র ও খাজরাজ গোত্র যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। আর তা স্থায়ী ছিল হিজরী সনের প্রায় পাঁচ বছর পূর্ব পর্যন্ত। এ যুদ্ধে নিহত হয়েছিল আউস ও খাজরাজ এ দুটি গোত্রের অসংখ্য লোক। তারা এমন একটি জিনিসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে, যা তাদেরকে একত্রিত করবে এবং তাদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের সৃষ্টি করবে। তাদের সেই প্রতিক্ষিত নিয়ামতরূপে তখন নবীজী ﷺ এর আবির্ভাব হলো।
সহীহ বুখারীতে আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, দিনের পর দিন ছিল উত্তপ্ত। এ দিনে আল্লাহ তা‘আলা প্রেরণ করলেন তাঁর রাসূল ﷺ কে। সে সময় রাসূল ﷺ আগমন করলেন এমন গোত্রে, যারা পরস্পর কাটাকাটি মারামারীতে লিপ্ত ছিল। রাসূল ﷺ আগমনের মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে ইসলামে প্রবেশ করার তৌফিক দিলেন এবং পরস্পরে ভ্রাতৃত্বেবোধ দান করলেন।
ইবনে ইসহাক উল্লেখ করেন যে, নবী করীম ﷺ যখন হজ্জ মৌসুমে খাজরাজ গোত্রের সাথে কথা বললেন, তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিলেন তখন তারা ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং বললেন, আমরা আজ থেকে আমাদের গোত্রের ও অন্য গোত্রের শত্রুতা ও অন্যায় ছেড়ে দিলাম। আল্লাহর কাছে কামনা করছি যে, আপনার দ্বারা তিনি যেন তাদের মাঝে মিল করিয়ে দেন।
আর যদি এমন এক গোত্রের কাছে দাওয়াত দিতে হয়, যারা বাতিল বরণ করেছে, মদ পান করে নেশাগ্রস্ত হচ্ছে অন্যায়ের চাকচিক্য নিজেকে অধিক মর্যাদাবান মনে করছে এবং পার্থিব অসাড় মরিচিকার ধোকায় পড়েছে, সেখানে সাধারণ দাওয়াতের সফলতার গতি হবে মন্থর। কেননা, বাতিলের প্রবল গতি তাদের মাঝে শক্তিশালী, আর এ প্রবল গতির মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন দাওয়াতের বিরাট শক্তি, যাতে করে তার উপর বিজয় লাভ করা সম্ভব হয়। এজন্য দাওয়াতী পর্যায়ের সর্বস্তরে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচেষ্টা করা প্রয়োজন। আল্লাহই সকল সাহায্যের জন্য যথেষ্ট।
৪. দাঈ তার দাওয়াতের সফলতার ব্যাপারে নিরাশ না হয়ে প্রবল আশাবাদী থাকবে। নিশ্চয় দৃঢ় আশা দাওয়াত পরিচালনায় ও তার সফলতাদানের প্রচেষ্টায় একটা শক্তিশারী গতি, যেমনিভাবে নিরাশা অকৃতকার্য হওয়া ও দাওয়াতের শ্লথ গতির একটা বিশেষ কারণ। এ জন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা স্বীয় নবীর জন্য আশা-আকাংখার বিভিন্ন দরজা খুলে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তিনিই ঐ সত্তা, যিনি তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, যাতে (রাসূল) ঐ দ্বীনকে অন্যসব দ্বীনের উপর বিজয়ী করেন। আর এ বিষয়ে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা ফাতহ- ২৮)
এ সমসত্ম অদৃশ্যের সংবাদ আমি তোমাকে ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি, যা এর পূর্বে তুমি জানতে না এবং তোমার সম্প্রদায়েরও কেউ জানত না। সুতরাং ধৈর্যধারণ করো, নিশ্চয় শুভ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য। (সূরা হুদ- ৪৯)
রাসূল ﷺ এর বিরাট আশা ও দূরবর্তী দৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য করুন : তায়েফ থেকে ফিরে আসার কঠিন দিন যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে আল্লাহর পথে ডেকেছিলেন, অতঃপর তারা তার দাওয়াতে সাড়া না দিয়ে তাদের নির্বোধদেরকে তাঁর পিছনে লেলিয়ে দিয়েছিল, তখন তিনি করনাচ্ছাযালির নামক স্থানে পৌঁছলে জিবরীল (আঃ) তাঁকে বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে সম্প্রদায়ের কথা শ্রবণ করেছেন এবং দাওয়াতের প্রেক্ষিতে যা জবাব দিয়েছে, তাও তিনি অবলোকন করেছেন, তাই আপনার কাছে পাহাড়ের ফেরেশতা পাঠিয়ে দিয়েছেন এ জন্য যে, আপনি তাদের ব্যাপারে যা ইচ্ছা করবেন, তা তাকে হুকুম করুন। তখন পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাও এগিয়ে এসে রাসূল ﷺ কে সালাম দিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি যা হুকুম করবেন, আমি তা-ই করব। যদি আপনি ইচ্ছা করেন, তা হলে আমি এ কঠিন দুটি পাহাড় চাপিয়ে তাদেরকে নিষ্পেষিত করে দিব। তখন নবী করীম ﷺ বললেন, বরং আমি কামনা করছি যে, আল্লাহ তাদের বংশ থেকে এমন লোক বের করবেন, যারা এককভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না।
নিঃসন্দেহে এই সুদূর প্রসারী আশা দাওয়াত পরিচালনা ও তার সফলতার প্রচেষ্টায় এবং তাকে গতিশীল করে তুলতে যথেষ্ট কার্যকর ও শক্তিশালী।
মহান আল্লাহর কাছে আমাদের কামনা যে, তিনি যেন আমাদেরকে ভালো কাজের দাঈ বানিয়ে দেন এবং মন্দ কাজের বাধা প্রদানকারী বানান। তিনি যেন মুসলিম জাতির মধ্যে তৈরি করেন সঠিক পথপ্রাপ্ত, উত্তম, সৎ ও চরিত্রবান নেতা, যারা দেশে ইসলামী নীতির আলোকে ফায়সালা করবেন এবং হক ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করবেন। আমীন
والحمد لله رب العالمين- وصلى الله وسلم على نبينا محمد وعلى اله وصحبه اجمعين
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/469/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।